WBBSE 10th Class Science Solutions Biology Chapter 3 বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (TOPIC 2 কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ)
WBBSE 10th Class Science Solutions Biology Chapter 3 বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (TOPIC 2 কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ)
West Bengal Board 10th Class Science Solutions Biology Chapter 3 বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (TOPIC 2 কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ)
West Bengal Board 10th Biology Solutions
TOPIC 2 কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ
বিষয়সংক্ষেপ
- মানব পপুলেশনে নানারকম জিনঘটিত বংশগত রোগ লক্ষ করা যায়। যেমন—থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া ও বর্ণান্ধতা।
- থ্যালাসেমিয়া অটোজোমাল জিনঘটিত প্রচ্ছন্ন একটি রোগ। এটি প্রধানত দু-প্রকার—আলফা (α) থ্যালাসেমিয়া ও বিটা (β) থ্যালাসেমিয়া। আবার, রোগের তীব্রতা অনুযায়ীও এই দুইপ্রকার থ্যালাসেমিয়াকেই দু-ভাগে ভাগ করা যায়। যথা— থ্যালাসেমিয়া মেজর ও থ্যালাসেমিয়া মাইনর। থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগটি তীব্র প্রকৃতির। পক্ষান্তরে থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগটির তীব্রতা কম।
- থ্যালাসেমিয়া রোগে হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন প্রোটিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে অ্যানিমিয়া দেখা যায়। এ ছাড়াও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের দেহে রক্তসঞ্চারণের জন্য অতিরিক্ত লোহা জমে যায় ও হাড়ের বিকৃতি ঘটে।
- হিমোফিলিয়া হল মানুষের একটি X ক্রোমোজোম সংযোজিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ। এই রোগে রক্ততনকারী ফ্যাক্টর তৈরি হয় না বলে কেটে গেলে অনবরত রক্তক্ষরণ হয়।
- তীব্রতা অনুযায়ী হিমোফিলিয়া রোগটি তিন প্রকারের হয়। যথা— [i] মৃদু হিমোফিলিয়া (তন ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের 5-50% অবধি থাকে)। [ii] মধ্যম হিমোফিলিয়া (রক্ততঞ্জনকারী ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের 1-5% অবধি থাকে) [iii] তীব্র হিমোফিলিয়া (রক্ততঞ্জনকারী ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের 1% এরও কম থাকে)।
- রক্ততঞ্জনে সাহায্যকারী ফাক্টরের ওপর নির্ভর করে। তিনপ্রকার হিমোফিলিয়া দেখা যায়। যথা—হিমোফিলিয়া A বা ক্লাসিক হিমোফিলিয়া, হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস রোগ এবং হিমোফিলিয়া C ।
- বর্ণান্ধতাও মানুষের একটি X ক্রোমোজোম সংযোজিত প্ৰচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি লাল, সবুজ বা নীল বর্ণ চিনতে পারে না।
- বর্ণান্ধতার লক্ষণ অনুযায়ী একে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—[i] প্রোটোনোপিয়া বা লাল বর্ণান্ধতা (লাল বর্ণ চিনতে পারে না), [ii] ডিউটেরানোপিয়া বা সবুজ বর্ণান্ধতা (সবুজ বর্ণ চিনতে পারে না), [iii] ট্রাইটানোপিয়া বা নীল বর্ণান্ধতা (নীল বর্ণ চিনতে পারে না)। নীল বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটি 7 নং ক্রোমোজোমে অর্থাৎ অটোজোমে অবস্থান করে।
- থ্যালাসোমিয়া, হিমোফিলিয়া ও বর্ণান্ধতা রোগগুলির সঞ্চারণ জেনেটিক ক্রস দ্বারা নির্ণয় করা যায়।
- জিনগত রোগ, বিশেষত থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে বিবাহপূর্বে জেনেটিক কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগী বা রোগগুলির বাহকদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে রোগটির হওয়ার সম্ভাবনা নির্ণয় করে একজন জেনেটিক কাউন্সিলার সেই সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
1. থ্যালাসেমিয়া কী? এর প্রকারভেদগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া: জিনগত ত্রুটির কারণে সৃষ্ট যে বংশগত রোগে হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন অংশে কোনো একটি পেপটাইড শৃঙ্খল সংশ্লেষিত হয় না অথবা স্বাভাবিক মাত্রার তুলনায় কম সংশ্লেষিত হয়, সেই বংশগত রোগকেই থ্যালাসেমিয়া বলে। এই রোগ হলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস পায়, লোহিত রক্তকণিকা ক্ষুদ্র হয় এবং স্বল্পদিন বাঁচে। ফলস্বরূপ অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার লক্ষণ প্রকাশ পায়।
থ্যালাসেমিয়ার প্রকারভেদ: থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকারের হয়। যথা— α থ্যালাসেমিয়া ও β থ্যালাসেমিয়া। আবার রোগের তীব্রতা অনুযায়ী দু-প্রকারের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়। যথা—থ্যালাসেমিয়া মেজর ও থ্যালাসেমিয়া মাইনর। α ও β উভয় থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রেই, থ্যালাসেমিয়া রোগটি মেজর ও মাইনর রূপে প্রকাশ পায়।
- আলফা (α) থ্যালাসেমিয়া: হিমোগ্লোবিনের আলফা পেপটাইড শৃঙ্খলের সংশ্লেষণ হ্রাস পেলে বা বন্ধ হলে, তাকে আলফা থ্যালাসেমিয়া বলা হয়। মানুষের 16 নং ক্রোমোজোম জোড়ার প্রতিটিতে দুটি করে মোট চারটি α শৃঙ্খল উৎপাদনকারী অ্যালিল থাকে। এর মধ্যে দুটি অ্যালিলের মিউটেশন হলে α থ্যালাসেমিয়া মাইনর ও চারটিতেই মিউটেশন ঘটলে α থ্যালাসেমিয়া মেজর দেখা যায়।
- বিটা (β) থ্যালাসেমিয়া: হিমোগ্লোবিনের বিটা পেপটাইড শৃঙ্খলের উৎপাদন বন্ধ হলে বা হ্রাস পেলে, তাকে বিটা থ্যালাসেমিয়া বলে। বিটা থ্যালাসেমিয়ার আবিষ্কর্তা আমেরিকান চিকিৎসক থমাস বেনটন কুলি (Thomas Benton Cooley, 1925) র নামানুসারে একে কুলির অ্যানিমিয়া (Cooley’s anaemia) বলে। এটিও মেজর এবং মাইনর দুই প্রকার হয়। 11 নং ক্রোমোজোম জোড়ায় অবস্থিত β শৃঙ্খল সংশ্লেষকারী দুটি অ্যালিলের মিউটেশন ঘটলে β থ্যালাসেমিয়া মেজর ও একটির মিউটেশন ঘটলে β থ্যালাসেমিয়া মাইনর ঘটে।
2. থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গগুলি উল্লেখ করো।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কোনো শিশুর দেহে কী কী লক্ষণ প্রকাশিত হয়?
থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গ
- অ্যানিমিয়া সৃষ্টি: হিমোগ্লোবিন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার ফলে তীব্র অ্যানিমিয়া সৃষ্টি হয় । অক্সিজেন পরিবহণ ব্যাহত হয়।
- লৌহ সঞ্চয়: রোগীর দেহে বারবার রক্ত সঞ্চারণের প্রয়োজন হয় বলে দেহের বিভিন্ন অংশে লৌহ সঞ্চিত হয়, যার ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যেমন—হৃৎপিণ্ড, অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি, যকৃৎ, প্লিহা প্রভৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷
- হাড়ের গঠন বিকৃতি: অস্থিমজ্জা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় বলে হাড়ের গঠন-বিকৃতি ঘটে এবং রোগীর মুখ ও মাথার খুলির হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হয়।
- যকৃৎ ও প্লিহার বৃদ্ধি: যকৃৎ ও প্লিহার বৃদ্ধি ঘটে। এদের যথাক্রমে হেপাটোমেগালি ও স্প্লিনোমেগালি বলা হয়।
- অন্যান্য: এ ছাড়া, এই রোগে বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং জনডিস, ক্লান্তি প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। থ্যালাসেমিয়ার প্রকারভেদ অনুসারে মানুষের দেহে রোগের তীব্রতা ও লক্ষণগুলি আলাদা হয়।
থ্যালাসেমিয়ার কারণ: এই রোগে হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিউলার বা গ্লোবিন প্রোটিনের উৎপাদন ব্যাহত হয়। হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন পেপটাইড আলফা (α) ও বিটা (β)–দুটি শৃঙ্খল দ্বারা গঠিত। আলফা শৃঙ্খলের দুই জোড়া জিন (HBA1 ও HBA2) মানুষের 16 নং ক্রোমোজোমে (অটোজোমে) এবং বিটা শৃঙ্খলের এক জোড়া জিন (HBB) মানুষের 11 নং ক্রোমোজোম (অটোজোমে) থাকে। জিনের পরিব্যক্তির (মিউটেশনের) ফলে আলফা ও বিটা গ্লোবিন প্রোটিন সঠিক বা উপযুক্ত অনুপাতে সংশ্লেষিত হয় না। এর ফলে হিমোগ্লোবিন গঠিত হয় না। এই কারণেই থ্যালাসেমিয়া রোগ দেখা দেয়।

3. হিমোফিলিয়া কী? হিমোফিলিয়ার প্রকারভেদগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – হিমোফিলিয়া: মানুষের X ক্রোমোজোম সংযোজিত’ প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত যে বংশগত রোগের ফলে দেহের আঘাতপ্রাপ্ত স্থান বা ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে ও তা সহজেই ততি হয় না, বরং অবিরাম ক্ষরণ হতে থাকে, সেই রোগকে হিমোফিলিয়া বলে।
হিমোফিলিয়ার প্রকারভেদ: হিমোফিলিয়া প্রধানত তিন প্রকারের। যথা— (1) হিমোফিলিয়া A বা ক্লাসিক হিমোফিলিয়া, (2) হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস রোগ বা রয়্যাল হিমোফিলিয়া এবং (3) হিমোফিলিয়া C ।
- হিমোফিলিয়া A বা ক্লাসিক হিমোফিলিয়া: এইজাতীয় হিমোফিলিয়া রক্তের প্লাজমায় অবস্থিত রক্ততঞ্জনে সাহায্যকারী ফ্যাক্টর VIII বা অ্যান্টিহিমোফিলিক ফ্যাক্টর-এর অভাবের কারণে ঘটে। এইজাতীয় হিমোফিলিয়া মারাত্মক প্রকৃতির। আমাদের দেশের 80% হিমোফিলিয়াই এই ধরনের।
- হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস রোগ: এইজাতীয় হিমোফিলিয়া রক্তের প্লাজমায় অবস্থিত প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন কমপোনেন্ট (PTC) বা ফ্যাক্টর IX-এর অভাবের কারণে ঘটে। এটি অতটা মারাত্মক নয়। আমাদের দেশে 20% হিমোফিলিয়া এইজাতীয় । এটি ক্রিস্টমাস রোগ নামেও পরিচিত।
- হিমোফিলিয়া C: এটি অটোজোমাল জিনঘটিত অসম্পূর্ণভাবে প্রচ্ছন্ন একটি রোগ। এই রোগটি সাধারণত রক্ততঞ্জনকারী ফ্যাক্টর XI বা প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন অ্যান্টিসিডেন্ট বা PTA-এর অভাবজনিত কারণে ঘটে থাকে।
4. হিমোফিলিয়ার কারণ লেখো। হিমোফিলিয়ার লক্ষণগুলি কী কী?
উত্তর – হিমোফিলিয়ার কারণ
- ক্লাসিক হিমোফিলিয়া বা হিমোফিলিয়া A-এর কারণ: আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় তঞ্চন ফ্যাক্টর VIII বা অ্যান্টিহিমোফিলিক ফ্যাক্টরের অনুপস্থিতি বা অভাব।
- হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস রোগের কারণ: আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন কমপোনেন্ট (PTC) বা ফ্যাক্টর IX-এর অনুপস্থিতি বা অভাব।
- হিমোফিলিয়া C রোগের কারণ: রক্ততঞ্জনকারী ফ্যাক্টর XI বা প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন অ্যান্টিসিডেন্ট (PTA)-এর অভাবে এই রোগ হয়।
হিমোফিলিয়ার লক্ষণ: এই রোগের লক্ষণগুলি, রোগের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। তীব্রতা অনুযায়ী রোগটি তিন প্রকার। মৃদু হিমোফিলিয়া, মধ্যম হিমোফিলিয়া ও তীব্র হিমোফিলিয়া। বিভিন্ন তীব্রতায় এর লক্ষণগুলি নিম্নরূপ।
- মৃদু হিমোফিলিয়ার লক্ষণ: মৃদু হিমোফিলিয়ার ক্ষেত্রে বহুদিন পর্যন্ত আক্রান্তের মধ্যে এর লক্ষণ বোঝা যায় না। তবে বয়স বাড়লে রক্ততঞ্চনে সমস্যা দেখা যায়। বিশেষত শল্যচিকিৎসার সময়ে দীর্ঘক্ষণ রক্তক্ষরণের সমস্যা দেখা যায়।
- মধ্যম হিমোফিলিয়ার লক্ষণ: এই রোগের ক্ষেত্রে জন্ম থেকেই ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া এই রোগে বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ দেখা যায়। এর ফলে অস্থিসন্ধিতে শক্তভাব, ফুলে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা যায়।
- তীব্র হিমোফিলিয়ার লক্ষণ: এই রোগের ক্ষেত্রে দেহ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত রক্তক্ষরণ, অস্থিসন্ধিতে ঘনঘন রক্তক্ষরণ ও অস্থিসন্ধির বিকৃতি (হিমারথ্রোসিস) লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া এই রোগে নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয় ও করোটির মধ্যেও রক্তক্ষরণ হয়, ফলে প্যারালাইসিস এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
5. একজন হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত পুরুষের সাথে একজন স্বাভাবিক নারীর বিবাহ হলে, সন্তানদের মধ্যে কত শতাংশের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তা চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, একজন বর্ণান্ধ পুরুষ ও স্বাভাবিক মহিলার বিবাহে সৃষ্ট সন্তানদের বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা চেকার বোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – একজন হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত পুরুষের সাথে একজন স্বাভাবিক নারীর বিবাহ হলে, সন্তানদের মধ্যে যত শতাংশের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে তা নীচে চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখানো হল—

অর্থাৎ সন্তান সন্ততিদের মধ্যে হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও কন্যারা সবাই বাহক হবে। কিন্তু পুত্ররা স্বাভাবিক হবে।
6. একজন স্বাভাবিক হিমোফিলিয়া বাহক স্ত্রীলোকের সঙ্গে একজন স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে তাদের পুত্র-কন্যাদের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কত তা চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, হিমোফিলিয়ার সাপেক্ষে ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়া বাহিক ও তাঁর স্বামী অ্যালবার্ট স্বাভাবিক ছিলেন। তাদের সন্তাদের মধ্যে হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কত শতাংশ ছিল তা চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর – পুত্র-কন্যাদের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনী: একজন স্বাভাবিক হিমোফিলিয়া বাহক স্ত্রীলোকের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে তাদের পুত্র-কন্যাদের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কত তা চেকার বোর্ডের সাহায্যে নীচে দেখানো হল।

অর্থাৎ, সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে 25% হিমোফিলিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পুত্রদের মধ্যে সেই সম্ভাবনা 50%। কন্যাদের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
দ্বিতীয় প্রশ্নটির ক্ষেত্রে একজন স্বাভাবিক মহিলার জিনোটাইপ হবে
ও বর্ণান্ধ পুরুষের জিনোটাইপ হবে
বাকি ক্রসটি প্রদত্ত ক্রসের অনুরূপ হবে।


7. বর্ণান্ধতার প্রকারভেদ ও কারণ লেখো।
উত্তর – বর্ণান্ধতার প্রকারভেদ: বর্ণান্ধতার প্রকারগুলি নিম্নরূপ-
- প্রোটানোপিয়া বা লাল বর্ণান্ধতা: এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি লাল বর্ণ শনাক্ত করতে পারেন না। তাঁরা লাল বর্ণকে কালো বা গাঢ় বাদামি দেখেন, কমলা-হলদে-সবুজকে বিভিন্ন গাঢ়ত্বের হলদে এবং বেগুনি বর্ণকে নীল দেখেন।
- ডিউটেরানোপিয়া বা সবুজ বর্ণান্ধতা: ডিউটেরানোপরা সবুজ বর্ণ শনাক্ত করতে পারেন না। তবে এঁরা লাল, কমলা ও হলদে বর্ণকে সঠিকভাবে চিনতে না পারলেও প্রোটানোপদের মতো অস্পষ্ট বা আবছা দেখেন না।
- ট্রাইটানোপিয়া বা নীল বর্ণান্ধতা: এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি নীল বর্ণ শনাক্ত করতে পারেন না।
বর্ণান্ধতার কারণ: মানুষের চোখে বর্ণ চেনার জন্য দায়ী কোশ হল কোন (cone) কোশ। এগুলি সাধারণত তিন প্রকারের হয়, যথা—লাল সংবেদী কোন কোশ, সবুজ সংবেদী কোন কোশ ও নীল সংবেদী কোন কোশ। এই কোশগুলি যথাক্রমে লাল, সবুজ ও নীল বর্ণ শনাক্ত করতে সাহায্য করে। এই কোশগুলিতে লাল, সবুজ ও নীল বর্ণ সংবেদী ফোটোপসিন রঙ্গক থাকে। এই রঙ্গকগুলির মধ্যে লাল ও সবুজ বর্ণ সংবেদী ফোটোপসিনের সংশ্লেষ X ক্রোমোজোমস্থিত জিন দ্বারা এবং নীল বর্ণ সংবেদী ফোটোপসিনের সংশ্লেষ অটোজোমস্থিত জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই জিনগুলিতে মিউটেশন ঘটলে ফোটোপসিন সংশ্লেষিত হয় না, ফলে সংশ্লিষ্ট বর্ণের সাপেক্ষে বর্ণান্ধতা দেখা দেয়।

8. একজন বর্ণান্ধ মহিলা একজন স্বাভাবিক পুরুষকে বিবাহ করলে তাঁদের সন্তান-সন্ততির ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ কী হবে?
উত্তর – সন্তান-সন্ততির ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ: একজন বর্ণান্ধ মহিলা একজন স্বাভাবিক পুরুষকে বিবাহ করলে তাঁদের সন্তান-সন্ততির ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ নীচের ক্রসের সাহায্যে দেখানো হল।

উক্ত ক্রসটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে প্রস্তুত করা হলে পাই—

যেহেতু মা বর্ণান্ধ তাই ক্রিসক্রস উত্তরাধিকার সূত্র অনুযায়ী সমস্ত পুত্র বর্ণান্ধতার শিকার হবে এবং সমস্ত কন্যা আপাতভাবে স্বাভাবিক হলেও তারা প্রত্যেকে বাহক হবে।
এক্ষেত্রে ওই দম্পতির পুত্ররা বর্ণান্ধ ও কন্যারা বাহক হবে।
9. অনেক সময় দেখা যায় যে, বাবা ও মা উভয়ই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের এক ছেলে বর্ণান্ধ হয়েছে। এটি কীভাবে সম্ভব হয় তা একটি চেকার বোর্ডের মাধ্যমে ব্যাখা করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, একজন বর্ণান্ধতার বাহক মহিলা ও স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহে অপত্যের মধ্যে বর্ণান্ধতার সম্ভাবনা কীরূপ তা দেখাও।
উত্তর – বর্ণান্ধ পুত্র পিতার থেকে Y ক্রোমোজোম ও মাতার থেকে একটি X ক্রোমোজোম পেয়েছে। অর্থাৎ, বর্ণান্ধ পুত্র তার X ক্রোমোজোমে বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী প্রচ্ছন্ন জিনটি বহন করছে যা ক্রিস-ক্রস উত্তরাধিকারের মাধ্যমে সে তার মা-এর থেকে পেয়েছে। অথচ মা স্বাভাবিক, অর্থাৎ তার অপর X ক্রোমোজোমে প্রকট জিনটি রয়েছে। যেহেতু, পুত্রের ক্ষেত্রে মাতা থেকে প্রাপ্ত X ক্রোমোজোমটিতে বর্ণান্ধতার প্রচ্ছন্ন জিন বর্তমান তাই সে বর্ণান্ধ হয়েছে। বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী প্রচ্ছন্ন জিনকে c ও প্রকট জিনকে c+ দ্বারা নির্দেশিত করলে, বাবা-এর জিনোটাইপ হবে Xc+Y এবং মা-এর জিনোটাইপ হবে Xc+Xc। এখানে চেকার বোর্ডের সাহায্যে সমগ্র বিষয়টি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করা হল।

10. একটি ক্রস দ্বারা দেখাও যে, X ক্রোমোজোম বাহিত রোগগুলির দ্বারা পুরুষরা অধিক আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
উত্তর – পুরুষদের ক্ষেত্রে X ক্রোমোজোম একটি থাকে বলে X ক্রোমোজোম বাহিত জিনগুলির পরিপূরণ (complementation) হয় না। অর্থাৎ, X ক্রোমোজোমে কোনো রোগের জন্য দায়ী জিন থাকলে তা রোগকে প্রকাশিত করে দেয়। যেমন—হিমোফিলিয়া বা বর্ণান্ধতা রোগগ্রস্ত কোনো মহিলার সঙ্গে একজন স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে সমস্ত পুত্রসন্তানই হিমোফিলিক বা বর্ণান্ধ হয়।
[৪ নং প্রশ্নের ক্রসটি দ্রষ্টব্য।]
এক্ষেত্রে পুত্রসন্তান বর্ণান্ধ জিনযুক্ত X ক্রোমোজোমটি মা-র থেকে সবসময়ই পাবে এবং তা পরিপূরণের অভাবে (অর্থাৎ অন্য X ক্রোমোজোমের অবর্তমানে) প্রকাশিত হয়ে থাকে। কিন্তু কন্যাসন্তানের ক্ষেত্রে মা-র থেকে প্রাপ্ত বর্ণান্ধ জিনযুক্ত X ক্রোমোজোমটির বাবার থেকে প্রাপ্ত স্বাভাবিক জিন দ্বারা পরিপূরণ ঘটে। তাই কন্যারা বাহক হলেও বর্ণান্ধ রোগের প্রকাশ এক্ষেত্রে ঘটে না।
11. একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত পুরুষ (α -থ্যালাসেমিয়া মাইনর) একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত স্ত্রীকে (α -থ্যালাসেমিয়া মাইনর) বিবাহ করলে তাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কীরূপ তা ছকের সাহায্য দেখাও।
থ্যালাসেমিয়ার মোকাবিলায় জেনেটিক কাউন্সেলিং-এর ভূমিকা লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে জেনেটিক কাউন্সেলিং-এর সময় কী পরামর্শ দেওয়া হয়?
উত্তর – α থ্যালাসেমিয়া মাইনর আক্রান্ত পুরুষ ও স্ত্রীর বিবাহের ফলে, উৎপন্ন সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া হওয়ার প্রবণতা কীরূপ তা নীচে চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখানো হল—

থ্যালাসেমিয়া ও জেনেটিক কাউন্সেলিং:
- বাবা ও মা উভয়েই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে অপত্যে থ্যালাসেমিয়া রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জেনেটিক কাউন্সিলার সেক্ষেত্রে ভ্রূণের থ্যালাসেমিয়া রোগটি সৃষ্টি হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করেন এবং প্রয়োজনে ভ্রূণ বিনষ্ট করে নতুন গর্ভাধানের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
- প্রথমে পরামর্শ গ্রহণকারী ব্যক্তির বিভিন্ন বংশগত রোগের পারিবারিক ইতিহাস বিশ্লেষণ করা হয়। 3 এরপর ওই ব্যক্তির কলাকোশ বা রক্ত সংগ্রহ করে, জিনগত পরীক্ষা করে সেই ব্যক্তি রোগের বাহক কিনা নির্ণয় করা হয়।
- বিবাহ পূর্বে দুইজন পার্টনারই বাহক নির্ণীত হলে তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হতে পারে তা ব্যাখ্যা করা হয়। সম্ভব হলে এই বিবাহ এড়িয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
- যে-কোনো একজন থ্যালাসেমিয়া বাহক হলে শিশু রোগটির বাহক হতে পারে সেই সম্বন্ধে বাবা-মাকে সচেতন করা হয়। জেনেটিক কাউন্সিলার জন্মের পর শিশুটির জিনগত অবস্থাও নির্ধারণ করানোর পরামর্শ দান করেন। এর ফলে ভবিষ্যতে শিশুটির পরিবার পরিকল্পনায় তা সাহায্য করে।
- থ্যালাসেমিয়ার বাহক মাতা গর্ভাবস্থায় অনেক সময় অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতায় ভোগেন। জেনেটিক কাউন্সিলার সে বিষয়টি তাঁর পরিবারের কাছে তুলে ধরেন।
12. সঞ্চারণ পদ্ধতি ও রোগের প্রকৃতি অনুযায়ী হিমোফিলিয়া ও থ্যালাসেমিয়া রোগের দুটি পার্থক্য লেখো।
অথবা, হিমোফিলিয়া ও থ্যালাসেমিয়া রোগের পার্থক্যগুলি লেখো।
উত্তর – হিমোফিলিয়া ও থ্যালাসেমিয়া রোগের পার্থক্যগুলি হল-
বিষয় | থ্যালাসেমিয়া | হিমোফিলিয়া |
1. কারণ বা সঞ্চারণ পদ্ধতি | মানুষের 16 নং ক্রোমোজোমে অবস্থিত গ্লোবিন প্রোটিনের α শৃঙ্খল এবং 11 নং ক্রোমোজোমে অবস্থিত প্রোটিনের β শৃঙ্খলের সংকেত বহনকারী জিনের অস্বাভাবিকতার কারণে এই রোগ হয়। | রক্তের প্লাজমায় তখন ফ্যাক্টর VIII বা AHF-এর অভাবে হিমোফিলিয়া A এবং তঞ্চন ফ্যাক্টর IX বা PTC-এর অভাবে হিমোফিলিয়া B রোগ হয়। |
2. রোগের প্রকৃতি | হিমোগ্লোবিন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় তীব্র অ্যানিমিয়া সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া যকৃৎ ও প্লিহার বৃদ্ধি ঘটে। | রক্ততঞ্জন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় রক্তপাত বন্ধ হয় না বা বন্ধ হতে বিলম্ব হয়। এ ছাড়া অস্থিসন্ধিতে শক্তভাব, ফুলে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা যায়। |
3. ক্রোমোজোমের প্রকৃতি | অটোজোম বাহিত রোগ। | X-ক্রোমোজোম বা সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত রোগ। |
4. উপসর্গ | সঠিকভাবে হিমোগ্লোবিন শৃঙ্খল তৈরি না হওয়ায়, হিমোগ্লোবিনের গঠনগত ত্রুটি অ্যানিমিয়ার জন্ম দেয়। এর ফলে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে। | রক্ততঞ্জন ব্যাহত হয়, ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা থাকে। |
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
1. মানুষের সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত এবং অটোজোম বাহিত দুটি করে রোগের নাম লেখো।
উত্তর – মানুষের সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত দুটি বংশগত রোগ হল— (1) হিমোফিলিয়া এবং (2) বর্ণান্ধতা।
মানুষের অটোজোম বাহিত দুটি বংশগত রোগ হল – (1) থ্যালাসেমিয়া এবং (2) অ্যালবিনিজম।
2. মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগের নাম লেখো।
উত্তর – মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগ হল—থ্যালাসেমিয়া ও হিমোফিলিয়া।
3. থ্যালাসেমিয়া বলতে কী বোঝ?
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া হল অটোজোম বাহিত এক ধরনের বংশগত রোগ, যা হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন-পেপটাইড শৃঙ্খলের অস্বাভাবিক গঠনের ফলে সৃষ্টি হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হিমোগ্লোবিন গঠিত হয় না বা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস পায়, লোহিত রক্তকণিকা ক্ষুদ্র হয় এবং এর আয়ু কম (RBC-র গড় আয়ু 120 দিন)—ফলে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দেখা দেয়।
4. থ্যালাসেমিয়া মেজর বলতে কী বোঝ?
উত্তর – হিমোগ্লোবিনোপ্যাথির কারণে হিমোগ্লোবিনের α এবং β শৃঙ্খল দুটির প্রত্যেকটিই মিউটেশনের জন্য সম্পূর্ণরূপে গঠিত না হলে যে রোগ সৃষ্টি হয়, তাকে থ্যালাসেমিয়া মেজর বলে।
5. থ্যালাসেমিয়া মাইনর বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – হিমোগ্লোবিনোপ্যাথির কারণে হিমোগ্লোবিনের α বা β শৃঙ্খল দুটির মধ্যে যে-কোনো একটি শৃঙ্খল মিউটেশনের জন্য সম্পূর্ণরূপে গঠিত না হলে যে রোগ সৃষ্টি হয়, তাকে থ্যালাসেমিয়া মাইনর বলে।
6. থ্যালাসেমিয়া রোগে মানবদেহে কোন্ তিনটি অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ?
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া রোগে যকৃৎ, প্লিহা ও হৃৎপিণ্ড মূলত লোহার অতিরিক্ত সঞ্চয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
7. থ্যালাসেমিয়া রোগীকে বারবার রক্ত দিতে হয় কেন?
উত্তর – নানা কারণে থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্ত দিতে হয়— (1) হিমোগ্লোবিন কম থাকায় তাদের অ্যানিমিয়া ঘটে, রক্তদানের ফলে দেহে অক্সিজেন পরিবহণ সহজে সম্ভব হয়। (2) দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য রক্ত জরুরি। রক্ত সঞ্চারণ সেই কাজে সাহায্য করতে থাকে।
8. থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণগুলি লেখো।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণগুলি হল— (1) কালো বর্ণের মূত্র ত্যাগ, (2) অস্থি গঠনে সমস্যা (বিশেষত মুখমণ্ডলের অস্থি), (3) হলুদাভ বিবর্ণ ত্বক, (4) তীব্র ক্লান্তি ও দুর্বলতা, (5) বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া।
9. থ্যালাসেমিয়া রোগে হেপাটোমেগালি ও স্প্লিনোমেগালি ঘটে কেন?
উত্তর – বারবার রক্ত সঞ্চারনের ফলে থ্যালাসেমিয়া রোগে যকৃতে ও প্লিহাতে আয়রন অতিরিক্ত মাত্রায় সঞ্চিত হয় ও তাদের আকার বৃদ্ধি পায় ও যথাক্রমে হেপাটোমেগালি ও স্লিনোমেগালি অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও রক্তসঞ্চারণের সময় হেপাটাইটিস সংক্রমণ এবং ওই অঙ্গ দুটিতে RBC উৎপাদনের কারণে তাদের আকারের বৃদ্ধি ঘটে থাকে।
10. একদিন শিক্ষার্থীরা খবরের কাগজে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে একটি প্রবন্ধ পড়ল এবং একজন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির পরিণতি জেনে ভীত হল। জনগোষ্ঠী থেকে এই রোগ দূর করার জন্য তারা কী কী উদ্যোগ নিতে পারে তা লেখো।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া দূরীকরণে যে উদ্যোগগুলি শিক্ষার্থীরা নিতে পারে, তা হল— (1) সাধারণ মানুষকে থ্যালাসেমিয়ার বাহক কিনা তা নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা। (2) বিয়ের আগে জেনেটিক কাউন্সিলারের কাছে যেতে উদ্বুদ্ধ করা ও জেনেটিক কাউন্সিলারের পরামর্শ নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবগত করা। (3) রোগটি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলা।
11. থ্যালাসেমিয়াকে ‘ভূমধ্যসাগারীয় রক্তাল্পতা বলে কেন?
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া, বিশেষত মৃদু থ্যালাসেমিয়া রোগটি ইতালি ও অন্যান্য ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে বেশি দেখা যায়। এজন্য থ্যালাসেমিয়া রোগটিকে ভূমধ্যসাগরীয় রক্তাল্পতা (Mediterranean anaemia) বলা হয়।
12. হিমোফিলিয়া রোগ বলতে কী বোঝ ?
অথবা, হিমোফিলিয়া কী?
উত্তর – মানুষের X ক্রোমোজোম বাহিত প্রচ্ছন্ন জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যে বংশগত রোগের ফলে ক্ষতস্থানে রক্ত তঞ্চিত হয় না, তাকে হিমোফিলিয়া বলা হয়। সাধারণত রক্তে তন ফ্যাক্টর VIII বা IX-এর অভাবে এই ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়।
13. হিমোফিলিয়া রোগ কত প্রকারের হয় ও কী কী?
এর মধ্যে রাজকীয় হিমোফিলিয়া বা ক্লাসিক্যাল হিমোফিলিয়া কোনটি?
উত্তর – হিমোফিলিয়া রোগ প্রধানত দু-প্রকারের হয়। যথা—হিমোফিলিয়া A এবং হিমোফিলিয়া B। এ ছাড়াও হিমোফিলিয়া C নামক অপর একপ্রকার হিমোফিলিয়া দেখা যায়।
হিমোফিলিয়া A-কে ক্লাসিক্যাল হিমোফিলিয়া বলে। এই রোগে ফ্যাক্টর VIII বা AHF তৈরি হয় না।
14. হিমোফিলিয়া A রোগীদের দেহের কোন্ কোন্ স্থানে অত্যধিক রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
উত্তর – হিমোফিলিয়া A রোগীদের দেহের অস্থিসন্ধি, পেশি, মিউকাস পর্দা, পরিপাকনালী, মূত্রনালী, মস্তিষ্ক প্রভৃতি অংশে অত্যধিক রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
15. হিমোফিলিয়া A রোগের কারণ কী?
উত্তর – X ক্রোমোজোমের একটি জিনের প্রচ্ছন্ন পরিব্যক্তি ঘটলে থ্রম্বোপ্লাস্টিন বা তঞ্জন ফ্যাক্টর VIII বা অ্যান্টিহিমোফিলিক ফ্যাক্টর (AHF) সৃষ্টি হয় না। এর ফলে রক্ততঞ্চন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং হিমোফিলিয়া A রোগ হয়।
16. হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস হিমোফিলিয়া রোগের কারণ কী?
উত্তর – X ক্রোমোজোমের একটি জিনের প্রচ্ছন্ন পরিব্যক্তি ঘটলে ফ্যাক্টর IX বা ক্রিস্টমাস ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের তুলনায় কম তৈরি হয় বা একদমই তৈরি হয় না। এর ফলে রক্ত তঞ্চিত হতে পারে না এবং হিমোফিলিয়া B রোগ হয়।
17. হিমোফিলিয়া রোগটি মহিলাদের থেকে পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি প্রকাশিত হয় কেন?
উত্তর – হিমোফিলিয়া রোগের জন্য দায়ী প্রচ্ছন্ন জিনটি X ক্রোমোজোমে অবস্থিত হওয়ায় এবং পুরুষদের একটিমাত্র X ক্রোমোজোম থাকায়, পুরুষদের ক্ষেত্রে এই রোগটি বেশি প্রকাশিত হয়। পক্ষান্তরে মহিলাদের দুটি X ক্রোমোজোম থাকায় অনেকসময়ই স্বাভাবিক X ক্রোমোজোম দ্বারা স্বাভাবিক X ক্রোমোজোমের পরিপূরণ ঘটে যায়। ফলে রোগটির বাহক হলেও মহিলাদের ক্ষেত্রে তা প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
18. বাবা ও মায়ের জিনের প্রকৃতি কীরূপ হলে 50% পুত্র স্বাভাবিক 50% পুত্র হিমোফিলিয়া ও 100% কন্যা স্বাভাবিক হবে? উপযুক্ত উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – আমরা জানি, হিমোফিলিক জিন Xh ও স্বাভাবিক জিন Xh+ । (1) যেহেতু পুত্রেরা Y ক্রোমোজোম পিতার থেকে পাবে, তাই X ক্রোমোজোম তারা পাবে মাতার থেকে, এক্ষেত্রে পুত্রেরা স্বাভাবিক হলে, তাদের জিনোটাইপ হবে Xh+Y অর্থাৎ পুত্রেরা একটি স্বাভাবিক X ক্রোমোজোম মাতার থেকে পাবে। আবার পুত্রেরা হিমোফিলিক হলে, তাদের জিনোটাইপ হবে XhY অর্থাৎ তারা হিমোফিলিক জিনবাহী X ক্রোমোজোম মাতার থেকে গ্রহণ করবে। যেহেতু প্রশ্নে বলা রয়েছে 50% পুত্র সন্তান স্বাভাবিক (Xh+Y) ও 50% অসুস্থ (XhY) হবে। তাই এখান থেকে অনুধাবন করা যায় যে, এক্ষেত্রে মাতা বাহক (Xh+Xh) হবে। (2) আবার প্রশ্নে বলা হয়েছে কন্যারা সকলে স্বাভাবিক হবে, অর্থাৎ যেহেতু কন্যারা একটি X ক্রোমোজোম মাতার থেকে ও অপরটি পিতার থেকে পায় তাই কন্যাকে স্বাভাবিক রাখতে হলে পিতা সর্বদা স্বাভাবিক (Xh+Y) হবে। নতুবা কন্যা যদি মাতার থেকে হিমোফিলিয়ার জিনবাহী X ক্রোমোজোমের পাশাপাশি পিতারও হিমোফিলিয়ার জিনবাহী X ক্রোমোজোম পায় তাহলে কন্যা হিমোফিলিক হয়ে পড়বে। তাই একমাত্র মাতা বাহক (Xh+Xh) ও পিতা স্বাভাবিক (Xh+Y) হলেই 50% পুত্র স্বাভাবিক, 50% পুত্র হিমোফিলিক ও 100% কন্যা স্বাভাবিক হবে।

19. হিমোফিলিয়া B-কে ক্রিস্টমাস হিমোফিলিয়া বলে কেন?
উত্তর – স্টিফেন ক্রিস্টমাস নামে একজন রোগীর দেহে হিমোফিলিয়া B রোগ প্রথম ধরা পড়ে। তাই একে ক্রিস্টমাস হিমোফিলিয়া বলা হয়।
20. যদি মাতা হিমোফিলিয়ার বাহক ও পিতা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হয়, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের সন্তান-সন্ততিরা আক্রান্ত হবে, না স্বাভাবিক হবে তা উপযুক্ত ক্রসের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তর –

অর্থাৎ সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে 50% -এর হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর বাকি 50% সন্তানসন্ততিরা স্বাভাবিক হলেও কন্যা বাহক হবে।
21. যদি Xh+, Xh যথাক্রমে স্বাভাবিক ও হিমোফিলিয়ার অ্যালিল হয়; তাহলে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে জিনোটাইপ নির্ধারণ করো। (1) স্বাভাবিক পুরুষ (2) আক্রান্ত পুরুষ (3) বাহক মহিলা (4) আক্রান্ত মহিলা
উত্তর – Xh+ স্বাভাবিক ও Xh হিমোফিলিয়ার অ্যালিল হলে (1) স্বাভাবিক পুরুষ হবে Xh+Y (2) আক্রান্ত পুরুষ হবে XhY (3) বাহক মহিলা হবে Xh+Xh ও (4) আক্রান্ত মহিলা হবে XhXh ।
22. বর্ণান্ধতা কাকে বলে?
উত্তর – X ক্রোমোজোম সংযোজিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত যে বংশগত রোগে মানুষ প্রধানত লাল, সবুজ অথবা নীল বর্ণ শনাক্ত করতে পারে না, সেই রোগকে বর্ণান্ধতা বলে।

23. একজন জেনেটিক কাউন্সিলার হিসেবে তুমি কোনো বর্ণান্ধ পুরুষ ও ওই রোগের বাহক মহিলাকে পরবর্তী প্রজন্মের দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে কী পরামর্শ দান করবে?
উত্তর – বর্ণান্ধ পুরুষের জিনোটাইপ হবে XcY এবং বাহক মহিলার জিনোটাইপ হবে Xc+Xc অর্থাৎ বাহক মহিলার 50% X ক্রোমোজোমই বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিন বহন করে। তাই এরূপ পরিস্থিতিতে উভয়ের বিয়ের ফলে উৎপন্ন অপত্যদের বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নিম্নরূপ-

অর্থাৎ সমস্ত দিক বিবেচনা করে, আমি তাদের বুঝিয়ে বলব যে অপত্যদের 50% -র মধ্যে বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
24. একজন বর্ণান্ধ কন্যার পিতার ফিনোটাইপ কী হবে?
অনুরূপ প্রশ্ন, একজন হিমোফিলিক কন্যার পিতার ফিনোটাইপ কী হবে?
উত্তর – বর্ণান্ধ কন্যার দুটি X ক্রোমোজোমেই বর্ণান্ধতার অ্যালিল থাকবে। যেহেতু সে একটি X ক্রোমোজোম বাবার থেকে পায় তাই বাবার জিনোটাইপ হবে XcY বা ç
, অর্থাৎ বাবা বর্ণান্ধ ফিনোটাইপবিশিষ্ট হবে।

25. ‘মা বর্ণান্ধ হলে পুত্র বর্ণাদ্ধ হয়’ – কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – মা বর্ণান্ধ হলে, তার জিনোটাইপ হয় XcXc এবং এক্ষেত্রে ধরে নেওয়াই যায়, পিতা স্বাভাবিক। যেহেতু পুত্রেরা Y ক্রোমোজোম পিতার থেকে ও X ক্রোমোজোম মাতার থেকে পেয়ে থাকে তাই এক্ষেত্রে তারা সর্বদা। বর্ণান্ধতার জিনবহনকারী X ক্রোমোজোমটি পায় কলে সব পুত্র বর্ণান্ধ (XcY) হয়। তাই বলা হয়, না বর্ণান্ধ হলে পুত্র বর্ণান্ধ হয়। এক্ষেত্রে যদিও কন্যারা সর্বদাই বাহক (Xc+Xc) হয় কারণ তারা একটি X ক্রোমোজোম মাতার থেকে ও অপরটি পিতার থেকে পাওয়ায়, মাতা বর্ণান্ধ হলেও যদি পিতা স্বাভাবিক হয়, তবে কন্যারা বর্ণান্ধ না হয়ে বাহক হয়। শুধু পুত্ররাই বর্ণান্ধ হয়।
26. বর্ণান্ধতার কীভাবে বংশগত সঞ্চরণ ঘটে তা একটি ক্রুসের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর – ধরা যাক, একজন বর্ণান্ধ পুরুষের (XcY) সাথে একজন স্বাভাবিক মহিলার (Xc+Xc+) বিবাহ হল, এরপর তাদের সন্তান সন্ততিদের মধ্যে কীভাবে পিতার বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটি সঞ্চারিত হবে, তা ক্রুসের মাধ্যমে দেখানো হল—
কন্যা একটি X ক্রোমোজোম পিতার থেকে ও অপরটি মাতার থেকে পায়, তাই পিতা যদি বর্ণান্ধ (XcY) হয় তাহলে কন্যা বাহক হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে মাতা স্বাভাবিক (Xc+Xc+) হওয়ায় কোনো পুত্রই বর্ণান্ধ হয় না, কারণ পুত্ররা Y ক্রোমোজোমটি পিতার থেকে পেলেও X ক্রোমোজোমটি মাতার থেকে পায়, তাই মাতা স্বাভাবিক হলে পুত্ররাও স্বাভাবিক হয়। আবার যদি মাতা বাহক বা বর্ণান্ধ হয় তবে পুত্ররাও বর্ণান্ধ হয়।

27. মোনোক্রোমাসি ও ডাইক্রোমাসি কাকে বলে?
উত্তর – মানুষের চোখে লাল, সবুজ ও নীল—তিন প্রকার বর্ণ সংবেদী কোন কোশ থাকে। এরমধ্যে দুই প্রকার কোশ নষ্ট হয়ে গিয়ে কেবলমাত্র একপ্রকার বর্ণ সংবেদন বজায় থাকলে, তাকে মোনোক্রোমাসি বলে। তিন প্রকার বর্ণ সংবেদী কোশের মধ্যে কোনো একপ্রকার কোশ নষ্ট হয়ে গেলে এবং অন্য দুটি কার্যকর থাকলে, সেই বর্ণান্ধতাকে ডাইক্রোমাসি বলে। সাধারণত বর্ণান্ধতা বলতে ডাইক্রোমাসিকেই বোঝানো হয়। মোনোক্রোমাসি বা সম্পূর্ণ বর্ণান্ধতা (সাদা-কালো দৃশ্যমানতা) প্রায় দেখাই যায় না।
28. জেনেটিক কাউন্সেলিং বলতে কী বোঝ ?
অথবা, সুপ্রজনন মন্ত্রণা বা জিনগত পরামর্শ কাকে বলে?
উত্তর – কোনো ব্যক্তির পরিবারের জিনগত রোগের ইতিহাস বিশ্লেষণ ও জেনেটিক পরীক্ষানিরীক্ষার দ্বারা ভবিষ্যৎ সন্তানের জিনগত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নির্ধারণ করা বা জিনগত রোগবিহীন সুস্থ সন্তানলাভে সাহায্য করার প্রক্রিয়াকে জেনেটিক কাউন্সেলিং বলা হয়।
29. জেনেটিক কাউন্সেলিং প্রয়োজনীয় কেন?
অথবা, বংশগত রোগ প্রতিরোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং -এর ভূমিকা কী?
উত্তর – জেনেটিক কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজনীয়তা বা ভূমিকা হল— (1) Ð জিনগত পরামর্শ বিবাহের পরে জিনগত রোগাক্রান্ত শিশুর জন্ম প্রতিরোধ করে। (2) জেনেটিক কাউন্সেলিং শিশুর জিনগত রোগের সম্ভাবনা নির্ণয় ও তার মোকাবিলায় সঠিক পন্থা অবলম্বনে সাহায্য করে। (3) ভ্রূণ বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাব্য কারণ নির্ণয় ও সুস্থ শিশুর জন্মগ্রহণে জিনগত পরামর্শ সাহায্য করে। (4) দম্পতির পারস্পরিক দোষারোপ, ভুল বোঝাবুঝি, অসহিতা হ্রাস করতে জেনেটিক কাউন্সেলিং সাহায্য করে।
30. বংশে থ্যালাসেমিয়া রোগের ইতিহাস থাকলে জিনগত পরামর্শের প্রয়োজন কেন?
উত্তর – বংশে থ্যালাসেমিয়া রোগের ইতিহাস থাকলে কোনো বাহক ব্যক্তির সঙ্গে ওই বংশের কোনো বাহক ব্যক্তির বিবাহে অপত্যে রোগটি প্রকাশের সম্ভাবনা থাকে। অপত্য যাতে রোগাক্রান্ত না হয় সেইজন্য জেনেটিক কাউন্সিলারের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. জিনের আকস্মিক ও স্থায়ী পরিবর্তনকে বলে—
(a) অ্যানিউপ্লয়েডি
(b) ইনভারশান
(c) মিউটেশন
(d) রিকম্বিনেশন
উত্তর – (c) মিউটেশন
2. অটোজোম বাহিত প্রচ্ছন্ন বংশগত রোগ হল—
(a) হিমোফিলিয়া
(b) বর্ণান্ধতা
(c) থ্যালাসেমিয়া
(d) স্কার্ভি
উত্তর – (c) থ্যালাসেমিয়া
3. থ্যালাসেমিয়া রোগের একটি লক্ষণ হল—
(a) স্কার্ভি
(b) অ্যানিমিয়া
(c) রিকেট
(d) ম্যালেরিয়া
উত্তর – (b) অ্যানিমিয়া
4. দেহে লোহা জমে হৃৎপিণ্ড ও যকৃতের ক্ষতি হয় যে বংশগত রোগে তা হল—
(a) হিমোফিলিয়া
(b) অ্যানিমিয়া
(c) ব্লাড ক্যানসার
(d) থ্যালাসেমিয়া
উত্তর – (d) থ্যালাসেমিয়া
5. যে রোগে গ্লিহা, যকৃৎ, হৃৎপিণ্ড ও অন্তক্ষরা গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা হল—
(a) হিমোফিলিয়া
(b) থ্যালাসেমিয়া
(c) অ্যানিমিয়া
(d) কোনোটিই
উত্তর – (b) থ্যালাসেমিয়া
6. যে রোগের জন্য গ্লোবিন পেপটাইড শৃঙ্খলের অস্বাভাবিক গঠন দায়ী, তা হল—
(a) হিমোফিলিয়া
(b) থ্যালাসেমিয়া
(c) ম্যালেরিয়া
(d) স্কার্ভি
উত্তর – (b) থ্যালাসেমিয়া
7. থ্যালাসেমিয়া-সংক্রান্ত ভুল তথ্যটি হল—
(a) এটি সেক্স ক্রোমোজোম সংযোজিত রোগ
(b) এটি বংশগত রোগ
(c) এই রোগে হিমোগ্লোবিন গঠনে ত্রুটি দেখা যায়
(d) এই রোগে দেহে লৌহ সঞ্চিত হয়
উত্তর – (a) এটি সেক্স ক্রোমোজোম সংযোজিত রোগ
৪. থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগটির অপর নাম হল –
(a) পারনিসিয়াস অ্যানিমিয়া
(b) অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া
(c) মেডিটেরিনিয়ান অ্যানিমিয়া
(d) নরমোক্রোমিক অ্যানিমিয়া
উত্তর – (c) মেডিটেরিনিয়ান অ্যানিমিয়া
9. থ্যালাসেমিয়া মাইনর আর যে নামে পরিচিত, তা হল—
(a) থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট
(b) থ্যালাসেমিয়া হাইড্রস
(c) কুলির থ্যালাসেমিয়া
(d) থ্যালাসেমিয়া চাইল্ড
উত্তর – (a) থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট
10. থ্যালাসেমিয়া রোগটি যে প্রোটিনের অস্বাভাবিকতার ফলে সৃষ্টি হয়, তা হল –
(a) ফাইব্রিন
(b) গ্লোবিন
(c) ফ্ল্যাভিন
(d) থাইমিন
উত্তর – (b) গ্লোবিন
11. মানুষের যে ক্রোমোজোমে α-গ্লোবিন জিন থাকে, তা হল—
(a) 11 নং
(b) 12 নং
(c) 14 নং
(d) 16 নং
উত্তর – (d) 16 নং
12. মানুষের যে ক্রোমোজোমে B -গ্লোবিন জিন থাকে, তা হল—
(a) 11 নং
(b) 12 নং
(c) 14 নং
(d) 16 নং
উত্তর – (a) 11 নং
13. β -থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগীর সংখ্যা পৃথিবীর সমস্ত আক্রান্ত ব্যক্তির প্রায় –
(a) 8%
(b) 10%
(c) 12%
(d) 14%
উত্তর – (b) 10%
14. কুলির অ্যানিমিয়ার কারণ হল—
(a) মিউটেশন
(b) পয়েন্ট মিউটেশন
(c) Hbs
(d) HbF
উত্তর – (a) মিউটেশন
15. কুলির অ্যানিমিয়া হল—
(a) α থ্যালাসেমিয়া মেজর
(b) α থ্যালাসেমিয়া মাইনর
(c) β থ্যালাসেমিয়া মেজর
(d) β থ্যালাসেমিয়া মাইনর
উত্তর – (c) β থ্যালাসেমিয়া মেজর
16. নীচের যেটি সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত বংশগত রোগ নয়, সেটি হল—
(a) অ্যানিমিয়া
(b) স্কার্ভি
(c) থ্যালাসেমিয়া
(d) সবকটিই
উত্তর – (d) সবকটিই
17. পিতা ও মাতা উভয়ই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে ওই দম্পতির যে সন্তান জন্মগ্রহণ করবে তার ক্ষেত্রে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কত?
(a) 100%
(b) 25%
(c) 75%
(d) 50%
উত্তর – (b) 25%
18. কোন্ রোগটি অটোজোমাল জিন দ্বারা সৃষ্ট নয়?
(a) সিক্ল সেল অ্যানিমিয়া
(b) হিমোফিলিয়া
(c) থ্যালাসেমিয়া
(d) অ্যালবিনিজম
উত্তর – (b) হিমোফিলিয়া
19. যে বংশগত রোগে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা দেখা দেয়, সেটি হল—
(a) লিউকেমিয়া
(b) হিমোফিলিয়া
(c) থ্যালাসেমিয়া
(d) বর্ণান্ধতা
উত্তর – (b) হিমোফিলিয়া
20. মানবদেহে হিমোফিলিয়া রোগের জন্য দায়ী জিনটি
(a) X ক্রোমোজোমে অবস্থিত এবং এটি প্রকট
(b) X ক্রোমোজোমে অবস্থিত এবং এটি প্রচ্ছন্ন
(c) অটোজোমে অবস্থিত এবং এটি প্রকট
(d) অটোজোমে অবস্থিত এবং এটি প্রচ্ছন্ন
উত্তর – (b) X ক্রোমোজোমে অবস্থিত এবং এটি প্রচ্ছন্ন
21. মানুষের অটোজোমে থাকা জিন দ্বারা নীচের কোনটি নিয়ন্ত্রিত হয় না?-
(a) রোলার জিভ
(b) হিমোফিলিয়া
(c) থ্যালাসেমিয়া
(d) কানের যুক্ত লতি
উত্তর – (b) হিমোফিলিয়া
22. হিমোফিলিয়ার প্রধান সমস্যা হল –
(a) রং চিনতে না পারা
(b) দেহাভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ
(c) দেহাভ্যন্তরে রক্ততখন
(d) তীব্র জ্বর ও প্রদাহ
উত্তর – (b) দেহাভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ
23. হিমোফিলিয়ায় যে প্লাজমা প্রোটিনটি তৈরি হয় না, সেটি হল-
(a) অ্যালবুমিন
(b) গ্লোবিউলিন
(c) ফাইব্রিন
(d) কাইটিন
উত্তর – (c) ফাইব্রিন
24. অ্যান্টিহিমোফিলিক গ্লোবিউলিন ফ্যাক্টরটি হল—
(a) ফ্যাক্টর VII
(b) ফ্যাক্টর VIII
(c) ফ্যাক্টর IX
(d) ফ্যাক্টর X
উত্তর – (b) ফ্যাক্টর VIII
25. প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন অ্যান্টিসিডেন্ট হল—
(a) ফ্যাক্টর VII
(b) ফ্যাক্টর VIII
(c) ফ্যাক্টর XI
(d) ফ্যাক্টর X
উত্তর – (c) ফ্যাক্টর XI
26. হিমোফিলিয়া ‘A’ ঘটে রক্ততঞ্জনের জন্য দায়ী যে ফ্যাক্টরটির অভাবে—
(a) VI
(b) VII
(c) VIII
(d) IX
উত্তর – (c) VIII
27. রাজকীয় হিমোফিলিয়া বা রয়্যাল হিমোফিলিয়া বা ক্রিস্টমাস ডিজিস বা হিমোফিলিয়া B হয় রক্ততঞ্জনের কোন্ ফ্যাক্টরের অভাবে?
(a) VI
(b) VII
(c) VIII
(d) IX
উত্তর – (d) IX
28. ক্লাসিক হিমোফিলিয়া বলা হয়—
(a) হিমোফিলিয়া A-কে
(b) হিমোফিলিয়া B-কে
(c) হিমোফিলিয়া C-কে
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (a) হিমোফিলিয়া A-কে
29. ক্রিস্টমাস রোগটি হল—
(a) হিমোফিলিয়া A
(b) বর্ণান্ধতা
(c) রয়্যাল হিমোফিলিয়া
(d) হিমোফিলিয়া B
উত্তর – (d) হিমোফিলিয়া B
30. আমাদের দেশে হিমোফিলিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হিমোফিলিয়া A বা ক্লাসিক হিমোফিলিয়ার শতকরা ভাগ —
(a) 10
(b) 20
(c) 40
(d) 80
উত্তর – (d) 80
31. আমাদের দেশে হিমোফিলিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস রোগের শতকরা ভাগ —
(a) 10
(b) 20
(c) 40
(d) 80
উত্তর – (b) 20
32. রক্ততঞ্জনে সাহায্যকারী ফ্যাক্টর VIII-এর অপর নাম –
(a) ABB
(b) HBA
(c) PTA
(d) AHF
উত্তর – (d) AHF
33. রক্ততঞ্চনে সাহায্যকারী ফ্যাক্টর XI-এর অপর নাম—
(a) AHF
(b) HBA
(c) HBB
(d) PTA
উত্তর – (d) PTA
34. রক্তে যে ফ্যাক্টরের অনুপস্থিতিতে হিমোফিলিয়া হয়, সেটি হল—
(a) ফ্যাক্টর VIII
(b) ফ্যাক্টর IX
(c) ফ্যাক্টর III
(d) a ও b উভয়ই
উত্তর – (d) a ও b উভয়ই
35. হিমোফিলিক পুরুষ ও হোমোজাইগাস স্বাভাবিক মহিলার বিবাহে হিমোফিলিক সন্তানের শতকরা সম্ভাবনা হল –
(a) 75%
(b) 50%
(c) 25%
(d) 0%
উত্তর – (d) 0%
36. হিমোফিলিয়ার বাহক মাতা ও স্বাভাবিক পিতার সঙ্গে কন্যাসন্তানদের হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হল –
(a) 75%
(b) 50%
(c) 100%
(d) 0%
উত্তর – (d) 0%
দু-একটি শব্দে বা বাক্যে উত্তর দাও
1. থ্যালাসেমিয়া রোগের জন্য দায়ী জিন মানুষের কোন্ ধরনের ক্রোমোজোম বহন করে?
উত্তর – অটোজোম।
2. মানুষের দুটি X ক্রোমোজোমাল প্রচ্ছন্ন রোগের নাম বলো।
অথবা, দুটি সেক্স লিংকড রোগের নাম বলো।
উত্তর – বর্ণান্ধতা ও হিমোফিলিয়া।
3. কে, কত খ্রিস্টাব্দে প্রথম থ্যালাসেমিয়া নামকরণ করেন?
উত্তর – হুইপল এবং ব্রাডফোর্ড (Whipple and Bradford) 1932 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম থ্যালাসেমিয়া নামকরণ করেন।
4. থ্যালাসেমিয়া রোগীর হিমোগ্লোবিনে α বা β শৃঙ্খল কোন কারণের জন্য অনেক সময় সম্পূর্ণ তৈরি হয় না?
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া রোগীর হিমোগ্লোবিনে α বা β শৃঙ্খল পরিব্যক্তির জন্য অনেক সময় সম্পূর্ণ তৈরি হয় না, ফলে RBC-র সংখ্যা হ্রাস পায়।

5. α থ্যালাসেমিয়া কী?
উত্তর – হিমোগ্লোবিনের α শৃঙ্খল সম্পূর্ণরূপে গঠিত না হওয়ায়, হিমোগ্লোবিনের ত্রুটির জন্য যে থ্যালাসেমিয়া হয়, তাকে α থ্যালাসেমিয়া বলা হয়।
6. মানুষের কোন্ ক্রোমোজোমের জিনের মিউটেশনে α. থ্যালাসেমিয়া হয়?
উত্তর – মানুষের 16 নং ক্রোমোজোমের জিনের মিউটেশনের ফলে α থ্যালাসেমিয়া হয়।
7. β থ্যালাসেমিয়া কী?
উত্তর – হিমোগ্লোবিনের β শৃঙ্খল সম্পূর্ণরূপে গঠিত না হওয়ায় হিমোগ্লোবিনের ত্রুটির ফলে যে থ্যালাসেমিয়া হয়, তাকে β থ্যালাসেমিয়া বলে।
৪. মানুষের কোন্ ক্রোমোজোমের জিনের মিউটেশনে β থ্যালাসেমিয়া হয়?
উত্তর – মানুষের 11 নং ক্রোমোজোমের জিনের মিউটেশনের ফলে β থ্যালাসেমিয়া হয়।
9. ভারতে কোন প্রকার থ্যালাসেমিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায় ?
উত্তর – ভারতে α থ্যালাসেমিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
10. থ্যালাসেমিয়ার ত্রুটিপূর্ণ জিন মানুষের কোন্ ক্রোমোজোমে অবস্থান করে?
উত্তর – 16 নং ক্রোমোজোম (α থ্যালাসেমিয়া) ও 11 নং ক্রোমোজোম (β থ্যালাসেমিয়া)।
11. থ্যালাসেমিয়া রোগে কোন্ সংযুক্ত প্রোটিন কম পরিমাণে তৈরি হয়?
উত্তর – হিমোগ্লোবিন নামক সংযুক্ত প্রোটিন কম পরিমাণে তৈরি হয়।
12. থ্যালাসেমিয়া রোগ হলে অথবা ঘনঘন রক্ত বদলানোর ফলে দেহে কোন্ ধাতু অধিক পরিমাণে সঞ্চিত হয়?
উত্তর – লোহা।
13. দেহে লোহা সঞ্চিত হলে কোন্ কোন্ অঙ্গ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় ?
উত্তর – দেহে লোহা সঞ্চিত হলে হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ এবং অন্তঃক্ষরা তন্ত্র বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
14. হিমোগ্লোবিনের জিনগত ত্রুটির জন্য যে রোগ হয়, তাকে কী বলে?
উত্তর – হিমোগ্লোবিনোপ্যাথি।
15. হিমোগ্লোবিনে কত শতাংশ লোহা থাকে?
উত্তর – হিমোগ্লোবিনে প্রায় 0.34% লোহা থাকে।
16. হিমোগ্লোবিন কত ml অক্সিজেন বহন করে?
উত্তর – 1g হিমোগ্লোবিন 1.34 ml অক্সিজেন বহন করে।
17. যে রোগে রক্ত তঞ্চিত না হওয়ার ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না, তাকে কী বলে ?
উত্তর – হিমোফিলিয়া।
18. একটি বিশেষ হিমোফিলিয়ার নাম লেখো যা লিঙ্গ সংযোজিত নয়।
উত্তর – হিমোফিলিয়া C অটোজোম সংযোজিত হিমোফিলিয়া, এটি লিঙ্গ সংযোজিত নয়। এক্ষেত্রে রক্ততঞ্জনকারী ফ্যাক্টর IX উৎপন্ন হয় না।
19. রক্তের ফ্যাক্টর VIII-এর অভাবজনিত রোগটি কী?
উত্তর – হিমোফিলিয়া A
20. রক্তের ফ্যাক্টর IX-এর অভাবজনিত রোগটি কী?
উত্তর – হিমোফিলিয়া B
21. হিমোফিলিয়া B রোগটি আর কী নামে পরিচিত?
উত্তর – ক্রিস্টমাস রোগ বা রাজকীয় হিমোফিলিয়া।
22. রক্তমোক্ষণকারী রোগটি আর কী নামে পরিচিত?
উত্তর – হিমোফিলিয়া।
23. হিমোফিলিয়া B কী জাতীয় রোগ ?
উত্তর – হিমোফিলিয়া B হল, X ক্রোমোজোমঘটিত একটি প্রচ্ছন্ন বংশগত রোগ।
24. হিমোফিলিয়া রোগের সৃষ্টি হয় কী কারণে?
উত্তর – X ক্রোমোজোম সংযোজিত প্রচ্ছন্ন জিনের পরিব্যক্তির কারণে হিমোফিলিয়া রোগের সৃষ্টি হয়।
25. হিমোফিলিয়া রোগের জিন মানুষের কোন্ ক্রোমোজোমে অবস্থান করে?
উত্তর – হিমোফিলিয়া রোগের জিন মানুষের X ক্রোমোজোমে অবস্থান করে।
26. হিমোফিলিয়া A আর কী নামে পরিচিত?
উত্তর – ক্লাসিক হিমোফিলিয়া।
27. ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়া সর্বপ্রথম যে রোগের প্রচ্ছন্ন জিনটি ধারণ করেন, সেটির নাম উল্লেখ করো।
উত্তর – হিমোফিলিয়া B
28. কোন হিমোফিলিয়াকে রয়্যাল হিমোফিলিয়া বলে?
উত্তর – হিমোফিলিয়া B-কে রয়্যাল হিমোফিলিয়া বলে, কারণ এটি ইংল্যান্ডের রাজবংশে প্রথম দেখা গিয়েছিল।
29. ব্রিডার্স ডিজিজ কোন্ রোগকে বলে?
উত্তর – হিমোফিলিয়া।
30. কোন্ রোগকে ক্রিস্টমাস ডিজিজ বলে ?
উত্তর – হিমোফিলিয়া B রোগকে।
31. কেবলমাত্র হোমোজাইগাস অবস্থায় হিমোফিলিয়া রোগের প্রকাশ ঘটার কারণ কী ?
উত্তর – হিমোফিলিয়া রোগটি X-ক্রোমোজোম সংযোজিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ তাই বিশেষত স্ত্রী দেহে এটি একমাত্র হোমোজাইগাস অবস্থায় (XhXh) প্রকাশিত হয়, কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি হেমিজাইগাস অবস্থায়ও (XhY) প্রকাশ পায়। স্ত্রীদের ক্ষেত্রে হিমোফিলিয়ার জন্য দায়ী জিন হেটেরোজাইগাস অবস্থায় (XhXh+) থাকলে, স্ত্রী বাহক হলেও স্বাভাবিক হয়, তার দেহে কোনো রোগের প্রকাশ ঘটে না।
32. একটি স্বাভাবিক হিমোফিলিয়া বাহক মহিলার সঙ্গে স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে, তার পুত্রদের হিমোফিলিয়া রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কত?
উত্তর – একটি স্বাভাবিক হিমোফিলিয়া বাহক মহিলার সাথে স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে, তার পুত্রদের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা হল, সমস্ত সন্তানদের মধ্যে 25% এবং পুত্রদের মধ্যে 50% ক্ষেত্রে।
33. ট্রাইটানোপ কাদের বলে?
অথবা, ট্রাইটানোপিয়া কী?
উত্তর – বর্ণান্ধতা রোগে আক্রান্ত যেসব ব্যক্তি নীল বর্ণ শনাক্ত করতে পারেন না, তাদের ট্রাইটানোপ বলে এবং রোগটিকে ট্রাইটানোপিয়া বলা হয়।
34. সায়ানোপসিয়া বা সায়ানোপিয়া কী?
উত্তর – শুধুমাত্র নীল বর্ণের প্রতি সংবেদনশীলতাকে সায়ানোপসিয়া বা সায়ানোপিয়া বলে।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. থ্যালাসেমিয়া মানুষের একটি ………. রোগ।
উত্তর – বংশগত
2. ……… রোগে রক্তের O2 পরিবহণ ক্ষমতা কমে যায়।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া
3. ………. উৎপাদন ব্যাহত হলে তীব্র অ্যানিমিয়া সৃষ্টি হয়।
উত্তর – হিমোগ্লোবিন
4. রোগীর দেহে বারবার রক্ত সঞ্চারণের ফলে ………… সঞ্চিত হয়।
উত্তর – লৌহ
5. ………… হল একটি লিঙ্গ সংযোজিত জিনে দ্বারা সৃষ্ট রোগ।
উত্তর – হিমোফিলিয়া
6. মানুষের ……….. নং ক্রোমোজোমে α গ্লোবিন জিনের সমস্যায় α থ্যালাসেমিয়া হয়।
উত্তর – 16
7. মানুষের ……… নং ক্রোমোজোমে β গ্লোবিন জিন থাকে।
উত্তর – 11
8. থ্যালাসেমিয়া 11 নং এবং ……… নং ক্রোমোজোমের মিউটেশনের ফলে ঘটে।
উত্তর – 16
9. কুলির অ্যানিমিয়া বলা হয় ……….. রোগকে।
উত্তর – β থ্যালাসেমিয়া মেজর
10. ……….. নামক জিনঘটিত রোগে রক্তাল্পতা ঘটে।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া
11. ইংল্যান্ডের রাজপরিবারে যে জিনগত রোগটি দেখা যায়, সেটি হল ………।
উত্তর – হিমোফিলিয়া
12. রক্তমোক্ষণকারী রোগটি ………. নামে পরিচিত।
উত্তর – হিমোফিলিয়া
13. হিমোফিলিয়া হল মানুষের একটি ………. ক্রোমোজোম সংযোজিত রোগ।
উত্তর – X
14. প্রায় ……… % হিমোফিলিয়াই AHF কম তৈরি হওয়ার ফলে ঘটে।
উত্তর – 80
15. ফ্যাক্টর IX কম তৈরি হওয়ায় হিমোফিলিয়া B বা ……… রোগ হয়।
উত্তর – ক্রিস্টমাস
16. কন্যা হিমোফিলিয়া রোগাক্রান্ত হয় যখন ………… হিমোফিলিয়া রোগী হয়।
উত্তর – পিতা ও মাতা উভয়েই
17. দুটি X ক্রোমোজোমের একটিতে হিমোফিলিয়া মিউট্যান্ট জিন থাকলে সেই মহিলা …….. হবে।
উত্তর – হিমোফিলিয়ার বাহক
18. বর্ণান্ধতা বা হিমোফিলিয়া বেশি দেখা যায় ………।
উত্তর – পুরুষে
19. বর্ণান্ধতা একপ্রকার ……… বংশগত রোগ।
উত্তর – X-লিংকড
20. প্রোটানোপিয়ায় ……… বর্ণ চিনতে পারা যায় না।
উত্তর – লাল
21. সবুজ বর্ণান্ধতাকে ……….. বলে।
উত্তর – ডিউটেরানোপিয়া
22. নীল বর্ণান্ধতাকে ………. বলে।
উত্তর – ট্রাইটানোপিয়া
23. মানুষের চোখে রং চিনবার জন্য দায়ী কোশ হল ………. কোশ।
উত্তর – কোন
24. নীল বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটি ………. প্রকৃতির হয়।
উত্তর – অটোজোমাল
25. মাতা বর্ণান্ধ হলে ও বাবা স্বাভাবিক হলে সকল ……….. বর্ণান্ধ হবে।
উত্তর – পুত্ৰ
26. হিমোফিলিয়া B-এর কারণ হল রক্ততনের জন্য দায়ী ফ্যাক্টর ……….. এর অনুপস্থিতি।
উত্তর – IX/ক্রিস্টমাস ফ্যাক্টর
27. একটি অটোজোমাল জিনগত রোগ হল ………।
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া