wb 10th science

WBBSE 10th Class Science Solutions Biology Chapter 5 পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ (TOPIC 2 পরিবেশদূষণ)

WBBSE 10th Class Science Solutions Biology Chapter 5 পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ (TOPIC 2 পরিবেশদূষণ)

West Bengal Board 10th Class Science Solutions Biology Chapter 5 পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ (TOPIC 2 পরিবেশদূষণ)

West Bengal Board 10th Biology Solutions

TOPIC 2 পরিবেশদূষণ

বিষয়সংক্ষেপ

  • জীবমণ্ডলের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের অনাকাঙ্খিত পরিবর্তনকে বলে দূষণ এবং যে উপাদানগুলি দূষণ ঘটায় তাদের বলে দূষক।
  • বায়ুদূষণের কারণ হল নানাপ্রকার গ্রিনহাউস গ্যাস (যেমন—CO2, CH4)। এ ছাড়াও বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা ও ধোঁয়া নিয়ে তৈরি SPM বায়ুদূষণ ঘটায়। বায়ুদূষণের ফলে অম্লবৃষ্টি ও ফুসফুসের নানা রোগ (COPD) ঘটে।
  • জলদূষণের মূল কারণ হল কৃষিজ ধৌত বর্জ্য, জীবাণু । জলে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদানজনিত শৈবালের অতিবৃদ্ধি ও জলের গুণমানের ঘাটতি দেখা দেয়, এই অবস্থাকে ইউট্রোফিকেশন বলে। জলদূষণের ফলে কলেরা, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগও হয়।
  • জীবাণু ও রাসায়নিক সার-কীটনাশক জাতীয় রাসায়নিকগুলি মাটি দূষণ ঘটায়। মাটিদূষণের ফলে দূষকগুলি মানবদেহে সরাসরি প্রবেশ করে। এ ছাড়াও জৈব-অভঙ্গুর দূষকগুলির জীববিবর্ধন ও জৈবসায়ন ঘটে ক্ষতি ঘটায়। কোনো জীবস্তরে দূষকগুলি জমা হলে তাকে জৈবসঞ্চয়ন বলে এবং খাদ্যশৃঙ্খল বরাবর ওই সঞ্চিত দূষকগুলির ক্রমশ ঘনত্ব বৃদ্ধিকে জীববিবর্ধন বলে।
  • যানবাহন ও শিল্প-কারখানা থেকে সৃষ্ট আওয়াজ মারাত্মক শব্দদূষণ ঘটায়। শব্দদূষণের ফলে বধিরতা, হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি ঘটে থাকে। শব্দ পরিমাপের একক হল ডেসিবেল (dB)।

বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

1. বায়ুদূষণ কাকে বলে? বায়ুদূষণের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লেখো।
উত্তর – বায়ুদূষণ: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে, বায়ুমণ্ডলের কোনো গ্যাসীয় উপাদানের ঘনত্বের পরিবর্তনে বা অন্য কোনো ক্ষতিকর উপাদান মিশে জীবের ও পরিবেশের ক্ষতিসাধনের ফলে সৃষ্ট অবস্থাকে বায়ুদূষণ বলে।
বায়ুদূষণের কারণ: বায়ুদূষণের অন্যতম দুটি কারণ হল—
(1) গ্রিনহাউস গ্যাস এবং (2) SPM বা সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার। নীচে এগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হল।
  1. গ্রিনহাউস গ্যাস: বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2), মিথেন (CH4), ওজোন (O3), ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFCs), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) প্রভৃতি গ্যাস তাপ বিকিরণে বাধা দিয়ে পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধি করে। এদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। নানা কারণে বায়ুমণ্ডলে এইসব গ্যাস বৃদ্ধি পায়। এগুলি হল—[i] কার্বন ডাইঅক্সাইড: জীবাশ্ম জ্বালানি, কলকারখানার ধোঁয়া ও জৈববস্তুর দহনের ফলে বায়ুতে CO2 -এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। CO2 সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী গ্রিনহাউস গ্যাস। [ii] ক্লোরোফ্লুরোকার্বনসমূহ (CFCs): জেট ইঞ্জিন, রেফ্রিজারেশন শিল্প ও এয়ার কন্ডিশন শিল্পে, অ্যারোসল স্প্রে, ডিওডোরান্টে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন থাকে। এগুলি মুক্ত হলে বায়ুদূষণ ঘটে। [iii] নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ: কৃষিকাজে ব্যবহৃত নাইট্রোজেনঘটিত সার ও শিল্পকারখানা থেকে নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ মুক্ত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটায়।
  2. SPM: বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন ধরনের বস্তুকণা ভেসে বেড়ায়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—ধূলিকণা, পরাগরেণু, অণুজীব ধাতব কণা, ছাই, ধোঁয়া ইত্যাদি সূক্ষ্ম তরল বা কার্বন কণা যেগুলি বায়ুদূষণ ঘটায়, তাদের SPM বা সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার বলে। এই ভাসমান কণাগুলির ব্যাস 1 মাইক্রনের কম হলে, তাদের অ্যারোসল বলে।
2. গ্রিনহাউস গ্যাস ও গ্রিনহাউস প্রভাব কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম, প্রভাব ও সৃষ্টির কারণ লেখো।
উত্তর – গ্রিনহাউস গ্যাস ও গ্রিনহাউস প্রভাব: বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত যেসব গ্যাস তাপীয় বিকিরণে বাধা দান করে পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধি করে, তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। যেমন— CO2 , CH4, CFCs ইত্যাদি। যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত CO2, জলীয় বাষ্প ও অন্যান্য কয়েকটি গ্যাসীয় পদার্থ পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে না দিয়ে ভূপৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত রাখে, তাকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলে।
গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিকারী গ্যাসসমূহের নাম, প্রভাব ও সৃষ্টির কারণ
গ্যাসের নাম প্রভাব সৃষ্টির কারণ
1. কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) এটি হল প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস। গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে এই গ্যাসের ভূমিকা প্রায় 9-26 শতাংশ। জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, সিমেন্ট শিল্পজ, জ্বালানি গ্যাসের দহন।
2. মিথেন (CH4) বিকিরিত তাপ ধারণ করার ক্ষমতা CO2 -এর তুলনায় প্ৰায় 25 গুণ বেশি। গ্রিনহাউস প্রভাবে এর অবদান প্রায় 14-9 শতাংশ। কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন, কৃষিক্ষেত্রে কৃষিবর্জ্যের পচন।
3. ওজোন (O3) গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে এর অবদান প্রায় 3-7 শতাংশ। তাপ ধারণ ক্ষমতা CO2 এর প্রায় 10 গুণ। ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে CO, নাইট্রোজেন অক্সাইড প্রভৃতি দূষক আলোকের প্রভাবে O3 সৃষ্টি করে।
4. ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFCs) বিকিরিত তাপ ধারণ করার ক্ষমতা CO2 -এর তুলনায় প্রায় 10,000-20,000 গুণ বেশি। গ্রিনহাউস প্রভাবে এর অবদান প্রায় 13 শতাংশ। এয়ারকন্ডিশনিং শিল্প, রেফ্রিজারেশন শিল্প, ফোম উৎপাদন, অ্যারোসল উৎপাদন।
5. নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে এর অবদান প্রায় 6 শতাংশ। এর তাপ ধারণ ক্ষমতা CO2 -এর প্রায় 275 গুণ। কৃষিকাজে N2 -সার ব্যবহার, জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, শিল্পে উৎপাদন।
3. অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্লবৃষ্টি কী?
অম্লবৃষ্টির কারণ কী এবং ভারতের কোথায় কোথায় অম্লবৃষ্টি বেশি হয়?
উত্তর – অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্লবৃষ্টি: বাতাসে ভাসমান সালফার ডাইঅক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO2) প্রভৃতি গ্যাস বৃষ্টির, শিশির অথবা তুষারের সঙ্গে মিশে বিক্রিয়া করে গৌণ দূষক সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3) প্রভৃতি তৈরি করে ভূপৃষ্ঠে নেমে এসে মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতিসাধন করলে, তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্লবৃষ্টি বলে। অ্যাসিড বৃষ্টির pH মাত্রা সাধারণত 5.0-এর নীচে হয়।
অ্যাসিড বৃষ্টির কারণ : মনুষ্যসৃষ্ট বায়ুদূষণ হল অ্যাসিড বৃষ্টির অন্যতম কারণ। শিল্পকারখানাগুলিতে বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি দহনের ফলে প্রচুর মাত্রায় NO2 এবং SO2 গ্যাস নির্গত হয়। এই গ্যাসগুলি বাতাসের জলীয় বাষ্পের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3) এবং সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) তৈরি করে এবং বৃষ্টির জলের সঙ্গে ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে। এইভাবেই মনুষ্যসৃষ্ট কারণে অ্যাসিড বৃষ্টি ঘটে।
ভারতে অ্যাসিড বৃষ্টির ঘটনা: ভারতে মহারাষ্ট্রের চেম্বুর ও পুনে এবং কেরলের ত্রিবান্দ্রম-এ অ্যাসিড বৃষ্টির ঘটনা দেখা যায়।
4. পরিবেশের ওপর অম্লবৃষ্টির বা অ্যাসিড রেন-এর প্রভাব লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যাসিড বৃষ্টিজাত দুটি ক্ষতি উল্লেখ করো।
উত্তর – পরিবেশের ওপর অম্লবৃষ্টির বা অ্যাসিড রেন-এর প্রভাব
  1. প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর প্রভাব: অম্লবৃষ্টির ফলে বেশিরভাগ জলাশয়ের মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটে। স্থলভাগের গাছপালা, কৃষিজ  ফসল ধ্বংস হয়। অম্লবৃষ্টির কারণে জলাশয়ের pH এর মান যদি 4-এর কম হয়, তবে ওই জলাশয়ের অধিকাংশ সজীব উপাদানের মৃত্যু ঘটে।
  2. মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব: অম্লবৃষ্টির ফলে মানুষের ত্বক ও কোশের অস্বাভাবিক ক্ষতি হয়। অম্লবৃষ্টির জন্য অ্যালুমিনিয়াম এবং তামা নির্মিত জলের পাইপ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং পানীয় জলের সঙ্গে মেশে এবং ওই জল পান করে বহু মানুষ পেটের রোগে ভোগে।
  3. মাটির ওপর প্রভাব: অম্লবৃষ্টির প্রভাবে মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়, যার ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং শস্যের ফলন ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণী ও সূক্ষ্ম জীবাণুরা মারা যায়।
  4. বনাঞ্চলের ওপর প্রভাব: অম্লবৃষ্টির ফলে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে যায়। শস্যক্ষেত্রের উৎপাদনও ভীষণভাবে হ্রাস পায়।
  5. মার্বেলের কারুকার্যের ওপর প্রভাব: অম্লবৃষ্টির ফলে মার্বেলের বা চুনাপাথরের তৈরি বিভিন্ন কারুকার্য, স্থাপত্য নিদর্শনগুলি, যেমন—ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ফতেপুর সিক্রি, তাজমহল, কুতুবমিনার, ব্রিটেনের পার্লামেন্ট ভবন, সেন্ট পল্স গির্জা ইত্যাদি ভীষণভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। অম্লবৃষ্টির প্রভাবে পাথরের যে ক্ষয়ীভবন ঘটে, তাকে ‘স্টোন ক্যানসার’ বলে।
5. বায়ুদূষণ দ্বারা ঘটিত ফুসফুসের নানা ধরনের রোগগুলি সম্বন্ধে লেখো।
উত্তর – বায়ুদূষণ দ্বারা ঘটিত ফুসফুসের রোগ: দূষিত বায়ু প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। যেমন—(1) CO2, NOx প্রভৃতি বায়ুদূষক হাঁপানি, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, ক্যানসার প্রভৃতি রোগ সৃষ্টি করে। (2) বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিকদের নানা ধরনের ফুসফুসের রোগ দেখা দেয়। (3) কয়লাখনি থেকে নির্গত কার্বন কণা শ্রমিকদের ফুসফুসে একটি কালো রঙের আস্তরণ সৃষ্টি করে ব্ল্যাক লাং নামক রোগ সৃষ্টি করে। (4) অ্যাসবেসটস এবং সিলিকন শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ফুসফুসে অ্যাসবেসটস এবং সিলিকন কণা বায়ুর মাধ্যমে প্রবেশ করে এবং যথাক্রমে অ্যাসবেস্টোসিস ও সিলিকোসিস রোগ সৃষ্টি করে। (5) অনেক-ক্ষেত্রে, বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসনালী সরু হয়ে যায় এবং স্থায়ীভাবে শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি হয়, তাকে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা COPD বলে। অত্যধিক ধূমপানের ফলেও COPD হয়ে থাকে।
6.  জলদূষণ কাকে বলে? এর কারণগুলি লেখো।
অথবা, মিষ্টি জলের উৎসগুলি কী কী ভাবে দূষিত হয়—তোমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মতামত জানাও। 
উত্তর – জলদূষণ: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে জলের সঙ্গে বিভিন্নপ্রকার বর্জ্য, দূষিত ও বিষাক্ত পদার্থ ইত্যাদি মিশে যাওয়ার ফলে জল যদি নোংরা হয় এবং জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটে এবং এর ফলস্বরূপ জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তাহলে তাকে জলদূষণ বলে।
জলদূষণের কারণ: নানা কারণে জল দূষিত হয়ে থাকে। নীচে কয়েকটি কারণ আলোচিত হল।
  1. কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য দ্বারা দূষণ: গ্রামাঞ্চলে চাষের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক, আগাছানাশক, রাসায়নিক সার ইত্যাদি প্রধানত বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে গিয়ে নিকটবর্তী নদীনালা বা পুকুরের জলে মেশে এবং জলকে দূষিত করে। কৃষিতে ব্যবহৃত নাইট্রেট, ফসফেটজাতীয় রাসায়নিক সার থেকে ইউট্রোফিকেশন-এর মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  2. কলকারখানার বর্জ্য দ্বারা দূষণ: শহরাঞ্চলে কলকারখানার দূষিত বর্জ্য নদী, সমুদ্র ও বড়ো জলাশয়ে এসে মেশে এবং জলদূষণ ঘটায়।
  3. জীবাণু ও গৃহস্থালির প্রাত্যহিক আবর্জনা দ্বারা দূষণ: গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত জলে খাদ্যদ্রব্যের ফেলে দেওয়া অংশ, তরকারির পচা অংশ, মলমূত্র, সাবান, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি মিশে থাকে। ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি মিশ্রিত এই নোংরা জল নর্দমা, পয়ঃপ্রণালী দিয়ে নদ-নদী, হ্রদ, খাল বা সমুদ্রের জলে পড়ে ও দূষণ ঘটায়।
  4. যথেচ্ছ ব্যবহারজনিত দূষণ: বিভিন্ন জলাশয়ের জল, মানুষের যথেচ্ছ ব্যবহার, যেমন—মলমূত্র ত্যাগ, স্নান, বাসনপত্র ধোয়া, গবাদি পশুর স্নান বা কাপড় কাচার ফলে দূষিত হয় ও তাতে বিভিন্ন প্রকার জীবাণু জন্মায়।
  5. ভারী ধাতু দ্বারা দূষণ: ভৌমজলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মাটির নীচে জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে অনেক নীচে নেমে যায়, যার ফলে জলে আর্সেনিক ও ফ্লুরাইডের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং জলদূষণ ঘটায়।
7. জলদূষণের ফলাফল বা ক্ষতিকর প্রভাব সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – জলদূষণের ফলাফল বা ক্ষতিকর প্রভাব: পরিবেশে জল দূষিত হলে তার ক্ষতিকর প্রভাব সমগ্র জীবজগতের ওপর পড়ে। ক্ষতিকর প্রভাবগুলি নীচে আলোচনা করা হল।
  1. জীবাণুর প্রাদুর্ভাব ও রোগের সম্ভাবনা: [i] দূষিত জল পান করা, দূষিত জলে রান্না করা, হাত-পা ধোয়া বা স্নান করার ফলে মানুষের অনেক ধরনের স্বাস্থ্যহানি ঘটে থাকে। জলবাহিত কিছু রোগের নাম নীচের সারণিতে উল্লেখ করা হল।
    কারক জীবের নাম রোগের নাম
    ভাইরাস ভাইরাল হেপাটাইটিস A ও E, পোলিও, শিশুদের ডায়ারিয়া ইত্যাদি।
    ব্যাকটেরিয়া টাইফয়েড, ব্যাসিলারি ডিসেন্ট্রি, কলেরা ইত্যাদি।
    প্রোটোজোয়া আমাশয়, জিয়ার্ডিয়াসিস ইত্যাদি।
    কৃমিজাতীয় টিনিয়াসিস, অ্যাসক্যারিয়েসিস ইত্যাদি।
    [ii] পারদ, লোহা, নিকেল, তামা, ক্লোরিন প্রভৃতি মিশ্রিত জল থেকে বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ ও পেটের অসুখ হয়। [iii] অধিক ফ্লুরিনযুক্ত জল থেকে অ্যালার্জি, বৃক্কের সমস্যা, প্যারালাইসিস, অস্থি বিকৃতি প্রভৃতি রোগ হয়।
  2. ইউট্রোফিকেশন: কাপড় কাচার ডিটারজেন্টে ব্যবহৃত ফসফেটজাতীয় রাসায়নিক বিভিন্ন জলাশয়ে গিয়ে জমা হয়। ও সেখানে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটায়। এই ঘটনাকে ইউট্রোফিকেশন বলে। এর ফলে জলের গুণগতমান হ্রাস পায়। জল দুর্গন্ধযুক্ত, বিস্বাদ, পানের অযোগ্য হয়। এ ছাড়া শৈবাল নিঃসৃত টক্সিন অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু ঘটায়।
  3. অন্যান্য: [i] দূষিত জল মাটিতে বসবাসকারী উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুকে ধ্বংস করে মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয়। [ii] নদী, পুকুর বা সমুদ্রের জল দূষিত হলে মাছসহ বহু সামুদ্রিক প্রাণী মারা যায়।
8. মৃত্তিকা দূষণ কাকে বলে? মৃত্তিকা দূষণের তিনটি কারণ লেখো।
উত্তর – মৃত্তিকা দূষণ: প্লাস্টিক, পলিথিন, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আগাছানাশক, দৈনন্দিন আবর্জনা, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি দূষক মাটিতে মিশে ভূপৃষ্ঠের ওপরে বিন্যস্ত মাটির স্তরের যে ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব বৈশিষ্ট্যের অবাঞ্ছিত ও ক্ষতিকর পরিবর্তন বা ক্ষয়সাধিত হয়, তাকে মৃত্তিকা দূষণ বলে।
মৃত্তিকা দূষণের কারণ: বিভিন্ন কারণে মৃত্তিকা দূষণ ঘটে থাকে। এখানে মৃত্তিকা দূষণের তিনটি কারণ আলোচনা করা হল।
  1. জীবাণু সংক্রমণ: পৌর বর্জ্যের সঠিক ট্রিটমেন্ট না হলে তা মৃত্তিকা দূষণ ঘটায়। তা ছাড়াও হাসপাতালের পরিত্যক্ত বর্জ্য কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য, পশুপালনক্ষেত্রের বর্জ্যতে অবস্থিত জীবাণু সরাসরি অথবা মশা, মাছি, ইঁদুর বাহিত হয়ে মানবদেহে রোগ সৃষ্টি করে।
  2. রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রয়োগ: অত্যধিক ফলন পাওয়ার জন্য কৃষিজমিতে রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আগাছানাশক ইত্যাদি প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন উপকারী জীব, যেমন—কেঁচো ও নাইট্রোজেন সংশ্লেষকারী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে মাটির স্বাভাবিক উর্বরাশক্তি নষ্ট হয় এবং কীটনাশকগুলি মাটিতে জমে মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পায় এবং মাটি ক্রমে বন্ধ্যা হয়ে যায়।
  3. অন্যান্য: বিভিন্ন শিল্প থেকে নির্গত নানা রকম অম্লঘটিত বর্জ্য পদার্থ মাটিতে ফেলার ফলে মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়। কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত হারে জলসেচের ফলে মাটিতে লবণাক্ততার সৃষ্টি হয় ও মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়।
9. মৃত্তিকা দূষণের ফলাফল বা ক্ষতিকর প্রভাবগুলি লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, জীববিবর্ধন একটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – মৃত্তিকা দূষণের ফলাফল বা মৃত্তিকা দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব: মৃত্তিকা দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ করা যায়। এগুলি নীচে আলোচনা করা হল।
  1. মানুষের ওপর প্রভাব: মানুষের ওপর মৃত্তিকা দূষণের যেসব প্রভাব দেখা যায়, তা হল –[i] রোগজীবাণুর সংক্রমণ: মাটি দূষিত হলে মাটিতে বিভিন্ন ধরনের জীবাণুর প্রাদুর্ভাব বাড়ে। ওই জীবাণু খুব সহজে মানুষের দেহে প্রবেশ করার সুযোগ পায় এবং মানবদেহে বিভিন্ন রকম রোগ সৃষ্টি করে, যার ফলে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, যেমন—টিটেনাস রোগ সৃষ্টি করে Clostridium tetani (ক্লসট্রিডিয়াম টিটানি), গ্যাস-গ্যাংগ্রিন রোগ সৃষ্টি করে Clostridium perfringes (ক্লসট্রিডিয়াম পারফ্রিনজেস), অ্যাসপারজিলোসিস রোগ সৃষ্টিকারী Aspergillus sp. (অ্যাসপারজিলাস) প্রভৃতি অণুজীব। এর সংস্পর্শে কর্ণকুহর, শ্বাসনালী প্রভৃতি স্থানে সংক্রমণ ঘটে। [ii] খাদ্য উৎপাদন হ্রাস: মাটি দূষিত হলে, মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা শক্তি ব্যাহত হয়। ফলে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে যায়। পরোক্ষভাবে মানুষের খাদ্যের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ হয় না এবং মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে অর্থাৎ, মৃত্তিকাদূষণ থেকে মানুষের মধ্যে অপুষ্টিজনিত ব্যাধির সৃষ্টি হয়।
  2. জীববিবর্ধন: খাদ্যশৃঙ্খল বরাবর নীচ থেকে ক্রমশ উচ্চতর পুষ্টিস্তরে কোনো দূষকের ক্রমবর্ধমান সঞ্চয়ের ঘটনাকে জীববিবর্ধন বলে। জীববিবর্ধন দুটি ধাপে ঘটে থাকে। যেমন—[i] জৈবসঞ্চয়ন: মৃত্তিকায় উপস্থিত ক্রমক্ষয়হীন দূষকগুলি বাস্তুতন্ত্রের প্রতিটি খাদ্যশৃঙ্খলে পুঞ্জীভূত হওয়ার ঘটনাকে জৈবসঞ্চয়ন বলে। দূষকগুলি সাধারণত প্রাণীর মেদকলা বা অ্যাডিপোজ কলায় সঞ্চিত হয়ে থাকে। [ii] পুষ্টির স্তরে দূষকের ক্রমপ্রবাহ: খাদ্যশৃঙ্খলে প্রতিটি পুষ্টিস্তর খাদ্য-খাদক সম্পর্কযুক্ত হয়। ফলে জৈবসঞ্চয়নে পুঞ্জীভূত দূষক ক্রমান্বয়ে উৎপাদক, প্রাথমিক খাদক, গৌণ খাদক, প্রগৌণ খাদক প্রভৃতি পথে জীবদেহে অধিক ঘনত্বে সঞ্চিত হয়। এর ফলে সর্বোচ্চ খাদকস্তরে দূষক ঘনত্ব সর্বাধিক হয় (নীচের রেখাচিত্র লক্ষণীয়)। কীটনাশক DDT-এর পুষ্টিস্তরে ঘনত্ব বৃদ্ধি জৈববিবর্ধনের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
10. শব্দদূষণের কারণগুলি লেখো। শব্দদূষণের ফলাফলগুলি আলোচনা করো।
উত্তর – শব্দদূষণের কারণ: শব্দদূষণ বিভিন্ন কারণে ঘটে। নীচে কয়েকটি কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।
  1. যানবাহন: যানবাহন হল শব্দদূষণের অন্যতম কারণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শহরাঞ্চলে যানবাহনের পরিমাণও ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলস্বরূপ শব্দদূষণও দিনের পর দিন ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব যানবাহন থেকে বেশি শব্দদূষণ ঘটে সেগুলি হল মোটর সাইকেল, মোটর গাড়ি, বাস, লরি, ট্রাম, টেম্পো ইত্যাদি। এরোপ্লেন, হেলিকপ্টার ইত্যাদি ওঠা ও নামার সময়ে ভীষণমাত্রায় শব্দদূষণের সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (CPCB বা Central Pollution Control Board) যানবাহনজনিত মাত্রা 70dB নির্ধারণ করলেও বহু শহরে শব্দের মাত্রা অনেক বেশি।
  2. শিল্প: বিভিন্ন কলকারখানায় দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি থেকে সৃষ্ট আওয়াজ মারাত্মক শব্দদূষণ ঘটায়। ভারতে শিল্পক্ষেত্রে ৪ ঘণ্টায় গড়ে সর্বাধিক 90 dB শব্দ সর্বোচ্চ সহনমাত্রা বলে নির্ধারিত। কিন্তু জাহাজ ও বিমান নির্মাণ, কাঠের মিল, খাদ্য উৎপাদন শিল্প, আসবাব নির্মাণ শিল্প, ধাতব পণ্য উৎপাদন শিল্পে এই সহনমাত্রার থেকে অনেক বেশি প্রাবল্যের শব্দ উৎপন্ন হয়। এর ফলস্বরূপ মারাত্মক শব্দদূষণ ঘটে।
  3. অন্যান্য কারণ: এ ছাড়াও বর্তমানকালে শব্দদূষণের অন্যতম কারণ হল শব্দবাজি ও লাউডস্পিকারের অযাচিত ব্যবহার। প্রাকৃতিক কারণ যেমন, ধস, বজ্রপাত প্রভৃতিও শব্দদূষণ ঘটিয়ে থাকে।
শব্দদূষণের ফলাফল
  1. মানুষের ওপর প্রভাব: শব্দদূষণ মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা এবং হৃৎপিণ্ডের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যেমন—[i] কানের ওপর প্রভাব: দীর্ঘদিন ধরে উচ্চশব্দ (100 dB)-র কারণে অন্তঃকর্ণের অর্গান অফ কর্টি (শ্রুতিযন্ত্র)-র রোমকোশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পায় বা বিনষ্ট হয়। একে ‘নয়েস ইনডিউস্ড হিয়ারিং লস’ (NIHL) বলে। NIHL দু-ভাবে মানুষের ক্ষতি করে—[a] উচ্চ প্রাবল্যের শব্দ এককালীন হঠাৎ শুনলে অন্তঃকর্ণের কক্‌লিয়া অংশের স্থায়ীভাবে শ্রবণ ক্ষমতা নষ্ট হয়, একে অ্যাকাউস্টিক ট্রমা বলে। যেমন—150 dB-এর ঊর্ধ্বে বাজির শব্দ, বিস্ফোরণ প্রভৃতি। [b] সাধারণ শব্দের থেকে উচ্চ প্রাবল্যের কোনো শব্দ (85 dB) অনবরত শুনতে থাকলে শ্রবণ ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। [ii] হৃৎপিণ্ডের ওপর প্রভাব: উচ্চ প্রাবল্যের শব্দ হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি করে। যেমন—[a] উচ্চ প্রাবল্যের শব্দে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ু ও ভেগাস স্নায়ুর উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায় ও হৃৎস্পন্দন বাড়ে। [b] 90 dB-এর ঊর্ধ্বে শব্দ হলে সিস্টোলিক রক্তচাপ যথেষ্ট বাড়ে। [c] অনবরত 60 dB-এর ঊর্ধ্বে শব্দ শুনলে হৃৎপিণ্ডের মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন নামক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এই রোগে হৃদ্‌পেশিতে আংশিকভাবে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গিয়ে পেশির কার্যকারিতা নষ্ট হয়।
  2. অন্যান্য প্রাণীর ওপর প্রভাব: শব্দদূষণ মানুষ ছাড়াও অন্য প্রাণীর ওপরে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। যেমন—[i] বধিরতা: 85dB-এর ওপরে শব্দ হলে তা প্রাণীদের শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস করে। [ii] প্রজননে বাধা: শব্দদূষণের ফলে বহু প্রাণী এবং পাখি প্রজননে অংশ নিতে পারে না। ফলে ওই প্রাণী ও পাখির নতুন অপত্য সৃষ্টিতে বাধা পায়। [iii] ভ্রূণের বৃদ্ধি হ্রাস: ইঁদুরের ক্ষেত্রে দেখা গেছে উচ্চশব্দে ভ্রূণের বৃদ্ধি হ্রাস পায়। [iv] মাস্কিং পরিবেশের নানা শব্দ প্রাণীর আত্মরক্ষা, শিকার প্রভৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শব্দদূষণে সেগুলি শুনতে না পেলে (মাস্কিং) প্রাণীর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

1. পরিবেশদূষণ কাকে বলে?
উত্তর – পরিবেশে যখন প্রাণী ও উদ্ভিদজগতের অস্তিত্বের পক্ষে ক্ষতিকর বস্তুর উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়, সেই অবস্থাকে পরিবেশদূষণ বলে।
2. দূষক কাকে বলে?
উত্তর – যে সকল পদার্থের উপস্থিতি পরিবেশে অবাঞ্ছিত পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং যার ফলে সমগ্র জীবজগৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাকে দূষক বলে। যেমন—ধুলো-বালি, ময়লা, আবর্জনা, CO2, NO2, SO2, সিসা, পারদ ইত্যাদি।
3. বাস্তুবিজ্ঞানী ওডাম পরিবেশের দূষণকারী পদার্থকে কত ভাগে ভাগ করেছেন ও কী কী?
উত্তর – বাস্তুবিজ্ঞানী ওডাম পরিবেশের দূষণকারী পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন, যথা—(1) জৈব-অভঙ্গুর দূষক ও (2) জৈব ভঙ্গুর দূষক।
4. জৈব-অভঙ্গুর দূষক বলতে কী বোঝ?
উত্তর – যে জটিল দূষণকারী পদার্থগুলি সহজে সরল পদার্থে রূপান্তরিত না হওয়ার ফলে পরিবেশে জমা হতে থাকে ও জৈব-রাসায়নিক চক্রে আবর্তিত হতে থাকে, তাদের জৈব-অভঙ্গুর দূষক বলে। যেমন—DDT, পলিথিন ইত্যাদি।
5. জৈব ভঙ্গুর দূষক কী?
উত্তর – যে জটিল দূষণকারী পদার্থগুলি ব্যাকটেরিয়া, অণুজীব প্রভৃতি দ্বারা বিয়োজিত হয়ে সরল পদার্থে পরিণত হয়, তাকে জৈব ভঙ্গুর দূষক বলে। যেমন—গৃহস্থালির বর্জ্য, আবর্জনা ইত্যাদি।
6. দূষণের প্রকারভেদগুলি কী কী?
উত্তর – পরিবেশের উপাদান অনুযায়ী দূষণ প্রধানত চারপ্রকার, যথা—বায়ুদূষণ, জলদূষণ, মৃত্তিকা দূষণ ও শব্দদূষণ।
7. প্রাকৃতিক বায়ুদূষক কাকে বলে?
উত্তর – প্রাকৃতিক উৎস থেকে যেসব দূষক পদার্থ উৎপন্ন হয়ে বায়ুকে দূষিত করে, তাদের প্রাকৃতিক বায়ুদূষক বলে। যেমন—ফুলের রেণু, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, জলাভূমির মিথেন গ্যাস ইত্যাদি।
৪. মনুষ্যসৃষ্ট বা অ্যানথ্রোপোজেনিক বায়ুদূষক কাকে বলে?
উত্তর – মানুষের কার্যকলাপের ফলে সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থ থেকে উৎপন্ন দূষক পদার্থ যা বায়ুকে দূষিত করে, তাকে মনুষ্যসৃষ্ট বা অ্যান্থ্রো-পোজেনিক বায়ুদূষক বলে। যেমন—কারখানা · থেকে নির্গত কয়লার ধোঁয়া।
9. প্রাথমিক বা প্রধান বায়ুদূষক কাকে বলে?
উত্তর – যেসব বায়ুদূষক কোনো প্রাকৃতিক ঘটনায় অথবা মনুষ্যজনিত কারণে সরাসরি উৎপন্ন হয়, সেগুলিকে প্রাথমিক বায়ুদূষক বলে। এই দূষকগুলি হল—CO2, SO2, ভাসমান বস্তুকণা (SPM), ট্রোপোস্ফিয়ারিক ওজোন ইত্যাদি।
10. গৌণ বায়ুদূষক কাকে বলে?
উত্তর – সূর্যালোকের উপস্থিতিতে অথবা অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন প্রাথমিক বায়ুদূষক পদার্থ যখন নিজেদের মধ্যে বিক্রিয়া করে আরও জটিল ও বেশি ক্ষতিকর বায়ুদূষক সৃষ্টি করে তখন সেগুলিকে গৌণ বায়ুদূষক বলে। যেমন—সালফিউরিক অ্যাসিড, ধোঁয়াশা, PAN ইত্যাদি।
11. গ্রিনহাউস এফেক্ট কী?
উত্তর – CO2, CH4, CFC, N2O প্রভৃতি দূষক গ্যাসগুলি পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত তাপ শোষণ করে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এই ঘটনাকে গ্রিনহাউস এফেক্ট বলে।
12. কয়েকটি ফ্লুরিনযুক্ত গ্যাসের নাম ও উৎস লেখো যেগুলি গ্রিনহাউস গ্যাস রূপে কাজ করে।
উত্তর – ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, হাইড্রোফ্লুরোকার্বন, পারফ্লুরোকার্বন, সালফার হেক্সাফ্লুরাইড ও নাইট্রোজেন ট্রাইফ্লুরাইড গ্যাসগুলি গ্রিনহাউস গ্যাস রূপে কাজ করে। এগুলি স্বল্প পরিমাণে উৎপন্ন হলেও তীব্র গ্রিনহাউস গ্যাস। নানাপ্রকার শিল্প থেকে (রেফ্রিজারেশন, অ্যারোসল উৎপাদন শিল্প) এগুলি উৎপন্ন হয়।
13. ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে কীভাবে ওজোন নামক গ্রিনহাউস গ্যাসটি উৎপন্ন হয়?
উত্তর – ভূসংলগ্ন ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে দূষণের ফলে সৃষ্ট নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ (NOx), কার্বন মনোক্সাইড (CO) এবং উদ্বায়ী জৈব যৌগ (VOC বা ভোলাটাইল অরগ্যানিক কম্পাউন্ড), সূর্যালোকের প্রভাবে ওজোন গ্যাস তৈরি করে। মূলত যান নির্গমন, শিল্প উৎপাদন ও রাসায়নিক দ্রাবক হল ওই বায়ুদূষক উৎপাদনের প্রধান কারণসমূহ।
14. মানব ক্রিয়ায় ওজোন গ্যাসের কীরূপ পরিবর্তন ঘটেছে?
উত্তর – (1) শিল্পজাত CFC-জাতীয় উপাদানগুলির প্রভাবে স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ওজোন হ্রাস পেয়ে ওজোন গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সূর্যালোকের UV রশ্মি মানুষ ও অন্যান্য জীবের ক্ষতিসাধন করে। (2) পক্ষান্তরে, মাটি সংলগ্ন ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরে নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, VOC প্রভৃতি সূর্যালোকের প্রভাবে ওজোন তৈরি করে। এই ওজোন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং ঘটায়।
15. SPM বা PM কাকে বলে? এর উপাদানগুলি কী কী ? 
অথবা, SPM-এর উদাহরণ দাও।
উত্তর – SPM: শিল্প, দহন, প্রাকৃতিক উৎসজাত বাতাসে ভাসমান সূক্ষ কঠিন বা তরল কণাকে SPM বা সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার
উপাদান: ভারী ধাতু, তেলের ধোঁয়া কণা, ফ্লাইঅ্যাশ, অণুজীব, পরাগরেণু, সিমেন্টের ধুলো, ধুলো, প্রভৃতি।
16. SPM-এর উৎসগুলি কী কী?
উত্তর – ভাসমান কণিকাগুলির উৎস হল যানবাহন, তৈল শোধনাগার, শিল্প-কলকারখানা, কৃষিক্ষেত্র প্রভৃতি। এইসব ক্ষেত্রে থেকে নির্গত বস্তুকণাগুলি বাতাসে ভাসমান অবস্থায় থেকে বায়ুকে দূষিত করে।
17. SPM-এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলি লেখো।
উত্তর – (1) 10 মাইক্রোমিটারের থেকে ক্ষুদ্র SPM-গুলি শ্বাসতন্ত্র দিয়ে রক্তে প্রবেশ করে ও ক্যানসার ঘটায়। (2) SPM-গুলি শ্বাসতন্ত্রে নানা রোগ, যেমন ব্রংকাইটিস, হাঁপানির তীব্রতা বৃদ্ধি, ফুসফুসে সংক্রমণ, কাশি, শ্বাসনালী প্রদাহ ঘটায়। (3) হার্ট অ্যাটাক, হৃৎস্পন্দন মাত্রার পরিবর্তন এর দ্বারা ঘটে থাকে।(4) SPM-গুলি পরিবেশকে কুয়াশাচ্ছন্ন করে দর্শন-অযোগ্য করে তোলে, অ্যাসিড বৃষ্টি ঘটায়।
18. অ্যারোসল কী?
উত্তর – আমাদের চারপাশের বাতাসে বিভিন্ন ধরনের কঠিন অথবা জলীয় পদার্থের সূক্ষ্ম কণিকা কোলয়েড-রূপে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এদের অ্যারোসল বলে। এদের ব্যাস 1 মাইক্রনের কম হয়। যেমন—ধুলো, ধোঁয়া, কুয়াশা ও বাষ্প।
19. ধোঁয়াশা কী?
উত্তর – বাতাসে নাইট্রোজেনের অক্সাইড এবং হাইড্রোকার্বনের সাথে সূর্যরশ্মির আলোকরাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে যে ধোঁয়াটে অবস্থার সৃষ্টি হয়। তাকে ধোঁয়াশা (smog) বলে। ধোঁয়াশা হল ধোঁয়া এবং কুয়াশার সংমিশ্রণ।
20. বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইড বৃদ্ধির দুটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর – বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইড বৃদ্ধির দুটি কারণ হল – (1) প্রচুর পরিমাণে কয়লা, পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও (2) নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংস।
21. বায়ুদূষণের দুটি ক্ষতিকারক প্রভাব সম্বন্ধে লেখো।
উত্তর – (1) বায়ুদূষণের ফলে বায়ুমণ্ডলে NO2, SO2 প্রভৃতি গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে অ্যাসিড বৃষ্টি ঘটে। অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে জলজ বাস্তুতন্ত্র, মার্বেলের নির্মিত স্থাপত্য, বনাঞ্চল প্রভৃতির প্রভূত ক্ষতিসাধন ঘটে। (2) বায়ুদূষণের ফলে বায়ুতে বিভিন্ন দূষক যেমন— SPM-এর পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের রোগ যথা—হাঁপানি, COPD, ব্রংকাইটিস প্রভৃতি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
22. PAN কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
উত্তর – সূর্যালোকের উপস্থিতিতে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড, হাইড্রোকার্বনের বিক্রিয়ায় পারক্সি-অ্যাসিটাইল নাইট্রেট বা PAN তৈরি হয়। এটির প্রভাবে চোখ জ্বালা, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায়।
23. যানবাহনের পরিত্যক্ত ধোঁয়া কীভাবে বায়ুদূষণ ঘটায়?
উত্তর – যানবাহনের পরিত্যক্ত ধোঁয়াতে প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ প্রভৃতি থাকে। এই উপাদানগুলিই বায়ুদূষণ ঘটায়। মোট বায়ুদূষণের প্রায় 40 শতাংশ যানবাহনের ধোঁয়া থেকে ঘটে।
24. অ্যাসিড বৃষ্টির রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি সংক্ষেপে উল্লেখ করো।
উত্তর – অ্যাসিড বৃষ্টির রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি হল-
(1) NOx + H2O → HNO3     (2) 2SO2 + O2 → 2SO3, SO3 + H2O → H2SO4 উৎপন্ন নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3) ও সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) বৃষ্টির সঙ্গে মিশে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে।
25. অ্যাসিড বৃষ্টির রাসায়নিক উপাদানগুলি লেখো।
উত্তর – অ্যাসিড বৃষ্টির রাসায়নিক উপাদানগুলি হল—[i] সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), [ii] নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), [iii] কার্বনিক অ্যাসিড। (H2CO3)।
26. অ্যাসিড বৃষ্টিতে তাজমহল বা অন্য মার্বেল নির্মিত স্থাপত্যের ক্ষতি হয় কীভাবে?
উত্তর – মার্বেল, চুনাপাথর প্রভৃতি প্রকৃতপক্ষে হল ক্যালশিয়াম কার্বনেট (CaCO3)। এটি অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সালফেট বা নাইট্রেট যৌগ উৎপন্ন করে যা স্থাপত্যের উজ্জ্বলতা ম্লান করে দেয়। এ ছাড়া পাথর ক্ষয়ে সৌন্দর্যহানি ঘটে, যাকে স্টোন লেপ্রসি বলে ।
27. ‘সাধারণ বৃষ্টির pH 5.6 অর্থাৎ সামান্য আম্লিক’—কেন তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – বায়ুর CO2, বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করে। তাই তার pH সামান্য আম্লিক হয়ে যায়। উল্লেখযোগ্য, অম্লবৃষ্টির pH 4.2-4.4 হয়।
28. ওজোন হোল বা ওজোন গহ্বর কী?
উত্তর – মানব ক্রিয়াকলাপজনিত কারণে সৃষ্ট ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, হ্যালোন প্রভৃতি গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর বিনাশ করে তাতে গহ্বর সৃষ্টি করে। একে ওজোন হোল বলে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এভাবে ওজোন স্তরের ক্রমশ ঘনত্ব বিনষ্ট হওয়াকে বলে ওজোন স্তরের বিনাশ (ozone depletion)।
29. ওজোন হোলের ক্ষতিকর প্রভাব লেখো।
উত্তর – ওজোন হোলের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি হল – (1) ওজোন হোল সৃষ্টি হলে সূর্যালোকের UV রশ্মি (UVA) পৃথিবীপৃষ্ঠে নেমে এসে ত্বকের ক্যানসার, ছানি প্রভৃতি রোগ সৃষ্টি করে। (2) UV রশ্মির প্রভাবে সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিনষ্ট হয়, ফলে ধান উৎপাদন অতিমাত্রায় ব্যাহত হয়।
30. শিল্প, কলকারখানা, যানবাহন ইত্যাদি থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া পরিশোধন করতে ব্যবহৃত দুটি যন্ত্রের নাম লেখো।
উত্তর – শিল্প, কলকারখানা, যানবাহন ইত্যাদি থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া পরিশোধনে ব্যবহৃত হয় এমন দুটি যন্ত্রের নাম হল – (1) ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটেটর ও (2) ক্যাটালাইটিক কনভার্টার।
31. জলদূষণ কত প্রকারের হয়?
উত্তর – জলদূষণ প্রধানত পাঁচ প্রকারের হয়, যথা— (1) ভূনিম্নস্থ জলদূষণ, (2) সমুদ্রের জলদূষণ, (3) নদীর জলদূষণ, (4) হ্রদের জলদূষণ এবং (5) পুকুরের ও অন্যান্য জলাশয়ের জলদূষণ।
32. জলের ভৌতদূষণ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – বিভিন্ন প্রকার দূষিত বর্জ্য পদার্থ জলে মিশলে জলের ভৌত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ জলের বর্ণ অস্বচ্ছ হয়ে যায় ও তাতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় ও বিস্বাদ হয়ে পড়ে ও জল ব্যবহারের অযোগ্য হয়। একে জলের ভৌতদূষণ বলে।
33. ইউট্রোফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর – জলদূষণজনিত কারণে জলাশয়ে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান সৃষ্টির মাধ্যমে প্ল্যাঙ্কটনের সংখ্যার অত্যধিক বৃদ্ধি ঘটে, যার ফলে জলের গুণমানের ঘাটতি দেখা যায়, একে ইউট্রোফিকেশন বলে।
34. ইউট্রোফিকেশনে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন হ্রাস পায় কেন?
উত্তর – জলে অতিরিক্ত শৈবালের বৃদ্ধির ফলে তাদের বিয়োজনের মাত্রাও বৃদ্ধি পায় বলে জলের সমস্ত অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন ব্যবহার করে মৃত শৈবালের বিয়োজন বা ডিকম্পোজিশন ঘটায়। ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন মাত্রা হ্রাস পায়।
35. ইউট্রোফিক জলাশয়ের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ইউট্রোফিকেশন-এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলি লেখো।
উত্তর – ইউট্রোফিক জলাশয়ের বৈশিষ্ট্যগুলি হল – (1) জলে শৈবালের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটে ‘অ্যালগাল ব্লুম’ সৃষ্টি হয় ও জলাশয়ের বর্ণ সবুজ হয়ে যায়। ফলে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়। (2) জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন মাত্রা হ্রাস পায় ফলে মাছ মারা যায়। (3) শৈবালের পচনের ফলে জলে স্ট্রিকনিন নামক বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন হয়, যার ফলে জলজ জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
36. অ্যালগাল ব্লুম কাকে বলে? 
উত্তর – স্বাদু জল বা সামুদ্রিক লবণাক্ত জলে শৈবালের অতিবৃদ্ধি ঘটে জলের বর্ণ সবুজ হয়ে যায় ও ওই জলের বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হয়। একে অ্যালগাল ব্লুম বলে। ইউট্রোফিকেশনে অ্যালগাল ব্লুম ঘটে থাকে।
37. COD বলতে কী বোঝ? এটি দূষণ নির্দেশকরূপে কীভাবে কাজ করে ?
উত্তর – COD: জলের জৈব উপাদানের পচন ও অজৈব রাসায়নিক, যেমন অ্যামোনিয়া ও নাইট্রাইটের জারণে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন মাত্রা নির্দেশ করে COD বা কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড।
দূষণ নির্দেশকরূপে কাজ: এটি জলে উপস্থিত জৈব ও অজৈব দূষক মাত্রা নির্দেশ করে। এর মান বৃদ্ধির অর্থ জলে দূষণ মাত্রা বৃদ্ধি।
38. জৈব অক্সিজেন চাহিদা বা BOD বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – কাগজ শিল্প, খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্প, চর্মশিল্প প্রভৃতির উপজাত দ্রব্য ও গৃহস্থালির উপজাত দ্রব্যে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকে। এগুলি জলে মিশে বিভিন্ন অণুজীবের সংখ্যার অত্যধিক বৃদ্ধি ঘটায়। এতে জলে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পায়। এর ফলস্বরূপ জলে অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাকে জৈব অক্সিজেন চাহিদা বা BOD (Biological Oxygen Demand) বলে।
39. কষিক্ষেত্রে বর্জ্য বহির্গমন (agricultural run off) বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত সার, বিভিন্ন প্রকার আগাছানাশক ও কীটনাশক, মাটি, ফসলজাত বর্জ্য বৃষ্টির জল বা চাষের অতিরিক্ত জলের সাথে মিশে কৃষিক্ষেত্র থেকে নির্গত হয়ে যায়। একেই কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য বহির্গমন (agricultural run off) বলা হয়।
40. কোন্ কোন্ ধাতু বেশি পরিমাণে মৃত্তিকা দূষণ ঘটায়?
উত্তর – বিভিন্ন ধাতব শিল্প থেকে সিসা, তামা, দস্তা, পারদ, নিকেল, ক্রোমিয়াম প্রভৃতি ধাতু নির্গত হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে ধাতুজনিত মৃত্তিকা দূষণ ঘটায় ।
41. কীটনাশক দ্রব্যের মাধ্যমে কোন্ কোন্ ধাতু মৃত্তিকা দূষণ ঘটায় ?
উত্তর – বিভিন্ন কীটনাশক দ্রব্যে তামা, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম ও পারদ যৌগ-রূপে উপস্থিত থাকে। সেগুলির প্রয়োগে মাটিতে ধাতুজনিত দূষণের সৃষ্টি হয়।
42. কৃষিক্ষেত্রে বর্জ্যে উপস্থিত পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর – কৃষিক্ষেত্রে বর্জ্যে উপস্থিত পদার্থ হল – (1) DDT, BHC প্রভৃতি কীটনাশক। (2) বিভিন্নপ্রকার নাইট্রেট ও ফসফেটজাতীয় সার।
43. মাটির পারমাণবিক দূষণ কীভাবে ঘটে?
উত্তর – পারমাণবিক বিস্ফোরণ ও পারমাণবিক চুল্লী থেকে নির্গত বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় উপজাত দ্রব্যের ফলে মাটির দূষণ ঘটে। তেজস্ক্রিয় উপজাত দ্রব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রেডিয়াম-106, প্রোমেথিয়াম-144।
44. কোন ধরনের কীটনাশক অধিকমাত্রায় মৃত্তিকা দূষণ ঘটায়?
উত্তর – ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন-জাতীয় কীটনাশক, যেমন—DDT, BHC, অ্যালড্রিন প্রভৃতি অধিকমাত্রায় মৃত্তিকা দূষণ ঘটায়।
45. জীববিবর্ধন বা জৈববিবর্ধন (biomagnification) কাকে বলে ?
উত্তর – যে পদ্ধতিতে পরিবর্তনহীন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে এবং প্রতিটি খাদ্যস্তরের অন্তর্ভুক্ত জীবদেহে এর ঘনত্বের পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, তাকে জীববিবর্ধন বা জৈববিবর্ধন বা বায়োম্যাগনিফিকেশন বলে।

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো

1. প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাসটি হল –
(a) অক্সিজেন
(b)ওজোন
(c) কার্বন ডাইঅক্সাইড
(d) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
উত্তর – (c) কার্বন ডাইঅক্সাইড
2. গ্রিনহাউস গ্যাস নয় –
(a) মিথেন
(b) অক্সিজেন
(c) কার্বন ডাইঅক্সাইড
(d) নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড
উত্তর – (b) অক্সিজেন
3. কোন্‌টি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস ?
(a) O2
(b) N2
(c) N2O
(d) NH3
উত্তর – (c) N2O
4. বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের স্বাভাবিক মাত্রা হল –
(a) 0.1%
(b) 0.01%
(c) 0.03%
(d) 0.3%
উত্তর – (c) 0.03%
5. রেফ্রিজারেশনে ও এয়ারকন্ডিশন শিল্প থেকে উদ্ভূত বায়ুদূষক হল—
(a) N2O
(b) SO2
(c) CFC
(d) H2O2
উত্তর – (c) CFC
6. অ্যারোসলের ব্যাস হয় —
(a) 1 মাইক্রনের কম
(b) 1-5 মাইক্রন
(c) 5-15 মাইক্রন
(d) 15 মাইক্রনের বেশি
উত্তর – (a) 1 মাইক্রনের কম
7. বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরটি অবস্থিত—
(a) ট্রোপোস্ফিয়ারে
(b) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
(c) এক্সোস্ফিয়ারে
(d) মেসোস্ফিয়ারে
উত্তর – (b) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
৪. ওজোন স্তরের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করে যে গ্যাসটি, সেটি হল—
(a) কার্বন ডাইঅক্সাইড
(b) পারঅক্সি-অ্যাসিটাইল নাইট্রেট
(c) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
(d) কার্বন মনোক্সাইড
উত্তর – (c) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
9. বায়ুতে সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাসের প্রধান উৎস হল—
(a) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
(b) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র
(c) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
(d) রাসায়নিক শিল্প
উত্তর – (a) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
10. উদ্ভিদের যে অংশ সাধারণত বায়ুদূষণ ঘটায়, সেটি হল –
(a) ফুল
(b) ফল
(c) পাতা
(d) পরাগরেণু
উত্তর – (d) পরাগরেণু
11. ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয় —
(a) ধোঁয়ার সঙ্গে ধুলো মিশে
(b) ধোঁয়ার সঙ্গে জলীয় বাষ্প মিশে
(c) ধোঁয়ার সঙ্গে কুয়াশা মিশে
(d) ধোঁয়ার সঙ্গে অম্ল মিশে
উত্তর – (c) ধোঁয়ার সঙ্গে কুয়াশা মিশে
12. PAN-এর পুরো নাম হল –
(a) প্যারা অ্যাসিটাইল নাইট্রেট
(b) পারঅক্সি-অ্যাসিটাইল নাইট্রেট
(c) পারঅক্সি-অ্যাসিড নাইট্রেট
(d) প্যারা অ্যাসিডিক নাইট্রোজেন
উত্তর – (b) পারঅক্সি-অ্যাসিটাইল নাইট্রেট
13. CFC গ্যাস নির্গত হয়—
(a) তৈল শোধনাগার থেকে
(b) ফ্রিজ তৈরির কারখানা থেকে
(c) যানবাহনের ধোঁয়া থেকে
(d) ধোঁয়াশা থেকে
উত্তর – (b) ফ্রিজ তৈরির কারখানা থেকে
14. ফোমের গদি তৈরির কারখানা থেকে নির্গত হয় —
(a) PAN
(b) সিসা
(c) CFC
(d) NO2
উত্তর – (c) CFC
15. PAN, SO3, HNO – এগুলি হল—
(a) প্রাথমিক বায়ুদূষক পদার্থ
(b) গৌণ বায়ুদূষক পদার্থ
(c) আংশিক বায়ুদূষক পদার্থ
(d) বায়ুদূষক নয়
উত্তর – (b) গৌণ বায়ুদূষক পদার্থ
16. CO, SO2 এবং NO হল—
(a) প্রাথমিক দূষণকারী পদার্থ
(b) গৌণ দূষণকারী পদার্থ
(c) প্রগৌণ দূষণকারী পদার্থ
(d) এগুলির কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) প্রগৌণ দূষণকারী পদার্থ
17. H2O2, PAN এবং HNO3 হল –
(a) প্রাথমিক দূষণকারী পদার্থ
(b) গৌণ দূষণকারী পদার্থ
(c) প্রগৌণ দূষণকারী পদার্থ
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (b) গৌণ দূষণকারী পদার্থ
18. প্রকৃতিতে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হওয়ার সবচেয়ে বড়ো উৎস হল—
(a) জলাজমিতে থাকা অণুজীবদের অবাত শ্বসন
(b) আগ্নেয়গিরির উদ্‌গিরন
(c) উয় প্রস্রবণে ব্যাকটেরিয়ার শটন
(d) সাইক্লোন
উত্তর – (a) জলাজমিতে থাকা অণুজীবদের অবাত শ্বসন
19. SPM দ্বারা সাধারণত যে প্রকার দূষণ ঘটে—
(a) শব্দদূষণ
(b) মৃত্তিকা দূষণ
(c) জলদূষণ
(d) বায়ুদূষণ
উত্তর – (d) বায়ুদূষণ
20. SPM-এর একটি উদাহরণ হল—
(a) সিসা
(b) পরাগরেণু
(c) DDT
(d) প্লাস্টিক
উত্তর – (b) পরাগরেণু
21. SPM-এর আকার সাধারণত –
(a) 100μ -এর কম
(b) 1000μ -এর কম
(c) 102μ -এর কম
(d) 10000μ -এর কম
উত্তর – (c) 102μ -এর কম
22. জীবাশ্ম জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহনে তৈরি হয়—
(a) নাইট্রিক অক্সাইড গ্যাস
(b) হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস
(c) কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস
(d) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন গ্যাস
উত্তর – (c) কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস
23. নীচের যেটি জীবাশ্ম জ্বালানি, তা হল –
(a) মিথেন
(b) খনিজ তেল
(c) কয়লা
(d) b ও c উভয়ই
উত্তর – (d) b ও c উভয়ই
24. নীচের কোন্‌টি কণা দূষক নয়?
(a) ধুলো
(b) ওজোন
(c) চিমনির কালি (soot)
(d) ধোঁয়া
উত্তর – (b) ওজোন
25. অম্লবৃষ্টি বলা হয়, যখন বৃষ্টির জলের pH-এর মান—
(a) 8.0-এর বেশি হয়
(b) 4.0-এর কম হয়
(c) 6.0-এর কম হয়
(d) 5.0-এর কম হয়।
উত্তর – (d) 5.0-এর কম হয়।
26. অম্লবৃষ্টির প্রধান উপাদান হল—
(a) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ও হাইড্রোফ্লুরিক অ্যাসিড
(b) ম্যালিক অ্যাসিড ও ফরমিক অ্যাসিড
(c) সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিড
(d) সাইট্রিক অ্যাসিড ও টারটারিক অ্যাসিড
উত্তর – (c) সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিড
27. অম্লবৃষ্টির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় —
(a) কাঠের তৈরি ঘরবাড়ি
(b) কাচের তৈরি শিল্পদ্রব্য
(c) মার্বেলের তৈরি স্থাপত্য নিদর্শন
(d) পোর্সেলিনের তৈরি দ্রব্যসামগ্রী
উত্তর – (c) মার্বেলের তৈরি স্থাপত্য নিদর্শন
28. অ্যাসিড বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না কোন্‌টি?
(a) ফতেপুর সিক্রি
(b) বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম
(c) তাজমহল
(d) ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
উত্তর – (b) বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম
29. বায়ুদূষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রোগগুলি হল—
(a) ডায়ারিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস
(b) হেপাটাইটিস, ব্রংকাইটিস, বধিরতা
(c) ব্রংকাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যানসার
(d) ফুসফুসের ক্যানসার, পোলিও, ম্যালেরিয়া
উত্তর – (c) ব্রংকাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যানসার
30. জলাশয়ে পুষ্টিমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনাকে বলে—
(a) বায়োম্যাগনিফিকেশন
(b) ইউট্রোফিকেশন
(c) নিউট্রিশন
(d) নিউট্রিফিকেশন
উত্তর – (b) ইউট্রোফিকেশন
31. জলদূষণের ফলে নীচের যেটি ঘটে তা হল—
(a) বিশ্ব উয়ায়ন
(b) ইউট্রোফিকেশন
(c) বধিরতা
(d) ব্রংকাইটিস
উত্তর – (b) ইউট্রোফিকেশন
32. জলে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের দ্রুত প্রজনন ও বৃদ্ধির ফলে জলাশয়ে তার ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং ইউট্রোফিকেশন ঘটে। এই ঘটনাকে বলে—
(a) ফাংগাল ব্লুম
(b) ব্যাকটেরিয়াল ব্লুম
(c) অ্যালগাল ব্লুম
(d) প্রোটোজোয়াল ব্লুম
উত্তর – (c) অ্যালগাল ব্লুম
33. জলে খুব বেশি মাত্রায় ইউট্রোফিকেশন সমস্যার সৃষ্টি করে—
(a) কার্বন যৌগ
(b) সালফেট যৌগ
(c) ফসফেট যৌগ
(d) নাইট্রেট যৌগ
উত্তর – (c) ফসফেট যৌগ
34. শৈবাল নিঃসৃত ক্ষতিকর টক্সিন হল-
(a) নিউরোটক্সিন
(b) ফাইলোটক্সিন
(c) অক্সিটোসিন
(d) ফাইব্রিন
উত্তর – (a) নিউরোটক্সিন
35. অ্যালগাল ব্লুম (algal bloom)-এর কারণ হল জলের —
(a) pH হ্রাস
(b) pH বৃদ্ধি
(c) ইউট্রোফিকেশন
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) ইউট্রোফিকেশন
36. সাধারণ জলে দ্রাব্য অক্সিজেনের পরিমাণ —
(a) 1 ppm
(b) 3 ppm
(c) 8 ppm
(d) 10 ppm
উত্তর – (b) 3 ppm
37. COD-এর পুরো নাম হল –
(a) কমন অক্সিজেন ডিমান্ড
(b) কমন অক্সিজেন ডেভেলপমেন্ট
(c) কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড
(d) কেমিক্যাল অক্সিজেন ডেভেলপমেন্ট
উত্তর – (c) কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড
38. COD-এর সাহায্যে পরিমাপ করা হয় —
(a) জলদূষণের মাত্রা
(b) বায়ুদূষণের মাত্রা
(c) মৃত্তিকা দূষণের মাত্রা
(d) শব্দদূষণের মাত্রা
উত্তর – (a) জলদূষণের মাত্রা
39. জলদূষণ পরিমাপে ব্যবহৃত ব্যাকটেরিয়াটি হল—
(a) ব্যাসিলাস সাবটিলিস
(b) থায়োব্যাসিলাস ডিনাইট্রিফিক্যানস্
(c) ই. কোলাই
(d) রাইজোবিয়াম
উত্তর – (c) ই. কোলাই
40. জলের BOD মাত্রা বৃদ্ধি যা নির্দেশ করে, তা হল—
(a) পরিশ্রুত জল
(b) জলদূষণ
(c) পানীয় জল
(d) জলে অতিরিক্ত খনিজের উপস্থিতি
উত্তর – (b) জলদূষণ
41. BOD বেশি হলে বুঝতে হবে—
(a) জল বিশুদ্ধ
(b) জল দূষিত
(c) জল স্বচ্ছ
(d) জলে CO2 কম
উত্তর – (b) জল দূষিত
42. জলের BOD বৃদ্ধি পেলে দ্রবীভূত অক্সিজেন-এর পরিমাণ—
(a) হ্রাস পায়
(b) বৃদ্ধি পায়
(c) অপরিবর্তিত থাকে
(d) সবগুলিই সঠিক
উত্তর – (a) হ্রাস পায়
43. BOD-এর সাহায্যে মাপা হয় –
(a) CO2 -এর চাহিদা
(b) হাইড্রোজেনের চাহিদা
(c) অক্সিজেনের চাহিদা
(d) নাইট্রোজেনের চাহিদা
উত্তর – (c) অক্সিজেনের চাহিদা
44. সাবান বা ডিটারজেন্টে উপস্থিত যে রাসায়নিকটি সবচেয়ে বেশি জলদূষণ ঘটায়—
(a) সালফেট
(b) ফসফেট
(c) ক্ষার
(d) নাইট্রেট
উত্তর – (b) ফসফেট
45. জলদূষণ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ঘটে—
(a) আকরিক শিল্পে
(b) কাগজ ও চর্মশিল্পে
(c) ইলেকট্রনিক শিল্পে
(d) ইস্পাত শিল্পে
উত্তর – (b) কাগজ ও চর্মশিল্পে
46. যে ধাতব কণাগুলি বেশিমাত্রায় জলদূষণ ঘটায়, সেগুলি হল—
(a) সিসা ও পারদ
(b) সোডিয়াম ও পটাশিয়াম
(c) লোহা ও তামা
(d) ম্যাগনেশিয়াম ও রুপো
উত্তর – (a) সিসা ও পারদ
47. ব্ল্যাকফুট ডিজিজ হয় যে দূষকের প্রভাবে—
(a) আর্সেনিক
(b) সিসা
(c) পারদ
(d) ক্যাডমিয়াম
উত্তর – (a) আর্সেনিক

দু-একটি শব্দে বা বাক্যে উত্তর দাও

1. বায়ুদূষণের প্রধান কারণ কী?
উত্তর – বায়ু সবচেয়ে বেশি দূষিত হয় গাড়ির ধোঁয়া ও রাসায়নিক শিল্পকেন্দ্র থেকে নির্গত ধোঁয়ার দ্বারা।
2. গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রধান ‘এফেক্ট’ কী?
উত্তর – বিশ্ব উয়ায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং।
3. সর্বাধিক গ্রিনহাউস এফেক্ট সৃষ্টি করে কোন্ উপাদান?
উত্তর – জলীয় বাষ্প (30-70% ) ।
4. একটি জৈব গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো।
উত্তর – মিথেন (CH4)।
5. একটি কৃত্রিম গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো।
উত্তর – ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC)।
6. SPM-এর একটি উদাহরণ দাও। 
উত্তর – তেলের ধোঁয়া।
7. কোন্ মানব সৃষ্ট কারণে CO2 এর মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে?
উত্তর – জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, সিমেন্ট উৎপাদন এবং ক্রান্তীয় বনভূমি বিনাশের কারণে CO2 এর মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. বায়ুদূষকরূপে হাইড্রোকার্বনের উৎস কী ?
উত্তর – বায়ুদূষকরূপে হাইড্রোকার্বনের উৎস হল — জীবাশ্ম জ্বালানির দহন ও কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া।
9. ওজোন স্তর বিনাশের কারণ কী ?
উত্তর – ওজোন স্তর বিনাশের কারণ ওজোনবিনাশী ক্লোরোফ্লুরোকার্বন নির্গমন।
10. PAN কী ?
অনুরূপ প্রশ্ন, PAN-এর সম্পূর্ণ নাম লেখো।
উত্তর – PAN-এর সম্পূর্ণ নাম পারক্সি-অ্যাসিটাইল নাইট্রেট। এটি একটি গৌণ দূষক যা শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
11. তৈল শোধনাগার থেকে অসম্পূর্ণ দহনের ফলে উদ্ভূত কণাকে কী বলে?
উত্তর – পেট্রোলিয়াম কোক বা পেটকোক কণা।
12. SPM-এর সম্পূর্ণ নাম কী?
উত্তর – সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার।
13. বাতাসে ভাসমান বস্তুকণা (SPM) মানুষের শরীরের শ্বাসতন্ত্রে কী প্রভাব ফেলে?
উত্তর – বাতাসে ভাসমান বস্তুকণা মানুষের শরীরে শ্বাসতন্ত্রের জ্বালা ও শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে।
14. মেট্রো শহরগুলিতে বায়ুদূষণের মূল কারণ কী?
উত্তর – মেট্রো শহরগুলিতে বায়ুদূষণের মূল কারণ হল—মোটরগাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া।
15. বায়ুদূষণ নির্দেশকের নাম লেখো।
উত্তর – লাইকেন।
16. ধূমপানের ফলে নির্গত ধোঁয়ায় উপস্থিত ক্ষতিকারক একটি পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর – ক্লোরোবেঞ্জিন।
17. COPD কথাটির সম্পূর্ণ নাম কী?
উত্তর – ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ।
18. বায়ুদূষণের ফলে, কয়লাখনির শ্রমিকদের মধ্যে কী রোগ দেখা যায় ?
উত্তর – ব্ল্যাক লাং।
19. ভারতে অবস্থিত দুটি সৌধের নাম লেখো যেখানে অম্লবৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়।
উত্তর – তাজমহল (আগ্রা) ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল (কলকাতা) হল ভারতে অবস্থিত এমন দুটি সৌধ সেখানে অম্লবৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায় ৷
20. পৃথিবীর কত শতাংশ মিষ্টি জল ?
উত্তর – 3%
21. মানবসৃষ্ট কারণে জলাশয়ে শৈবাল বৃদ্ধির ঘটনাকে কী বলে?
উত্তর – কালচারাল ইউট্রোফিকেশন।
22. জলদূষণ বাড়তে থাকার দরুণ, অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে কোন্ গ্যাসটির অভাব দেখা দেবে?
উত্তর – জলদূষণ বাড়তে থাকার দরুণ জলজ প্রাণীর জন্য জলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেবে।
23. ইউট্রোফিকেশনে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রার কী পরিবর্তন ঘটে?
উত্তর – ইউট্রোফিকেশনের সময়ে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়৷
24. শৈবাল দ্বারা উৎপাদিত দুটি ক্ষতিকর টক্সিনের নাম লেখো যা জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটায়।
উত্তর – নিউরোটক্সিন ও হেপাটোটক্সিন।
25. BOD-এর পুরো নাম লেখো।
উত্তর – বায়োলজিকাল অক্সিজেন ডিমান্ড।
26. বাস্তুতন্ত্রে একটি পুষ্টিস্তরে দূষক সঞ্চয়কে কী বলে ?
উত্তর – জৈবসঞ্চয়ন।
27. কোন্ প্রাণীকলায় দূষক সঞ্চয় ঘটে?
উত্তর – অ্যাডিপোজ কলা।
28. DDT-এর সম্পূর্ণ নাম লেখো।
উত্তর – ডাইক্লোরোডাইফিনাইলট্রাইক্লোরোইথেন।
29. ইউট্রোফিকেশনের জন্য দায়ী দুই ধরনের সারের নাম লেখো।
উত্তর – ইউট্রোফিকেশনের জন্য দায়ী দুই ধরনের সার হল—ফসফেটজাতীয় সার ও নাইট্রেটজাতীয় সার।
30. জলে উপস্থিত কয়েকটি অদ্রবীভূত জৈবদূষকের নাম লেখো।
উত্তর – জলে উপস্থিত কয়েকটি অদ্রবীভূত জৈবদূষকের নাম -শুকনো পাতা, শৈবাল, পাট এবং ব্যাকটেরিয়া।
31. সিউয়েজ কী ?
উত্তর – গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের পরে উদ্ভূত এবং পৌর নির্গমনে নিষ্কাশিত বর্জ্য-সমূহকে সিউয়েজ বলে।
32. জলবাহিত, ভাইরাসঘটিত দুটি রোগের নাম লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, জলদূষণ-জনিত দুটি রোগের নাম লেখো।
উত্তর – হেপাটাইটিস-A এবং পোলিওমায়েলাইটিস বা পোলিও।
33. জলবাহিত, ব্যাকটেরিয়াঘটিত দুটি রোগের নাম লেখো।
উত্তর – কলেরা এবং রক্ত-আমাশা।
34. জলবাহিত, প্রোটোজোয়াঘটিত দুটি রোগের নাম লেখো।
উত্তর – আমাশয় এবং জিয়ার্ডিয়াসিস।
35. জলবাহিত, কৃমিজাতীয় দুটি রোগের নাম লেখো।
উত্তর – টিনিয়াসিস, অ্যাসক্যারিয়াসিস।
36. আর্সেনিক দূষণ কোন্ জাতীয় দূষণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত?
উত্তর – আর্সেনিক দূষণ জলদূষণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
37. কত ফুট গভীরতার নলকূপগুলিতে আর্সেনিক থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে?
উত্তর – 500-600 ফুট।
38. সিসার দূষণের ফলে হয়, এমন একটি রোগের নাম লেখো।
উত্তর – ডিসলেক্সিয়া।
39. জলে ক্যাডমিয়াম দূষণের ফলে কোন্ রোগ দেখা দেয়?
উত্তর – ইটাই-ইটাই।
40. পারদ দূষণের ফলে সৃষ্ট রোগের নাম লেখো।
উত্তর – মিনামাটা।
41. মানুষের দেহ থেকে নির্গত কোন্ কোন্ জীব মাটির দূষণ ঘটায় ?
উত্তর – গোলকৃমি, হুক কৃমি প্রভৃতি।
42. জমিতে অতিরিক্ত হারে নাইট্রোজেনঘটিত সার ব্যবহার করলে মাটিতে কীসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ?
উত্তর – জমিতে অতিরিক্ত হারে নাইট্রোজেনঘটিত সার ব্যবহার করলে, মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পায়।
43. অত্যধিক হারে জলসেচ জমিতে কী প্রভাব ফেলে?
উত্তর – অত্যধিক হারে জলসেচ জমিকে লবণাক্ত করে তোলে।
44. একটি ইউডেফিক প্যাথোজেনের নাম লেখো।
উত্তর – অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু Bacillus anthracis (ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস)।
45. মানুষের শ্রুতিগ্রাহক অঙ্গটির নাম কী ?
উত্তর – অর্গান অফ কটি।
46. শব্দদূষণের ফলে মানব হৃৎপিণ্ডে কী প্রভাব দেখা যায় ?
উত্তর – শব্দদূষণের ফলে আমাদের মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, হৃদ্‌গতি বৃদ্ধি প্রভৃতি রোগ ঘটার সম্ভাবনা বাড়ে।
47. অ্যাকাউস্টিক ট্রমা বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – অতি উচ্চপ্রাবল্যের শব্দ আচম্বিতে শুনলে অন্তঃকর্ণের ককলিয়ার স্থায়ীভাবে শ্রবণ ক্ষমতা নষ্ট হওয়াকে অ্যাকাউস্টিক ট্রমা বলে।
48. ভারতে গ্রহণযোগ্য শব্দের মান দিনের বেলায় কত?
উত্তর – ভারতে গ্রহণযোগ্য শব্দের মান দিনের বেলায় 65 ডেসিবেল (dB)।
49. শব্দের প্রাবল্য বা শব্দদূষণ কোন্ এককে পরিমাপ করা যায় ?
উত্তর – ডেসিবেল (dB)।
50. কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্ধারিত মান অনুযায়ী যানবাহনজনিত শব্দদূষণ মাত্রা কত হওয়া উচিত?
উত্তর – কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্ধারিত মান অনুযায়ী যানবাহনজনিত শব্দদূষণ মাত্রা 70-80 dB হওয়া উচিত।
51. শব্দের মাত্রা কত হলে সিস্টোলিক রক্তচাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায় ?
উত্তর – শব্দের মাত্রা 90 dB-র ঊর্ধ্বে হলে সিস্টোলিক রক্তচাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়।
52. শব্দের মাত্রা কত হলে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের বধিরতা দেখা যায় ?
উত্তর – শব্দের মাত্রা 85 dB-এর ঊর্ধ্বে হলে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের বধিরতা দেখা যায়।
53. NIHL-এর সম্পূর্ণ নাম লেখো।
উত্তর – নয়েস ইনডিউস্ড হিয়ারিং লস।
54. শব্দদূষণ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আমাদের কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার ?
উত্তর – শব্দদূষণ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কানে ইয়ার প্লাগ, ইয়ারমাফ ইত্যাদি ব্যবহার করা দরকার।

শূন্যস্থান পূরণ করো

1. একটি গৌণ বায়ুদূষক হল …………।
উত্তর – PAN
2. রেফ্রিজারেশন শিল্পে ………. ব্যবহৃত হয়।
উত্তর – CFC
3. নাইট্রোজেনঘটিত একটি গ্রিনহাউস গ্যাস হল …………।
উত্তর – নাইট্রাস অক্সাইড
4. জীবাশ্ম জ্বালানির দহনের ফলে ……….. নামক গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ুতে মেশে।
উত্তর – CO2
5. ধানখেত থেকে উৎপন্ন একটি দাহ্য গ্রিনহাউস গ্যাস হল …………।
উত্তর – মিথেন
6. ধুলো, ধাতব কণা, অণুজীব, পরাগরেণু প্রভৃতিকে একত্রে ………… বলে।
উত্তর – অ্যারোসল
7. অ্যাসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী একটি গ্যাস হল …………।
উত্তর – SO2
8. অম্লবৃষ্টির কারণে জলের pH মাত্রা ………. যায়।
উত্তর – কমে
9. মার্বেল ও ………. নির্মিত সৌধগুলি অ্যাসিড বৃষ্টি দ্বারা আক্রান্ত হয়।
উত্তর – চুনাপাথর
10. মার্বেলে উপস্থিত ………. অম্লবৃষ্টির সঙ্গে বিক্রিয়া করে সালফেট ও নাইট্রেট উৎপন্ন করে।
উত্তর – ক্যালশিয়াম কার্বনেট
11. তাজমহলের সৌন্দর্য বিনষ্ট করছে …………।
উত্তর – অ্যাসিড বৃষ্টি
12. বায়ুদূষণের ফলে সৃষ্ট একটি রোগ হল …………।
উত্তর – ব্রংকাইটিস
13. ………… রোগের জন্য দায়ী একটি দূষক হল সিলিকাতন্তু।
উত্তর – সিলিকোসিস
14. শ্বাসনালীর ব্যাস কমে স্থায়ী রোগকে বলে …………।
উত্তর – COPD
15. DDT হল একটি জৈব সঞ্চয়ক ও …………।
উত্তর – জৈববিবর্ধক
16. জলাশয়ে পুষ্টি বস্তুর অতিবৃদ্ধিকে ………… বলে।
উত্তর – ইউট্রোফিকেশন
17. খাদ্যশৃঙ্খল যত বড়ো হয় দূষণ ঘনত্ব তত ………. হয়।
উত্তর – বেশি
18. শৈবাল নিঃসৃত ………. হল একটি ক্ষতিকর টক্সিন।
উত্তর – নিউরোটক্সিন
19. দূষিত জল পান করার ফলে সৃষ্ট একটি রোগ হল …………।
উত্তর – কলেরা
20. ভৌমজলে আর্সেনিক মিশ্রিত হলে ………… রোগ হয়।
উত্তর – আর্সেনিকোসিস
21. টাইফয়েড একটি …………রোগ।
উত্তর – জলবাহিত/ব্যাকটেরিয়া ঘটিত
22. সালমোনেল্লা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়া ………. রোগ সৃষ্টি করে।
উত্তর – টাইফয়েড
23. মাটিতে বসবাসকারী জীবাণুকে ……… জীবাণু বলে ৷
উত্তর – ইউডেফিক
24. মাটিজাত একটি কুমির নাম হল …………।
উত্তর – অ্যাসকারিস
25. মৃত্তিকা দূষণঘটিত একটি রোগ হল …………।
উত্তর – টিটেনাস
26. শব্দের তীব্রতা পরিমাপের একক হল …………।
উত্তর – ডেসিবেল
27. CPCB নির্ধারিত যানবাহনজনিত শব্দদূষণ মাত্রা ……… ডেসিবেল।
উত্তর – 70-80
28. ………. ডেসিবেলের ঊর্ধ্বের শব্দ দীর্ঘদিন শুনলে ‘নয়েজ ইনডিউসড হিয়ারিং লস’ হয়।
উত্তর – 100
29. অনবরত ………. ডেসিবেলের ঊর্ধ্বে শব্দ শুনলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
উত্তর – 60
30. উচ্চ প্রাবল্যের শব্দে হৃৎস্পন্দন …………।
উত্তর – বাড়ে

The Complete Educational Website

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *