wb 10th Bengali

WBBSE 10th Class Bengali Solutions Chapter 1 কারক ও অকারক সম্পর্ক

WBBSE 10th Class Bengali Solutions Chapter 1 কারক ও অকারক সম্পর্ক

West Bengal Board 10th Class Bengali Solutions Chapter 1 কারক ও অকারক সম্পর্ক

West Bengal Board 10th Bengali Solutions

আলোচনা অংশ

কারক ও অকারক

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সর্বত্রই মেয়েদের উন্নতির জন্য নিজ উদ্যোগে স্বল্প সঞ্চয় থেকেই অকাতরে অর্থ দান করতেন। এখানে ‘দান করতেন’ পদটি সমাপিকা ক্রিয়া। এই ক্রিয়াপদটি ধরে প্রশ্ন করলে বাক্যের অন্যান্য পদগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক নির্ণয় করা সম্ভব। এই প্রশ্নগুলি পরপর সাজানো যাক—
প্রশ্ন উত্তর কারকের নাম
 ১। কে দান করতেন? ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর কর্তা সম্পর্ক।
২। কী দান করতেন? অর্থ ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর কর্ম সম্পর্ক।
৩। কীসের দ্বারা দান করতেন? নিজ উদ্যোগে ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর করণ সম্পর্ক।
৪। কীসের নিমিত্ত দান করতেন? মেয়েদের উন্নতির জন্য ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর নিমিত্ত সম্পর্ক।
৫। কোথা থেকে দান করতেন? স্বল্প সঞ্চয় থেকে ক্রিয়াপদের সঙ্গে অপাদান সম্পর্ক।
৬। কোথায় দান করতেন? সর্বত্রই ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর অধিকরণ সম্পর্ক।
সুতরাং, দেখা গেল, বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়াপদের সঙ্গে ওই বাক্যের নামপদ অর্থাৎ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদগুলির সম্পর্ককেই কারক সম্পর্ক বলা হয়। এই সম্পর্কের ভিত্তিতে কারক হল–কর্তৃ, কর্ম, করণ, নিমিত্ত, অপাদান এবং অধিকরণ।
এ ছাড়া রয়েছে কিছু অকারক সম্পর্ক। যেমন, যদি আগের বাক্য থেকে প্রশ্ন করি, কাদের উন্নতির জন্য? তাহলে উত্তর পাব, ‘মেয়েদের’। এর সঙ্গে দান করতেন’ ক্রিয়াটির সম্পর্ক নেই। যখন বাক্যের মধ্যে এমন পদ পাওয়া যায় যার সঙ্গে ক্রিয়াপদের সম্পর্ক নেই কিন্তু অন্য কোনো নামপদের সম্পর্ক আছে তাকে বলে অকারক সম্পর্ক। বাংলায় এরকম দুটি অকারক সম্পর্ক আছে—সম্বন্ধ ও সম্বোধন।

বিভক্তি

একটি বাক্যের মধ্যে থাকে এক বা একাধিক শব্দ। কিন্তু শব্দগুলি সরাসরি বাক্যে ব্যবহৃত হয় না, শব্দের সঙ্গে এমন কিছু অংশ যুক্ত হয়, যার ফলে সে বাক্যে স্থানলাভের যোগ্য হয়ে ওঠে।
যদি লিখি— বসন্তকাল নানা রঙ ফুল ফোটে। তাহলে শব্দগুলো পাশাপাশি বসলেও একে বাক্য বলা যায় না। কারণ এই শব্দগুলি থেকে পরিষ্কার কোনো অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু যদি লিখি— বসন্তকালে নানা রঙের ফুল ফোটে, তাহলে একে আমরা বাক্য বলতে পারি, কারণ এই বাক্যের মাধ্যমে বক্তার মনের ভাব পরিষ্কার করে ফুটে উঠেছে। এখন আমরা লক্ষ করি যে, কীভাবে শব্দগুলি বাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্য হল—
বসন্তকাল (+এ) নানা রং (+এর) ফুল ফোট্ (+এ)।
দেখা যাচ্ছে, ‘বসন্তকাল’-এর সঙ্গে ‘এ’, ‘রং’-এর সঙ্গে ‘এর’ এবং ‘ফোট’ এর সঙ্গে ‘এ’ যুক্ত হল। এর ফলেই বাক্যটির অর্থ তৈরি হল। এই ‘এ’, ‘এর’ ইত্যাদিকে বলে বিভক্তি। শব্দের সঙ্গে বা ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হলে তখন তা বাক্যে ব্যবহারের যোগ্য হয়ে ওঠে। বিভক্তিযুক্ত শব্দকে তখন বলা হয় ‘পদ’।
এভাবে যাবে — শব্দক্রিয়া + বিভক্তি → পদ (ধাতু)
শব্দের সঙ্গে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে বলে শব্দবিভক্তি। শব্দবিভক্তি শব্দকে নামপদ-এ পরিণত করে। যেমন—
   ভূতের                  ভয়ে                  অন্ধকারে               কেউ গেলাম না। 
ভূত + এর           ভয় + এ             অন্ধকার + এ 
এখানে ‘ভূত’, ‘ভয়’ এবং অন্ধকার’ শব্দের সঙ্গে যথাক্রমে ‘এর’, ‘এ’ ও ‘এ’ বিভক্তি যুক্ত হয়েছে। এই বিভক্তিগুলিকে বলা হয় শব্দবিভক্তি এবং ‘ভূতের’, ‘ভয়ে’, ‘অন্ধকারে’— এগুলি হল নামপদ।
ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ধাতুর সঙ্গে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে বলে ধাতুবিভক্তি। যেমন—‘কর্’ একটি ধাতু। এই ক্রিয়ার রূপটি কাল ও পুরুষভেদে পালটে যায়। যেমন—আমি করি, সে করে, তুমি করিবে ইত্যাদি। এক্ষেত্রে,
করি = কর্ + ই বিভক্তি                   করে = কর্ + এ বিভক্তি
করিবে = কর্ + ইবে বিভক্তি
কর ধাতুর সঙ্গে যে যে বিভক্তি যুক্ত হল, তাদের বলে ধাতুবিভক্তি। ধাতুবিভক্তি ক্রিয়াপদ তৈরি করে।
এই অধ্যায়ে বিভক্তি বলতে আমরা শব্দবিভক্তিকেই বুঝব। বাংলা ভাষায় বিভক্তিচিহ্নগুলি হল – এ, কে, য়, তে (বা এতে), র (বা এর), রে (কবিতায় ব্যবহৃত হয়) ইত্যাদি। এ ছাড়া আছে শূন্য বিভক্তি। আকাশে আজ তারার মেলা।
আকাশে = আকাশ + এ বিভক্তি                         তারার = তারা + র বিভক্তি
মাকে কলকাতায় যেতে হবে।
মাকে = মা + কে বিভক্তি                              কলকাতায় = কলকাতা + য় বিভক্তি
ওপরের উদাহরণে দেখা যাচ্ছে শব্দের সঙ্গে যুক্ত বিভক্তিচিহ্নটি স্পষ্ট। কিন্তু ‘বাবা অফিসে গেছেন’—এই বাক্যে ‘বাবা’ শব্দটির সঙ্গে স্পষ্টত কোনো বিভক্তি চিহ্ন না থাকলেও, এই শব্দটিকে বিভক্তিহীনও বলা যাবে না। ‘বাবা’ শব্দটির সঙ্গে ‘অ’ বিভক্তি যুক্ত হয়ে শব্দটিকে পদে পরিণত করেছে। এই অপ্রকাশিত বিভক্তিটিকে বলা হয় শূন্য বিভক্তি।
ব্যাকরণের ভাষায়, যে শব্দবিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে পরিণত করে, কিন্তু নিজে অপ্রকাশিত অবস্থায় থাকে এবং মূল শব্দটির কোনো পরিবর্তন ঘটায় না, তাকে শূন্য বিভক্তি বলে। যেমন—এবার পুজোয় রাজস্থান যাব।
রাজস্থান = রাজস্থান + অ (শূন্য বিভক্তি)

অনুসর্গ

কারকের চিহ্ন হিসেবে শুধু শব্দবিভক্তি যথেষ্ট নয়। শব্দবিভক্তি ছাড়াও কিছু শব্দ বিভক্তির কাজ করে। এরাও বিভক্তির মতো পদের পরে বসে, তবে নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে। এদের বলে অনুসর্গ। যেমন—গাছ থেকে আম পাড়ো। এখানে ‘গাছ থেকে’ অংশটিতে ‘থেকে’ শব্দটি বিভক্তির কাজ করছে। অর্থাৎ, ‘থেকে’ হল অনুসর্গ।
ব্যাকরণের ভাষায়, যে অব্যয় বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের পরে আলাদাভাবে অবস্থান করে শব্দবিভক্তির কাজ করে তাদের অনুসর্গ (বা পরসর্গ) বলে। বাংলায় প্রচলিত কয়েকটি অনুসর্গ: অপেক্ষা, চেয়ে (চাহিয়া), হতে (হইতে), থেকে (থাকিয়া), কর্তৃক, দিয়া (দিয়ে), দ্বারা, উপরে, কাছে, নিকট, পাশে, ভিতরে, মধ্যে, মাঝে, ছাড়া, বিনা, ব্যতীত, জন্য, কারণ, নিমিত্ত, হেতু, পানে, মতো, মতন, সঙ্গে, সাথে।

নির্দেশক

কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে বিশেষ অর্থে বোঝানোর জন্য এবং বস্তু বা ব্যক্তির সংখ্যা বোঝানোর জন্য কয়েকটি চিহ্নের ব্যবহার দেখা যায়। এই চিহ্নগুলিকে নির্দেশক বলা হয়। যেমন—
লোকটি কাল আমার কাছে এসেছিল।
-এখানে ‘লোক’ পদের সঙ্গে ‘টি’ নির্দেশক যুক্ত হয়ে তাকে বিশিষ্টতা দান করেছে। আবার একই সঙ্গে ‘লোকটি’ বলতে একজন লোকের কথা বলা হয়েছে। ‘টি’, ‘টা’, ‘খানা’, ‘খানি’, ‘গুলি’, ‘দের’, ‘দিগের’ ইত্যাদি হল বচন নির্দেশক চিহ্ন।
নির্দেশকও বিভক্তির মতো শব্দের শেষে বসে এবং শব্দটির সঙ্গে জুড়ে যায়। শব্দের সঙ্গে নির্দেশক যোগ হওয়ার পরও বিভক্তিচিহ্ন যুক্ত হতে পারে। যেমন—ছেলেগুলোকে, লোকটির ইত্যাদি।
একবচন বোঝানোর জন্য ‘টি’, ‘টা’, ‘খানা’ ইত্যাদি এবং বহুবচন বোঝানোর জন্য ‘রা’, ‘এরা’, ‘গুলি’, ‘গুলো’, ‘দের’, ‘এদের’ ইত্যাদি বচন নির্দেশক চিহ্ন যোগ করা হয়। বহুবচন বোঝাতে ‘সকল’, ‘সব’, ‘বৃন্দ’, ‘সমূহ’ প্রভৃতি নির্দেশক ব্যবহার করা হয়। এই নির্দেশকগুলিকে বিভক্তি বা অনুসর্গ কোনোটাই বলা যায় না। অথচ বিভক্তি এবং অনুসর্গ প্রত্যেকটির সঙ্গেই নির্দেশকগুলির কিছু মিল ও কিছু পার্থক্য আছে।
বিভক্তি এবং নির্দেশক: শব্দবিভক্তির মতো নির্দেশকও পদের শেষে যুক্ত হয়, শব্দ বা পদের পরে আলাদা করে সাধারণত বসে না। কিন্তু বিভক্তিচিহ্ন যেমন পদের কারক ও বচন দুই-ই নির্দেশ করে, নির্দেশকগুলি তা করে না। এগুলি শুধু বচনকেই নির্দেশ করে। শব্দবিভক্তি কখনও শব্দের আগে বসে না। কিন্তু নির্দেশকগুলি কখনো কখনো স্বতন্ত্রভাবে শব্দের আগেও বসতে পারে। অনেক সময় নির্দেশকের শেষে বিভক্তিচিহ্ন যুক্ত হয়। এই ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রটিতে নির্দেশক স্বতন্ত্রভাবে শব্দের প্রথমে বসেছে। যেমন—
ঝাঁকের কই = [ঝাঁক + এর (নির্দেশক + বিভক্তি)] কই (শব্দ)
অনুসর্গ ও নিদের্শক:
মিল: অনুসর্গ কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে পদের আগে আলাদাভাবে বসে। যেমন—বিনে স্বদেশী ভাষা পুরে কি আশা? নির্দেশকও বিভক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দের আগে বসতে পারে।
অমিল: অনুসর্গ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পৃথকভাবে শব্দের পরে বসে। নির্দেশক কখনোই শব্দের পরে পৃথকভাবে বসে না। শব্দের শেষে যুক্ত হয়। অনুসর্গের সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে অন্য কোনো বিভক্তিচিহ্ন যোগ করা হয়। প্রয়োজন অনুসারে অনুসর্গের আগের পদটিতে বিভক্তিচিহ্ন যোগ করা হয়। যেমন— ক্লাবের ছেলেগুলোকে দিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করাও।
[ছেলে + গুলো (বচনসূচক নির্দেশক) + কে (কারকবাচক ভক্তি)] দিয়ে (অনুসর্গ)

কারকের শ্রেণিবিভাগ

আমরা আগেই জেনেছি, কর্তৃ, কর্ম, করণ, নিমিত্ত, অপাদান আর অধিকরণ—বাংলা ভাষায় এই ছয় ধরনের কারক দেখতে পাওয়া যায়।

কর্তৃকারক

আজ ছোটোমামা এসেছেন। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়। তুমি কি এখনই যাবে?
উপরের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে যদি ক্রিয়াকে ‘কে’ দিয়ে প্রশ্ন করি, অর্থাৎ ‘কাজটি কে করছে’ খুঁজি, তাহলে যে উত্তর পাওয়া যাবে, তা হল বাক্যের কর্তা। বাক্যের কর্তার সঙ্গে ক্রিয়ার সম্পর্ককে আমরা বলি কর্তৃকারক। অর্থাৎ উপরের বাক্যগুলিতে কর্তৃকারক হল যথাক্রমে ‘ছোটোমামা’, ‘রাজায় রাজায়’ এবং ‘তুমি’। ব্যাকরণের ভাষায় যে বিশেষ্য বা সর্বনাম বা বিশেষ্যস্থানীয় পদ বাক্যের মধ্যে ক্রিয়াসম্পাদকের ভূমিকা নেয়, সেই পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সম্পর্ককে কর্তৃকারক বলা হয়।
সহজ কথায়, বাক্যের কর্তার সঙ্গে ক্রিয়ার সম্পর্কের নাম কর্তৃকারক।
কর্তৃকারকের প্রকারভেদ
কর্তৃকারকের প্রকার বৈশিষ্ট্য উদাহরণ বিভক্তি
১। প্রযোজক কর্তা কর্তা নিজে কাজ না করে অন্যকে দিয়ে করিয়ে নিলে তা হবে প্রযোজক কর্তা। রাখাল গোরু চরায়। শূন্য বিভক্তি
২। প্রযোজ্য কর্তা যাকে দিয়ে প্রযোজক কর্তা কাজটি করিয়ে নেয় সেটি হল প্রযোজ্য কর্তা। রাখাল গোরু চরায়। শূন্য বিভক্তি
৩। সমধাতুজ কর্তা ক্রিয়াটি যে ধাতুনিষ্পন্ন, কর্তাও যদি সেই একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয় তখন তাকে বলে সমধাতুজ কর্তা।
লেখক বই লেখেন।
ক্রিয়া ‘লেখেন’ ও কর্তা ‘লেখক’ একই ধাতু ‘লিখ’ থেকে উৎপন্ন।
শূন্য বিভক্তি
৪। ব্যতিহার কর্তা কোনো ক্রিয়ার দুই কর্তার মধ্যে যদি পারস্পরিক বিনিময় বোঝায়, তখন তাদেরকে ব্যতিহার কর্তা বলে। কবিতে কৰিতে যুদ্ধ হচ্ছে। ‘তে’ বিভক্তি
৫। সহযোগী কর্তা বাক্যে দুই বা ততোধিক কর্তার মধ্যে সহযোগিতা থাকলে তাকে সহযোগী কর্তা বলে ৷ তুমি আমি মিলে পৌঁছে যাব। শূন্য বিভক্তি
৬। বাক্যাংশ কর্তা সমাপিকা ক্রিয়াবিহীন কোনো বাক্যাংশ ক্রিয়া সম্পাদন করলে তাকে বাক্যাংশ কর্তা বলে। তোমার এই চলে যাওয়াটা ভালো দেখায়নি।
৭। উপবাক্যীয় কর্তা কোনো বাক্যের অন্তর্গত উপবাক্য কর্তা হিসেবে ক্রিয়া সম্পাদন করলে তা হবে উপবাক্যীয় কর্তা। সে আসবে না এটা হয় না।
৮। নিরপেক্ষ কর্তা বাক্যের মধ্যে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার আলাদা কর্তা থাকলে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাকে নিরপেক্ষ কর্তা বলে। “তুমি মাতৃহীন হইলে আমি তোমায় প্রতিপালন করিয়াছিলাম।” শূন্য বিভক্তি
৯। কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা কর্তার অনুপস্থিতিতে যদি কর্ম কর্তার মতো আচরণ করে এবং ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে তবে তা হয় কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা। শাঁখ বাজে। শূন্য বিভক্তি
১০। অনুক্ত কর্তা কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যে কর্তা প্রধানরূপে উক্ত হয় না। সেজন্যই একে অনুক্ত কর্তা বলে। তোমার দ্বারা এ কাজ হবে না। ‘র’ বিভক্তি
১১। উপকরণ কর্তা/ সাধন কর্তা উপকরণকে কর্তা হিসেবে ব্যবহার করলে তাকে উপকরণ কর্তা বা সাধন কর্তা বলে। ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভানে। শূন্য বিভক্তি

প্রশ্নোত্তর অংশ

বহুৰিকল্পীয় প্রশ্ন [MCQ] ও উত্তর

ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।

১. সে কাল দিল্লি যাবে। নিম্নরেখ পদটির সঙ্গে যুক্ত বিভক্তিটি হল—
(ক) এ বিভক্তি
(খ) শূন্য বিভক্তি
(গ) সে বিভক্তি
(ঘ) কোনো বিভক্তি যুক্ত হয়নি
২. তির্যক বিভক্তি হল-
(ক) একসঙ্গে সব রকমের বিভক্তি
(খ) শূন্য বিভক্তির অন্য নাম
(গ) একসঙ্গে বিভক্তি ও অনুসর্গ
(ঘ) একাধিক কারকে ব্যবহৃত বিভক্তি
৩. দারোগার ভয়ে বাঘে গোরুতে এক ঘাটে জল খায়। নিম্নরেখ অংশটি হল-
(ক) সহযোগী কর্তা
(খ) ব্যতিহার কর্তা
(গ) একই ক্রিয়ার বহু কর্তা
(ঘ) প্রযোজক কর্তা
৪. সূর্য উঠলে আমরা রওনা দেব। নিম্নরেখ পদটি হল-
(ক) নিরপেক্ষ কর্তা
(খ) সমধাতুজ কর্তা
(গ) সহযোগী কর্তা
(ঘ) উপবাক্যীয় কর্তা
৫. যা যা করার করতে হবে। নিম্নরেখ পদটি হল-
(ক) ঊহ্য কর্ম
(খ) বাক্যাংশ কর্ম
(গ) কর্মের বীপ্সা
(ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্ম
৬. ষাট সেকেন্ডে এক মিনিট। নিম্নরেখ পদটি হল-
(ক) হেত্বর্থক করণ
(খ) কালাত্মক করণ
(গ) লক্ষণাত্মক করণ
(ঘ) সমধাতুজ করণ
৭. কৌশলে কাজটা করতে হবে।—এই বাক্যে যে পদটি করণকারক সেটি হল-
(ক) কাজটা
(খ) করতে
(গ) করতে হবে
(ঘ) কৌশলে
৮. এবার তোমরা খাবার ঘরে এসো। নিম্নরেখ পদটি হল-
(ক) নিমিত্তকারক
(খ) অপাদানকারক
(গ) অধিকরণকারক
(ঘ) অকারক
৯. ব্যাগ থেকে টাকা বের করলাম। আমার অফিস থেকে বাড়ি দশ কিলোমিটার। এই দুই বাক্যের নিম্নরেখ অংশ দুটি হল-
(ক) স্থানবাচক ও তুলনাবাচক অপাদান
(খ) স্থানবাচক ও অবস্থানবাচক অপাদান
(গ) দুটিই স্থানবাচক অপাদান
(ঘ) স্থানবাচক ও দূরত্ববাচক অপাদান

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

১. একটি বাক্য লেখো যেখানে কারকের বিভক্তি হিসেবে শুধু শূন্য বিভক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
উত্তর – আমি বাড়ি যাইনি। —এই বাক্যটিতে ‘আমি’ একটি কর্তৃকারক বাচক পদ এবং ‘বাড়ি’হল অধিকরণকারক বাচক পদ। দুটি পদেই শূন্য বিভক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
২. তির্যক বিভক্তি কাকে বলে?
উত্তর – যে বিভক্তিচিহ্ন একাধিক কারকে ব্যবহৃত হয়, তাকে তির্যক বিভক্তি বলে। যথা—এ।
৩. বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে কী কী সাদৃশ্য রয়েছে?
উত্তর – বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে মিল—
বিভক্তি অনুসর্গ
বিভক্তি বহুক্ষেত্রে কারককে চিহ্নিত করে। অনুসর্গও বহুক্ষেত্রে কারককে চিহ্নিত করে।
বিভক্তি শব্দের পরেই বসে। কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া অনুসর্গও শব্দের পরেই বসে।
৪. বিভক্তি ও নির্দেশকের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর – বিভক্তি ও নির্দেশকের পার্থক্য—
বিভক্তি নির্দেশক
বিভক্তিচিহ্ন পদের কারক নির্দেশ করে। নির্দেশকগুলি পদের বচন নির্দেশ করে।
শব্দবিভক্তি কখনোই শব্দের আগে বসে না। নির্দেশকগুলি স্বতন্ত্রভাবে শব্দের আগেও বসতে পারে। যেমন—ঝাঁকের কই = (নির্দেশক +বিভক্তি)]কই (শব্দ)। পালের গোদা = [পাল+এর (নির্দেশক +বিভক্তি)] গোদা (শব্দ)।
৫. একটি কর্তৃকারকের উদাহরণ দাও যেখানে কর্তাটি হল কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা।
উত্তর – বাঁধ ভেঙেছে। —এই বাক্যের নিম্নরেখ পদটি কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তার একটি উদাহরণ।
৬. সমধাতুজ কর্তা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – ক্রিয়াটি যে ধাতুনিষ্পন্ন, কর্তাও যদি সেই একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়, তখন তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে। উদাহরণ— কুকাজের ফল ফলেছে।
৭. কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা ও কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্মের একটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তর – কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা: আলোগুলো জ্বলে উঠল।
কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্ম: সেদিনের প্রকৃতি বড়ো অদ্ভুত দেখাল।
৮. করণকারকের বীপ্সার দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর – করণকারকের বীপ্সার দুটি উদাহরণ হল— পায়ে পায়ে ফুটবল এগিয়ে চলল। ছবিতে ছবিতে সারা দেয়াল ভরে গেল।
৯. নিমিত্তকারক ও সম্প্রদানকারকের মধ্যে পার্থক্য কোথায় ?
উত্তর – নিমিত্তকারক ও সম্প্রদানকারকের পার্থক্য—
নিমিত্তকারক সম্প্রদানকারক
১। নিমিত্তকারক বাংলায় ব্যবহৃত হয়। ১। সম্প্রদানকারকের অস্তিত্ব বাংলায় নেই, সংস্কৃতে রয়েছে।
২। ‘জন্য’ অর্থে নিমিত্তকারক হয়। ২। স্বার্থশূন্য দান অর্থে সংস্কৃতে সম্প্রদানকারক হয়। বাংলায় গৌণ কর্মপদে এগুলি কর্মকারক হয়ে যায়।
১০. অকারক সম্পর্ক বলতে কী বোঝ?
উত্তর – ক্রিয়াপদের সঙ্গে বাক্যের যে পদের কোনো সম্পর্ক থাকে না সেই পদ কখনোই কারক সম্পর্কে যুক্ত হয় না। এইরকম সম্পর্ককে বলে অকারক সম্পর্ক। যেমন—সম্বন্ধপদ, সম্বোধন পদ।
১১. কারক কাকে বলে?
উত্তর – বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়াপদের সঙ্গে ওই বাক্যের নামপদ অর্থাৎ বিশেষ্য ও সর্বনামপদগুলির সম্পর্ককেই কারক সম্পর্ক বলা হয়।
১২. বিভক্তি কাকে বলে?
উত্তর – যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে পদ গঠন করে বা শব্দকে বাক্যে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে তাকে বিভক্তি বলা হয়।
১৩. বিভক্তি ও অনুসর্গের একটি পার্থক্য লেখো। 
উত্তর – বিভক্তির নিজস্ব কোনো অর্থ নেই, কিন্তু অনুসর্গের নিজস্ব অর্থ আছে।
১৪. নিরপেক্ষ কর্তা কাকে বলে?
উত্তর – বাক্যের মধ্যে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার আলাদা কর্তা থাকলে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাকে নিরপেক্ষ কর্তা বলে।
১৫. উদাহরণ দাও—আধার-আধেয় সম্বন্ধ।
উত্তর – ফলের ঝুড়ি নিয়ে লোকটি আমাদের বাড়িতে এল।
১৬. নির্দেশক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে বিশেষ অর্থে বোঝানোর জন্য এবং বস্তু বা ব্যক্তির সংখ্যা বোঝানোর জন্য কয়েকটি চিহ্নের ব্যবহার দেখা যায়। এই চিহ্নগুলিকে নির্দেশক বলে।
উদাহরণ: লোকটি কাল আমার কাছে এসেছিল। এখানে ‘টি’ হল নির্দেশক।
১৭. অকারক পদ কাকে বলে? বাংলা ভাষায় অকারক পদগুলির উল্লেখ করো।
উত্তর – বাক্যের যেসব পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের কোনো সম্পর্ক থাকে না, সেই পদগুলি ক্রিয়ার সঙ্গে কারক সম্পর্ক তৈরি করতে পারে না। অথচ, তার সঙ্গে বাক্যের অন্য কোনো পদের সম্পর্ক থাকতে পারে। এই পদগুলিকেই বলে অকারক পদ।
অকারক পদ দু-প্রকার।–[১] সম্বন্ধপদ [২] সম্বোধন পদ।
১৮. উদ্দেশ্য কর্ম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – কোনো কোনো ক্রিয়ার ক্ষেত্রে একটি কর্ম ছাড়াও আর-একটি পরিপূরক কর্মের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে স্বাভাবিক বিভক্তিযুক্ত কর্মটিকে বলে উদ্দেশ্য কর্ম। যেমন—রবি মাস্টারমশাইকে দেবতা মনে করে।
১৯. সে অঙ্কে কাঁচা।—রেখাঙ্কিত পদটির কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো।
উত্তর – অধিকরণকারকে ‘এ’ বিভক্তি।
২০. অক্ষুণ্ণ কর্ম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – কর্তৃবাচ্যের দুটি কর্ম থাকলে তারা যখন কর্মবাচ্যে অপরিবর্তিত থাকে তখন তাকে অক্ষুণ্ণ কর্ম বলে। যেমন—রাম শ্যামকে বইটা দিল > রামের দ্বারা শ্যামকে বইটা প্রদত্ত হল।
২১. শব্দের পূর্বে বসেছে এমন একটি নির্দেশকের উদাহরণ দাও। (বাক্যে প্রয়োগ করে)
উত্তর – একখানা মেঘ ভেসে এল আকাশে।
২২, উপবাক্যীয় কর্তার সংজ্ঞা-সহ উদাহরণ দাও।
উত্তর – কোনো বাক্যের অন্তর্গত উপবাক্য, কর্তা হিসেবে ক্রিয়া সম্পাদন করলে তা যথাক্রমে হবে বাক্যাংশ কর্তা ও উপবাক্যীয় কর্তা। উদাহরণ: সে আসবে না এটা হয় না।
২৩. অস্ত্র রাখো—নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।
উত্তর – কর্মকারক, শূন্য বিভক্তি
২৪. ‘শূন্য বিভক্তি’ কাকে বলে?
উত্তর – যেসকল বিভক্তি শব্দের পরে বসে তাদের নামপদে পরিণত করে এবং অপ্রকাশিত থাকে তাদের বলে ‘শূন্য বিভক্তি’।
২৫. সমধাতুজ কর্ম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – ক্রিয়ার যে ধাতুমূল সেখান থেকেই যদি কর্ম উৎপন্ন হয়, তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন—ছেলেটা কী খেলাই না খেলল!
২৬. কর্মকারকে শূন্য বিভক্তির উদাহরণ দাও।
উত্তর – কবি কবিতা লেখেন।
২৭. সম্বন্ধপদকে অকারক বলা হয় কেন?
উত্তর – সম্বন্ধপদের সঙ্গে যেহেতু ক্রিয়ার কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকে না, তাই একে অকারক বলা হয়।
২৮. শব্দ বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর – সকলে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেল। —এখানে ‘এ’ শব্দ বিভক্তি।
২৯. প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে?
উত্তর – যে কর্তা অন্যের উদ্যোগে বা পরিচালনায় কাজ করে তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে।
৩০. নিম্নরেখ শব্দটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো—কহ দাসে লঙ্কার কুশল।
উত্তর – কর্মকারক, শূন্য বিভক্তি।
৩১. সম্বন্ধপদ কাকে বলে?
উত্তর – বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কহীন যে পদ পরবর্তী নামপদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে তাকে সম্বন্ধ পদ বলে।
৩২. বিভক্তি ও অনুসর্গের একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর – বিভক্তি একটি চিহ্ন, তাই এর নিজস্ব অর্থ নেই;অন্যদিকে অনুসর্গ একটি শব্দ, তাই এর নিজস্ব অর্থ আছে।
৩৩. ‘মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘণ্টা’—নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।
উত্তর – অধিকরণকারক, ‘এ’ বিভক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *