wb 10th Bengali

WBBSE 10th Class Bengali Solutions Chapter 3 বাক্য ও তার শ্রেণিবিভাগ

WBBSE 10th Class Bengali Solutions Chapter 3 বাক্য ও তার শ্রেণিবিভাগ

West Bengal Board 10th Class Bengali Solutions Chapter 3 বাক্য ও তার শ্রেণিবিভাগ

West Bengal Board 10th Bengali Solutions

আলোচনা অংশ

শব্দসমষ্টি তখনই বাক্য হয়ে ওঠে, যখন তারা মিলিতভাবে একটি সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করতে পারে এবং শব্দগুলি পদ হিসেবে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে বসে। এই অর্থবহতা এবং বিন্যাসগত পারম্পর্যর ওপরে ভিত্তি করে বাক্যনির্মাণের তিনটি শর্ত পাওয়া যায়।

বাক্যনির্মাণের শর্ত

বাক্যনির্মাণের তিনটি প্রধান শর্ত হল—[১] আসত্তি, [২] যোগ্যতা এবং [৩] আকাঙ্ক্ষা। একটি অর্থপূর্ণ বাক্য নির্মাণ করতে হলে বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলির মধ্যে এই তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে।
[১] আসত্তি: বাক্যের বিভিন্ন পদগুলিকে উপযুক্ত স্থানে বসানোই হল আসত্তি। উপযুক্ত স্থানে না বসে থাকলে তাদের অর্থ বোঝা যাবে না। যেমন— দিয়ে নড়ছে দেখা গাছ জানলা যাচ্ছে
এটি কখনও বাক্য হতে পারে না। কারণ এক্ষেত্রে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত পদগুলি পাশাপাশি বা কাছাকাছি নেই। পারস্পরিক সম্পর্ক অনুযায়ী পদগুলিকে সাজালে অর্থবহ বাক্যটি স্পষ্ট হয়ে উঠবে— জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে গাছ নড়ছে।
[২] যোগ্যতা: পদসমষ্টি উচ্চারণের ফলে সংগত ভাব প্রকাশিত হলে তা ওই পদসমষ্টির বাক্যগঠনের যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয়। বাক্যে শব্দগুলি অর্থবহভাবে বিন্যস্ত থাকা সত্ত্বেও বাস্তব জগতের জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনা করলে যদি সেই অর্থ ভুল প্রমাণিত হয়, তবে তা বাক্য হবে না।
যেমন যদি বলা হয়, ঈশানকোণে সূর্য অস্ত গেল। –তবে তা বিন্যাসের দিক থেকে বাক্য হিসেবে ঠিক হলেও বাস্তবে তার যে অর্থ বোঝায়, তা ভুল। ফলে, এটি বাক্যের মর্যাদা পায় না। পশ্চিমদিকে সূর্য অস্ত গেল। বললে বাক্যের ভাব সম্পূর্ণ হয়।
[৩] আকাঙ্ক্ষা: শব্দসমষ্টি তখনই বাক্য হয়ে উঠতে পারে, যখন তার মধ্যে অর্থের সম্পূর্ণতা থাকে। বাক্যের কিছুটা অংশ ব্যক্ত হওয়ার পরে যদি পরের অংশটুকু শোনা বা জানার জন্য কোনো আগ্রহ তৈরি হয়, তবে তাকে বলা হয় আকাঙ্ক্ষা। অর্থাৎ, বাক্যটি যেন বক্তা এবং শ্রোতা উভয়েরই বলার এবং শোনার আকাঙ্ক্ষা মেটাতে পারে।
যেমন —আমি সুনীলের বাড়ি। এটি কোনো বাক্য নয়। কারণ, আমার আর সুনীলের বাড়ির মধ্যে কী সম্পর্ক রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। অর্থাৎ বাক্যটিতে এমন কোনো পদের আকাঙ্ক্ষা রয়ে গেছে যা বাক্যের অর্থটি স্পষ্ট করে তুলতে পারে। কিন্তু যদি বলি, আমি সুনীলের বাড়ি যাব। —তবে একটি সম্পূর্ণ অর্থ পাওয়া যায়। বক্তা বা শ্রোতার মনে শোনার বা জানার কোনো আকাঙ্ক্ষা থাকে না।

বাক্যের অর্থগত শ্রেণিবিভাগ

বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা অর্থের ওপর ভিত্তি করে বাক্যকে সাতটি ভাগে ভাগ করা যায়—

নির্দেশাত্মক বাক্য

এখানে বর্ষাকালে প্রায়ই বন্যা হয়।
এই বাক্যটিকে ভালো করে লক্ষ করো। বাক্যটির মধ্যে কোনো একটি বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ঘটনার বিবৃতি রয়েছে, একটি বিষয় রয়েছে।
ব্যাকরণের ভাষায়, যেসব বাক্যে সাধারণভাবে কোনো কিছুর বিষয়ে বলা হয় অথবা বাক্যে কোনো ভাব বা ঘটনা সম্পর্কে সাধারণ বিবৃতি থাকে, তাকে নির্দেশক বাক্য বলা হয় ৷
উদাহরণ হিসেবে আরও কতকগুলি বাক্য দেওয়া হল। যেমন—
কোনো মানুষই অমর নয়। তাদের চুপ করে থাকার কারণ ছিল।
আমি এই কাজ করব। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ।
এই নির্দেশক বাক্য আবার অস্ত্যর্থক, অন্যটি না-বাচক বা নর্থক। দু-প্রকারের হতে পারে। একটি হ্যাঁ-বাচক বা
যে বাক্যে সমর্থন বা স্বীকৃতির মাধ্যমে কোনো কিছু বর্ণনা করা হয়, তাকে বলে হ্যাঁ-বাচক বা অস্ত্যর্থক বাক্য। যেমন—
মেয়েটি গান করবে। কবিতাটি বড়োই সুখপাঠ্য।
তুমি যাবে। মিথ্যাবাদীকে সকলেই অবিশ্বাস করে।
যে বাক্যে অসমর্থন বা অস্বীকৃতির মাধ্যমে কিছু বর্ণনা করা হয়, তাকে বলা হয় না-বাচক বা নর্থক বাক্য। যেমন—
কোনো মানুষই অমর নয়।
এ বিষয়ে আমার আর কোনো দায় রইল না।
তোমার এখানে আসার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
প্রকৃত দেশপ্রেমিকের সংখ্যা বেশি নয়।

প্রশ্নসূচক বাক্য

তুমি কি বাড়ি যাবে?
বাক্যটি ভালো করে লক্ষ করো। বাক্যটির মধ্যে কোনো একটি প্রশ্ন উঠে আসছে। বক্তা কোনো একটি প্রশ্ন জানতে চাইছে যার উত্তর হ্যাঁ অথবা না কোনো একটি হবে।
ব্যাকরণের ভাষায়, যখন কোনো বাক্যের দ্বারা কোনোরকম প্রশ্ন করা হয়, তখন সেই বাক্যকে প্রশ্নসূচক বাক্য বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে আরও কতকগুলি বাকা দেওয়া হল। যেমন—
কারা হনহনিয়ে যাচ্ছে? তুমি কবে কলকাতায় যাবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে? চিরকাল কি কারও একভাবে যায়।
এই প্রশ্নসূচক বাকাও হ্যাঁ-বাচক বা অন্ত্যর্থক এবং না-বাচক বা নর্থক এই দুপ্রকারের হতে পারে। হ্যাঁ-বাচক বা অন্ত্যর্থক প্রশ্নসূচক বাক্যের উদাহরণ— তুমি কি কাজটা পরে করবে?

অনুজ্ঞাবাচক বাক্য

তুমি তাড়াতাড়ি বাড়ি যাও৷
এই বাক্যটি ভালো করে লক্ষ করো। বাক্যটির মধ্যে একটি আদেশের ভাব ব্যক্ত হচ্ছে। তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যেতে বলার মধ্য দিয়ে বক্তা শ্রোতাকে
ব্যাকরণের ভাষায়, যেসমস্ত বাক্যের দ্বারা আদেশ, উপদেশ বা অনুরোধ বোঝায়, সেই সমস্ত বাক্যকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে আরও কতকগুলি বাক্য দেওয়া হল। যেমন—
এখনই পড়তে বসো। ভাই, আমাকে একটু সাহায্য করো।
রাস্তা দেখে পার হবে। এমন কাজ কখনও কোরো না।

প্ৰাৰ্থনাসূচক বাক্য

‘প্ৰাৰ্থনা’ বলতে শুধুই শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রার্থনা করা বোঝাচ্ছে না। কারও কাছে কোনো কিছু চাওয়াটাও কিন্তু প্ৰাৰ্থনাই।
যেমন, আমারে করো তোমার বীণা। —এটাও প্রার্থনা, আবার, দয়া করে আমায় ভাত খেতে দাও। —তাও প্রার্থনা। এমনকি, কারও জন্য কোনো কিছু কামনা করাটাও প্রার্থনার মধ্যেই পড়ে। সুতরাং, আশা করি, তোমার সুমতি হোক। –এই বাক্যটিতেও প্রার্থনার ভাবই প্রকাশ পেল।
সুতরাং, যে ধরনের বাক্যের মাধ্যমে বক্তা কোনো কিছু প্রার্থনা করে, সেই ধরনের বাক্যগুলোকেই প্রার্থনাসূচক বাক্য বলে। যেমন—
অন্তর মম বিকশিত কর অন্তরতর হে।
তুমি নির্মল করো।

সন্দেহবাচক বাক্য

আগামীকাল তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে।
আগামীকাল তোমার মেয়ের বিয়ে।
দ্যাখো, দুটি বাক্যই আগামীকাল মেয়ের বিয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখব দুটি বাক্যের বক্তব্য দু-রকম। দ্বিতীয় বাক্যে মেয়ের বিয়ের নিশ্চিত ঘোষণা। কিন্তু প্রথম বাক্যে ‘নাকি’ শব্দটির প্রয়োগ থাকায় বক্তার সংশয়ের ভাবটি প্রকাশ পেয়েছে। এইরকম আর একটি বাক্য: আমার মনে হয় কথাটা তোমায় বলেছি।
সুতরাং, আমরা বলতে পারি যে, ‘বুঝি’, ‘বোধহয়’, ‘হয়তো’, ‘নাকি’ প্রভৃতি শব্দের প্রয়োগ করে যদি বাক্যের মধ্যে বক্তার অনিশ্চিত ভাব বা সন্দেহ প্রকাশ পায়, তবে তাকে সন্দেহবাচক বাক্য বলে। যেমন—
তুমি বুঝি কাল যাবে?
কাল নাকি স্কুল ছুটি থাকবে?
খানে হয়তো এতক্ষণে সবাই পৌঁছে গেছে।
আমার বোধহয় আজ আর কাজটা হল না।

আবেগসূচক বাক্য

আহা! কী সুন্দর এই সকাল।
খেয়াল করে দ্যাখো, এই বাক্যে বিস্ময়সূচক চিহ্ন (!)-এর ব্যবহার হচ্ছে। তার কারণ, সকালের এই সৌন্দর্য বক্তাকে অবাক করেছে, মুগ্ধ করেছে। এই সকালের সৌন্দর্য তার কাছে প্রতিদিনের সকালের মতো চেনা নয়, অনন্য। এই অচেনা অভিজ্ঞতা তাকে এত বিস্মিত করেছে বলেই এখানে বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যাকরণের ভাষায়, যে বাক্যে বক্তার মনের উচ্ছ্বাস বা আবেগ প্রকাশ পায়, তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে। তবে, তার মানে এই নয় যে, শুধুমাত্র মুগ্ধতাজনিত বিস্ময় প্রকাশ পেলে তবেই তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে। ঘৃণা, ভয়, উদ্বেগ—এগুলিও আবেগ। কখনোকখনো পরিবেশ, পরিস্থিতি বা বিষয়ের চাপে পড়ে মানুষ এই ধরনের আবেগ প্রকাশ করে। তাই,
হায়! এ কী সর্বনাশ হল!
উঃ! কী চিন্তাই না হচ্ছে!
ছিঃ! তুমি আমার ছেলে হয়ে একাজ করলে!
উফ্! এসব কথা সহ্য করা যায় না।
এইসব বাক্যই আবেগসূচক বাক্য। এই ধরনের বাক্যে বিস্ময়সূচক চিহ্নটি (!) সবসময় ব্যবহৃত হয়।

শর্তসাপেক্ষ বাক্য

মন দিয়ে না পড়লে পরীক্ষায় ভালো ফল করা যায় না।
এখানে ‘ভালো ফল’ করাটা নির্ভর করছে ‘মন দিয়ে’ পড়ার ওপরে। অর্থাৎ বাক্যে কার্য এবং তার কারণ বা শর্তের উল্লেখ আছে।
যে বাক্যে কোনো শর্তের ওপর নির্ভরতা বা কোনো কার্য কারণের উল্লেখ থাকে, তাকেই বলে শর্তসাপেক্ষ বাক্য। যেমন— যদি তুমি যাও, তবেই আমি যাব।
এখানে, ‘আমার যাওয়া’-টা নির্ভর করছে যে শর্তের ওপরে, তা হল ‘তোমার যাওয়া’। সুতরাং, এটিও একটি শর্তসাপেক্ষ বাক্য। আরও কয়েকটি উদাহরণ দেখে নাও—
স্যারের ক্লাস থাকলে তবেই আসব।
ইটটি ছুঁড়লে পাটকেলটি খেতে হয়।
আমি প্রতিবাদ করব, কেন না তুমি যা করছ, তা অন্যায়।
যখনই তুমি বলবে, তখনই আমি বইটা পাঠাব।

গঠন ও অর্থ অনুসারে বাক্যের রুপান্তর

কোনো বাক্যের মূল ভাবটি অক্ষুণ্ণ রেখে একপ্রকার বাক্যকে অন্যপ্রকার বাক্যে পরিবর্তন করাকেই বলা হয় বাক্যের রূপান্তর।

গঠন অনুসারে বাক্যের রূপান্তর

গঠন অনুসারে কীভাবে একপ্রকার বাক্যকে অন্যপ্রকার বাক্যে রূপান্তর করা যায় তা উদাহরণ-সহ আলোচনা করা হল।
সরল বাক্যে রূপান্তরের নির্দেশিকা: যৌগিক বাক্য বা জটিল বাক্যের ক্ষেত্রে প্রথম বাক্যখণ্ডটির একেবারে শেষের সমাপিকা ক্রিয়াপদটিকে অসমাপিকা ক্রিয়াপদে রূপান্তরিত করলে বাক্যটি সাধারণত সরল বাক্য হয়ে যায়।
জটিল বাক্য →সরল বাক্য
জটিল বাক্য সরল বাক্য
যদি উহারে ছাড়িয়া না দাও, সিংহী তোমায় জব্দ করিবেক। উহারে ছাড়িয়া না দিলে সিংহী তোমায় জব্দ করিবেক।
ভিতরের শক্তি যাহা সঞ্চিত ছিল তাহা এখন ফুরাইয়া গিয়াছে। ভিতরের সঞ্চিত শক্তি এখন ফুরাইয়া গিয়াছে।
যৌগিক বাক্য →সরল বাক্য
যৌগিক বাক্য সরল বাক্য
নিতান্ত অতিরিক্ত সুদে একজন বাকি টাকাটা ধার দিতে স্বীকার করিয়াছিল, কিন্তু সময়কালে সে উপস্থিত হইল না। নিতান্ত অতিরিক্ত সুদে একজন বাকি টাকাটা ধার দিতে স্বীকার করিলেও সময়কালে সে উপস্থিত হইল না।
লোকটি দরিদ্র, কিন্তু সৎ। লোকটি দরিদ্র হলেও সৎ।
জটিল বাক্যে রূপান্তরের নির্দেশিকা : যখন-তখন, যে-সে, যাকে-তাকে, যাদের-তাদের, যদি-তবে—এগুলিকে বলা হয় সাপেক্ষ শব্দজোড়। যেকোনো বাক্য, যার মধ্যে দুটি বাক্যখণ্ড রয়েছে, সেই বাক্যখণ্ড দুটিকে সাপেক্ষ শব্দজোড় ব্যবহার করে ভেঙে দিলে জটিল বাক্য পাওয়া যায়।
সরল বাক্য → জটিল বাক্য
সরল বাক্য জটিল বাক্য
অসুস্থতার জন্য গতকাল অনুপস্থিত ছিলাম। যেহেতু অসুস্থ ছিলাম, সেহেতু গতকাল অনুপস্থিত ছিলাম।
তুমি না গেলে আমিও যাব না। যদি তুমি না যাও, তবে আমিও যাব না।
যৌগিক বাক্য →জটিল বাক্য
যৌগিক বাক্য জটিল বাক্য
স্টেশনে পৌঁছোলাম, আর ট্রেনটিও ছেড়ে দিল। যেই স্টেশনে পৌঁছোলাম, অমনি ট্রেনটি ছেড়ে দিল।
আমরা বনবাসী বটে, কিন্তু লৌকিক ব্যাপারে নিতান্ত অনভিজ্ঞ নহি। যদিও আমরা বনবাসী, তথাপি লৌকিক ব্যাপারে নিতান্ত অনভিজ্ঞ নহি।
যৌগিক বাক্যে রূপান্তরের নির্দেশিকা : এবং, আর, কিন্তু, বরং, নইলে— এগুলি হল সংযোগমূলক অব্যয় বা যোজক। এই যোজক ব্যবহার করে একটি বাক্যের ভিতরে থাকা বাক্যখণ্ড দুটিকে আলাদা করলে যৌগিক বাক্য পাওয়া যাবে।
সরল বাক্য → যৌগিক বাক্য
সরল বাক্য যৌগিক বাক্য
ইন্দ্ৰ আশ্বাস দিলেও আমি রাজি হইলাম না। ইন্দ্র আশ্বাস দিল, কিন্তু আমি রাজি হইলাম না।
পরম পণ্ডিত হলেও ব্যবহারে তিনি বড়োই অমায়িক। তিনি পরম পণ্ডিত কিন্তু ব্যবহারে বড়োই অমায়িক।
জটিল বাক্য → যৌগিক বাক্য
জটিল বাক্য যৌগিক বাক্য
যখন স্কুলে পৌঁছেছি, তখনই বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে। স্কুলে পৌঁছেছি, আর বৃষ্টিও আরম্ভ হয়েছে।
রাত্রি যখন এগারোটা, তখন কলিকাতার বাবু কাবু। রাত্রি এগারোটা, এবং কলিকাতার বাবু কাবু।

বহুৰিকল্পীয় প্রশ্ন [MCQ] ও উত্তর

ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।

১. এর মধ্যে কোন্ অব্যয়টি জটিল বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে?—
(ক) যদি
(খ) এবং
(গ) কিন্তু
(ঘ) বরং
২. এর মধ্যে কোন্ অব্যয়টি যৌগিক বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে?-
(ক) যদি
(খ) তবে
(গ) তবুও
(ঘ) নইলে
৩. এর মধ্যে কোন্‌টি সরল বাক্য?
(ক) তা নইলে আমি যাবো না।
(খ) তুমি বরং অন্য দিকে দেখো।
(গ) আপাতত ওসব না হলেই ভালো।
(ঘ) তার যা কিছু মনের মতো এনে জড়ো করেছে।
৪, তাকে একটুও পছন্দ হয়নি।—এই বাক্যটিকে অস্ত্যর্থক করলে কী দাঁড়ায়?
(ক) তাকে বেশ খারাপই লেগেছে।
(খ) তাকে একটুও অপছন্দ হয়নি।
(গ) তাকে খুবই অপছন্দ হয়েছে।
(ঘ) তাকে পুরোপুরি অপছন্দ হয়েছে।
৫. এর মধ্যে কোন্‌টি আবেগসূচক বাক্য?
(ক) সে বুঝি এখনও বসে আছে।
(খ) আর একজনও কি এখানে নেই?
(গ) তোমার কী করে এত ঠান্ডা লেগে গেল?
(ঘ) তোমার এত ঠান্ডা লেগে গেল।
৬. সরল বাক্যে প্রধান বাক্যখণ্ড কয়টি থাকে?—
(ক) একটি
(খ) দুটি
(গ) দুই বা ততোধিক
(ঘ) সর্বাধিক তিনটি
৭. সে যে কী মজার ব্যাপার তা ভাবা যায় না। এটি কোন ধরনের বাক্য?
(ক) সরল বাক্য
(খ) জটিল বাক্য
(গ) যৌগিক বাক্য
(ঘ) সদর্থক বাক্য
৮. অস্ত্যর্থক বাক্যকে নর্থক বাক্যে কীভাবে পরিবর্তন করতে হয়?
(ক) বাক্যের অর্থ ও গঠন দুই-ই পরিবর্তন করতে হয়।
(খ) বাক্যের অর্থ পরিবর্তিত হয় কিন্তু গঠন পরিবর্তিত হয় না।
(গ) বাক্যের গঠন পরিবর্তিত হয় কিন্তু অর্থ পরিবর্তিত হয় না।
(ঘ) বাক্যের অর্থ ও গঠন কোনোটি-ই পরিবর্তিত হয় না।
৯. নির্দেশক বাক্যে সাধারণত-
(ক) আবেগ প্রশ্রয় পায়
(খ) উপদেশ প্রশ্রয় পায়
(গ) প্রশ্ন প্রশ্রয় পায়
(ঘ) একটি তথ্য প্রশ্রয় পায়
১০. ওমা, মেয়ে বলে কী!—এটি কী ধরনের বাক্য?
(ক) প্রশ্নসূচক
(খ) আবেগসূচক
(গ) নির্দেশক
(ঘ) জটিল
১১. এর মধ্যে কোন্‌টি সংযোগমূলক অব্যয়?
(ক) যে
(খ) তখন
(গ) কিন্তু
(ঘ) ততক্ষণ
১২. এর মধ্যে কোন্‌টি সাপেক্ষ শব্দজোড়?
(ক) যে সে
(খ) তুমি আমি
(গ) কেউ কেউ
(ঘ) মাঝে মাঝে
১৩. এর মধ্যে কোন্‌টি নির্দেশক বাক্য?
(ক) সে কথা ভাবা যায় না।
(খ) সে কথা কি ভাবা যায়?
(গ) বাপরে, সে কথা কি ভাবা যায়!
(ঘ) সে বুঝি ভাবা যায়?
১৪. মোতির মালার তার শখ নেই। —এটি কী ধরনের বাক্য?
(ক) জটিল
(খ) যৌগিক
(গ) অস্ত্যর্থক
(ঘ) নঞর্থক
১৫. অস্ত্যর্থক বাক্যের ঠিক বিপরীত হল-
(ক) নঞর্থক বাক্য
(খ) সদর্থক বাক্য
(গ) নির্দেশক বাক্য
(ঘ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
১৬. এর মধ্যে কোন্‌টি জটিল বাক্যের বৈশিষ্ট্য?
(ক) সংযোগমূলক অব্যয় থাকবে
(খ) সাপেক্ষ শব্দজোড় থাকবে
(গ) অসমাপিকা ক্রিয়া থাকবে
(ঘ) বিয়োজক অব্যয় থাকবে
১৭. ‘কে কাকে ঠিক কেমন দেখে বলতে পারা শক্ত খুবই’—এটি কোন্ ধরনের বাক্য?
(ক) শর্তসাপেক্ষ
(খ) নির্দেশক
(গ) প্রশ্নসূচক
(ঘ) আবেগসূচক
১৮. আমি একদিনও না দেখলেম তারে—এটি কোন্ ধরনের বাক্য?
(ক) নঞর্থক
(খ) অস্ত্যর্থক
(গ) সদর্থক
(ঘ) বিপরীতার্থক
১৯. জটিল বাক্য থেকে সরল বাক্যে রূপান্তর করতে হলে এর মধ্যে কোন্‌টি করার প্রয়োজন নেই?
(ক) সমাপিকা ক্রিয়াকে অসমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তর
(খ) সাপেক্ষ শব্দজোড় লোপ
(গ) সংযোগমূলক অব্যয় লোপ
(ঘ) একাধিক বাক্যখণ্ড থেকে একটি বাক্যে নিয়ে আসা
২০. এর মধ্যে কোন্‌টি যৌগিক বাক্য?
(ক) যদি যাও, টেরটি পাবে না
(খ) যা কিছু আছে, সবই তো তোমার
(গ) সে এসেছে কিন্তু যাওয়ার নাম করছে না
(ঘ) তুমি বরং ওদিকেই যাও
২১. বাক্যের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়-
(ক) উদ্দেশ্যের প্রসারক অংশে
(খ) বিধেয়র প্রসারক অংশে
(গ) বিধেয় অংশে
(ঘ) উদ্দেশ্যের সংকোচক অংশে।
২২. প্রতিটি বাক্যে থাকে মূলত-
(ক) ২টি অংশ
(খ) ৩টি অংশ
(গ) ৪টি অংশ
(ঘ) ৫টি অংশ
২৩. প্রতিটি বাক্যে উদ্দেশ্য-
(ক) উপস্থিত থাকে
(খ) উপস্থিত থাকে না
(গ) উপস্থিত না থেকে উহ্য থাকে
(ঘ) উপস্থিত থাকে বা উহ্য থাকে
২৪. বাক্যের মূল উপাদান হল-
(ক) উদ্দেশ্য ও বিধেয়
(খ) কর্তা, কর্ম, ক্রিয়া
(গ) উদ্দেশ্য, বিধেয়, কর্তা, কর্ম, ক্রিয়া
(ঘ) উদ্দেশ্য ও কর্ম
২৫. বাক্যকে বিশেষ্যগুচ্ছ ও ক্রিয়াগুচ্ছ এই দুটি ভাগে ভাগ করেছিলেন-
(ক) পাণিনি
(খ) ফার্দিনান্দ দ্য সোস্যুর
(গ) নোয়াম চমস্কি
(ঘ) এড্‌ওয়ার্ড স্যাপীর
২৬. ক্রিয়াগুচ্ছের অন্তর্গত হল—
(ক) বিশেষ্যগুচ্ছ, ক্রিয়াবিশেষণ, ক্রিয়া
(খ) ক্রিয়া ও ক্রিয়াবিশেষণ
(গ) ক ও খ ঠিক
(ঘ) ক ও খ ভুল
২৭. একক বিশেষ্যের উদাহরণ হল—
(ক) রহিম এসো
(খ) রহিম ও এলা এসো
(গ) আমার বন্ধু রহিম এসো
(ঘ) আমার ছোটোবেলার স্কুলে যাওয়ার সঙ্গী রহিম এসো
২৮. একাধিক বিশেষ্য থাকলে, যোজক বসে—
(ক) শেষের বিশেষ্যের আগে
(খ) শেষের বিশেষ্যের পরে
(গ) প্রথম বিশেষ্যের আগে
(ঘ) কোনোটিই ঠিক নয়
২৯. সমাপিকা ক্রিয়া অংশে থাকে-
(ক) ধাতু + কালনিৰ্দেশক চিহ্ন + পুরুষ বা পক্ষের চিহ্ন
(খ) ধাতু + ধাতুবিভক্তি
(গ) ধাতু + পুরুষ বা পক্ষের চিহ্ন
(ঘ) ধাতু + বিশেষ্যখণ্ড
৩০. সরল বাক্যের ক্ষেত্রে—
(ক) কোনো অসমাপিকা ক্রিয়া থাকে না
(খ) একটি অসমাপিকা ক্রিয়া থাকে
(গ) একটি সমাপিকা ক্রিয়া ও এক বা একাধিক অসমাপিকা ক্রিয়া থাকে
(ঘ) একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া থাকে

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

১. সরল বাক্যে কয়টি বাক্যাংশ থাকে?
উত্তর – সরল বাক্যে মূলত একটিই বাক্যাংশ থাকে, যার একটি মূল উদ্দেশ্য এবং একটি মূল বিধেয় থাকে।
২. যৌগিক বাক্য ও জটিল বাক্যের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর – যৌগিক বাক্য ও জটিল বাক্যের মধ্যে পার্থক্য—
যৌগিক বাক্য জটিল বাক্য
যৌগিক বাক্যের ক্ষেত্রে একাধিক স্বাধীন বাক্য যুক্ত হয় সংযোজক অব্যয়ের সাহায্যে। জটিল বাক্যের ক্ষেত্রে একাধিক খণ্ডবাক্য যুক্ত হয় সাপেক্ষ অব্যয় বা সাপেক্ষ শব্দজোড়ের মাধ্যমে।
৩. জটিল বাক্যের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর – জটিল বাক্যের প্রধান খণ্ডবাক্যে এবং এক বা একাধিক খণ্ডবাক্যেও একটি করে সমাপিকা ক্রিয়া থাকে। তাই কমপক্ষে দুটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকেই।
৪. যৌগিক বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে অব্যয়ের ভূমিকা কী?
উত্তর – যৌগিক বাক্যের ক্ষেত্রে, দুই বা ততোধিক স্বাধীন বাক্যখণ্ডগুলিকে কিন্তু, এবং, ও, আর, বরং প্রভৃতি সংযোজক অব্যয় পরস্পর যুক্ত করে।
৫. একটি জটিল বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর – একটি জটিল বাক্যের উদাহরণ—তোমার বিষয়-আশয় যদি এখনই না সামলাও, তবে কপালে অনেক দুঃখ আছে।
৬. একটি সরল বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর – একটি সরল বাক্যের উদাহরণ— মন দিয়ে পড়লে পরীক্ষায় খারাপ ফল করার কোনো কারণ তো দেখি না।
৭. একটি যৌগিক বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর – একটি যৌগিক বাক্যের উদাহরণ— স্কুলে পৌঁছেছি আর বৃষ্টিও আরম্ভ হয়েছে।
৮. যৌগিক বাক্যের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর – যৌগিক বাক্য সাধারণত দুই বা ততোধিক স্বাধীন বাক্য, একটি সংযোজক অব্যয় দ্বারা সেগুলি যুক্ত থাকে।
৯. সরল বাক্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর – সরল বাক্যে একটি উদ্দেশ্য এবং একটিই বিধেয় (সমাপিকা ক্রিয়া) থাকে।
১০. জটিল বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে অব্যয়ের ভূমিকা কী?
উত্তর – সরল বাক্যের অন্তর্ভুক্ত কোনো পদ বা পদসমষ্টিকে সম্প্রসারিত করে সাপেক্ষ অব্যয় যোগে জটিল বাক্যে পরিণত করা যায়।
১১. কার্যকারণাত্মক বাক্য কাকে বলে? একটি কার্যকারণাত্মক বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর – যখন একই বাক্যের মধ্যে কার্য এবং তার কারণের উল্লেখ থাকে তাকে কার্যকারণাত্মক বাক্য বলে। একটি কার্যকারণাত্মক বাক্যের উদাহরণ— যদি তুমি এখন বাড়ি না যাও, তাহলে অনেক রাত হয়ে যাবে।
১২. কেন প্রার্থনাসূচক বাক্যকে আলাদা করে দেখানোর প্রয়োজন নেই?
উত্তর – কারও কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করাটা একপ্রকার অনুরোধ করাকেই বোঝায়। তাই অনুরোধ বোঝাতে যেমন ‘অনুজ্ঞাসূচক বাক্য’ ব্যবহৃত হয়, ‘প্রার্থনাসূচক বাক্য’কেও তেমনই অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের শ্রেণিতেই ফেলে দেওয়া যায়।
১৩. আবেগসূচক বাক্য চেনার উপায় কী?
উত্তর – আবেগসূচক বাক্য একনজরে চেনার উপায় হল, এই বাক্যে বিস্ময়সূচক চিহ্নের ব্যবহার হয়।
১৪. অভ্যর্থক বাক্য এবং নর্থক বাক্যের মধ্যে একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর – অস্ত্যর্থক বাক্য এবং নর্থক বাক্যের মধ্যে পার্থক্য—
অস্ত্যর্থক বাক্য নঞর্থক বাক্য
এই প্রকার বাক্য অস্তিসূচক হওয়ায় এতে সরাসরি ‘না-বাচক’ অব্যয় ব্যবহৃত হয় না। এই প্রকার বাক্য নাস্তিসূচক হওয়ায় এতে ‘নাবাচক’ অব্যয় ব্যবহৃত হয়।
১৫. প্রশ্নবোধক বাক্য কাকে বলে?
উত্তর – যে বাক্যের মাধ্যমে কোনো একটি প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসার ভাব তুলে ধরা হয়, তাকে প্রশ্নবোধক বাক্য বলে। যেমন— তুমি কি আসবে?
১৬. নির্দেশক বাক্য কাকে বলে?
উত্তর – যে বাক্যে সাধারণভাবে কোনো বিষয়ে কিছু বলা হয়, তাকে নির্দেশসূচক বা বিবৃতিমূলক বাক্য বলে। উদাহরণ—সৌরভ গাঙ্গুলি সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্যতম।
১৭. অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের মাধ্যমে কী বোঝানো হয়?
উত্তর – অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের মাধ্যমে আদেশ, উপরোধ, অনুরোধের ভাব ব্যক্ত হয়।
১৮. বাক্য গঠনের শর্তগুলি কী কী?
উত্তর – একটি বাক্য গঠনের শর্তগুলি হল—আসত্তি, যোগ্যতা এবং আকাঙ্ক্ষা।
১৯. ‘‘আসত্তি’ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – বাক্যের বিভিন্ন অংশকে উপযুক্ত স্থানে সন্নিবিষ্ট করাই হল আসত্তি।
২০. একটি ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় অপ্রধান বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর – তুমি মহিম যেভাবে বিষয়টা বোঝাল (তা) মনে রাখো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *