wb 10th science

WBBSE 10th Class Science Solutions Biology Chapter 4 অভিব্যক্তি ও অভিযোজন (TOPIC 2 অভিযোজন)

WBBSE 10th Class Science Solutions Biology Chapter 4 অভিব্যক্তি ও অভিযোজন (TOPIC 2 অভিযোজন)

West Bengal Board 10th Class Science Solutions Biology Chapter 4 অভিব্যক্তি ও অভিযোজন (TOPIC 2 অভিযোজন)

West Bengal Board 10th Biology Solutions

TOPIC 2 আচরণ এবং অভিযোজন

বিষয়সংক্ষেপ

  • পরিবেশের কোনো ইঙ্গিত বা উদ্দীপকের প্রভাবে স্নায়ুতন্ত্র নিয়ন্ত্রিত জীবের প্রতিক্রিয়াকেই বলে আচরণ। আচরণ জীবের অভিযোজন ও অভিব্যক্তিতে সাহায্য করে।
  • অভিযোজন হল পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে চলার পদ্ধতি বিশেষ।
  • অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজনের উদাহরণ হল—ক্যাকটাস, রুই মাছের পটকা ও পায়রার বায়ুথলি। ক্যাকটাসের বাষ্পমোচন রোধে পাতা কাঁটায় পরিণত হয়, এমনকি পাতার সংখ্যাও হ্রাস পায়। রুই মাছের পটকা হল উদ্‌স্থৈতিক অঙ্গ যা জলে ভাসতে সাহায্য করে। পায়রার বায়ুথলি দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাস করে উড়তে সাহায্য করে।
  • শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন দেখা যায় সুন্দরী উদ্ভিদ ও উটে। লবণ সহনের জন্য সুন্দরী উদ্ভিদের পাতায় লবণ গ্রন্থি থাকে। এ ছাড়াও বাকল মোচন, শ্বাসমূল দিয়ে O2 গ্রহণ ইত্যাদির মাধ্যমে এরা লবণাক্ত ‘মাটিতে বেঁচে থাকতে পারে। উটের RBC ক্ষুদ্র ও ডিম্বাকার হয় ও তা জল গ্রহণ দ্বারা 240% বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়াও গাঢ় মূত্র উৎপাদন, কুঁজের ফ্যাট জারণ দ্বারা জল উৎপাদনে ইত্যাদির মাধ্যমে এরা অতিরিক্ত জলক্ষয় সহন করেও মরু অঞ্চলে বেঁচে থাকতে পারে।
  • আচরণগত অভিযোজন শিম্পাঞ্জি ও মৌমাছিতে দেখা যায়। শিম্পাঞ্জি ‘ফিশিং টুল’ দিয়ে উইপোকা ধরে খায়, পাথরকে হাতুড়ি বা নেহাই-এর মতো ব্যবহার করে বাদামের খোলা ভাঙে আবার পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হলে ভেষজ ঔষধি খায়। আবার মৌমাছিরা খাদ্যের সন্ধান পেলে মৌনৃত্য করে। খাদ্যের উৎস মৌচাকের কাছে হলে স্কাউট মৌমাছিরা রাউন্ড ডান্স করে। পক্ষান্তের খাদ্যের উৎস মৌচাক থেকে দূরে হলে তারা ইংরেজি ‘৪’ অক্ষরের মতো ওয়াগ্ল ডান্স করে।

বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

1. অভিব্যক্তির সঙ্গে অভিযোজনের সম্পর্ক কী? শুষ্ক পরিবেশের জন্য ক্যাকটাস-জাতীয় উদ্ভিদের পাতার মধ্যে কী ধরনের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য দেখা যায় ?
উত্তর – অভিব্যক্তির সঙ্গে অভিযোজনের সম্পর্ক: অভিব্যক্তি ও
অভিযোজন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। এ বিষয়ে নীচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
  1. অভিযোজন—অভিব্যক্তি সংঘটনের একটি পদ্ধতি বিশেষ : জীব পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনমতো দৈহিক ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটিয়ে নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখে। যেসব জীব একাজে সাফল্য অর্জন করতে পারে তারাই বাঁচার অধিকার পায়। বাকিরা অবলুপ্ত হয়।
    অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হওয়ায় নতুন প্রজাতির আবির্ভাব ঘটে অর্থাৎ জৈব অভিব্যক্তি ঘটে। অর্থাৎ, অভিব্যক্তির একটি অন্যতম কারণ হল অভিযোজন।
  2. অভিব্যক্তি—একটি বৃহত্তর ধারণা: অভিব্যক্তি বা বিবর্তন একটি জটিল, দীর্ঘ পদ্ধতি। বহু লক্ষ বছর ধরে বিবর্তন ঘটে চলেছে, তার বিভিন্ন সময়কালে পরিবেশ ও প্রয়োজন অনুযায়ী জীবের দেহে নানা অভিযোজন দেখা যায়। অর্থাৎ, অভিব্যক্তি হল অভিযোজনের তুলনায় একটি বৃহত্তর ধারণা।
ক্যাকটাসের পাতার অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য: শুষ্ক বা জলহীন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বা অভিযোজিত হওয়ার কারণে ক্যাকটাসের পাতার মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষিত হয়। এই পরিবর্তনগুলি হল- (1) এক্ষেত্রে পাতার আকৃতি ছোটো হয় ও পাতার সংখ্যা হ্রাস পায়। (2) এইজাতীয় উদ্ভিদে বাষ্পমোচনের হার হ্রাস করার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়। এই অভিযোজন ক্যাকটাসের আত্মরক্ষাতেও সাহায্য করে। (3) কোনো ক্ষেত্রে পাতা ঘন রোমে আবৃত থাকে যা বাষ্পমোচন রোধে সাহায্য করে।
2. জলে ভারসাম্য রক্ষার জন্য রুই মাছের পটকার ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
পায়রার দেহে বায়ুথলির গুরুত্ব কী?
অংশ প্রশ্ন, পায়রার বায়ুথলির অভিযোজনগত দুটি গুরুত্ব কী কী?
অথবা, মাছের পটকা এবং পায়রার বায়ুথলি কীভাবে অভিযোজনে সাহায্য করে তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – জলে ভারসাম্য রক্ষায় রুই মাছের পটকার ভূমিকা: রুই মাছ একটি মুখ্য জলজ প্রাণী। রুই মাছের পটকা ভেসে থাকার অঙ্গ অর্থাৎ উদ্‌স্থৈতিক অঙ্গ হিসেবে কাজ করে থাকে। রুই মাছের উদরগহ্বরের শীর্ষভাগে পৌষ্টিকনালী ও বৃক্কের মধ্যবর্তী অঞ্চলে পটকা অবস্থান করে। পটকার বায়ুর পরিমাণ প্রয়োজনমতো পরিবর্তনের মাধ্যমে মাছের দেহের আপেক্ষিক গুরুত্বও পরিবর্তিত হতে পারে। জলের ওপরে ভাসতে হলে এই দুই প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট পটকার অগ্রপ্রকোষ্ঠে অবস্থিত রেডগ্রন্থি গ্যাস উৎপাদন করে। ফলে দেহ হালকা হয়, আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাস পায় ও মাছ জলে ভেসে ওঠে। পক্ষান্তরে, জলের গভীরে ডোবার সময়ে পটকার পশ্চাদ প্রকোষ্ঠে অবস্থিত রেটি মিরাবিলি নামক রক্তজালকগুচ্ছ রেড গ্রন্থিতে উৎপাদিত গ্যাস শোষণ করে। ফলে দেহ ভারী হয় এবং আপেক্ষিক গুরুত্ব বাড়ে ও মাছটি জলের গভীরে যেতে পারে।
পায়রার দেহে বায়ুথলির গুরুত্ব পায়রার বায়ুথলি হল ক্লোমশাখা থেকে উৎপন্ন পাতলা পর্দাবৃত এটি বায়ুপূর্ণ প্রকোষ্ঠ বিশেষ, যা পেশি ও রক্তজালক-বিহীন হয়। ওড়ার জন্য পায়রার অতিরিক্ত শক্তির প্রয়োজন হয়। এই অতিরিক্ত শক্তি তথা প্রশ্বাসকার্যের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত অক্সিজেন বায়ুথলি সরবরাহ করে। বায়ুর নীচের স্তরে ঊর্ধ্বস্তর অপেক্ষা বেশি অক্সিজেন উপস্থিত থাকে। ওড়ার আগে পায়রা বায়ুথলিতে বাতাস পূর্ণ করে নেয় ফলে এই বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণ বায়ুর উচ্চস্তর অপেক্ষা বেশি থাকে। এ ছাড়া থলিগুলি বায়ুপূর্ণ হলে পায়রার দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাস পায় ফলে তারা তখন সহজে বায়ুতে ভেসে থাকতে পারে।
3. সুন্দরী গাছের লবণ সহনের তিনটি শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন উল্লেখ করো। 
অনুরূপ প্রশ্ন, লবণ সহনের জন্য সুন্দরী গাছের যে-কোনো দুটি অভিযোজন বর্ণনা করো।
উত্তর – সুন্দরী গাছের লবণ সহনের জন্য শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন: সমুদ্রের উপকূলবর্তী মাটিতে লবণ বেশি থাকায় এই অঞ্চলের উদ্ভিদগুলি (হ্যালোফাইট উদ্ভিদ) মাটি থেকে সহজে জল শোষণ করতে পারে না। তাই একে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা বলে। এই মাটিতে জল শোষণ অসুবিধাজনক বলে সুন্দরী (হেরিটিয়েরা ফোস) গাছে জল নির্গমনের শারীরবৃত্তীয় পদ্ধতিগুলির অভিযোজন দেখা যায়। যথা—
  1. মূলের অভিযোজন: এই অঞ্চলের মাটি লবণাক্ত হওয়ায় সুন্দরীর মূল মাটির স্বল্প নীচেই বিস্তৃত থাকে। মাটি কর্দমাক্ত ও বাতাবকাশবিহীন হওয়ায় মাটিতে অক্সিজেন সরবরাহও কম থাকে। তাই বায়ু থেকে অক্সিজেন (O2) গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে প্রশাখা মূলগুলি অভিকর্ষের বিপরীতে মাটির ওপরে উঠে আসে। এই ধরনের মূলকে শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর বলে। শ্বাসমূলের মাথায় O2 গ্রহণের জন্য শ্বাসছিদ্র বা নিউম্যাথোড থাকে। এ ছাড়াও এদের মূলের ত্বক (এপিব্লেমা) এবং অধস্তক (হাইপোডারমিস্) পুরু হওয়ায় অন্তঃঅভিস্রবণের মাধ্যমে জল শোষিত হওয়ার সময় অতিরিক্ত লবণ শোষণ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
  2. কাণ্ডের অভিযোজন: এরা কাণ্ডের শাখা-প্রশাখার বিভিন্ন অঙ্গের কোশে অবস্থিত ভ্যাকুওলের মধ্যে অতিরিক্ত লবণ সঞ্চিত করে রাখে। দেহে লবণ সঞ্চয়ের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে এরা বাকল মোচনের মাধ্যমেও অতিরিক্ত লবণ নির্গত করে থাকে।
  3. পাতার অভিযোজন: জলের মাধ্যমে গৃহীত অতিরিক্ত লবণ পাতায় অবস্থিত লবণ গ্রন্থির মাধ্যমে নির্গত হয়ে থাকে। অনেক সময়ে উদ্ভিদ পাতায় সঞ্চিত অতিরিক্ত লবণকে পত্রমোচনের সাহায্যে রেচিত করে থাকে।
4. মরুভূমিতে উটের শারীরবৃত্তীয় অভিযোজনগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – মরুভূমিতে উটের শারীরবৃত্তীয় অভিযোজনসমূহ: মরু অভিযোজনের একটি আদর্শ উদাহরণ হল উট। এর দেহের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি এখানে আলোচিত হল।a
  1. উটের অতিরিক্ত জলক্ষয় সহনের অভিযোজন: জলক্ষয় সহনের জন্য উটের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি হল—(a) উটের দেহে যে ফ্যাট-সমৃদ্ধ কুঁজ থাকে তাতে সঞ্চিত ফ্যাটের জারণে জল (একে বিপাকীয় জল বলে) ও শক্তি উৎপাদিত হয় বলে, যা তারা ব্যবহার করে। (b) গাঢ় মূত্র ত্যাগের মাধ্যমে উট দেহ থেকে জলের নির্গমন কমায়। (c) উট প্রায় 135L অবধি জল পান করতে পারে এবং তা পাকস্থলীতে জলধারণকারী কোশে সঞ্চয় করতে পারে। (d) নিশ্বাসের মাধ্যমে উট যে জলীয় বাষ্প ত্যাগ করে তা নাসাপথে বিন্যস্ত মিউকাস স্তর দ্বারা পুনঃশোষিত হয়ে দেহে ফিরে আসে। (e) উটের দেহের তাপমাত্রা বাহ্যিক তাপমাত্রার সাথে পরিবর্তিত হয় ও তা ঘামক্ষরণ রোধ করে। 49°C উন্নতাতেও উটের ঘাম নিঃসরণ হয় না।
  2. উটের লোহিত রক্তকণিকার (RBC) আকৃতিতে অভিযোজন: (a) উটের RBC-এর আকৃতি ক্ষুদ্র ও ডিম্বাকার হয় এবং এর জন্য এগুলি জলহীন অবস্থায়ও খুব সরু রক্তবাহের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। (b) অনেকদিন জল না খেয়ে হঠাৎ অনেক জল পান করলেও উটের RBC বিদীর্ণ হয় না। কারণ এদের RBC প্রাথমিক আকারের তুলনায় প্রায় 240% বৃদ্ধি পেতে সক্ষম। অর্থাৎ, এদের RBC আকস্মিক অভিস্রবণীয় চাপ সহ্য করতে পারে।
5. আচরণ বিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন? শিম্পাঞ্জিদের আচরণগত যে-কোনো তিনটি বৈশিষ্ট্য লেখো যা অভিযোজনে সহায়তা করে।
অথবা, খাদ্য সংগ্রহ ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে শিম্পাঞ্জিরা যেভাবে বুদ্ধিমত্তার সাথে সমস্যা সমাধান করে তার উদাহরণ দাও।
উত্তর – বিবর্তনের ক্ষেত্রে আচরণের গুরুত্ব: পরিবেশের কোনো ইঙ্গিতের প্রভাবে, যেমন— গন্ধ, শব্দ বা দৃষ্টি নির্ভর কোনো সংকেত দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে অথবা অন্য কোনো জীবের কার্যাবলির দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে জীব স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণাধীনে বিভিন্ন ধরনের আচরণ সম্পন্ন করে। ওই আচরণ জীবকে পৃথিবীতে টিকে থাকতে এবং প্রজননে তথা নিজ প্রজাতি সংখ্যা বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এই আচরণের ফল সুদুরপ্রসারী এবং কালক্রমে তা অভিব্যক্তি ঘটাতে সাহায্য করে। এই কারণে বিবর্তনের ক্ষেত্রে আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শিম্পাঞ্জির অভিযোজনে সহায়ক আচরণগত বৈশিষ্ট্য: অভিযোজনে সহায়ক শিম্পাঞ্জির আচরণগত বৈশিষ্ট্য হল—
  1. ভেষজ ঔষধির ব্যবহার: শিম্পাঞ্জিরা কোনো পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হলে, বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উদ্ভিদের পাতা খেতে থাকে। এর ফলে তারা পরজীবীর আক্রমণ থেকে অব্যহতি পায়। অর্থাৎ পরজীবীঘটিত রোগ থেকে মুক্ত হতে পারে। দেখা গেছে, অ্যাসপিলিয়া রুডিস-সহ আরও 19টি ভেষজ গাছের পাতা শিম্পাঞ্জিরা ঔষধি হিসেবে গ্রহণ করে।
  2. উইপোকা শিকার: শিম্পাঞ্জিরা প্রথমে কোনো একটি গাছের ডাল ভেঙে নেয়। তারপর ওই ডালের পাতাগুলি ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে, ডালটিকে উইঢিপির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে গর্তের সৃষ্টি করে। এরপর তারা আর-একটি সরু ডাল ভেঙে পাতা ছাড়িয়ে নেয় এবং ওই ডালটিকে প্রথমে সৃষ্ট গর্তে প্রবেশ করায়। উইপোকা ওই ডালের প্রবেশ স্থান থেকে বাইরে বের হতে থাকলে শিম্পাঞ্জিরা ওই উইপোকাকে ভক্ষণ করে নিজেদের ক্ষুধা নিবারণ করে।
  3. বাদামের খোলা ভাঙা: শিম্পাঞ্জিরা অনেক সময় মানুষের মতো কাঠের কোনো একটি টুকরোকে হাতুড়ি এবং পাথরের পাটাতনকে নেহাই-এর মতো ব্যবহার করে বাদামের খোলা ভাঙে। খোলা অপসারিত হলে বাদাম বাইরে বেরিয়ে আসে এবং শিম্পাঞ্জিরা ওই বাদাম সংগ্রহ করে সহজে খেতে পারে।
6. মৌনৃত্যের মাধ্যমে মৌমাছির বার্তা আদানপ্রদান কীভাবে ঘটে, তা চিত্রসহ বর্ণনা করো।
অথবা, খাদ্য সন্ধানের উদ্দেশ্যে মৌমাছির আচরণগত অভিযোজন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।
অথবা, একটি মৌচাকে কোনো শ্রমিক মৌমাছি অন্য শ্রমিক মৌমাছিদের কীভাবে খাদ্য-উৎসের সন্ধান ও অবস্থান জানায় ?
উত্তর – মৌমাছিদের বার্তা আদানপ্রদান: মৌচাকে দুইপ্রকার কর্মী মৌমাছি থাকে, যথা স্কাউট বা খাদ্য সন্ধানী কর্মী মৌমাছি এবং ফোরেজার বা খাদ্য সংগ্রাহক কর্মী মৌমাছি। স্কাউটরা খাদ্যের সন্ধান করে এবং খাদ্যের সন্ধান পেলে এরা মৌচাকে ফিরে এসে চাকের সামনে বিশেষ নাচের ভঙ্গিতে দেহ সঞ্চালন দ্বারা অপর মৌমাছিদের খাদ্যের উৎস সম্পর্কে বার্তা বা সংকেত প্রদান করে। একে মৌনৃত্য বলে। প্রধানত দুইপ্রকার মৌনৃত্য দেখা যায়, রাউন্ড ডান্স বা বৃত্তাকার নৃত্য এবং ওয়াগ্ল ডান্স বা ওয়াগ্ল নৃত্য। এই নৃত্যের মাধ্যমে তিনপ্রকার বার্তা দেওয়া হয়— মৌচাক থেকে খাদ্যের দূরত্ব, খাদ্যের উৎসের দিক ও খাদ্যের ঘ্রাণ। নীচে দুইপ্রকার মৌনৃত্য সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
  1. বৃত্তাকার নৃত্য/চক্রাকার নৃত্য: খাদ্যের উৎস 50-75m এর মধ্যে হলে শ্রমিক সন্ধানী মৌমাছিরা বৃত্তাকার নৃত্য করে থাকে। সন্ধানী মৌমাছিদের পিছনে সংগ্রাহকরাও খাদ্য উৎসের দিকে ধাবিত হয় এবং যাত্রাপথে তারাও একই নৃত্য শুরু করে।

    গুরুত্ব: চক্রাকার নৃত্য দ্বারা নিকটবর্তী স্থানে খাদ্য উৎস সম্পর্কে মৌমাছিরা তথ্য আদান প্রদান করে থাকে।

  2. ওয়াগ্ল নৃত্য: খাদ্যের উৎস 50-75m-এর থেকে অধিক দূরবর্তী হলে সন্ধানী কর্মী বা স্কাউট মৌমাছিরা ওয়াল নৃত্যে অংশ নেয়। এরা চাকের নিকটবর্তী অংশে উল্লম্ব তলে নাচে, যার বার্তা বা সংকেত থেকে অন্যান্য মৌমাছিরা অনুভূমিক তলে খাবারের উৎসের অবস্থান নির্ণয় করতে পারে। এই নৃত্য ইংরাজি ‘৪’ সংখ্যার আকৃতিবিশিষ্ট হয়। অর্থাৎ, একবার ডানদিকে ও একবার বাঁদিকে লুপ তৈরি করে, এবং নৃত্যের সময় লুপের মধ্যের সরলরৈখিক অংশে সন্ধানী মৌমাছির উদর অংশ ওপর নীচে আন্দোলিত (waggle) হয়। ইংরাজি ওয়াগ্ল শব্দের অর্থ আন্দোলন বা কম্পন। তাই এই নৃত্যকে ওয়াগ্ল নৃত্য বলে।
    গুরুত্বঃ এই ওয়াগ্ল বা কম্পনের মাত্রা থেকে খাদ্যের অবস্থানের দূরত্ব সম্পর্কে জানা যায় এবং সূর্যের সাপেক্ষে নাচের কৌণিক অভিমুখ থেকে

    খাদ্যের উৎসের দিক নির্ধারণ করা যায়। ঊর্ধ্বমুখী নাচ থেকে বোঝা যায়। যে খাবারের উৎসের অবস্থান সূর্যের অভিমুখে। নিম্নমুখী নাচের অর্থ হল যে খাবারের অবস্থান সূর্যের বিপরীত দিকে। যেমন—ডানদিকে 30° কোণে মৌমাছির নাচের অর্থ হল যে চাকের ডানদিকে 30° কোণে খাবারের উৎস অবস্থিত।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

1. অভিযোজন কাকে বলে?
উত্তর – পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কোনো জীবের গঠনগত, শারীরবৃত্তীয় এবং আচরণগত স্থায়ী পরিবর্তনকে সেই জীবের অভিযোজন বলে।
2. অভিযোজনের প্রধান উদ্দেশ্য কী ?
অথবা, অভিযোজনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – (1) অভিযোজনের মাধ্যমে কোনো জীবের নিজ পরিবেশে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। (2) অভিযোজনের মাধ্যমে জীব প্রজাতি পরিবর্তিত পরিবেশে বেঁচে থাকলে তা কালক্রমে অভিব্যক্তি ঘটায় ও নতুন জীব প্রজাতি সৃষ্টি করে।
3. অভিব্যক্তির মূলভিত্তি হল অভিযোজন’—ব্যাখ্যা করো।
অথবা, ‘অভিযোজন কারণ হলে বিবর্তন তার ফল’—ধারণাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – অভিব্যক্তির পথে নতুন জীব প্রজাতির উৎপত্তি ঘটে। নতুন প্রজাতির নানা বৈশিষ্ট্য তাকে পূর্ববর্তী জীব থেকে ক্রমশ পৃথক করে তোলে। এই বৈশিষ্ট্যগুলির আবির্ভাব ঘটে পরিবেশে জীবের অভিযোজন দ্বারা। অর্থাৎ, জীবের অভিযোজনগুলি একত্রিত হয়ে নতুন জীবের উৎপত্তি ঘটায়। এজন্য বলা হয় যে, অভিব্যক্তির মূল ভিত্তি হল অভিযোজন। অন্যভাবে বলা যায় যে, অভিযোজন কারণ হলে বিবর্তন হল তার ফল।
4. আচরণ কাকে বলে?
উত্তর – পরিবেশের কোনো ইঙ্গিত বা উদ্দীপকের প্রভাবে বা অন্য কোনো জীবের ক্রিয়ার ফলে কোনো একটি জীব স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণাধীন যে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে আচরণ বলে।
5. আচরণ কীভাবে পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত?
উত্তর – (1) প্রত্যেক জীব ‘পরিবেশের সাথে সঠিক আচরণ দ্বারা সামঞ্জস্য রক্ষা করে। (2) পরিবেশের পরিবর্তনে আচরণ পরিবর্তিত হয়।
6. আচরণ ও অভিব্যক্তির সম্পর্ক কী?
উত্তর – কোনো জীবের আচরণই সেই জীবের অস্তিত্ব রক্ষায় ও জননে সাহায্য করে। পরিবেশ পরিবর্তিত হলে জীবও নিজের প্রয়োজনমতো আচরণের পরিবর্তন ঘটিয়ে অভিযোজিত হয়। এই আচরণ বহু বছর ধরে প্রাকৃতিকভাবে নির্বাচিত হলে ওই প্রজাতির সমস্ত জীবে ছড়িয়ে গিয়ে অভিব্যক্তি ঘটায়।
7. আচরণ ও অভিযোজনের সম্পর্ক কী?
অথবা, আচরণ কীভাবে অভিযোজনে সাহায্য করে ?
উত্তর – প্রকৃতপক্ষে আচরণ হল একটি বিশেষ প্রকারের অভিযোজন। এই ধরনের অভিযোজন প্রাণীকে পরিবেশে মানিয়ে চলতে ও বেঁচে থাকতে সাহায্য করে, অর্থাৎ প্রাণীর অভিব্যক্তিতে এটি সাহায্য করে। এটি একটি প্রাকৃতিক নির্বাচনে সাহায্যকারী বলবিশেষ।
8. আচরণগত অভিযোজনের সংজ্ঞা ও উদাহরণ দাও।
উত্তর – জিনগত এবং শিক্ষানির্ভর যে সকল ক্রিয়ার সাহায্যে কোনো জীব তার অস্তিত্ব বজায় রাখে এবং জননের সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করে, সেই ক্রিয়াগুলিকে আচরণগত অভিযোজন বলে। উদাহরণ—শিম্পাঞ্জির ডালের সাহায্যে উইপোকা শিকার।
9. আচরণ বিজ্ঞান বা ইথোলজি (ethology) কী ?
উত্তর – জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবজন্তু, পোকামাকড় ইত্যাদির আচার-আচরণ সম্পর্কে অধ্যয়ন করা হয়, তাকে আচরণ বিজ্ঞান বা ইথোলজি বলে।
10. অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজনের সংজ্ঞা ও উদাহরণ দাও।
উত্তর – পরিবর্তিত পরিবেশে অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য জীবদেহের যে বাহ্যিক অথবা অভ্যন্তরীণ গঠনের সুবিধাজনক, উন্নত ও স্থায়ী পরিবর্তন হয়, তাকে জীবের অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজন বলে। উদাহরণ—ক্যাকটাসের পাতার কাঁটায় রূপান্তর।
11. ভৌত শুষ্ক মৃত্তিকা কাকে বলে ?
উত্তর – কিছু কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাটি শুষ্ক প্রকৃতির হয় এবং এর জলধারণ ক্ষমতা কম হয়। এইপ্রকার মাটিকে ভৌত শুষ্ক মৃত্তিকা বলে। ক্যাকটাসজাতীয় উদ্ভিদ এইপ্রকার মৃত্তিকায় জন্মায়।
12. জাঙ্গল অভিযোজন কাকে বলে ?
উত্তর – শুষ্ক পরিবেশে জন্মানোর জন্য উদ্ভিদের মধ্যে যে সকল অঙ্গসংস্থানগত ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন লক্ষিত হয়, তাদের একত্রে জাঙ্গল অভিযোজন বলে ৷
13. জাঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট (xerophyte) কারা ?
উত্তর – যে সকল উদ্ভিদ ভৌত শুষ্ক মৃত্তিকায় বসবাসের জন্য এবং কম জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ুতে বেঁচে থাকার জন্য অভিযোজিত হয়, তাদের জাঙ্গল উদ্ভিদ বলে। যেমন—ফণীমনসা, ত্রিশিরা মনসা, শতমূলী, বাবলা ইত্যাদি।
14. বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য ক্যাকটাসের পাতার কী ধরনের অভিযোজন হয়েছে?
উত্তর – বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য ক্যাকটাসের পাতায় নিম্নলিখিত অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যথা—(1) পাতার সংখ্যা কম হয় এবং তা আকারে ছোটো হয়। (2) অধিকাংশ পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়। এগুলি অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজনের উদাহরণ।
15. ফণীমনসার কাণ্ডের অভিযোজন লেখো।
উত্তর – ফনীমনসার (ক্যাকটাসের) কাণ্ডের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য হল—কাণ্ড সাধারণত ছোটো, প্রসারিত, স্থূল, রসালো এবং সবুজ বর্ণের। এইরূপ কাণ্ডকে পর্ণকাণ্ড বা ফাইলোক্ল্যাড বলে। কাণ্ডের ত্বক পুরু, কিউটিকল আবরণযুক্ত এবং মিউসিলেজ সমৃদ্ধ হয়।
16. ক্যাকটাসের পাতার অভিযোজনগুলি লেখো।
উত্তর – (1) পাতা সংখ্যায় কম ও আকারে ছোটো হয়, কখনও তা প্রায় থাকেই না, ফলে জলের বাষ্পমোচন হ্রাস করা সম্ভব হয়। ক্যাকটাসের (ফণীমনসা) পাতা কাঁটায় পরিণত হয়, যা আত্মরক্ষায় সাহায্য করে। (2) পাতায় অনেক সময় ঘন রোম থাকে যা বাষ্পমোচন রোধে সাহায্য করে।
17. মুখ্য জলজ প্রাণী কাকে বলে?
উত্তর – জলে বসবাসকারী যেসব প্রাণীর পূর্বসূরিরাও তাদের উদ্ভবকাল থেকে জলেই বাস করত তাদের মুখ্য বা প্রাথমিক জলজ প্রাণী বলে। উদাহরণ—মাছ।
18. গৌণ জলজ প্রাণী কাকে বলে ?
উত্তর – যে সকল প্রাণীর পূর্বপুরুষ স্থলে বসবাস করত কিন্তু বর্তমানে তারা বিশেষ কোনো কারণে জলে বসবাস করে তাদের গৌণ জলজ প্রাণী বলে। যেমন—তিমি, কুমির, কচ্ছপ ইত্যাদি।
19. মাছের যে-কোনো দুটি জলজ অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর – মাছের দুটি জলজ অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য হল— (1) জলের বিভিন্ন গভীরতায় গমনের জন্য পটকা এবং (2) জলে সাঁতার কাটার জন্য বিভিন্নপ্রকার পাখনার উপস্থিতি।
20. মাছের অভিযোজনে পটকার ভূমিকা কী ?
অথবা, রুইমাছের জলজ অভিযোজনে পটকার ভূমিকা কী কী?
অথবা, উদ্‌ম্থৈতিক অঙ্গ রূপে পটকার গুরুত্ব কী?
উত্তর – পটকার সাহায্যে মাছ জলের মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন গভীরতায় বিচরণ করতে পারে। পটকার বায়ুর পরিমাণের হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে মাছের দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব পরিবর্তিত হয় ও মাছ জলের মধ্যে নিজের অবস্থানের গভীরতা পরিবর্তন করে। পটকা বায়ুপূর্ণ হলে মাছের দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব কমে। ফলে মাছ ভেসে ওঠে। আবার পটকা বায়ুশূন্য হলে আপেক্ষিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে মাছ জলে ডুবতে পারে।
21. রেটি মিরাবিলি (rete mirabile) কী ?
উত্তর – অধিকাংশ অস্থিবিশিষ্ট মাছের পটকার পশ্চাৎ প্রকোষ্ঠে গ্যাস শোষণ করার উপযোগী যে রক্তজালকগুচ্ছ থাকে, তাকে রেটি মিরাবিলি (rete mirabile) বলে। এর দ্বারা পটকার অগ্র প্রকোষ্ঠের রেড গ্রন্থি নিঃসৃত গ্যাস শোষিত হয়। এভাবে পটকায় গ্যাসের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হয় যা মাছকে জলের বিভিন্ন গভীরতায় বিচরণ করতে সাহায্য করে।
22. মুখ্য খেচর প্রাণী কাকে বলে ?
উত্তর – যে সকল খেচর প্রাণী তাদের উৎপত্তির সময় থেকেই যথার্থভাবে খেচর বৈশিষ্ট্যে অভিযোজিত, তাদের মুখ্য খেচর প্রাণী বলে। যেমন—পায়রা, বাদুড়।
23. গৌণ খেচর প্রাণী কাকে বলে ?
উত্তর – যে সকল প্রাণী বিশেষ প্রয়োজনের তাগিদে গৌণ অভিযোজনের মাধ্যমে খেচর বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে তাদের গৌণ খেচর প্রাণী বলে। যেমন—উড়ুক্কু মাছ, উড়ুক্কু ব্যাং।
24. পায়রার বায়ুথলির অভিযোজনে ভূমিকা কী?
উত্তর – পায়রার খেচর অভিযোজনে বায়ুথলিগুলি বায়ুপূর্ণ হলে দেহ সামগ্রিকভাবে হালকা হয় এবং বাতাসে ভাসতে সুবিধা হয়।
25. পায়রার বায়ুথলি নষ্ট হয়ে গেলে কী অসুবিধা ঘটবে উল্লেখ করো।
উত্তর – পায়রার বায়ুথলি নষ্ট হলে – (1) দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব বেড়ে যাবে। (2) শ্বসনের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত বায়ুর জোগান ব্যাহত হবে। এ ছাড়াও, মৃত্তিকা সংলগ্ন স্তরে বেশি অক্সিজেনযুক্ত বাতাস দেহের মধ্যে সজ্জিত হবে না। সেজন্য বাতাসের উচ্চস্তরে ওড়ার সময় শ্বাসকার্যে অসুবিধা হবে। (3) দেহের ভারসাম্য ও ভরকেন্দ্র সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে না।
26. সুন্দরী গাছ তার দেহের অতিরিক্ত লবণ কীভাবে রেচিত করে?
উত্তর – সুন্দরী গাছের লবণ রেচনের পদ্ধতিগুলি হল – (1) পাতায় লবণ গ্রন্থির উপস্থিতি যা জলের সাথে লবণ নির্গত করতে সাহায্য করে। (2) অতিরিক্ত লবণ বাকলের বিশেষ কোশ বা মূলের কোশে সঞ্চিত থাকে, যা বাকলমোচন বা অন্যান্য বিশেষ পদ্ধতি দ্বারা নির্গত হয়। (3) সাধারণত কচি পাতার তুলনায় পরিণত পাতায় দেহের অতিরিক্ত লবণ সঞ্চয় করে রাখে এবং প্রয়োজনমতো পত্রমোচনের দ্বারা সেই অতিরিক্ত লবণ নির্গত করে দেয়। (4) কোশের ভ্যাকুওলগুলি আকৃতিতে বড়ো হওয়ায় এরা ভ্যাকুওলের কোশরসে লবণ সঞ্চয় করে এবং প্রয়োজনমতো দেহ থেকে সেটি নির্গত করে। এমনকি এদের মূল অধিক লবণ শোষণে এদের বাধা দান করে।
27. শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন কাকে বলে?
উত্তর – পরিবর্তিত পরিবেশে অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য জীবদেহের বিবিধ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার যে সকল সুবিধাজনক উন্নত ও স্থায়ী পরিবর্তন হয়, সেই পরিবর্তনকে জীবের শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন বলে। উদাহরণ—সুন্দরী গাছের সাধারণ মূলের শ্বাসমূলে রূপান্তর।
28. শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মাটি কাকে বলে?
উত্তর – যে মাটিতে খনিজ লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় মাটিতে পর্যাপ্ত জল থাকলেও উদ্ভিদ ওই জল শোষণ করতে পারে না সেই মাটিকে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মাটি বলে। এই মাটিতে অতিরিক্ত খনিজ লবণ (MgCl2, NaCl প্রভৃতি) থাকায় মাটির কৈশিক জলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে উদ্ভিদের মূলরোম অভিস্রবণ পদ্ধতির মাধ্যমে ওই জল প্রয়োজনমতো শোষণ করতে পারে না। পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলে এই ধরনের মাটি দেখা যায়।
29. লবণাম্বু উদ্ভিদ বা হ্যালোফাইট (halophyte) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – যে সকল উদ্ভিদ সমুদ্র উপকূলবর্তী লবণাক্ত অঞ্চলে বা নদীর মোহনায় লবণাক্ত মাটিতে জন্মায় তাদের লবণাম্বু উদ্ভিদ বলে। যেমন—সুন্দরী, গরান, হেঁতাল ইত্যাদি।
30. শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর কাকে বলে?
উত্তর – লবণাক্ত মৃত্তিকায় বাতাবকাশ অত্যন্ত কম থাকে বলে মাটিতে অক্সিজেন সরবরাহ অত্যন্ত কম হয়। এই কারণে গরান, সুন্দরী প্রভৃতি লবণাম্বু উদ্ভিদে বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করার জন্য বিশেষ প্রকারের শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন দেখা যায়। এদের শাখামূলগুলি অভিকর্ষের বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়ে মাটির ওপরে উঠে আসে। এইজাতীয় মূলকে শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর (pneumatophore) বলে। এইসব মূলের অগ্রভাগে কিছু শ্বাসরন্জ বা নিউম্যাথোড থাকে যার সাহায্যে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন সরাসরি গৃহীত হয়।
31. সুন্দরী গাছের অভিযোজনে শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর কীভাবে সাহায্য করে?
অথবা, সুন্দরী গাছে শ্বাসমূলের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর – লবণাম্বু উদ্ভিদের অভিযোজন হিসেবে সুন্দরী গাছের শ্বাসমূল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এরা উপকূলবর্তী অঞ্চলে জন্মায়। এখানকার মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম থাকায় মূলতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাওয়া যায় না। এই কারণে শ্বাসমূল গঠিত হয় যারা মাটির ওপরে উঠে আসে ও বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে। এইভাবে শ্বাসমূল লবণাক্ত পরিবেশে সুন্দরী গাছকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এটি একপ্রকার শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন।
32. উটের মর অভিযোজনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
অথবা, মরুভূমিতে বসবাসের জন্য উটের দুটি জলসহন অভিযোজনের উল্লেখ করো।
উত্তর – (1) গাঢ় মূত্রত্যাগের ফলে এদের দেহ থেকে জলের নির্গমন কম হয়। (2) নিশ্বাস ত্যাগের সময় উট যে জলীয় বাষ্প পরিত্যাগ করে তা নাসাপথে বিন্যস্ত মিউকাস স্তর দ্বারা পুনঃশোষিত হয়ে দেহে ফিরে যায় এবং জলক্ষয় রোধ করে।
33. উটের লোহিত কণিকা বা RBCর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য কী?
অথবা, উটের অতিরিক্ত জলক্ষয় সহন ক্ষমতার সাথে এদের লোহিত রক্তকণিকার (RBC) বিশেষ চরিত্রটি কীভাবে সম্পর্কযুক্ত?
অথবা, একসাথে অনেকটা জল পান করলেও উটের লোহিত কণিকা ফেটে যায় না কেন?
উত্তর – (1) উটের RBC নিউক্লিয়াসবিহীন হয় এবং সেই স্থান প্রান্তীয় ব্যান্ড (marginal band) পূর্ণ হয়। এই প্রান্তীয় ব্যান্ড আসলে হল একটি মোটা পটি-জাতীয় গঠন যা RBC অর্থাৎ লোহিত রক্তকণিকার আকৃতি যথাযথভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে। এগুলি জলবিহীন অবস্থায় RBC থেকে জল নির্গমনে বাধা দেয়। (2) RBC ডিম্বাকৃতি ক্ষুদ্র আকারের হয়, ফলে জলের অভাবে রক্ত ঘন হলেও রক্তবাহতে তার চলাচল সম্ভব হয়। (3) উটের RBC অধিক জলপানের পরে 240% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এই কারণে এদের লোহিত রক্তকণিকা আকস্মিক অভিস্রবণীয় চাপ সহ্য করতে পারে। তাই দীর্ঘদিন জলপান না করার পর অধিক জলপানেও উটের লোহিত রক্তকণিকা বিদীর্ণ হয় না।
34. শিম্পাঞ্জির বাদামের খোলা ভাঙার ক্ষেত্রে হাতুড়ি ও নেহাই-এর ব্যবহার সম্পর্কে লেখো।
উত্তর – শিম্পাঞ্জিরা পাথরের একটি শক্ত পাটাতনকে নেহাই হিসেবে ব্যবহার করে তার ওপর বাদাম রাখে। এরপর একটি গাছের ডাল হাতুড়ির মতো ব্যবহার করে সেটা দিয়ে বাদামের খোলা ভাঙে।
35. শিল্পাঞ্জিরা খাবার জন্য কীভাবে উইপোকা শিকার করে তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – শিম্পাঞ্জিরা উইপোকা ধরার জন্য সাধারণত কোনো সোজা এবং সরু গাছের ডাল ভেঙে নিয়ে, সেই ডালের পাতাগুলি ছিঁড়ে ফেলে। এরপর সেই ডালটিকে উইঢিবির মধ্যে ঢুকিয়ে গর্ত করে, এরপর যখন ওই ডালের গা বেয়ে উইপোকাগুলি উঠে আসে, তখন শিম্পাঞ্জিরা সেই ডাল চেটে উইপোকাগুলিকে ভক্ষণ করে। বলাবাহুল্য গাছের এই ডালগুলিকে শিম্পাঞ্জিরা ‘ফিশিং টুল’ হিসেবে ব্যবহার করে।
36. বিজ্ঞানী কার্ল ভন ফ্রিশ কী জন্য বিখ্যাত?
উত্তর – বিজ্ঞানী কার্ল ভন ফ্রিশ মৌমাছির ওপর গবেষণা করে মৌমাছির ভাষা আবিষ্কার করেন। শ্রমিক মৌমাছি কোনো স্থানে মিষ্টি ফুলের রসের সন্ধান পেলে মৌচাকে ফিরে এসে চাকের সামনে বিশেষ বিশেষ ভঙ্গিতে নেচে সঙ্গীদের খাদ্যের অবস্থান জানিয়ে দেয়। মৌমাছিদের এই ধরনের বিশেষ ভঙ্গিগুলিকে তিনি লিপিবদ্ধ করেন এবং তার অর্থ. সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দেন।
37. স্কাউট কর্মী মৌমাছিগুলি মৌনৃত্য দ্বারা ফোরেজারদের কী তথ্য জানায়?
উত্তর – স্কাউট কর্মী মৌমাছি মৌনৃত্য দ্বারা ফোরেজারদের (1) মৌচাক থেকে খাদ্য উৎসের দূরত্ব, (2) খাদ্যের ঘ্রাণ ও মান, (3) মৌচাক থেকে খাদ্য উৎসের অভিমুখ সম্পর্কিত তথ্য জানায়।

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো

1. বেঁচে থাকার কৌশল হল—
(a) অভিযোজন
(b) জনন
(c) বংশগতি
(d) পরিব্যক্তি
উত্তর – (a) অভিযোজন
2. জীবের আকার, শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ বা আচরণের পরিবর্তন হল—
(a) অভিব্যক্তি
(b) বিবর্তন
(c) অভিযোজন
(d) উপযোজন
উত্তর – (c) অভিযোজন
3. পরিবেশের নানান ইঙ্গিতের প্রভাবে জীব স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণাধীনে বিভিন্ন ক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। এই ঘটনাকে কী নামে অভিহিত করা হয়?
(a) জনন
(b) বিবর্তন
(c)পরিভ্রমণ
(d) আচরণ
উত্তর – (d) আচরণ
4. প্রাণীদের অস্তিত্ব রক্ষায় ও জনন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে—
(a) আবর্তন
(b) আবরণ
(c) আরোহণ
(d) আচরণ
উত্তর – (d) আচরণ
5. অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজনের একটি উদাহরণ হল—
(a) সুন্দরীর শ্বাসমূল
(b) ক্যাকটাসের কাঁটা
(ca) উটের লোহিত রক্তকণিকার আকার
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (b) ক্যাকটাসের কাঁটা
6. ভৌত শুষ্ক মৃত্তিকাতে জন্মায় এমন একটি উদ্ভিদ হল —
(a) গরান
(b) তরমুজ
(c) ক্যাকটাস
(d) গেঁওয়া
উত্তর – (c) ক্যাকটাস
7. নীচের যে উদ্ভিদটি হ্যালোফাইট নয় সেটি হল—
(a) সুন্দরী
(b) ক্যাকটাস
(c) গরান
(d) গেঁওয়া
উত্তর – (b) ক্যাকটাস
৪. মরুভূমির উদ্ভিদকে বলা হয়—
(a) জাঙ্গল উদ্ভিদ
(b) জলজ উদ্ভিদ
(c) পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ
(d) ক্ষণজীবী উদ্ভিদ
উত্তর – (a) জাঙ্গল উদ্ভিদ
9. ফণীমনসার কাণ্ডকে বলা হয় –
(a) গ্রন্থিকাণ্ড
(b) পর্ণকাণ্ড
(c) পর্ণবৃত্ত
(d) মৃগতকাণ্ড
উত্তর – (b) পর্ণকাণ্ড
10. জল সংরক্ষণের জন্য ক্যাকটাসের পাতা রূপান্তরিত হয় —
(a) কাঁটায়
(b) আকর্ষে
(c) শল্কে
(d) ফুলে
উত্তর – (a) কাঁটায়
11. মাছকে জলের মধ্যে গভীরতা পরিবর্তন করতে সাহায্য করে—
(a) পটকা
(b) পাখনা
(c) আঁশ
(d) ল্যাজ
উত্তর – (a) পটকা
12. নীচের কোন্‌টি অস্থিযুক্ত মাছের পটকার গ্যাস শোষণ করে নেয়?
(a) রেডগ্রন্থি
(b) অগ্র প্রকোষ্ঠ
(c) গ্যস্ট্রিক গ্রন্থি
(d) রেটি মিরাবিলি
উত্তর – (d) রেটি মিরাবিলি
13. বায়ুথলি দেখা যায় —
(a) মানুষে
(b) পায়রায়
(c)হরিণে
(d) তিমিতে
উত্তর – (b) পায়রায়
14. ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার জন্য পায়রার দেহে থাকে—
(a) কীল
(b) পালক
(c) বায়ুথলি
(d) ল্যাজ
উত্তর – (c) বায়ুথলি
15. সুন্দরবন অঞ্চলে লবণপূর্ণ মাটি থেকে জল ও অক্সিজেন গ্রহণ অসুবিধাজনক বলে একে বলে—
(a) ভৌত শুষ্ক মৃত্তিকা
(b) শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা
(c) লবণাক্ত মৃত্তিকা
(d) ল্যাটারাইট মৃত্তিকা
উত্তর – (b) শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা
16. শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকায় মূলত যে উপাদানগুলি গ্রহণে উদ্ভিদের অসুবিধা হয়—
(a) CO2 ও জল
(b) লবণ ও জল
(c) জল ও O2
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) জল ও O2
17. শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকায় যে উদ্ভিদটি অভিযোজিত হয়, সেটি হল—
(a) ক্যাকটাস
(b) পদ্ম
(c) সুন্দরী
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) সুন্দরী
18. জলের অভাব মেটাতে সুন্দরী ও ক্যাকটাস-জাতীয় উদ্ভিদের একটি সাধারণ ব্যবস্থাপনা হল —
(a) পাতার সংখ্যা হ্রাস
(b) পাতার কাঁটায় পরিণত হওয়া
(c) শ্বাসমূল
(d) কিউটিকল
উত্তর – (d) কিউটিকল
19. লবণ সহনের জন্য অভিযোজন ঘটেছে যে উদ্ভিদটিতে তার নাম—
(a) পলাশ
(b) ক্যাকটাস
(c) তেঁতুল
(d) সুন্দরী
উত্তর – (d) সুন্দরী
20. শ্বাসমূল দেখা যায়—
(a) সুন্দরী গাছে
(b) ক্যাকটাসে
(c) মটর গাছে
(d) খেজুর গাছে
উত্তর – (a) সুন্দরী গাছে
21. নিউম্যাটোফোর থাকে—
(a) হ্যালোফাইটে
(b) মেসোসাইটে
(c) হাইড্রোফাইটে
(d) জেরোফাইটে
উত্তর – (a) হ্যালোফাইটে
22. জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম দেখা যায় —
(a) গরান গাছে
(b) ক্যাকটাসে
(c) ওক গাছে
(d) পাইন গাছে
উত্তর – (a) গরান গাছে
23. জলক্ষয় সহনের জন্য উটের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য নয়—
(a) ঘাম নিঃসরণ কম হওয়া
(b) গাঢ় মূত্র ত্যাগ করা
(c) ভেষজ উদ্ভিদ খাওয়া
(d) পাকস্থলীতে জলসঞ্চয় ক্ষমতা
উত্তর – (c) ভেষজ উদ্ভিদ খাওয়া
24. উটের অতিরিক্ত জলক্ষয় সহনের ক্ষমতার কারণ হল –
(a) এদের RBC লম্বাটে
(b) এদের মল-মূত্রে জলের পরিমাণ খুব কম থাকে
(c) এদের দেহে প্রচুর ঘর্মগ্রন্থি থাকে
(d) কুঁজে জল সঞ্চিত থাকে
উত্তর – (a) এদের RBC লম্বাটে
25. উঠের RBC প্রাথমিক আকারের প্রায় যত শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে, তা হল –
(a) 120%
(b) 60%
(c) 240%
(d) 360%
উত্তর – (c) 240%
26. মরু অঞ্চলের প্রাণীদের দেহত্বক—
(a) খুব পাতলা
(b) পাতলা
(c) মাঝারি
(d) পুরু
উত্তর – (d) পুরু
27. উট দীর্ঘদিন জলপান না করলে কী পরিবর্তন দেখা যায় ?
(a) মারা যায়
(b) প্রখর রৌদ্রে ভ্রমণ বন্ধ করে দেয়
(c) উটের কুঁজ ক্রমশ ছোটো হয়ে যায়
(d) কোনোটিই নয়।
উত্তর – (c) উটের কুঁজ ক্রমশ ছোটো হয়ে যায়
28. চক্ষুপল্লব লম্বা লম্বা রোম দ্বারা ঘেরা থাকে—
(a) কুকুরের
(b) বেড়ালের
(c) উটের
(d) শেয়ালের
উত্তর – (c) উটের
29. দেহে জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে—
(a) গোরুর
(b) ঘোড়ার
(c) উটের
(d) শিম্পাঞ্জির
উত্তর – (c) উটের
30. নিম্নলিখিত প্রাণীর পাকস্থলীতে জল ধারণকারী কোশ দেখা যায়। সেটি হল–
(a) শেয়াল
(b) উট
(c) বাঘ
(d) সিংহ
উত্তর – (b) উট
31. নিম্নলিখিত যে প্রাণীর লোহিত রক্ত কণিকা স্বাভাবিক আকারের 240% বৃদ্ধি পেতে পারে, সেটি হল –
(a) মানুষ
(b) ইঁদুর
(c) উট
(d) শিম্পাঞ্জি
উত্তর – (c) উট
32. নীচের যে প্রাণীটির লোহিত কণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না, সেটি হল—
(a) উট
(b) পাখি
(c) ব্যাং
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (a) উট
33. উইপোকার ঢিপিতে কাঠি ঢুকিয়ে উই শিকারে অভ্যস্ত প্রাণী হল—
(a) বাঘ
(b) হাতি
(c) শিম্পাঞ্জি
(d) বানর
উত্তর – (c) শিম্পাঞ্জি
34. পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সময় অ্যাসপিলিয়া রুডিস অথবা অন্যান্য ভেষজ উদ্ভিদ গ্রহণ করে যে প্রাণী, তা হল—
(a) হাতি
(b) বাঘ
(c) শেয়াল
(d) শিম্পাঞ্জি
উত্তর – (d) শিম্পাঞ্জি
35. শিম্পাঞ্জির আচরণ নিয়ে কাজ করেন ইংল্যান্ডের যে বিজ্ঞানী—
(a) কার্ল ভন ফ্রিশ
(b) ল্যামার্ক
(c) ডারউইন
(d) জেন গুড়াল
উত্তর – (d) জেন গুড়াল

দু-একটি শব্দে বা বাক্যে উত্তর দাও

1. একটি আচরণগত অভিযোজনের উদাহরণ দাও।
উত্তর – মৌচাক থেকে খাদ্যের উৎসের দূরত্ব অনুযায়ী মৌনৃত্য।
2. পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য জীবদেহের পরিবর্তনকে কী বলে?
উত্তর – অভিযোজন।
3. প্রাথমিক পরিবেশ থেকে ভিন্ন পরিবেশে জীবের অভিযোজনকে কী প্রকার অভিযোজন বলে ?
উত্তর – গৌণ অভিযোজন।
4. দুটি ভিন্ন পরিবেশে বাস করবার জন্য জীবের মধ্যে উভয় পরিবেশের উপযোগী অভিযোজন ঘটলে তাকে কী বলে?
উত্তর – দ্বি-অভিযোজন।
5. জাঙ্গল উদ্ভিদের একটি উদাহরণ দাও। 
উত্তর – ফণীমনসা।
6. ফাইলোক্ল্যাড বা পর্ণকাণ্ড কী?
উত্তর – ক্যাকটাসের কাণ্ড চ্যাপটা, পুরু, রসালো ও সবুজ বর্ণের হয়, একে ফাইলোক্ল্যাড বলে।
7. ক্যাকটাসের কঁাঁটাগুলি কী ধরনের অঙ্গ?
উত্তর – ক্যাকটাসের কাঁটাগুলি প্রকৃতপক্ষে রূপান্তরিত পাতা।
৪. ক্যাকটাস-জাতীয় উদ্ভিদের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে কেন?
উত্তর – বাষ্পমোচনের হার কমানোর জন্য ক্যাকটাস-জাতীয় উদ্ভিদের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে।
9. বাষ্পমোচন রোধে ক্যাকটাসের একটি অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজন উল্লেখ করো।
উত্তর – ক্যাকটাস-জাতীয় উদ্ভিদের পাতার কাঁটায় রূপান্তর একটি অঙ্গ-সংস্থানগত অভিযোজন।
10. কোন্ গাছে পর্ণকাণ্ড দেখা যায়?
উত্তর – ক্যাকটাস-জাতীয় গাছে পর্ণকাণ্ড দেখা যায়।
11. ক্যাকটাসের পর্ণকাণ্ডের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর – ক্যাকটাসের পর্ণকাণ্ড সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় ও জল সঞ্চয়ে সাহায্য করে।
12. ক্যাকটাস-জাতীয় উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পাতার সংখ্যা হ্রাস পাওয়া কী-জাতীয় অভিযোজন?
উত্তর – অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজন।
13. কয়েকটি জেরোফাইটের নাম বলো।
উত্তর – ফণীমনসা, ঘৃতকুমারী।
14. একটি মুখ্য জলজ অভিযোজনকারী প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর – মাছ।
15. একটি গৌণ জলজ অভিযোজনকারী প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর – তিমি।
16. মাছের দেহের কোথায় পটকা অবস্থিত?
উত্তর – মাছের পটকা দেহে উদরগহ্বরের ওপরের দিকে পৌষ্টিকনালী ও বৃক্কের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
17. রুইমাছের পটকার গাত্র থেকে বায়ু নির্গত হয় না কেন?
উত্তর – রুইমাছের পটকার গাত্রে গুয়ানিন কেলাসের আবরণ থাকে, যা গ্যাসের পক্ষে অভেদ্য। সেইজন্য পটকার গাত্র থেকে বায়ু নির্গত হতে পারে না।
18. রুইমাছের পটকায় অবস্থিত রক্ত জালকটির নাম কী?
উত্তর – রেটি মিরাবিলি।
19. রুইমাছের প্লবতা রক্ষাকারী অঙ্গ কোন্‌টি?
অথবা, রুইমাছকে ভাসতে ও ডুবতে সাহায্য করে কোন্ অঙ্গ?
উত্তর – পটকা।
20. রুইমাছের পটকার গ্যাস সৃষ্টিকারী গ্রন্থিটির নাম কী ?
উত্তর – রেড গ্রন্থি।
21. একটি মুখ্য খেচর অভিযোজনকারী প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর – পায়রা।
22. একটি গৌণ খেচর অভিযোজনকারী প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর – বাদুড়।
23. পায়রার কয়টি যুগ্ম ও কয়টি একক বায়ুথলি আছে?
উত্তর – পায়রার 4টি যুগ্ম এবং 1টি একক বায়ুথলি আছে।
24. পায়রার খেচর অভিযোজন বায়ুথলির যে-কোনো একটি ভূমিকা লেখো।
উত্তর – পায়রার খেচর অভিযোজনে বায়ুথলিগুলি বায়ুপূর্ণ হলে দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাস পায়, যার ফলে পায়রা সহজে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে।
25. শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা কোথায় দেখা যায়?
উত্তর – সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষত উপকূলের লবণাক্ত মৃত্তিকাই হল শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা।
26. একটি হ্যালোফাইটের নাম বলো।
উত্তর – সুন্দরী।
27. লবণাম্বু উদ্ভিদ বা সুন্দরী গাছের একটি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর – লবণাম্বু উদ্ভিদ বা সুন্দরী গাছের একটি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য হল শ্বাসমূলের উপস্থিতি।
28. লবণ সহনের জন্য সুন্দরী গাছের একটি অভিযোজন উল্লেখ করো।
উত্তর – লবণ সহনের জন্য সুন্দরী গাছের পাতায় লবণগ্রন্থি উপস্থিত, যার দ্বারা জলের মাধ্যমে শোষিত অতিরিক্ত লবণ নির্গত হয়।
29. কোন্ উদ্ভিদে শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর থাকে?
উত্তর – সুন্দরী, গরান ইত্যাদি লবণাম্বু উদ্ভিদে শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর থাকে।
30. নিউম্যাথোড কী?
উত্তর – লবণাম্বু উদ্ভিদ যেমন সুন্দরীর শ্বাসমূলের শীর্ষে অবস্থিত যে ছিদ্রপথে অক্সিজেন গৃহীত হয়, তাকে নিউম্যাথোড বা শ্বাসছিদ্র বলে।
31. লবণগ্রন্থি সুন্দরী উদ্ভিদের কোথায় দেখা যায় ? এটি কী করে?
উত্তর – সুন্দরী উদ্ভিদের পাতায় লবণগ্রন্থি থাকে।
এটি দেহে গৃহীত অতিরিক্ত লবণ মুক্ত করে।

শূন্যস্থান পূরণ করো

1. আচরণ প্রাণীদের ………… ও জনন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।
উত্তর – অস্তিত্ব রক্ষায়
2. ফণীমনসা হল একপ্রকার ……… উদ্ভিদ।
উত্তর – জাঙ্গল
3. অভিযোজনের লক্ষ্যে পাতা কাঁটায় পরিবর্তিত হলে কাঁটাগুলিকে …….. বলে।
উত্তর – পত্ৰকণ্টক
4. ………. -এর দেহকোশগুলি মিউসিলেজ সমন্বিত হওয়ায় এদের জল সঞ্চয় করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
উত্তর – ক্যাকটাস
5. মাছের জলজ অভিযোজন হল একপ্রকার ……… অভিযোজন।
উত্তর – মুখ্য
6. রুইমাছের উদ্‌স্থৈতিক অঙ্গটি হল ……….।
উত্তর – পটকা
7. রুইমাছের ………. অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজনের উদাহরণ।
উত্তর – পটকা
৪. বায়বীয় পরিবেশে বিচরণের জন্য প্রাণীদেহে যে অভিযোজন দেখা যায় তাকে ………. অভিযোজন বলে।
উত্তর – খেচর
9. পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে …….. টি বায়ুথলি থাকে।
উত্তর – 9
10. পায়রার উড্ডয়নে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত শক্তি সরবরাহে সাহায্য করে ……….।
উত্তর – বায়ুথলি
11. লবণাম্বু উদ্ভিদ হলেও ………… গাছে জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম দেখা যায় না।
উত্তর – সুন্দরী
12. সুন্দরীর শ্বাসকার্যে সাহায্যকারী মূলকে ……….. বলে।
উত্তর – শ্বাসমূল
13. সুন্দরীর শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোরের মাথায় যে ছিদ্র থাকে তাকে বলে ……….।
উত্তর – শ্বাসছিদ্র/নিউম্যাথোড
14. উইপোকা শিকারের ক্ষেত্রে শিম্পাঞ্জির ফিশিং টুল-এর ব্যবহার একটি ………. অভিযোজন।
উত্তর – আচরণগত
15. মৌনৃত্য প্রদর্শন করে মূলত ……….. নামক কর্মী মৌমাছিরা।
উত্তর – স্কাউট
16. ………. একজন ব্রিটিশ প্রাইমেটোলজিস্ট ছিলেন যিনি শিম্পাঞ্জির সামাজিক ও পারিবারিক জীবন সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করেন।
উত্তর – জেন গুডাল
17. মৌমাছির ‘8’ আকারের ন্যায় নৃত্য করাকে ………. বলে।
উত্তর – ওয়াগ্ল নৃত্য

The Complete Educational Website

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *