WBBSE 10th Class Science Solutions Physics Chapter 8.6 জৈব রসায়ন
WBBSE 10th Class Science Solutions Physics Chapter 8.6 জৈব রসায়ন
West Bengal Board 10th Class Science Solutions Physics Chapter 8.6 জৈব রসায়ন
West Bengal Board 10th Physics Solutions
TOPIC – A জৈব যৌগের সাধারণ ধর্ম
বিষয়সংক্ষেপ
জৈব যৌগ: কার্বনের বিভিন্ন অক্সাইড, কার্বনেট ও বাইকার্বনেট, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, ধাতব সায়ানাইড, সায়ানেট, থায়োসায়ানেট, কার্বন ডাইসালফাইড ইত্যাদি যৌগগুলি ছাড়া কার্বনের যে বিশাল সংখ্যক যৌগের মধ্যে কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্ম, সমাবয়বতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায় তাদের জৈব যৌগ বলে।
কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেল: 1874 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ ও লা-বেল কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলের প্রস্তাবনা করেন। এই মডেল অনুযায়ী (i) কার্বনের 4 টি যোজ্যতা কখনোই এক সমতলে থাকতে পারে না। (ii) একটি কাল্পনিক সমচতুস্তলকের কেন্দ্রে কার্বন পরমাণু অবস্থান করবে এবং ওর 4টি যোজ্যতা ওই সমচতুস্তলকের চারটি শীর্ষ বিন্দুর দিকে প্রসারিত থাকবে। (ii) কার্বন পরমাণুর যে-কোনো দুটি যোজ্যতার মধ্যবর্তী কোণের মান 109°28′ |

কয়েকটি জৈব অণুর গঠনাকৃতি, বন্ধন-কোণ ও বন্ধন-দৈর্ঘ্য:

সম্পৃক্ত যৌগ: যেসব জৈব যৌগের অণুর গঠনে পাশাপাশি থাকা সবগুলি C-পরমাণুই নিজেদের মধ্যে এক বন্ধনে যুক্ত থাকে তাদেরকে সম্পৃক্ত যৌগ বলে। যেমন—মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6), প্রোপেন (C3H8) ইত্যাদি।
অসম্পৃক্ত যৌগ: যেসব জৈব যৌগের অণুতে অন্তত দুটি C -পরমাণু দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে তাদের অসম্পৃক্ত যৌগ বলে। যেমন—ইথিলিন (C2H4) , অ্যাসিটিলিন (C2H2) প্রভৃতি।
হাইড্রোকার্বন: কার্বন ও হাইড্রোজেন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত দ্বি-মৌল যৌগগুলিকে হাইড্রোকার্বন বলে। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনকে অ্যালকেন বলে। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনগুলির রাসায়নিক সক্রিয়তা খুব কম। দ্বি-বন্ধন ও ত্রি-বন্ধনবিশিষ্ট অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনকে যথাক্রমে অ্যালকিন ও অ্যালকাইন বলে। অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনগুলি রাসায়নিকভাবে খুব সক্রিয় হয়।
কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক (Functional group): যেসব পরমাণু বা মূলক জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত থেকে তাদের প্রকৃতি, ধর্ম ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে তাদের কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক বলে।

সমাবয়বতা: একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট কিন্তু ভিন্ন ধর্মসম্পন্ন একাধিক যৌগ গঠনের ঘটনাকে সমাবয়বতা বা আইসোমেরিজম বলে। একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট ভিন্নধর্মী যৌগসমূহকে আইসোমার বা সমাবয়ব বলে।
- অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা: একই কার্বন শৃঙ্খলবিশিষ্ট সমাবয়বী যৌগসমূহে একই কার্যকরী মূলকের অবস্থানের বিভিন্নতার জন্য যে ধরনের সমাবয়বতার সৃষ্টি হয় তাকে অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা বলে।
উদাহরণ: প্রোপান-1 -অল বা n-প্রোপাইল অ্যালকোহল (CH3CH2CH2OH) এবং প্রোপান-2 -অল বা আইসো-প্রোপাইল অ্যালকোহল [CH3CH(OH)CH3]।
- কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বৰ্তা: একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট যৌগে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকার ফলে যে সমাবয়বতার উদ্ভব হয়, তাকে কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বতা বলে।
উদাহরণ: CH3–O—CH3 (ডাইমিথাইল ইথার) ও C2H5OH (ইথাইল অ্যালকোহল)।
সমগণীয় শ্রেণি: একই মৌলসমূহ দ্বারা গঠিত, একই সাধারণ সংকেত দ্বারা প্রকাশযোগ্য এবং একই কার্যকরী মূলকযুক্ত সমধর্মী জৈব যৌগসমূহকে ক্রমবর্ধমান আণবিক ভর অনুযায়ী সাজালে একটি শ্রেণি পাওয়া যায় যার পরপর দুটি সদস্যের আণবিক সংকেতের পার্থক্য হয় CH2 । এরূপ শ্রেণিকে সমগণীয় শ্রেণি বলে।
- অ্যালকেন সমগণীয় শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত CnH2n+2 । উদাহরণ: CH4 (মিথেন), C2H6 (ইথেন)।
- অ্যালকিন সমগণীয় শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত CnH2n । উদাহরণ: C2H4 (ইথিলিন), C3H6 (প্রোপিলিন)।
- অ্যালকাইন সমগণীয় শ্রেণির যৌগগুলির সাধারণ সংকেত CnH2n-2 । উদাহরণ: C2H2 (অ্যাসিটিলিন), C3H4 (প্রোপাইন)।
IUPAC নামকরণ: IUPAC (International Union of Pure and Applied Chemistry) পদ্ধতিতে সরল হাইড্রোকার্বনের নামের দুটি অংশ–শব্দমূল (word root) ও শ্রেণি প্রত্যয় (class suffix)। শব্দমূল দীর্ঘতম বা প্রধান কার্বন শৃঙ্খলে উপস্থিত কার্বন (C) পরমাণুর সংখ্যা বোঝায়। কার্বনের সংখ্যা 1 থেকে 4-এর জন্য যথাক্রমে মিথ, ইথ, প্রোপ্ ও বিউট্ শব্দ হয়। জৈব যৌগটি কোন্ সমগণীয় শ্রেণির তা বোঝানোর জন্য শ্রেণি প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।
বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
TOPIC – A জৈব যৌগের সাধারণ ধর্ম
সংক্ষিপ্ত / দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. (i) জৈব যৌগের আধুনিক সংজ্ঞা দাও।
(ii) দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয় এমন কয়েকটি জৈব যৌগের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর – (i) কার্বনের বিভিন্ন অক্সাইড, কার্বনেট ও বাইকার্বনেট, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, ধাতব সায়ানাইড, সায়ানেট, থায়োসায়ানেট, কার্বন ডাইসালফাইড ইত্যাদি যৌগগুলি ছাড়া কার্বনের যে বিশাল সংখ্যক যৌগের মধ্যে কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্ম, সমাবয়বতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়, তাদের জৈব যৌগ বলে। যেমন—মিথেন (CH4), ইথিলিন (C2H4), বেঞ্জিন (C6H6), কার্বন টেট্রাক্লোরাইড (CCl4), ক্লোরোফর্ম (CHCl3), অ্যাসিটিলিন (C2H2) প্রভৃতি।
(ii) দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয় এমন কয়েকটি জৈব যৌগ হল চিনি (C12H22O11), ইউরিয়া [CO(NH2)], ভিনিগার বা অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH), ন্যাপথালিন (C10H8) প্রভৃতি।
2. জৈব রসায়ন কাকে বলে? একে কার্বনের রসায়ন বলা হয় কেন?
উত্তর – রসায়ন বিজ্ঞানের যে শাখায় জৈব যৌগের গঠন, প্রস্তুতি, ধর্ম, ব্যবহার প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে জৈব রসায়ন বলে। জীবের জীবন-ক্রিয়ায় জৈব যৌগ তথা জৈব রসায়নের গুরুত্ব অপরিসীম।
সমস্ত জৈব যৌগই হল কার্বন-ঘটিত যৌগ অর্থাৎ, জৈব যৌগের অণুতে কার্বন পরমাণু থাকবেই। এই কারণে জৈব রসায়নকে কার্বনের রসায়ন বা কার্বন-ঘটিত যৌগের রসায়ন (chemistry of carbon compounds) বলা হয়।
3. জৈব যৌগের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর –
- উপাদান: জৈব যৌগের অণুতে কার্বন পরমাণু থাকবেই। অধিকাংশ জৈব যৌগের অণুতে কার্বন পরমাণুর পাশাপাশি উপাদান হিসেবে হাইড্রোজেন পরমাণু বর্তমান। আবার, বেশ কিছু ক্ষেত্রে এদের সঙ্গে অক্সিজেন, হ্যালোজেন বা সালফার পরমাণুও উপাদান হিসেবে উপস্থিত থাকে।
- প্ৰকৃতি: জৈব যৌগ মাত্রই সমযোজী যৌগ। এদের অণু ধ্রুবীয় এবং অধ্রুবীয় উভয় প্রকৃতির হয়।
- গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক: জৈব যৌগগুলি সমযোজী হওয়ায় এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক যথেষ্ট কম হয় এবং অনেক জৈব যৌগ উদ্বায়ী হয়।
- দ্রাব্যতা: এরা সাধারণত ধ্রুবীয় দ্রাবকে (যেমন—জল) অদ্রাব্য কিন্তু অধুবীয় দ্রাবকে (যেমন—বেঞ্জিন, ইথার প্রভৃতি) দ্রাব্য [ব্যতিক্রম: অ্যালকোহল, গ্লুকোজ, চিনি প্রভৃতি জৈব যৌগ হলেও জলে দ্রাব্য]।
- তড়িৎ পরিবাহিতা: গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় জৈব যৌগগুলি আয়নে বিয়োজিত হয় না বলে তড়িৎ পরিবহণ করে না, অর্থাৎ এরা তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ [ব্যতিক্রম: জৈব অ্যাসিড]।
- দহনশীলতা: জৈব যৌগগুলির বেশিরভাগই দাহ্য প্রকৃতির।
- সমাবয়বতা: একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট কিন্তু ভিন্ন ধর্মসম্পন্ন একাধিক জৈব যৌগ পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে সমাবয়বতা বা আইসোমেরিজম বলে।
- বিক্রিয়ার হার বা গতিবেগ: জৈব যৌগগুলি সাধারণত ধীর গতিতে বিক্রিয়া করে এবং এদের অধিকাংশ বিক্রিয়াই উভমুখী প্রকৃতির।
- পলিমার গঠন: জৈব যৌগের বহুসংখ্যক অণু নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে পরস্পর সংযোজিত হয়ে উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট বৃহৎ অণু বা পলিমার গঠন করে।
4. বার্জেলিয়াসের প্রাণশক্তি তত্ত্বটি কী ছিল? এই তত্ত্বের অসারতা কীভাবে প্রমাণিত হয়?
উত্তর – 1815 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস জৈব যৌগের উৎস সম্পর্কিত প্রাণশক্তি তত্ত্ব প্রবর্তন করেন। এই তত্ত্ব অনুসারে, উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে উপস্থিত প্রাণশক্তির (vital force) সাহায্য ছাড়া জৈব যৌগগুলিকে পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা সম্ভব নয়।
1828 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ভোলার পরীক্ষাগারে অ্যামোনিয়াম সায়ানেট (অজৈব পদার্থ) থেকে ইউরিয়া (জৈব যৌগ) প্রস্তুত করে প্রমাণ করেন যে প্রাণশক্তির সাহায্য ছাড়াই জৈব যৌগ প্রস্তুত করা সম্ভব। এরপর 1845 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী কোলবে ও 1856 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বার্থেলো যথাক্রমে অ্যাসিটিক অ্যাসিড ও মিথেন প্রস্তুত করেন। এইভাবেই প্রাণশক্তি তত্ত্বের অসারতা প্রমাণিত হয়।
5. (i) সমস্ত জৈব যৌগের মূল উপাদান কার্বন—কে প্রমাণ করেন?
(ii) সমস্ত জৈব যৌগে কার্বন বর্তমান কিন্তু কার্বন-ঘটিত যৌগ মাত্রই জৈব যৌগ নয়—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – (i) বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে প্রমাণ করেন যে, সমস্ত জৈব যৌগের মূল উপাদান কার্বন।
(ii) সমস্ত জৈব যৌগে কার্বন থাকলেও কার্বন-ঘটিত যৌগ মাত্রই জৈব যৌগ নয়। কার্বন ডাইঅক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, ধাতব কার্বনেট, বাইকার্বনেট, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, ধাতব সায়ানাইড ইত্যাদি যৌগগুলিতে কার্বন থাকলেও এগুলিকে জৈব যৌগ বলা যায় না। কারণ, এই সমস্ত যৌগগুলিতে কার্বন পরমাণুর ক্যাটিনেশন ধর্ম, সমাবয়বতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায় না। এই যৌগগুলি অজৈব যৌগ।
6. জৈব যৌগগুলি সাধারণত জলে (ধ্রুবীয় দ্রাবক) দ্রবীভূত হয় না কেন?
উত্তর – জৈব যৌগগুলি সমযোজী বন্ধন দ্বারা গঠিত হওয়ায় এরা সাধারণত আয়নিত হয় না। তাই ধ্রুবীয় দ্রাবক, যেমন জলের অণুগুলির সাথে বেশিরভাগ জৈব যৌগের কোনোরূপ তড়িৎ-আকর্ষণ সৃষ্টি হয় না। ফলে এরা সাধারণত জলে দ্রবীভূত হয় না।
ব্যতিক্রম: অ্যালকোহল, গ্লুকোজ, চিনি, ইউরিয়া প্রভৃতি জৈব যৌগ হলেও খুব সহজেই জলে দ্রবীভূত হয়।
7. জৈব যৌগের দ্রবণ সাধারণত তড়িৎ পরিবহণ করে না কেন?
উত্তর – গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় কোনো পদার্থের বিয়োজনে উৎপন্ন আয়নগুলি তড়িৎ পরিবহণ করে। জৈব যৌগগুলি সমযোজী বন্ধন দ্বারা গঠিত হওয়ায় সাধারণত এরা দ্রবণে আয়নিত হয় না অর্থাৎ ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নে বিয়োজিত হয় না। তাই জৈব যৌগের দ্রবণ সাধারণত তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে না।
ব্যতিক্রম: ফর্মিক অ্যাসিড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড প্রভৃতি জৈব অ্যাসিড জলীয় দ্রবণে আংশিক বিয়োজিত হয়ে আয়ন উৎপন্ন করে। তাই এদের জলীয় দ্রবণ তড়িৎ পরিবহণ করে।
8. জৈব ও অজৈব যৌগের পার্থক্যগুলি লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, জৈব ও অজৈব যৌগের দুটি পার্থক্য লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, জৈব ও অজৈব যৌগের তিনটি ধর্মের তুলনা করো।
উত্তর – জৈব ও অজৈব যৌগের পার্থক্যগুলি নিম্নরূপ—

9. C2H5OH জৈব যৌগ কিন্তু Na2CO3 জৈব যৌগ নয় কেন?
উত্তর – জৈব যৌগ মাত্রই সমযোজী হয় এবং জৈব যৌগে কার্বনের ক্যাটিনেশন, সমাবয়বতা প্রভৃতি ধর্মগুলি দেখা যায়। Na2CO3 একটি তড়িৎযোজী যৌগ। জলীয় দ্রবণে এটি Na+ এবং CO32- আয়নে বিয়োজিত হয়। Na2CO3 যৌগে কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্ম ও সমাবয়বতা ধর্ম দেখা যায় না। তাই এটি একটি অজৈব যৌগ, জৈব যৌগ নয়। অপরপক্ষে, ইথাইল অ্যালকোহল (C2H5OH) যৌগে কার্বনের ক্যাটিনেশন ও সমাবয়বতা ধর্ম দেখা যায় । তাই এটি একটি জৈব যৌগ।
10. কার্বন সমযোজী যৌগ গঠন করে কিন্তু আয়নীয় যৌগ গঠন করে না—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – কার্বন পরমাণুর (6C) ইলেকট্রন-বিন্যাস: K(2)L(4)। ইলেকট্রন-বিন্যাস অনুযায়ী, কার্বন পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষে 4 টি ইলেকট্রন বর্তমান। সুতরাং, নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়নের স্থায়ী ইলেকট্রন-বিন্যাস লাভ করতে হলে C -পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষে আরও 4 টি ইলেকট্রনের প্রয়োজন। আবার, নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়ামের মতো স্থায়ী ইলেকট্রন-বিন্যাস লাভ করতে হলে C-পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষ থেকে 4 টি ইলেকট্রন বর্জন করা প্রয়োজন ৷ কিন্তু কার্বন তীব্র তড়িৎ-ধনাত্মক বা তীব্র তড়িৎঋণাত্মক মৌল নয়। তাই C-পরমাণু সর্ববহিস্থ কক্ষের 4 টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে C4+ আয়নে বা সর্ববহিস্থ কক্ষে 4 টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে C4- আয়নে পরিণত হওয়ার প্রবণতা দেখায় না। এই কারণে কার্বন পরমাণু অন্য পরমাণুর সঙ্গে ইলেকট্রন-জোড় গঠনের মাধ্যমে সমযোজী যৌগ গঠন করে, কিন্তু আয়নীয় যৌগ গঠন করে না।
11. বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ ও লা-বেল-এর কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলটি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উত্তর – 1874 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ এবং লা-বেল কিছু বিশেষ জৈব যৌগের ধর্ম-সংক্রান্ত পরীক্ষালব্ধ ফলাফল ব্যাখ্যা করার জন্য কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলটির প্রস্তাবনা করেন। তাঁদের মতে—
(1) কার্বনের 4 টি যোজ্যতা কখনোই এক সমতলে থাকে না ।
(2) একটি কাল্পনিক সমচতুস্তলকের কেন্দ্রে কার্বন পরমাণু অবস্থান করে এবং ওর 4 টি যোজ্যতা ওই সমচতুস্তলকের চারটি শীর্ষবিন্দুর দিকে প্রসারিত থাকে।
(3) কার্বন পরমাণুর যে-কোনো দুটি যোজ্যতার মধ্যবর্তী কোণের মান 109°28′ |

কার্বন পরমাণুর চারটি যোজ্যতার এরূপ বিন্যাসে বন্ধন গঠনকারী ইলেকট্রন-জোড়গুলি পরস্পরের থেকে সর্বাধিক দূরত্বে অবস্থান করে। ফলে ইলেকট্রন-জোড়গুলির মধ্যে বিকর্ষণ সর্বনিম্ন হয় এবং অণুর গঠন সর্বাধিক সুস্থিত হয়।
12. কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলের সাহায্যে মিথেন অণুর স্থায়িত্ব ব্যাখ্যা করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, কার্বনের যোজ্যতার চতুস্তলকীয় মডেল অনুসারে মিথেন অণুর গঠন ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – মিথেন অণুতে কার্বন পরমাণু চারটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সঙ্গে পৃথক পৃথক চারটি ইলেকট্রন-জোড় গঠন করে । অর্থাৎ এক্ষেত্রে কার্বন পরমাণুটি চারটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সঙ্গে সমযোজী এক বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে। ভ্যান্ট হফ এবং লা-বেল-এর মডেল অনুসারে, একটি কাল্পনিক সমচতুস্তলকের কেন্দ্রে C-পরমাণুটি অবস্থান করে এবং চারটি H -পরমাণু অবস্থান করে চতুস্তলকের চারটি শীর্ষবিন্দুতে। মিথেন অণুর এরূপ গঠনে যে- কোনো দুটি বন্ধনের মধ্যবর্তী কোণের মান হয় 109°28′ এবং প্রতিটি বন্ধনের দৈর্ঘ্য হয় 1.09Å। এরূপ বিন্যাসে সমযোজী বন্ধন গঠনকারী ইলেকট্রন-জোড়গুলি পরস্পর থেকে সর্বাধিক দূরত্বে অবস্থান করে। এই অবস্থায় ইলেকট্রন-জোড়গুলির মধ্যে পরস্পরের প্রতি বিকর্ষণ বল সবচেয়ে কম হয় এবং মিথেন অণু সর্বাধিক স্থায়ী হয়।

13. কার্বন পরমাণুর ক্যাটিনেশন ধর্ম বলতে কী বোঝ?
উত্তর >> বহুসংখ্যক কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী এক-বন্ধন, দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন গঠনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ও আকৃতির সুস্থিত শৃঙ্খল (chain) বা বলয় (ring) গঠন করতে পারে। কার্বন পরমাণুসমূহের নিজেদের মধ্যে যুক্ত হয়ে শৃঙ্খল গঠনের এই বিশেষ ধর্মকে ক্যাটিনেশন (catenation) বা স্বশৃঙ্খলায়ন ধর্ম বলে। কার্বন পরমাণুর ক্যাটিনেশন ধর্মের জন্যই প্রকৃতিতে বিপুল সংখ্যক জৈব যৌগ পাওয়া যায়।
14. কার্বন পরমাণু ক্যাটিনেশন ধর্ম প্রদর্শনে সক্ষম কেন?
উত্তর – কার্বন পরমাণুর ছোটো আকার ও মধ্যম মানের তড়িৎ-ঋণাত্মকতার জন্য কার্বন-কার্বন সমযোজী বন্ধন খুবই দৃঢ় ও শক্তিশালী তথা স্থিতিশীল হয়। স্বভাবতই C -পরমাণুগুলি পরস্পর সমযোজী এক বন্ধন, দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের স্থিতিশীল শৃঙ্খল বা বলয় গঠন করতে পারে। সুতরাং, কার্বন-কার্বন সমযোজী বন্ধনের স্থায়িত্ব বা স্থিতিশীলতার জন্যই কার্বন পরমাণু ক্যাটিনেশন ধর্ম প্রদর্শনে সক্ষম হয়।
15. ক্যাটিনেশন ধর্মের জন্য কার্বন পরমাণু কত ধরনের কার্বন শৃঙ্খল গঠন করতে পারে?
উত্তর – ক্যাটিনেশনের ফলে কার্বন পরমাণু দু-ধরনের কার্বন শৃঙ্খল গঠন করে, যথা— (1) মুক্তশৃঙ্খল ও (2) বদ্ধশৃঙ্খল। মুক্তশৃঙ্খল আবার দু-ধরনের হয়, যথা—(i) শাখাহীন বা সরল মুক্তশৃঙ্খল ও (ii) শাখাযুক্ত মুক্তশৃঙ্খল। মুক্তশৃঙ্খল বা বদ্ধশৃঙ্খলে আবদ্ধ C -পরমাণুগুলির অবশিষ্ট যোজ্যতা অন্য কোনো মৌল বা মূলক দ্বারা পূর্ণ হয়ে অসংখ্য কার্বন-ঘটিত যৌগ তথা জৈব যৌগের সৃষ্টি হয়।


16. সম্পৃক্ত যৌগ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – যেসব জৈব যৌগের অণুর গঠনে সবকটি কার্বন পরমাণুই নিজেদের মধ্যে সমযোজী এক-বন্ধনে যুক্ত থাকে, তাদেরকে সম্পৃক্ত যৌগ বলা হয়।

ইথাইল অ্যালকোহল (C2H5OH) প্রোপাইল অ্যালকোহল (C3H7OH)
17. অসম্পৃক্ত যৌগ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – যেসব জৈব যৌগের অণুতে অন্তত দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে, তাদের অসম্পৃক্ত যৌগ বলে।

18. হাইড্রোকার্বন কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো। গঠন অনুসারে মুক্তশৃঙ্খল-বিশিষ্ট হাইড্রোকার্বন কয় প্রকার ও কী কী? প্রতিক্ষেত্রে উদাহরণ দাও।
উত্তর – কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত দ্বি-মৌল জৈব যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলে। যেমন—মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6), ইথিলিন (C2H4), অ্যাসিটিলিন (C2H2) প্রভৃতি।
গঠন অনুসারে মুক্তশৃঙ্খল-বিশিষ্ট হাইড্রোকার্বন দুই প্রকার— সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের উদাহরণ হল ইথেন (C2H6) ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের উদাহরণ হল ইথিলিন (C2H4)।
19. সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বা অ্যালকেন বা প্যারাফিন কী?
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যালকেন কাকে বলে? এর সাধারণ সংকেত কী?
উত্তর – যে সব হাইড্রোকার্বন যৌগে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পরের সাথে সমযোজী এক-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে, তাদের সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বা অ্যালকেন বলে। রাসায়নিক সক্রিয়তা খুব কম হওয়ায় এদের প্যারাফিন (paraffin) -ও বলা হয়। মুক্তশৃঙ্খল অ্যালকেনসমূহের সাধারণ সংকেত CnH2n+2 , যেখানে n = কার্বন পরমাণুর সংখ্যা (1, 2, 3, … ইত্যাদি যে-কোনো পূর্ণসংখ্যা)।
উদাহরণ: মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6), প্রোপেন (C3H8) ইত্যাদি।
20. অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন কাকে বলে? এটি কয় প্রকার এবং কী কী?
উত্তর – যেসব হাইড্রোকার্বন যৌগের অণুতে কমপক্ষে দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে, তাদের অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলে। এরা রাসায়নিকভাবে খুব সক্রিয় হয়।
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন দুই প্রকারের, যথা—অ্যালকিন ও অ্যালকাইন। দ্বি-বন্ধনযুক্ত অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনগুলিকে অ্যালকিন বলে, যেমন— ইথিলিন (H2C=CH2)। অপরদিকে, ত্রি-বন্ধনযুক্ত হাইড্রোকার্বনগুলিকে অ্যালকাইন বলা হয়, যেমন—অ্যাসিটিলিন (HC≡CH)।
21. অ্যালকিন বা অলিফিন কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যালকিন কাকে বলে? এর সাধারণ সংকেত লেখো।
উত্তর – যেসব অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনে অন্তত একটি কার্বন-কার্বন সমযোজী দ্বি-বন্ধন থাকে তাদের অ্যালকিন বা অলিফিন বলে। অ্যালকিনের সাধারণ সংকেত CnH2n , যেখানে n = কার্বন পরমাণুর সংখ্যা (2, 3, 4, … ইত্যাদি যে-কোনো পূর্ণসংখ্যা)।
উদাহরণ: ইথিলিন (H2C=CH2),
প্রোপিলিন (H3C—CH=CH2) ইত্যাদি।
22. অ্যালকাইন কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যালকাইন কাকে বলে? এর সাধারণ সংকেত কী?
উত্তর – যেসব অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনে অন্তত একটি কার্বন-কার্বন সমযোজী ত্রি-বন্ধন থাকে তাদের অ্যালকাইন বলে। অ্যালকাইনের সাধারণ সংকেত CnH2n-2 , যেখানে n = কার্বন পরমাণুর সংখ্যা (2, 3, 4, …. ইত্যাদি যে-কোনো পূর্ণসংখ্যা)।
উদাহরণ: অ্যাসিটিলিন (HC≡CH), প্রোপাইন (H3C—C≡CH), 1 বিউটাইন (H3C—CH2—C≡CH) ইত্যাদি।
23. সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের পার্থক্য লেখো।
অনুরুপ প্রশ্ন. অ্যালকেন ও অ্যালকাইনের দুটি পার্থক্য লেখো।
অনুরুপ প্রশ্ন: আলকেন ও অ্যালকিনের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর – সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের পার্থক্যগুলি হল—

24. C2H6 -কে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলা হয় কিন্তু C2H4 -কে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলা হয় কেন?
উত্তর – C2H6 (ইথেন) যৌগের অণুতে সবকটি কার্বন পরমাণু সমযোজী এক-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকায় এটি একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। অন্যদিকে, C2H4 (ইথিলিন) যৌগের অণুতে পাশাপাশি অবস্থিত দুটি কার্বন পরমাণু সমযোজী দ্বি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে বলে ইথিলিন হল একটি অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
25. ইথেনের আণবিক গঠনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, ইথেনের গঠন-সংকেতের সাহায্যে দেখাও যে, এটি একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
উত্তর – ইথেন (C2H6) অণুতে 2টি কার্বন পরমাণু নিজেদের মধ্যে একটি ইলেকট্রন-জোড় সমভাবে ব্যবহার করে কার্বন-কার্বন এক বন্ধন গঠন করে। আবার প্রতিটি কার্বন পরমাণু 3 টি H-পরমাণুর সঙ্গে পৃথক পৃথক 3টি ইলেকট্রন-জোড় গঠন করে। এভাবে প্রতিটি কার্বন পরমাণু 3 টি করে কার্বন-হাইড্রোজেন এক-বন্ধন গঠন করার মাধ্যমে নিজের অবশিষ্ট 3 টি যোজ্যতা পূরণ করে।
এক্ষেত্রে প্রতিটি কার্বন পরমাণুর চারটি যোজ্যতা চতুস্তলকীয় মডেল অনুযায়ী বিন্যস্ত থাকে। ইথেন অণুতে কার্বন পরমাণু দুটি সমযোজী এক-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকায় এটি একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।

26. ইথিলিনের আণবিক গঠনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, ইথিলিনের গঠন-সংকেতের সাহায্যে দেখাও যে, এটি একটি অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
উত্তর – ইথিলিন (C2H4) অণুতে দুটি কার্বন পরমাণু নিজেদের মধ্যে দুটি ইলেকট্রন-জোড় সমভাবে ব্যবহার করে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন গঠন করে এবং এভাবে প্রতিটি কার্বন পরমাণুর 2টি করে যোজ্যতা পুরণ হয়। প্রতিটি কার্বন পরমাণু বাকি 2 টি যোজ্যতা পূর্তির জন্য 2 টি H পরমাণুর সঙ্গে পৃথকভাবে দুটি এক বন্ধন গঠন করে। এভাবে উৎপন্ন অণুটির সমস্ত পরমাণুগুলিই একই সমতলে অবস্থান করে। ইথিলিন অণুতে কার্বন পরমাণু দুটি সমযোজী দ্বি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকায় এটি একটি অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।

27. অ্যাসিটিলিনের আণবিক গঠনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যাসিটিলিনের গঠন-সংকেতের সাহায্যে দেখাও যে, এটি একটি অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
উত্তর – অ্যাসিটিলিন (C2H2) অণুতে দুটি কার্বন পরমাণু নিজেদের মধ্যে তিনটি ইলেকট্রন-জোড় সমভাবে ব্যবহার করে কার্বন-কার্বন ত্রি-বন্ধন গঠন করে এবং এভাবে প্রতিটি কার্বন পরমাণুর 3টি করে যোজ্যতা পরিপৃক্ত হয়। বাকি 1 টি করে যোজ্যতা পূর্তির জন্য প্রতিটি কার্বন পরমাণু 1 টি H -পরমাণুর সঙ্গে এক-বন্ধন গঠন করে। এভাবে উৎপন্ন অণুটির সমস্ত পরমাণুগুলি একই সরলরেখায় অবস্থান করে। অ্যাসিটিলিন অণুতে কার্বন পরমাণু দুটি সমযোজী ত্রি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকায় এটি একটি অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।

28. কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক (functional group) কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর – যেসব মূলক বা গ্রুপ জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত থেকে যৌগগুলির প্রকৃতি ও ধর্ম নির্ধারণ করে, তাদের কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল মূলক বলে।
একই কার্যকরী মূলকযুক্ত যৌগগুলি সমধর্মী ও ভিন্ন কার্যকরী মূলকযুক্ত যৌগগুলি ভিন্নধর্মী হয়। অণুতে উপস্থিত কার্যকরী মূলকের ভিত্তিতে জৈব যৌগগুলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যেমন—অ্যালকোহল, অ্যালডিহাইড, কার্বক্সিলিক অ্যাসিড, ইথার প্রভৃতি।
অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগে কার্যকরী মূলক হিসেবে হাইড্রক্সিল গ্রুপ (—OH) থাকে।
29. অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন দেখাও। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত কয়েকটি যৌগের উদাহরণ দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, প্রদত্ত যৌগ দুটিতে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপের সংকেত লেখো: মিথাইল অ্যালকোহল ইথাইল অ্যালকোহল
উত্তর – অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম হাইড্রক্সিল এবং এর গঠন – O—H বা —OH ।
–OH কার্যকরী মূলকযুক্ত কয়েকটি যৌগ হল মিথাইল অ্যালকোহল (CH3OH), ইথাইল অ্যালকোহল (C2H5OH), প্রোপাইল অ্যালকোহল (CH3CH2CH2OH)।
30. অ্যালডিহাইড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির নাম ও গঠন লেখো। এই কার্যকরী মূলকযুক্ত কয়েকটি যৌগের উদাহরণ দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যাসিট্যালডিহাইড যৌগে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপের সংকেত লেখো।
উত্তর – অ্যালডিহাইড শ্রেণির যৌগে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটি হল অ্যালডিহাইড (—CHO) 
অ্যালডিহাইড কার্যকরী মূলকযুক্ত কয়েকটি যৌগ হল ফর্মালডিহাইড (HCHO), অ্যাসিট্যালডিহাইড (CH3CHO), প্রোপিওন্যালডিহাইড (CH3CH2CHO) প্রভৃতি।
31. একই সমগণীয় শ্রেণির সদস্যরা রাসায়নিক ধর্মে অভিন্ন হলেও এদের ভৌত ধর্মে পার্থক্য দেখা যায় কেন?
উত্তর – জৈব যৌগের রাসায়নিক ধর্ম ওর অণুতে উপস্থিত কার্যকরী মূলকের ওপর নির্ভর করে। একই সমগণীয় শ্রেণির সদস্যদের ক্ষেত্রে একই কার্যকরী মূলকের উপস্থিতির জন্য এদের রাসায়নিক ধর্মে সাদৃশ্য দেখা যায়। উপর নির্ভরশীল এমন সব ভৌত, ধর্মগুলি (যেমন—গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, কিন্তু, সমগণীয় শ্রেণির সদস্যদের আণবিক ভর পৃথক হওয়ায় আণবিক ভরের ঘনত্ব ইত্যাদি) এদের ক্ষেত্রে পৃথক হয়।
32. সমগণীয় শ্রেণির বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – (1) একই সমগণীয় শ্রেণির সব সদস্য একই উপাদান মৌল দ্বারা গঠিত। (2) একই সাধারণ সংকেতের সাহায্যে একটি সমগণীয় শ্রেণির সকল সদস্যকে প্রকাশ করা যায়। (3) কোনো সমগণীয় শ্রেণির সদস্যগুলিকে ক্রমবর্ধমান আণবিক ভর অনুসারে সাজালে পরপর দুটি সদস্যের মধ্যে আণবিক সংকেতের পার্থক্য হয় CH2 ও আণবিক ভরের ব্যবধান হয় 14 একক। (4) যে-কোনো সমগণীয় শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত যৌগগুলিতে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপ একই হওয়ায় এদের রাসায়নিক ধর্মে সাদৃশ্য দেখা যায়। (5) আণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে সাথে একই সমগণীয় শ্রেণির যৌগগুলির ভৌত ধর্ম, যেমন—গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, ঘনত্ব ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়, কিন্তু দ্রাব্যতা ও উদ্দ্বায়িতা হ্রাস পায়। (6) একই সমগণীয় শ্রেণির প্রতিটি সদস্যকে একটি সাধারণ পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা যায়।
33. সমগণীয় শ্রেণির গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর – জৈব যৌগগুলিকে বিভিন্ন সমগণীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করায় জৈব রসায়নের পাঠ অনেক সহজ হয়েছে। কোনো সমগণীয় শ্রেণির অন্তর্গত যে-কোনো একটি সদস্যের প্রস্তুত প্রণালী ও সাধারণ ধর্মসমূহ জানা থাকলে ওই শ্রেণির অন্যান্য সদস্যের প্রস্তুত প্রণালী এবং ধর্ম সহজেই অনুমান করা যায়। তাই অসংখ্য জৈব যৌগকে কয়েকটি সমগণীয় শ্রেণিতে ভাগ করে প্রত্যেক সমগণীয় শ্রেণির একটি প্রতিনিধি-স্থানীয় যৌগের প্রস্তুতপ্রণালী, ধর্ম ও বিক্রিয়ার আলোচনা দ্বারা সমগ্র শ্রেণিটির সম্পর্কে একটি সামগ্রিক ধারণা লাভ করা যায়।
34. জৈব যৌগসমূহের নামকরণের IUPAC পদ্ধতি বলতে কী বোঝ? IUPAC নামকরণের প্রয়োজনীয়তা বা তাৎপর্য লেখো।
উত্তর – 1969 সালে বিশুদ্ধ ও ফলিত রসায়নের আন্তর্জাতিক সংস্থা IUPAC (International Union of Pure and Applied Chemistry) বিপুল সংখ্যক জৈব যৌগের নামকরণের সুশৃঙ্খল ও বিজ্ঞানসম্মত একটি পদ্ধতির প্রস্তাব করেন। এটিই জৈব যৌগসমূহের নামকরণের IUPAC পদ্ধতি নামে পরিচিত।
জৈব রসায়ন চর্চার প্রথমদিকে আবিষ্কৃত জৈব যৌগের সংখ্যা অনেক কম ছিল। তখন প্রধানত যৌগগুলির উৎস, স্বাদ ও আরও কিছু ধর্মের ওপর ভিত্তি করে যৌগগুলির নামকরণ করা হত। যেমন—লাল পিঁপড়ে (লাতিন নাম ফরমিকা) থেকে যে অ্যাসিড পাওয়া যায় সেটি ফর্মিক অ্যাসিড, মূত্র থেকে প্রাপ্ত যৌগ ইউরিয়া ইত্যাদি। কিন্তু জৈব যৌগের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে উৎস ও ধর্মের ওপর ভিত্তি করে এদের নাম ও গঠন-সংকেত মনে রাখা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশুদ্ধ ও ফলিত রসায়নবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জৈব যৌগসমূহের নামকরণের জন্য IUPAC পদ্ধতি রচিত হয়। এর ফলে সহজে ও স্বতন্ত্রভাবে যে-কোনো জৈব যৌগের নামকরণ করা যায় এবং যৌগটির গঠন, প্রকৃতি ও ধর্ম সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. অধিকাংশ জৈব যৌগের মূল উপাদান মৌল দুটি হল —
(a) C,O
(b) C,N
(c) C, P
(d) C, H
উত্তর – (d) C, H
2. যে অজৈব যৌগ থেকে প্রথম জৈব যৌগ কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়—
(a) অ্যামোনিয়াম ফসফেট
(b) অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড
(c) অ্যামোনিয়াম সায়ানেট
(d) অ্যামোনিয়াম সালফেট
উত্তর – (c) অ্যামোনিয়াম সায়ানেট
3. কোন্টি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন নয়?
(a) CH4
(b) C2H6
(c) C2H4
(d) C3H8
উত্তর – (c) C2H4
4. কৃত্রিম উপায়ে তৈরি প্রথম জৈব যৌগটি হল—
(a) বেঞ্জিন
(b) ইউরিয়া
(c) মিথেন
(d) ল্যাকটিক অ্যাসিড
উত্তর – (b) ইউরিয়া
5. কার্বন যে সমস্ত জৈব যৌগের মূল উপাদান তা প্রমাণ করেন—
(a) ল্যাভয়সিয়ে
(b) লেমেরি
(c) কোল্বে
(d) ভোলার
উত্তর – (a) ল্যাভয়সিয়ে
6. প্যারাফিন কার অপর নাম?
(a) অ্যালকিন
(b) অ্যালকাইন
(c) অ্যালকেন
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) অ্যালকেন
7. সরলতম অ্যালকিন যৌগটির সংকেত—
(a) C2H2
(b) C2H4
(c) C2H6
(d) CH4
উত্তর – (b) C2H4
৪. প্রদত্ত কোন্টি একটি সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন?
(a) C3H4
(b) C2H4
(c) C2H2
(d) C2H6
উত্তর – (d) C2H6
9. হাইড্রোকার্বন সম্পর্কে কোন্ দুটি তথ্য সঠিক? (1) এগুলি দাহ্য (2) এগুলি জৈব দ্রাবকে দ্রাব্য (3) এগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক উচ্চ—
(a) (1) এবং (2)
(b) (2) এবং (3)
(c) (1) এবং (3)
(d) কোনোটিই সঠিক নয়
উত্তর – (a) (1) এবং (2)
10. নীচের কোন্ দ্রাবকে জৈব যৌগ সাধারণত দ্রবীভূত হয় না?
(a) বেঞ্জিন
(b) ক্লোরোফর্ম
(c) অ্যালকোহল
(d) জল
উত্তর – (d) জল
11. সমযোজী ত্রি-বন্ধনযুক্ত যৌগ হল—
(a) ইথেন
(b) অ্যাসিটিলিন
(c) ইথিলিন
(d) মিথেন
উত্তর – (b) অ্যাসিটিলিন
12. কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলের প্রস্তাবনা করেন—
(a) বার্জেলিয়াস এবং লেমেরি
(b) কোল্বে এবং বার্থেলো
(c) ভোলার এবং রাদারফোর্ড
(d) ভ্যান্ট হফ এবং লা-বেল
উত্তর – (d) ভ্যান্ট হফ এবং লা-বেল
13. প্রদত্ত কোন্ জোড়টি পরস্পর সমাবয়ব?
(a) মিথাইল অ্যালকোহল ও ইথাইল অ্যালকোহল
(b)ডাইমিথাইল ইথার ও ইথাইল অ্যালকোহল
(c) অ্যাসিট্যালডিহাইড ও অ্যাসিটোন
(d) ফর্মিক অ্যাসিড ও মিথাইল অ্যালকোহল
উত্তর – (b)ডাইমিথাইল ইথার ও ইথাইল অ্যালকোহল
14. তিনটি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকিন যৌগে H -পরমাণুর সংখ্যা—
(a) 8
(b) 4
(c) 6
(d) 10
উত্তর – (c) 6
15. যে হাইড্রোকার্বনে সবকটি কার্বন পরমাণু সমযোজী এক-বন্ধন দ্বারা যুক্ত, তাদের বলা হয়—
(a) অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন
(b) অতিপৃক্ত হাইড্রোকার্বন
(c) সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন
(d) অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন
উত্তর – (c) সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন
16. প্রদত্ত যৌগগুলির মধ্যে কোন্টি অসম্পৃক্ত?
(a) C3H8
(b) C3H4
(c) C2H5OH
(d) C2H6
উত্তর – (b) C3H4
17. প্রদত্ত কোন্টি জৈব যৌগ?
(a) CO(NH2)2
(b) NaHCO3
(c) CO2
(d) NH4SCN
উত্তর – (a) CO(NH2)2
18. একটিমাত্র পরমাণু দ্বারা গঠিত কার্যকরী মূলক হল—
(a) হাইড্রক্সিল
(b) ইথার
(c) কিটো
(d) অ্যামিনো
উত্তর – (b) ইথার
19. C4H10 যৌগটিতে উপস্থিত সমযোজী বন্ধনের সংখ্যা কত?
(a) 13
(b) 9
(c) 8
(d) 12
উত্তর – (a) 13
20. প্রোপান-1 –অল ও প্রোপান-2 -অলের মধ্যে কী ধরনের সমাবয়বতা দেখা যায়?
(a) শৃঙ্খলঘটিত
(b) অবস্থানঘটিত
(c) কার্যকরী মূলকঘটিত
(d) ত্রিমাত্রিকঘটিত
উত্তর – (b) অবস্থানঘটিত
21. কোন্টির গঠন সরলরৈখিক?
(a) C2H6
(b) C2H4
(c) C2H2
(d) সবগুলিরই
উত্তর – (c) C2H2
22. ইথান্যাল-এর সংকেত হল—
(a) C2H5OH
(b) CH3CHO
(c) CH3COOH
(d) C2H5COOH
উত্তর – (b) CH3CHO
23. সরলতম অ্যালকেন হল—
(a) মিথেন
(b) ইথেন
(c) প্রোপেন
(d) বিউটেন
উত্তর – (a) মিথেন
24. আণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে সাথে কোনো সমগণীয় শ্রেণির সদস্যদের রাসায়নিক সক্রিয়তা—
(a) বাড়ে
(b) কমে
(c) একই থাকে
(d) কখনো বাড়ে ও কখনো কমে
উত্তর – (b) কমে
25. সমগণীয় শ্রেণির পরপর দুটি যৌগের মধ্যে আণবিক ভরের পার্থক্য হয় —
(a) 10
(b) 12
(c) 14
(d) 16
উত্তর – (c) 14
26. ইথাইল অ্যালকোহল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পর—
(a) অবস্থানঘটিত সমাবয়ব
(b) শৃঙ্খলঘটিত সমাবয়ব
(c) কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়ব
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়ব
27. একটি হাইড্রোকার্বন যার আণবিক ভর 42, সেটি হল –
(a) একটি অ্যালকেন
(b) একটি অ্যালকিন
(c) একটি অ্যালকাইন
(d) এগুলির কোনোটিই নয়
উত্তর – (b) একটি অ্যালকিন
28. অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগের শ্রেণি প্রত্যয় —
(a) অ্যাল (al)
(b) অল (ol)
(c) ওন (one)
(d) এন (ane)
উত্তর – (b) অল (ol)
29. দ্বি-বন্ধনযুক্ত হাইড্রোকার্বনের শ্রেণি প্রত্যয়—
(a) এন (ane)
(b) ইন (ene)
(c) আইন (yne)
(d) ওন (one)
উত্তর – (b) ইন (ene)
30. কোন্ সংকেত দ্বারা দুটি অ্যালকিল গ্রুপের গঠন প্রকাশ করা যায়?
(a) C3H7
(b) CH2
(c) C2H5
(d) CH3
উত্তর – (a) C3H7
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. অ্যামোনিয়াম সায়ানেট-এর জলীয় দ্রবণকে উত্তপ্ত করে বাষ্পীভূত করলে কোন্ জৈব যৌগ উৎপন্ন হয়?
অনুরূপ প্রশ্ন, কোন্ অজৈব যৌগ থেকে সর্বপ্রথম পরীক্ষাগারে ইউরিয়া প্রস্তুত করা হয়?
উত্তর – অ্যামোনিয়াম সায়ানেট (অজৈব যৌগ)-এর জলীয় দ্রবণকে উত্তপ্ত করে বাষ্পীভূত করা হলে ইউরিয়া (জৈব যৌগ) উৎপন্ন হয়।

2. জৈব যৌগগুলিতে কী ধরনের রাসায়নিক বন্ধন বর্তমান?
অনুরূপ প্রশ্ন, বেশিরভাগ জৈব যৌগের প্রকৃতি কীরূপ হয়?
উত্তর – জৈব যৌগগুলিতে সমযোজী বন্ধন বর্তমান, অর্থাৎ জৈব যৌগগুলি সমযোজী প্রকৃতির।
3. নীচের যৌগগুলির মধ্যে কোন্ কোন্টি জৈব যৌগ?
NaHCO3 , CH4 , CO2 , CHCl3 , CaC2
উত্তর – প্রদত্ত যৌগগুলির মধ্যে CH4 ও CHCl3 হল জৈব যৌগ।
4. একটি জীবজ অণুর উদাহরণ দাও।
উত্তর – একটি জীবজ অণু হল গ্লুকোজ।
5. কয়েকটি জৈব দ্রাবকের উদাহরণ দাও।
উত্তর – বেঞ্জিন, ক্লোরোফর্ম, অ্যাসিটোন, অ্যালকোহল ইত্যাদি।
6. একটি জৈব যৌগের নাম লেখো যার জলীয় দ্রবণ মৃদু তড়িবিশ্লেষ্য।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিড
7. দুটি জৈব যৌগের উদাহরণ দাও যা যে-কোনো অনুপাতেই জলে দ্রবীভূত হয়।
উত্তর – ইথাইল অ্যালকোহল, মিথাইল অ্যালকোহল
8. C4H8 আণবিক সংকেতবিশিষ্ট জৈব যৌগটি সম্পৃক্ত না অসম্পৃক্ত?
উত্তর – C4H8 (CnH2n , যেখানে n = 4 ) আণবিক সংকেতবিশিষ্ট জৈব যৌগটি অসম্পৃক্ত।
9. রাসায়নিক সক্রিয়তা খুব কম হওয়ার জন্য অ্যালকেনগুলিকে কী নামে অভিহিত করা হয়?
উত্তর – প্যারাফিন
10. 4টি কার্বনযুক্ত অ্যালকেনে কয়টি H-পরমাণু থাকে?
উত্তর – 4টি কার্বনযুক্ত অ্যালকেনে (C4H10) 10টি H -পরমাণু থাকে।
11. তিনটি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকাইনে উপস্থিত H -পরমাণুর সংখ্যা কত?
অনুরূপ প্রশ্ন, তিনটি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকাইনের সংকেত লেখো।
উত্তর – তিনটি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকাইনের সংকেত হল CH3—C≡CH (বা C3H4, প্রোপাইন), এতে 4টি H -পরমাণু বর্তমান।
12. সরলতম অ্যালকাইন কী?
অনুরূপ প্রশ্ন, দুটি H -পরমাণুযুক্ত একটি হাইড্রোকার্বনের গঠন লেখো।
উত্তর – ইথাইন (H—C≡C—H)
13. সরলতম অ্যালকাইনটিতে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা কত?
উত্তর – সরলতম অ্যালকাইন C2H2 -তে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা 2 ।
14. অ্যাসিটিলিন কী ধরনের হাইড্রোকার্বন ?
উত্তর – অ্যাসিটিলিন অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
15. মিথেন অণুর জ্যামিতিক আকার কীরূপ?
উত্তর – মিথেন অণুর জ্যামিতিক আকার সমচতুস্তলকীয়।
16. CH4 যৌগে কটি এক-বন্ধন আছে?
উত্তর – CH4 যৌগে 4 টি C—H এক-বন্ধন আছে।
17. মিথেন অণুতে H—C—H বন্ধন-কোণের মান কত?
উত্তর – মিথেন অণুতে H—C—H বন্ধন-কোণের মান 109°28’।
18. C2H4 অণুতে দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে কয়টি সমযোজী বন্ধন গঠন করেছে?
উত্তর – 2 টি
19. ইথিলিন অণুতে বন্ধন-কোণের মান কত?
উত্তর – ইথিলিন অণুতে বন্ধন-কোণের মান 120° ।
20. C2H2 অণুতে দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে কয়টি সমযোজী বন্ধন গঠন করেছে?
উত্তর – 3 টি
21. অ্যাসিটিলিন অণুতে বন্ধন-কোণের মান কত?
উত্তর – অ্যাসিটিলিন অণুতে বন্ধন-কোণের মান 180° |
22. ইথিলিন ও অ্যাসিটিলিনকে তাদের বন্ধন-কোণ বৃদ্ধির ক্রমানুসারে সাজাও।
উত্তর – ইথিলিন (120°) <অ্যাসিটিলিন (180°)
23. ইথাইল অ্যালকোহলের কার্যকরী মলুকের নাম লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যালকোহলের কার্যকরী মূলকের নাম লেখো।
উত্তর – অ্যালকোহলের কার্যকরী মূলকের নাম হাইড্রক্সিল (—OH)।
24. কার্বনবিহীন একটি কার্যকরী মূলকের উদাহরণ দাও।
উত্তর – কার্বনবিহীন একটি কার্যকরী মূলক হল হাইড্রক্সিল (—OH)।
25. সরলতম অ্যালডিহাইডটির নাম ও সংকেত লেখো।
উত্তর – সরলতম অ্যালডিহাইডটির নাম ফর্মালডিহাইড (মিথান্যাল) এবং এর সংকেত HCHO |
26. কার্বক্সিল মূলকের সংকেত কী?
উত্তর – কার্বক্সিল মূলকের সংকেত হল —COOH |
27. —COOH গ্রুপযুক্ত যৌগের শ্রেণিগত নাম কী?
উত্তর – কার্বক্সিলিক অ্যাসিড
28. —COOH কার্যকরী মূলকযুক্ত একটি জৈব যৌগের নাম লেখো।
উত্তর – ইথানোয়িক অ্যাসিড (CH3COOH)
29. প্রোপানোন ও প্রোপান্যালের মধ্যে কী ধরনের সমাবয়বতা দেখা যায়?
উত্তর – কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বতা
30. অ্যালকেন সমগণীয় শ্রেণির কোন্ সদস্যটি প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান?
উত্তর – অ্যালকেন সমগণীয় শ্রেণির প্রথম সদস্য মিথেন (CH4) হল প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান।
36. মিথেনের পরবর্তী উচ্চতর সমগণ দুটির সংকেত লেখো।
উত্তর – C2H6 (ইথেন) ও C3H8 ( প্রোপেন)
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. প্রকৃতিজাত পদার্থগুলিকে উৎস অনুসারে উদ্ভিজ্জ, প্রাণীজ ও খনিজ এই তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেন বিজ্ঞানী ………।
উত্তর – লেমেরি
2. বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াসের মতানুসারে, উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে উপস্থিত ………. সাহায্য ছাড়া জৈব যৌগগুলিকে পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করা সম্ভব নয়।
উত্তর – প্রাণশক্তির
3. বার্জেলিয়াসের প্রাণশক্তি তত্ত্বের অসারতা প্রথম প্রমাণ করেন বিজ্ঞানী ………।
উত্তর – ভোলার
4. বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করেন যে, জৈব যৌগসমূহে মূল উপাদান হিসেবে …….. বর্তমান।
উত্তর – কার্বন
5. অধিকাংশ জৈব যৌগে ………. ও ………. থাকায় এগুলি দাহ্য প্রকৃতির হয়।
উত্তর – কার্বন, হাইড্রোজেন
6. ……… বন্ধন দ্বারা গঠিত হওয়ায় জৈব যৌগগুলির উদ্দ্বায়িতা সাধারণত ……… হয়।
উত্তর – সমযোজী, বেশি
7. গলিত বা উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত অবস্থায় জৈব যৌগগুলি সাধারণত ……….. হয় না।
উত্তর – আয়নিত
৪. জৈব যৌগগুলি সাধারণত জলে ……….।
উত্তর – অদ্রাব্য
9. কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলে কার্বনের 4 টি যোজ্যতা কখনোই একই ……… থাকে না।
উত্তর – সমতলে
10. কার্বনের যোজ্যতার সমচতুস্তলকীয় মডেলে কার্বন পরমাণুটি কাল্পনিক সমচতুস্তলকের ……… ও 4 টি যোজ্যতা ওই চতুস্তলকের 4 টি ……… দিকে প্রসারিত।
উত্তর – কেন্দ্রে, শীর্ষবিন্দুর
11. ……….. ও ………. ধর্মই বহুসংখ্যক কার্বন-ঘটিত জৈব যৌগের উৎপত্তির কারণ।
উত্তর – ক্যাটিনেশন, সমাবয়বতা
12. ক্যাটিনেশনের ফলে কার্বন পরমাণুর যে দু-রকম শৃঙ্খল তৈরি হতে পারে সেগুলি হল ……….. ও ……….।
উত্তর – মুক্তশৃঙ্খল, বদ্ধশৃঙ্খল
13. সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনগুলির রাসায়নিক সক্রিয়তা খুব ……… হলেও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনগুলির রাসায়নিক সক্রিয়তা খুব ……….।
উত্তর – কম, বেশি
14. ইথিলিন এবং অ্যাসিটিলিন উভয়েই ………. যৌগ কিন্তু ইথেন ……… যৌগ।
উত্তর – অসম্পৃক্ত, সম্পৃক্ত
15. ইথেন অণুর গঠনাকৃতি ……….।
উত্তর – চতুস্তলকীয়
16. মিথেনে C -পরমাণুর 4 টি যোজ্যতারই ……….. দ্বারা পূর্তি ঘটে।
উত্তর – এক-বন্ধন
17. অ্যাসিটিলিন অণুতে 2টি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে ………. দ্বারা যুক্ত থাকে।
উত্তর – ত্রি-বন্ধন
18. ইথিলিন ও অ্যাসিটিলিন অণুর গঠনাকৃতি যথাক্রমে ……….. ও ……….।
উত্তর – সমতলীয়, সরলরৈখিক
19. সম্পৃক্ত বা অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের ………… বোঝাতে শ্রেণি-প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।
উত্তর – শ্রেণি পরিচয়
20. মিথাইল অ্যালকোহলে উপস্থিত কার্যকরী মূলকটির সংকেত ……….।
উত্তর – —OH
TOPIC – B মিথেন, ইথিলিন, অ্যাসিটিলিন, LPG ও CNG
সংক্ষিপ্ত। দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. মিথেন (CH4) -এর শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – (1) সংশ্লেষণ পদ্ধতিতে কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) বা কার্বন মনোক্সাইড (CO) ও হাইড্রোজেনের মিশ্রণকে 250-400°C তাপমাত্রায় নিকেল চূর্ণের ওপর দিয়ে চালনা করে মিথেন প্রস্তুত করা হয়।

(2) পেট্রোলিয়াম খনি থেকে নির্গত প্রাকৃতিক গ্যাসে প্রচুর পরিমাণে (40-90%) মিথেন থাকে। (3) কোলগ্যাসে আয়তন হিসেবে 40% মিথেন থাকে। (4) কয়লাখনিতে প্রাপ্ত গ্যাসে সামান্য মিথেন পাওয়া যায়।
2. মিথেনের প্রধান প্রধান ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – (1) উচ্চ উয়তায় (1000°C) মিথেনের তাপীয় বিয়োজনে কার্বন ব্ল্যাক উৎপন্ন হয় যা টাইপ মেশিনের ফিতে, ছাপাখানা ও জুতোর কালি প্রস্তুতিতে এবং গাড়ির টায়ার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। (2) বিভিন্ন প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ, যেমন—মিথাইল ক্লোরাইড, অ্যাসিটিলিন, মিথিলিন ক্লোরাইড ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইড প্রস্তুতিতে মিথেন ব্যবহৃত হয়। (3) মিথেন জ্বালানিরূপে, ব্যবহৃত হয়, কারণ এর তাপনমূল্য বেশ উচ্চ মানের (52300 kJ/kg)। (4) হাইড্রোজেন, মিথানল ও ফর্মালডিহাইডের শিল্পোৎপাদনে মিথেন ব্যবহৃত হয়।
3. মিথেনকে অক্সিজেনের দহন করলে কী ঘটে সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, মিথেনকে বায়ুতে পোড়ালে কী রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে? এই বিক্রিয়ার গুরুত্ব কী?
অনুরূপ প্রশ্ন, বায়ুতে মিথেনের দহন বিক্রিয়ার উপযোগিতা লেখো।
উত্তর – মিথেনকে পর্যাপ্ত বায়ুতে বা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে দহন করলে মিথেন অদীপ্ত ফিকে নীলাভ শিখায় জ্বলতে থাকে। বিক্রিয়ার ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, জলীয় বাষ্প ও প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়।
CH4 + 2O2 → CO2 + 2H2O + তাপ (213 kcal/mol)
এই বিক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয় বলে মিথেনকে তাপ উৎপাদক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
4. কয়লাখনিতে মাঝে মাঝে বিস্ফোরণ ঘটে কেন?
উত্তর – কয়লাখনির গ্যাসে মিথেন অক্সিজেনের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। আগুনের উপস্থিতিতে মিথেন, অক্সিজেনের সাথে বিস্ফোরণসহ বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জল উৎপন্ন করে।
CH4 + 2O2 → CO2 + 2H2O
তাই কয়লাখনিতে মাঝে মাঝে বিস্ফোরণ ঘটে।
5. আলেয়া কী?
অনুরূপ প্রশ্ন, আলেয়া কীভাবে উৎপন্ন হয় ?
উত্তর – বদ্ধ জলাভূমিতে উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজ পদার্থের অন্তর্গত বিভিন্ন জৈব যৌগগুলির জীবাণুঘটিত পচনের ফলে মিথেন উৎপন্ন হয়। আবার অনেক সময় প্রাণীদেহের পচনের ফলে জলাভূমিতে মিথেনের পাশাপাশি ফসফিন (PH3) ও ডাইফসফরাস টেট্রাহাইড্রাইড (P2H4) ও উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ, জলাভূমিতে উৎপন্ন মিথেনের সঙ্গে PH3 ও P2H4 মিশে থাকে। P2H4 বায়ুতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জ্বলে ওঠে এবং এর দহনের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তাতে মিথেনও নীলাভ শিখায় জ্বলতে থাকে। এর ফলে এক বিচরণশীল অলোকশিখার সৃষ্টি হয় যা আলেয়া (Will O’ the wisp) নামে পরিচিত। এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, কোনো ভৌতিক বা অলৌকিক ঘটনা নয়।
6. প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া কাকে বলে? শর্তসহ মিথেনের সঙ্গে ক্লোরিনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়াটি লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, মিথেনের সঙ্গে ক্লোরিনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার শর্ত কী ? বিক্রিয়াটির প্রথম ধাপের সমীকরণটি লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকে ক্লোরিনের সঙ্গে মিথেনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার প্রথম ধাপের সমিত রাসায়নিক সমীকরণটি লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, কীভাবে পরিবর্তিত করবে?
CH4 → CH3Cl
উত্তর – যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যৌগের অণুমধ্যস্থ কোনো পরমাণু বা গ্রুপ অন্য কোনো পরমাণু বা গ্রুপ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে নতুন যৌগ উৎপন্ন করে, তাকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে।
বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকের উপস্থিতিতে মিথেন ও ক্লোরিন গ্যাসের মধ্যে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে। এই বিক্রিয়ায় মিথেন অণুর H -পরমাণুগুলি ক্লোরিন পরমাণু দ্বারা ধাপে ধাপে প্রতিস্থাপিত হয় এবং মিথাইল ক্লোরাইড, মিথিলিন ক্লোরাইড, ক্লোরোফর্ম ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইড-এর একটি মিশ্রণ উৎপন্ন হয়।

7. ইথিলিনের (C2H4) প্রধান প্রধান শিল্প উৎসগুলি লেখো।
উত্তর – (1) 350°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত অ্যালুমিনার (Al2O3) ওপর দিয়ে ইথাইল অ্যালকোহল (C2H5OH) বাষ্পকে চালনা করলে ইথিলিন উৎপন্ন হয়। এটি ইথিলিন প্রস্তুতির শিল্প পদ্ধতি।
(2) পেট্রোলিয়াম খনি থেকে নির্গত প্রাকৃতিক গ্যাসে 20% পর্যন্ত ইথিলিন থাকে।
(3) কোক ওভেন গ্যাসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ইথিলিন পাওয়া যায়।
(4) কোলগ্যাসে সামান্য পরিমাণ প্রায় 4% ) ইথিলিন থাকে।
(5) পেট্রোলিয়ামের ক্র্যাকিং প্রক্রিয়ায় (তাপ প্রয়োগে দীর্ঘ শৃঙ্খলযুক্ত জৈব যৌগকে ভেঙে ছোটো শৃঙ্খলবিশিষ্ট জৈব যৌগে পরিণত করা) উপজাত হিসেবে ইথিলিন পাওয়া যায়।
8. ইথিলিনের প্রধান প্রধান ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – (1) কৃত্রিম উপায়ে কাঁচা ফল পাকাতে ও পাকা ফল সংরক্ষণে ইথিলিন ব্যবহৃত হয়। (2) ইথিলিন ডাইক্লোরাইড, ইথিলিন ডাইব্রোমাইড, যুদ্ধে ব্যবহৃত বিষাক্ত মাস্টার্ড গ্যাস ইত্যাদি প্রস্তুত করতে ইথিলিন ব্যবহৃত হয়। (3) বিভিন্ন দ্রাবক (গ্লাইকল, ডাইঅক্সেন, ইথানল ইত্যাদি) প্রস্তুতিতে ইথিলিন ব্যবহৃত হয়। (4) পলিথিন নামক পলিমার উৎপাদনের জন্য ইথিলিন ব্যবহৃত হয়। (5) শল্যচিকিৎসায় চেতনানাশক-রূপে ইথিলিন ( 80% ) ও O2(20%) -এর মিশ্রণ ব্যবহৃত হয়।
9. শর্তসহ ইথিলিনের হাইড্রোজেনেশন বিক্রিয়া কীভাবে সংঘটিত হয় লেখো ও বিক্রিয়ার সমীকরণ দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, কীভাবে পরিবর্তিত করবে?
H2C=CH2 → CH3—CH3
উত্তর – সাধারণ চাপ ও উয়তায় প্ল্যাটিনাম, প্যালাডিয়াম বা র্যানি নিকেল অনুঘটকের উপস্থিতিতে অথবা 200-300°C উষ্ণতায় নিকেল অনুঘটকের উপস্থিতিতে হাইড্রোজেন, ইথিলিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ইথেন উৎপন্ন করে। এটি ইথিলিনের হাইড্রোজেনেশন তথা বিজারণ বিক্রিয়া।

10. অ্যাসিটিলিনের প্রধান প্রধান ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যাসিটিলিনের একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – (1) ইস্পাত বা অন্য ধাতু গলিয়ে জোড়া লাগানো (welding) বা কাটার কাজে ব্যবহৃত অক্সি-অ্যাসিটিলিন শিখা (উয়তা প্রায় 3500 °C) সৃষ্টিতে অ্যাসিটিলিন গ্যাস ব্যবহৃত হয়। (2) কার্বাইড বাতিতে (carbide lamp) বা হকার্স ল্যাম্প (Hawker’s Lamp)-এ উজ্জ্বল আলোক সৃষ্টিতে অ্যাসিটিলিন ব্যবহৃত হয়। (3) অ্যাসিট্যালডিহাইড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড, ইথাইল অ্যালকোহল, অ্যাসিটোন প্রভৃতির প্রস্তুতিতে অ্যাসিটিলিন ব্যবহৃত হয়। (4) চর্বি, তেল ও রেজিনের দ্রাবক হিসেবে ব্যবহৃত ওয়েসট্রন (অ্যাসিটিলিন টেট্রাক্লোরাইড, C2H2Cl4) ও ওয়েসট্রসল (ট্রাইক্লোরোইথিন, C2HCl3) প্রভৃতি অদাহ্য দ্রাবক প্রস্তুতিতে এটি ব্যবহৃত হয়। (5) কৃত্রিম রবার, কৃত্রিম তন্তু ও প্লাস্টিকের পণ্য উৎপাদনে কাঁচামালরূপে অ্যাসিটিলিন বহুল ব্যবহৃত হয়।
11. C2H2 থেকে ইথিলিন কীভাবে প্রস্তুত করবে তা শর্ত ও সমীকরণের সাহায্যে লেখো।
উত্তর – কুইনোলিন সহযোগে বেরিয়াম সালফেট দ্বারা আংশিকভাবে বিষাক্ত করা প্যালাডিয়াম অনুঘটকের (লিন্ডলার অনুঘটক) উপস্থিতিতে অ্যাসিটিলিন হাইড্রোজেনের সাথে বিক্রিয়া করে ইথিলিন উৎপন্ন করে।

প্যালাডিয়াম অনুঘটককে আংশিকভাবে বিষাক্ত করা হয় বলে এই বিক্রিয়ায় অ্যাসিটিলিনের সঙ্গে হাইড্রোজেনের সংযোজন ইথিলিন পর্যন্তই ঘটে।
12. A ও B 2টি করে কার্বন পরমাণুযুক্ত দুটি অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। ব্রোমিনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় A -তে অণু প্রতি 1 অণু ব্রোমিন ও B -তে অণু প্রতি 2 অণু ব্রোমিন যুক্ত হয়। A ও B -এর গঠন সংকেত লেখো। B -এর সঙ্গে ব্রোমিনের বিক্রিয়ার সমিত রাসায়নিক সমীকরণ লেখো।
উত্তর – 2টি কার্বন পরমাণুযুক্ত অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলতে ইথিলিন ও অ্যাসিটিলিনকে বোঝায়। ব্রোমিনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় প্রতি অণু A , 1 অণু ব্রোমিনের সঙ্গে এবং প্রতি অণু B , 2 অণু ব্রোমিনের সঙ্গে যুক্ত হয়। সুতরাং A ও B হল যথাক্রমে ইথিলিন (H2C=CH2) এবং অ্যাসিটিলিন (HC ≡ CH)। A ও B -এর গঠন সংকেত এবং ব্রোমিনের সঙ্গে বিক্রিয়াগুলি নিম্নরূপ—

13. LPG-এর উপাদান উল্লেখ করো। LPG -এর শিল্প উৎসগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (liquefied petroleum gas) বা LPG হল নিম্ন আণবিক ভরসম্পন্ন (3-4টি C-পরমাণুযুক্ত হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ। এর প্রধান উপাদান হল বিউটেন (C4H10)। এ ছাড়া অল্প পরিমাণে প্রোপেন (C3H6) ও ইথেন (C2H6) থাকে।
আংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় পেট্রোলিয়ামের পরিশোধনের সময় 30°C উয়তার নীচে যে গ্যাসীয় অংশ পাওয়া যায় তাকে উচ্চচাপে তরলে পরিণত করে স্টিলের সিলিন্ডারে আবদ্ধ করে সংরক্ষণ করা হয়। এটিই হল LPG বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস।
14. LPG -এর ব্যবহারগুলি লেখো।
উত্তর – (1) LPG -এর তাপনমূল্য অত্যন্ত বেশি হওয়ায় একে মূলত রান্নার কাজে জ্বালানিরূপে ব্যবহার করা হয়। (2) শিল্পে ও মোটরগাড়ির জ্বালানি হিসেবেও LPG ব্যবহৃত হয়। (3) LPG -এর স্ফুটনাঙ্ক খুব কম (−42°C) হওয়ায় একে অনেক সময় হিমায়ক (refrigerant) রূপেও ব্যবহার করা হয়।
15. জ্বালানিরূপে LPG ব্যবহারের সুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – জ্বালানিরূপে LPG ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল—
- উচ্চ তাপনমূল্য: LPG অতি উচ্চ তাপনমূল্যবিশিষ্ট জ্বালানি। এই কারণে অল্প পরিমাণ LPG-এর দহন ঘটিয়ে প্রচুর পরিমাণ তাপশক্তি পাওয়া যায়।
- পরিবেশবান্ধব জ্বালানি: LPG-এর সম্পূর্ণ দহন হয়। তাই এর দহনে ছাইজাতীয় পদার্থের কিংবা CO-এর মতো বিষাক্ত বায়ুদূষক গ্যাসের উদ্ভব হয় না। ফলে পরিবেশ দূষণ এড়ানো যায়।
- স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়: LPG-এর দহনের ফলে CO-এর মতো বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয় না। তাই জ্বালানি হিসেবে LPG-এর ব্যবহার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়।
- ব্যবহার নিয়ন্ত্রণযোগ্য: উপযুক্ত রেগুলেটরের মাধ্যমে বার্নারে LPG-এর প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রয়োজনমতো কম বা বেশি পরিমাণ LPG-এর দহন ঘটানো যায়। এর ফলে প্রয়োজন অনুযায়ী কম বা বেশি পরিমাণ তাপশক্তি উৎপাদন করা যায় এবং জ্বালানির অপচয় রোধ করা যায়। সহজে পরিবহণযোগ্য: LPG-পূর্ণ সিলিন্ডারগুলি বহনযোগ্য হওয়ায় অতি দূরবর্তী অঞ্চলেও এই জ্বালানি সহজেই সরবরাহ করা যায় ও ব্যবহার করা যায়।
16. LPG সিলিন্ডারের গ্যাসের মধ্যে কোন্ সালফার যৌগটি মিশ্রিত থাকে? উক্ত যৌগটি মেশানোর কারণ কী? LPG সিলিন্ডার থেকে নির্গত গ্যাস জ্বললে কোনো উগ্র গন্ধ পাওয়া যায় না কেন?
উত্তর – LPG সিলিন্ডারের গ্যাসের মধ্যে ইথাইল মারক্যাপটান (C2H5SH) নামক সালফার যৌগটি মিশ্রিত থাকে। এটি একটি দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ।
LPG -এর উপাদান গ্যাসগুলি বর্ণহীন ও গন্ধহীন এবং অত্যন্ত দাহ্য প্রকৃতির। কোনো কারণে সিলিন্ডার থেকে LPG লিক করতে থাকলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই LPG সিলিন্ডার থেকে গ্যাসের নির্গমন হচ্ছে কিনা তা জানার জন্য সিলিন্ডারে LPG-এর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ দুর্গন্ধযুক্ত যৌগ ইথাইল মারক্যাপটান (C2H5SH) মেশানো থাকে। সিলিন্ডার থেকে গ্যাসের নির্গমনের সময় এই যৌগটিও গ্যাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এই অবস্থায় যে উগ্র গন্ধ বা দুর্গন্ধ পাওয়া যায় তা ইথাইল মারক্যাপটান যৌগের। সুতরাং, ইথাইল মারক্যাপটানের দুর্গন্ধের মাধ্যমে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করছে কিনা তা বোঝা যায় এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
সিলিন্ডার থেকে নির্গত গ্যাসের জ্বলনে LPG-এর সঙ্গে সঙ্গে ইথাইল মারক্যাপটানেরও সম্পূর্ণ দহন ঘটে । ফলে তখন আর কোনো উগ্র গন্ধ পাওয়া যায় না।
17. (i) CNG -এর শিল্প উৎস কী?
(ii) CNG-এর উপাদানগুলি উল্লেখ করো।
(iii) মিথেনের উপস্থিতির মাত্রা CNG না LPG-তে বেশি উল্লেখ করো।
উত্তর – (i) পেট্রোলিয়াম খনিতে তেলের ওপরে বা কয়লাখনিতে প্রাকৃতিক গ্যাস আবদ্ধ থাকে। যার মধ্যে অশুদ্ধি হিসেবে CO2 ও H2S মিশে থাকে। এইভাবে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে CO2 ও H2S -কে অপসারিত করার পর চাপ প্রয়োগ করে একে তরলে পরিণত করা হয়। এটিই সংনমিত বা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা CNG (compressed natural gas)।
(ii) সংনমিত প্ৰাকৃতিক গ্যাস (compressed natural gas) বা CNG-এর মূল উপাদান মিথেন ( 90%)। এ ছাড়া এতে কিছু পরিমাণ ইথেন (C2H6), ইথিন (C2H4), প্রোপেন (C3H6), বিউটেন (C4H10) ও সামান্য পরিমাণে কম স্ফুটনাঙ্কের পেন্টেন (C5H12) থাকে।
(iii) LPG-র তুলনায় CNG-তে মিথেনের উপস্থিতির মাত্রা বেশি।
18. CNG-এর ব্যবহারগুলি লেখো।
উত্তর – CNG-এর তাপনমূল্য অনেক বেশি হওয়ায় এটি মূলত জ্বালানিরূপেই ব্যবহৃত হয়। যন্ত্রচালিত পরিবহণ শিল্পে CNG ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা সবচেয়ে কম হয়। তাই বাস, ট্যাক্সি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন গণপরিবহণ ব্যবস্থায় জ্বালানিরূপে CNG বহুল ব্যবহৃত হয়।
19. জ্বালানিরূপে CNG ব্যবহারের সুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – জ্বালানিরূপে CNG ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল—
- কম পরিবেশ দূষণমাত্রা: CNG-তে কার্বনের পরিমাণ কম থাকায় এই জ্বালানির দহনে কার্বন কণা ও CO2 গ্যাসের উৎপাদন অন্যান্য জ্বালানি অপেক্ষা অনেক কম হয়। এ ছাড়াও CNG-এর দহনে ধোঁয়া বা ছাই উৎপন্ন হয় না। ফলে পরিবেশ কম দূষিত হয়।
- উচ্চ জ্বলনাঙ্ক: CNG -এর জ্বলনাঙ্ক (1350°F) খুব বেশি হওয়ায় সহজে জ্বলে ওঠে না, তাই নিরাপদে ব্যবহার করা যায়।
- উচ্চ তাপনমূল্য: CNG-এর তাপনমূল্য ডিজেল বা LPG অপেক্ষা অনেক বেশি। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপ উৎপাদন করতে LPG বা ডিজেলের তুলনায় কম পরিমাণ CNG প্রয়োজন হয়।
20. জ্বালানিরূপে CNG ব্যবহারের অসুবিধাগুলি কী কী?
অনুরূপ প্রশ্ন, CNG ব্যবহারের একটি পরিবেশগত অসুবিধা উল্লেখ করো।
উত্তর – জ্বালানি হিসেবে CNG ব্যবহারের অসুবিধাগুলি হল—
- গ্যাসীয় অবস্থাজনিত অসুবিধা: গ্যাসীয় অবস্থায় CNG-এর প্রতি একক আয়তনের দহনে উৎপন্ন শক্তির পরিমাণ অন্যান্য জ্বালানি অপেক্ষা কম হয়।
- সঞ্চয়জনিত অসুবিধা: CNG-কে সঞ্চয় করতে প্রয়োজনীয় ট্যাংকের আয়তনের তুলনায় অনেক বেশি হয়।
- দুর্ঘটনার সম্ভাবনা: CNG বায়ু অপেক্ষা হালকা। তাই সিলিন্ডার থেকে CNG নির্গত হলে তা ওপরের দিকে উঠতে থাকে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অঞ্চলটি CNG গ্যাস দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে, যা ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
- পরিবেশগত অসুবিধা: CNG ব্যবহারের সময় সামান্য পরিমাণ পরিত্যক্ত মিথেন বায়ুতে মেশে, যা একটি গ্রিনহাউস গ্যাস।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. কার্বন ব্ল্যাক প্রস্তুতিতে যে হাইড্রোকার্বনটি ব্যবহৃত হয় সেটি হল—
(a) মিথেন
(b) ইথেন
(c) ইথিলিন
(d) অ্যাসিটিলিন
উত্তর – (a) মিথেন
2. বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকে ক্লোরিন গ্যাস ও মিথেনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে উৎপন্ন হয়—
(a) মিথাইল ক্লোরাইড
(b)ক্লোরোফর্ম
(c) কার্বন টেট্রাক্লোরাইড
(d) মিথিলিন ক্লোরাইড
উত্তর – (d) মিথিলিন ক্লোরাইড
3. নীচের কোন্টি মিথেনের শিল্প উৎস নয়?
(a) প্রাকৃতিক গ্যাস
(b) কোল গ্যাস
(c) কয়লাখনির গ্যাস
(d) কোক ওভেন গ্যাস
উত্তর – (d) কোক ওভেন গ্যাস
4. কার্বাইড বাতিতে ব্যবহৃত গ্যাসীয় জৈব যৌগটি হল –
(a) মিথেন
(b) ইথিলিন
(c) অ্যাসিটিলিন
(d) বিউটেন
উত্তর – (c) অ্যাসিটিলিন
5. সাধারণ উন্নতায় ইথিলিন থেকে ইথেন প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত অনুঘটকটি হল—
(a) Ni
(b) MnO2
(c) র্যানি নিকেল
(d) H2SO4
উত্তর – (c) র্যানি নিকেল
6. ইথিলিনের পলিমেরাইজেশনে অনুঘটকরূপে ব্যবহৃত হয় –
(a) Ni
(b) র্যানি নিকেল
(c) পারক্সাইড
(d) MnO2
উত্তর – (c) পারক্সাইড
7. কাঁচা ফল পাকাতে ও পাকা ফলের সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয় —
(a) মিথেন
(b) ইথেন
(c) ইথিলিন
(d) অ্যাসিটিলিন
উত্তর – (c) ইথিলিন
8. অ্যালকেন শ্রেণির যৌগ প্রধানত যে ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, সেটি হল—
(a) পুনর্বিন্যাস বিক্রিয়া
(b) বিয়োজন বিক্রিয়া
(c) প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া
(d) যুত বিক্রিয়া
উত্তর – (c) প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া
9. STP-তে ইথিলিনের মোলার আয়তন পলিথিনের তুলনায় —
(a) অনেক বেশি
(b) অনেক কম
(c) প্রায় সমান
(d) সমান
উত্তর – (a) অনেক বেশি
10. ক্যালশিয়াম কার্বাইডে জল যোগ করলে উৎপন্ন হয় —
(a) C2H2
(b) CH4
(c) C2H4
(d) C2H6
উত্তর – (a) C2H2
11. লাল বর্ণের ব্রোমিন জলের মধ্যে অ্যাসিটিলিন চালনা করলে দ্রবণের বর্ণ—
(a) নীল হয়
(b) সবুজ হয়
(c) হলুদ হয়
(d) অন্তর্হিত হয়
উত্তর – (d) অন্তর্হিত হয়
12. নীচের কোন্ ক্ষেত্রে অ্যাসিটিলিন ব্যবহৃত হয়?
(a) ফর্মালডিহাইডের শিল্পোৎপাদনে
(b) পাকা ফল সংরক্ষণে
(c) মাস্টার্ড গ্যাস প্রস্তুতিতে
(d) ওয়েসট্রন নামক দ্রাবক প্রস্তুতিতে
উত্তর – (d) ওয়েসট্রন নামক দ্রাবক প্রস্তুতিতে
13. CNG-এর মূল উপাদান হল –
(a) মিথেন
(b) ইথেন
(c) প্রোপেন
(d) বিউটেন
উত্তর – (a) মিথেন
14. কৃত্রিম রবার প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয় —
(a) CH4
(b) C2H4
(c) C2H2
(d) C2H6
উত্তর – (c) C2H2
15. ইথিলিন রাসায়নিকভাবে খুব সক্রিয় হওয়ার কারণ এর —
(a) আণবিক ভর
(b) ঘনত্ব
(c) অসম্পৃক্ততা
(d) গ্যাসীয় অবস্থা
উত্তর – (c) অসম্পৃক্ততা
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. মার্শ গ্যাসের মূল উপাদান কী?
উত্তর – মার্শ গ্যাসের মূল উপাদান হল মিথেন (CH4)
2. মিথেনকে মার্শ গ্যাস বলে কেন?
উত্তর – আবদ্ধ জলাভূমিতে (marshy land) জীবদেহের পচনের ফলে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয় বলে একে মার্শ গ্যাস বলে।
3. কার্বন ব্ল্যাক কী?
উত্তর – 1000°C উন্নতায় মিথেন বিয়োজিত হয়ে সূক্ষ্ম কার্বন গুঁড়ো বা কার্বন ব্ল্যাক উৎপন্ন করে
4. মার্শ গ্যাসের কোন উপাদানটি অক্সিজেনের সংস্পর্শে জ্বলে ওঠে?
উত্তর – P2H4 (ডাইফসফরাস টেট্রাহাইড্রাইড)
5. বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকে Cl2 -এর সঙ্গে মিথেনের কী ধরনের বিক্রিয়া ঘটে?
উত্তর – প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে।
6. মিথেনের সমস্ত H-পরমাণু ক্লোরিন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলে কোন্ যৌগ উৎপন্ন হয়?
উত্তর – কার্বন টেট্রাক্লোরাইড (CCl4) উৎপন্ন হয়।
7. ক্লোরিনের সঙ্গে মিথেনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার প্রথম ধাপে উৎপন্ন জৈব যৌগটির সংকেত লেখো।
উত্তর – জৈব যৌগটির সংকেত CH3Cl (মিথাইল ক্লোরাইড)।
৪. ক্লোরিনের সঙ্গে মিথেনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার তৃতীয় ধাপে উৎপন্ন জৈব যৌগটির সংকেত লেখো।
উত্তর – জৈব যৌগটির সংকেত CHCl3 (ক্লোরোফর্ম)।
9. আলেয়া সৃষ্টিতে কোন্ গ্যাসের ভূমিকা আছে?
উত্তর – আলেয়া সৃষ্টিতে মিথেন গ্যাসের ভূমিকা আছে।
10. সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে কোন্টি যুত বিক্রিয়া দেয়?
উত্তর – অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন যুত বিক্রিয়া দেয়।
11. ইথিলিনের সঙ্গে H2 -এর যুত বিক্রিয়ায় অনুঘটক হিসেবে কী ব্যবহার করা হয় ?
উত্তর – Pt, Pd বা রানি নিকেল অনুঘটক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
12. জৈব যৌগে অসম্পৃক্ততা আছে কি না কীভাবে বুঝবে?
উত্তর – CCl4 -এ দ্রবীভূত ব্রোমিনের সাথে নমুনা জৈব যৌগটির বিক্রিয়ায় যদি ব্রোমিনের লাল বর্ণ অন্তর্হিত হয় তবে জৈব যৌগটিতে অসম্পৃক্ততা আছে বোঝা যায়।
13. অ্যালকিনকে অলিফিন বলা হয় কেন?
উত্তর – অ্যালকিনের নিম্নতর সদস্যগুলি (ইথিন, প্রোপিন) হ্যালোজেনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় তৈলাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে বলে এদের অলিফিন (তেল গঠনকারী পদার্থ) বলা হয় ।
14. CaC2 + 2H2O → A + Ca(OH)2 ; A -কে শনাক্ত করো।
উত্তর – A : HC≡CH (অ্যাসিটিলিন)
15. ঝালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হয় এমন একটি জৈব গ্যাসের নাম ও গঠন-সংকেত লেখো।
উত্তর – জৈব গ্যাসটি হল অ্যাসিটিলিন (H—C≡C—H) |
16. অ্যাসিটিলিনকে সম্পূর্ণ বিজারিত করা হলে কী উৎপন্ন হয়?
উত্তর – অ্যাসিটিলিনকে সম্পূর্ণ বিজারিত করা হলে ইথেন উৎপন্ন হয়।
17. লাল বর্ণের ব্রোমিন জলের মধ্য দিয়ে অ্যাসিটিলিন গ্যাস চালনা করলে উৎপন্ন যৌগের নাম লেখো।
উত্তর – 1,2–ডাইব্রোমোইথিন (CHBr = CHBr)।
18. মিথেন, ইথিন ও ইথাইনের মধ্যে কোন্টি ব্রোমিন জলের বর্ণকে বর্ণহীন করতে পারে না?
উত্তর – মিথেন ব্রোমিন জলের বর্ণকে বর্ণহীন করতে পারে না।
19. মিথেন, ইথিলিন ও অ্যাসিটিলিনের মধ্যে কোনটি মূলত প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে?
উত্তর – মিথেন প্রধানত প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
20. LPG -এর প্রধান উপাদান কী?
উত্তর – LPG-এর প্রধান উপাদান হল বিউটেন।
21. LPG -এর একটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর – LPG রান্নার কাজে ও বিভিন্ন শিল্পে জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়।
22. LPG-এর মধ্যে কোন্ দুর্গন্ধযুক্ত উপাদানটি মেশানো থাকে?
উত্তর – ইথাইল মারক্যাপটান (C2H5SH)
23. CNG-এর শিল্প উৎস কী?
উত্তর – পেট্রোলিয়াম খনিতে তেলের ওপরে বা কয়লাখনিতে আবদ্ধ অবস্থায় প্রাপ্ত গ্যাসীয় পদার্থই হল CNG।
24. যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে পেট্রোল ও CNG-এর মধ্যে কোন্টি অপেক্ষাকৃত কম বায়ুদূষণ সৃষ্টি করে?
উত্তর – CNG অপেক্ষাকৃত কম বায়ুদূষণ ঘটায়।
25. CNG -এর একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – বাস, ট্যাক্সি, অটোরিকশা ইত্যাদি গণপরিবহণ ব্যবস্থায় জ্বালানিরূপে CNG ব্যবহৃত হয়।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. মিথেন গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় কারণ এর …….. খুব বেশি।
উত্তর – তাপনমূল্য
2. মার্শ গ্যাসের যে উপাদানটি বায়ুর সংস্পর্শে জ্বলে ওঠে তা হল ……..।
উত্তর – মিথেন
3. মিথেন এবং ক্লোরিন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন মিশ্রণে জৈব যৌগের সংখ্যা ……..।
উত্তর – 4টি
4. মিথেনের 3টি H-পরমাণু 3টি Cl -পরমাণু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলে ………. উৎপন্ন হয়।
উত্তর – ক্লোরোফর্ম
5. শল্যচিকিৎসার চেতনা নাশকরূপে 80% ………. ও 20% ………. -এর মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
উত্তর – ইথিলিন, অক্সিজেন
6. হাইড্রোজেনের সাথে যুত বিক্রিয়ায় প্রতি অণু ইথিলিন ……….. অণু হাইড্রোজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়।
উত্তর – এক
7. সাধারণ অবস্থায় ইথিলিন একটি ……….. পদার্থ কিন্তু পলিথিন একটি ……..পদার্থ।
উত্তর – গ্যাসীয়, কঠিন
৪. উচ্চ উন্নতায় প্রাকৃতিক গ্যাসকে বিয়োজিত করে ……….. তৈরি করা হয়।
উত্তর – অ্যাসিটিলিন
9. অক্সি-অ্যাসিটিলিন শিখার উন্নতা হল প্রায় ……..।
উত্তর – 3000°C
10. অ্যাসিটিলিন ব্রোমিন জলের সাথে যুত বিক্রিয়া করে উৎপন্ন করে ……..।
উত্তর – 1, 2 –ডাইব্রোমোইথিন
11. LPG-এর সম্পূর্ণ কথাটি হল ……..।
উত্তর – Liquefied Petroleum Gas
12. CNG -এর সম্পূর্ণ কথাটি হল ……..।
উত্তর – Compressed Natural Gas
TOPIC – C পলিমার, ইথাইল অ্যালকোহল, অ্যাসিটিক অ্যাসিড ও ডিনেচার্ড স্পিরিট
সংক্ষিপ্ত / দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. পলিমার ও মনোমার বলতে কী বোঝ ? উদাহরণ দাও।
উত্তর – পলিমেরাইজেশন বিক্রিয়ায় বহুসংখ্যক সরল অণু পরস্পর সংযোজিত হয়ে যে উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট যৌগ উৎপন্ন করে, তাকে পলিমার বলে। অপরদিকে, যেসব সরল অণুর সংযোগে পলিমার গঠিত হয়, সেই সরল অণুগুলিকে মনোমার বলে।
অসংখ্য ইথিলিন অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে পলিথিন উৎপন্ন করে। পলিথিন হল ইথিলিনের পলিমার এবং ইথিলিন হল পলিথিনের মনোমার।
2. পলিমারের সঙ্গে মনোমারের পার্থক্য কী? একটি উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর –পলিমার ও মনোমারের মধ্যে পার্থক্যগুলি নিম্নরূপ—

3. উৎসের ভিত্তিতে পলিমারের শ্রেণিবিভাগ করো।
উত্তর – উৎস অনুসারে পলিমার প্রধানত তিন প্রকার—
- প্রাকৃতিক পলিমার: প্রকৃতি (উদ্ভিদ ও প্রাণী) থেকে প্রাপ্ত পলিমারগুলিকে সাধারণভাবে প্রাকৃতিক পলিমার বলা হয়। যেমন—সেলুলোজ, প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড প্রভৃতি।
- কৃত্রিম পলিমার: রসায়নাগারে বা শিল্পে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা পলিমারগুলিকে সংশ্লেষিত বা কৃত্রিম পলিমার বলা হয়। যেমন—পলিথিন, টেফলন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড প্রভৃতি।
- অর্ধকৃত্রিম পলিমার: প্রাকৃতিক পলিমারের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটিয়ে যে পলিমার উৎপন্ন করা হয় তাকে অর্ধকৃত্রিম পলিমার বলে। যেমন—সেলুলোজ নাইট্রেট, সেলুলোজ অ্যাসিটেট প্রভৃতি।
4. পলিথিনের মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। পলিথিনের ব্যবহার উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ইথিলিনের পলিমারের নাম কী? পলিমারটির একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, একটি কৃত্রিম পলিমারের উদাহরণ দাও। এর মনোমারের নাম লেখো
উত্তর – পলিইথিলিন বা পলিথিনের মনোমার হল ইথিলিন। এর সংকেত CH2=CH2 |
প্যাকিং দ্রব্যরূপে ও ক্যারিব্যাগ তৈরিতে, জলের পাইপ, জলের ট্যাংক, বোতল, বালতি, মগ, কাপ, জানালার নেট, তড়িৎ পরিবাহী তারের আচ্ছাদন ইত্যাদি প্রস্তুতিতে পলিথিন ব্যবহৃত হয়।
5. পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন বা টেফলনের মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। টেফলনের ব্যবহার লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, টেফলনের মনোমার ও একটি ব্যবহারের উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন-এর একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন বা টেফলনের মনোমার হল টেট্রাফ্লুরোইথিলিন। এর সংকেত F2C=CF2।

নন্-স্টিক বাসনপত্র তৈরিতে, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের অন্তরক পদার্থ হিসেবে, রাসায়নিক পদার্থ বহনকারী পাইপ, ট্যাংক ও রসায়নাগারের বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে টেফলন ব্যবহৃত হয়।
6. পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC)-এর মনোমারের নাম ও সংকেত লেখো। PVC-এর ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC) -এর মনোমার হল ভিনাইল ক্লোরাইড এবং এর সংকেত CH2=CHCl
বৈদ্যুতিক তার ও কেব্লের আচ্ছাদন, পাইপ, ট্যাংক, রেনকোট, রেফ্রিজারেটারের ভেতরের অংশ, মেঝের আচ্ছাদনে ব্যবহৃত শিট, হাত ব্যাগ, ক্ষয়কারী পদার্থ স্থানান্তরণের জন্য ব্যবহৃত পাইপ ইত্যাদি প্রস্তুতিতে PVC ব্যবহৃত হয়।
7. জৈববিশ্লেষ্য বা জৈবভঙ্গুর পলিমার বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর – যেসব পলিমার প্রাকৃতিক পরিবেশে উপস্থিত বিভিন্ন অণুজীবের (যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি) দেহ নিঃসৃত এনজাইম দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে সরল অণুতে (যেমন—CO2 , H2O ইত্যাদি) রূপান্তরিত হয়, তাদের জৈববিশ্লেষ্য বা জৈবভঙ্গুর পলিমার (biodegradable polymer) বলে।
উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত জৈব পলিমারসমূহ, যেমন—কার্বোহাইড্রেট (সেলুলোজ, স্টার্চ), প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি হল জৈববিশ্লেষ্য পলিমার।
৪. জৈব পলিমার বা বায়োপলিমার কী? জৈব পলিমারের বায়োডিগ্রেডেশন বলতে কী বোঝ?
উত্তর – প্রাকৃতিকভাবে জীবদেহে উৎপন্ন বা কৃত্রিমভাবে রসায়নাগারে প্রস্তুত করা পরিবেশবান্ধব, অণুজীব (ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি) দ্বারা বিয়োজনযোগ্য পলিমারগুলিকে জৈব পলিমার বা বায়োপলিমার বলে। বায়োপলিমারগুলি সাধারণত দুই প্রকার। যথা— (1) প্রাকৃতিক বায়োপলিমার (যেমন—প্রোটিন, স্টার্চ, সেলুলোজ, লিগনিন ইত্যাদি) এবং (2) কৃত্রিম বা সংশ্লেষিত বায়োপলিমার [যেমন—পলিহাইড্রক্সিবিউটাইরেট (PHB), সেলুলোজ অ্যাসিটেট ইত্যাদি]।
প্রাকৃতিক পরিবেশে বিয়োজকের (ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া) দেহ নিঃসৃত এনজাইমের ক্রিয়ার ফলে জৈব পলিমার যেমন—কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি বিশ্লিষ্ট হয়ে সরল অণুতে (যেমন— CO2, H2O, NH3 ইত্যাদি) রূপান্তরিত হয়। এই ঘটনাকে জৈব পলিমারের বায়োডিগ্রেডেশন বলে।
9. প্রকৃতিতে প্রোটিনের বায়োডিগ্রেডেশন হয় কীভাবে?
উত্তর – কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন দ্বারা গঠিত অ্যামাইনো অ্যাসিডের (মনোমার) বহুসংখ্যক অণু পরস্পর সংযোজিত হয়ে প্রোটিন (পলিমার) গঠন করে। মাটিতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি বিয়োজকের দেহ নিঃসৃত উৎসেচকের ক্রিয়ায় প্রোটিন প্রথমে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও পরে অ্যামোনিয়াতে পরিণত হয়। এই অ্যামোনিয়া মৃত্তিকাস্থিত বিভিন্ন জীবাণুর ক্রিয়ায় প্রথমে নাইট্রাইট এবং পরে নাইট্রেট যৌগে রূপান্তরিত হয়। অবশেষে মাটিতে বসবাসকারী কিছু ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া নাইট্রেট যৌগকে বিয়োজিত করে নাইট্রোজেন মুক্ত করে ও বায়ুমণ্ডলে ফিরিয়ে দেয়।
10. প্রকৃতিতে কার্বোহাইড্রেটের বায়োডিগ্রেডেশন কীভাবে হয়?
উত্তর – কার্বোহাইড্রেট বা শর্করার মূল উপাদান হল কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন। সরল শর্করা গ্লুকোজের অণুগুলি পরস্পর সংযোজিত হয়ে বিভিন্ন জটিল শর্করা (যেমন—স্টার্চ, সেলুলোজ প্রভৃতি) গঠন করে। উদ্ভিদ বা উদ্ভিজ্জ পদার্থের পচনের ফলে এই জটিল শর্করাগুলি মাটিতে মিশে যায়। তখন মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের দেহ নিঃসৃত উৎসেচকের ক্রিয়ায় জটিল শর্করাগুলি বিয়োজিত হয়ে প্রথমে গ্লুকোজ এবং পরে CO2 ও জলে পরিণত হয় ও পরিবেশে ফিরে যায়।
11. জৈববিশ্লেষ্য পলিমারগুলি পরিবেশ দূষণ ঘটায় না—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – জৈববিশ্লেষ্য পলিমারগুলি পরিবেশে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি অণুজীব নিঃসৃত উৎসেচক দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে সরল যৌগ যেমন— CO2, H2O, NH3 ইত্যাদিতে পরিণত হয়। এগুলি পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর না হওয়ায় জৈববিশ্লেষ্য পলিমারগুলি দ্বারা পরিবেশ দূষিত হয় না। যেমন—খড়, কাঠ, কাগজ, তুলো প্রভৃতি পদার্থগুলি উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত জৈব পলিমার সেলুলোজ দ্বারা গঠিত। ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি অণুজীব নিঃসৃত এনজাইমের উপস্থিতিতে সেলুলোজ রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে CO2 ও H2O -তে পরিণত হয় যারা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর নয় অর্থাৎ পরিবেশ দূষণ ঘটায় না।
12. জৈব অবিশ্লেষ্য বা জৈব অভঙ্গুর পলিমার কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর – যেসব পলিমার প্রাকৃতিক পরিবেশে উপস্থিত বিভিন্ন অণুজীব (যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি) দ্বারা সরল যৌগের অণুতে (CO2, H2O, NH3 ইত্যাদি) বিশ্লিষ্ট হয় না, তাদের জৈব অবিশ্লেষ্য বা জৈব অভঙ্গুর পলিমার (non-biodegradable polymer) বলে ।
পলিথিন, PVC, টেফলন, পলিস্টাইরিন ইত্যাদির মতো কৃত্রিম পলিমারসমূহ হল জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার।
13. জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার ব্যবহারের ফলে পরিবেশ কীভাবে দূষিত হতে পারে?
অনুরূপ প্রশ্ন, পলিথিন ব্যাগের যথেচ্ছ ব্যবহারের দুটি বিপদ যা উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার কীভাবে মৃত্তিকা দূষণ ঘটায়?
উত্তর – জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার ব্যবহারে পরিবেশ বিভিন্নভাবে দূষিত
হয়—
- প্লাস্টিক জাতীয় পলিমার দিয়ে তৈরি ক্যারি ব্যাগ, মোড়ক, সিরিঞ্জ, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের বর্জিত অংশ যত্রতত্র ফেলা হয় যা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয় না। এগুলি মাটিতে সঞ্চিত হওয়ার ফলে মাটিতে বায়ু ও জলের চলাচল বন্ধ হয়ে মাটি অনুর্বর ও কৃষিকাজের অনুপযোগী হয়ে ওঠে। মাটির নীচে দীর্ঘদিন থাকার ফলে জলবায়ুর প্রভাবে এরূপ পদার্থ থেকে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান মাটিকে দূষিত করে। ফলস্বরূপ মাটির উপকারী ব্যাকটেরিয়া মারা যায়।
- প্লাস্টিকজাত পদার্থগুলি জমে নালা-নর্দমার মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে শহরাঞ্চলের জলনিকাশি ব্যবস্থা ভীষণভাবে বিপর্যস্ত হয়, বর্ষাকালে রাস্তাঘাট জলে ডুবে যায়। জমা জলে মশা-মাছির বংশবৃদ্ধি ঘটে এবং জলবাহিত রোগ ছড়ায়।

- প্লাস্টিকজাতীয় পলিমারের দহনে CO, SO2, NO2 প্রভৃতি বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ুতে মেশে, ফলে বায়ু দূষিত হয়।
14. জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার দ্বারা সৃষ্ট দূষণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত?
উত্তর – জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার দ্বারা সৃষ্ট দূষণ প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা আবশ্যক—
- পলিথিন, PVC বা অন্যান্য প্লাস্টিকজাতীয় কৃত্রিম পলিমারের যথেচ্ছ ব্যবহার কমাতে হবে।
- কম খরচে জৈববিশ্লেষ্য পলিমার উৎপাদন যতদিন না সম্ভব হচ্ছে ততদিন তুলো, কাঠ, কাগজ, পাটজাতীয় প্রাকৃতিক পলিমারের ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে।
- প্যাকেজিং-এর কাজে পাট ও কাগজের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
- পণ্য পরিবহণের জন্য প্ল্যাস্টিকের তৈরি বস্তার ব্যবহার কমিয়ে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করতে হবে।
- স্বল্প খরচে কৃত্রিম উপায়ে জৈব বিশ্লিষ্ট পলিমার তৈরি করে তার ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
- বিশেষ উপায়ে প্রস্তুত Bio-D পলিমার (পরিত্যক্ত এই পলিমার গুঁড়ো হয়ে নষ্ট হয়ে যায়) -এর ব্যবহার বাড়াতে হবে।
- বর্জ্য প্লাস্টিকজাত পদার্থগুলিকে রিসাইক্লিং পদ্ধতির সাহায্যে পুনরায় ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত করতে হবে।
15. প্যাকেজিং ব্যবহারে পাট ও পলিথিনের মধ্যে কোন্টি পরিবেশবান্ধব ও কেন?
উত্তর – প্যাকেজিং-এর কাজে ব্যবহৃত পাট ও পলিথিনের মধ্যে পাট পরিবেশবান্ধব। কারণ পাট হল জৈব যৌগ কার্বোহাইড্রেটের পলিমার সেলুলোজ। এটি জৈববিশ্লেষ্য পলিমার হওয়ায় ব্যবহারের পর ফেলে দিলে মাটিতে বসবাসকারী জীবাণু দ্বারা বিয়োজিত হয়ে সহজেই মাটিতে মিশে যায়, তাই পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু পলিথিন জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমার হওয়ায় ব্যবহারের পর ফেলে দিলে মাটিতে মেশে না এবং বিভিন্ন উপায়ে পরিবেশ দূষণ ঘটায়।
16. (i) রিসাইক্লিং বলতে কী বোঝ ?
(ii) রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ার গুরুত্ব উল্লেখ করো। অনুরূপ প্রশ্ন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিমার ব্যবহারের গুরুত্ব কী?
(iii) জৈব অবিশ্লেষ্য কৃত্রিম পলিমার বর্জ্যের রিসাইক্লিং দ্বারা কীভাবে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব ?
উত্তর –
- ব্যবহৃত পলিমার-জাতীয় সামগ্রীকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে পুনরায় পলিমার তৈরি করার পদ্ধতিকে রিসাইক্লিং (recycling) বলা হয়। এই ধরনের পলিমারগুলিকে বলা হয় পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিমার (recyclable polymer)। যেমন – PVC, পলিথিন প্রভৃতি।
- রিসাইক্লিং প্রক্রিয়া তথা পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিমার ব্যবহারের প্রধান গুরুত্ব হল—রিসাইক্লিং এর দ্বারা বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মূল প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ। যেমন—ব্যবহৃত কাগজকে রিসাইক্লিং করলে কাগজ উৎপাদনের কাঁচামাল তথা গাছ সংরক্ষিত হয়, প্লাস্টিক দ্রব্যের রিসাইক্লিং-এ প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল তথা পেট্রোলিয়াম সংরক্ষিত হয়। এজন্য বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় রিসাইক্লিং-এর গুরুত্ব অপরিসীম।
- জৈব অবিশ্লেষ্য কৃত্রিম পলিমারঘটিত বর্জ্য পদার্থগুলিকে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে না দিয়ে তাদের সংগ্রহ করে রিসাইক্লিং পদ্ধতিতে রি-মোল্ড করে অর্থাৎ পুনরায় গলিয়ে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরির কাজে ব্যবহার করা হলে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে।
17. ইথাইল অ্যালকোহলের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, রেক্টিফায়েড স্পিরিটের ব্যবহার লেখো।
উত্তর –
- ইথার, এস্টার, ক্লোরোফর্ম, অ্যাসিটিক অ্যাসিড, ইথিলিন,মেথিলেটেড স্পিরিট প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ইথাইল অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়।
- পেট্রোলের সাথে মিশিয়ে মোটরগাড়ির জ্বালানি পাওয়ার অ্যালকোহল প্রস্তুতিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
- বিভিন্ন মদজাতীয় পানীয় প্রস্তুতিতে প্রধান উপাদান হিসেবে ইথাইল অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়।
- 95.6% ইথানল ও 4.4% জলের মিশ্রণ (রেকটিফায়েড স্পিরিট) জীবাণুনাশক-রূপে ব্যবহৃত হয়।
- শীতপ্রধান দেশে মোটরগাড়ির রেডিয়েটরে জলের পরিবর্তে জল ও ইথানলের মিশ্রণ হিমায়ন রোধকরূপে ব্যবহৃত হয়।
- রঞ্জক দ্রব্য, সুগন্ধি, কৃত্রিম তন্তু ও ওষুধ প্রস্তুতিতে দ্রাবকরূপে এটি ব্যবহৃত হয়।
18. ইথাইল অ্যালকোহলের প্রদত্ত ধর্মগুলি উল্লেখ করো—
(1) বর্ণ, (2) গন্ধ, (3) স্বাদ, (4) প্রকৃতি, (5) দহনশীলতা, (6) জলে দ্রাব্যতা।
উত্তর –
- বর্ণ: বর্ণহীন তরল,
- গন্ধ: সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত,
- স্বাদ: উগ্র স্বাদযুক্ত
- প্রকৃতি: প্রশম প্রকৃতির,
- দহনশীলতা: অত্যন্ত দাহ্য প্রকৃতির,
- জলে দ্রাব্যতা: যে-কোনো অনুপাতে জলে দ্রাব্য।
19. ইথাইল অ্যালকোহল ও ডাইমিথাইল ইথারের মধ্যে পার্থক্যসূচক বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ইথানলের সঙ্গে ধাতব সোডিয়ামের বিক্রিয়ায় কী ঘটে সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।
উত্তর – ইথাইল অ্যালকোহল সাধারণ উন্নতায় ধাতব সোডিয়ামের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ইথক্সাইড ও H2 গ্যাস উৎপন্ন করে।

ডাইমিথাইল ইথার ধাতব সোডিয়ামের সঙ্গে কোনো বিক্রিয়া করে না। এই বিক্রিয়ার সাহায্যে ইথাইল অ্যালকোহল ও ডাইমিথাইল ইথারের মধ্যে পার্থক্য করা যায়।
20. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ভিনিগারের ব্যবহার লেখো।
উত্তর –
- গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড (অনার্দ্র) দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয়।
- অ্যাসিটোন, ইথাইল অ্যাসিটেট, হোয়াইট লেড নামক রং ইত্যাদি প্রস্তুতিতে অ্যাসিটিক অ্যাসিড ব্যবহৃত হয়।
- অ্যাসিটিক অ্যাসিডের 5-8% জলীয় দ্রবণ (ভিনিগার) মাছ, মাংস সংরক্ষণে, নানাবিধ আচার, চাটনি ইত্যাদি প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।
- অ্যাসিটিক অ্যাসিড থেকে সেলুলোজ অ্যাসিটেট উৎপন্ন হয়, যা ফটোগ্রাফিক ফিল্ম, কৃত্রিম তন্তু (রেয়ন) প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।
21. অ্যাসিটিক অ্যাসিডকে NaOH দ্রবণের সঙ্গে বিক্রিয়া করালে কী উৎপন্ন হবে সমীকরণসহ লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইডের বিক্রিয়ার সমিত রাসায়নিক সমীকরণ লেখো।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিডের (CH3COOH) সঙ্গে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH) দ্রবণের বিক্রিয়ায় সোডিয়াম অ্যাসিটেট বা সোডিয়াম ইথানোয়েট (CH3COONa) লবণ ও জল উৎপন্ন হয়।
CH3COOH + NaOH → CH3COONa + H2O
এই বিক্রিয়ায় অ্যাসিটিক অ্যাসিডের অ্যাসিড ধর্ম প্রকাশ পায়।
22. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বর্ণ, গন্ধ, লিটমাস কাগজের ওপর ক্রিয়া ও জলে দ্রাব্যতা উল্লেখ করো। অ্যাসিটিক অ্যাসিডের ক্ষারগ্রাহিতা কত ?
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিড বর্ণহীন, ঝাঁজালো গন্ধযুক্ত তরল যা নীল লিটমাসকে লাল করে। এটি যে-কোনো অনুপাতে জলে দ্রাব্য।
অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) অণুতে একটিমাত্র প্রতিস্থাপনযোগ্য H -পরমাণু (—COOH গ্রুপের H পরমাণু) থাকায় এর ক্ষারগ্রাহিতা 1 ।
23. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয় সমীকরণসহ লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ভিনিগারের (CH3COOH) মধ্যে খাবার সোডা (NaHCO3) যোগ করলে কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) -এর সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেট (NaHCO3) -এর বিক্রিয়ায় সোডিয়াম অ্যাসিটেট (CH3COONa), CO2 ও জল উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন CO2 গ্যাস বিক্রিয়া-মিশ্রণ থেকে বুদ্বুদ আকারে নির্গত হয়।
CH3COOH + NaHCO3 → CH3COONa + CO2 ↑ + H2O
24. সোডিয়াম বাইকার্বনেট ব্যবহার করে কীভাবে ইথানল ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের মধ্যে পার্থক্য করবে?
উত্তর – ইথানলের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের কোনোরূপ বিক্রিয়া ঘটে না। কিন্তু অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় সোডিয়াম অ্যাসিটেট (CH3COONa) উৎপন্ন হয় ও বুদ্বুদ আকারে CO2 নির্গত হয়।
C2H5OH + NaHCO3 →কোনো বিক্রিয়া ঘটে না
CH3COOH + NaHCO3 → CH3COONa + CO2↑ + H2O
তাই দুটি টেস্টটিউবে পরীক্ষাণীয় তরল দুটি নিয়ে তার মধ্যে NaHCO3 যোগ করলে যে ক্ষেত্রে বুদ্বুদ আকারে গ্যাস নির্গত হবে সেই তরলটি অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং অপর তরলটি ইথানল।
25.. পানীয়রূপে ইথাইল অ্যালকোহল ব্যবহারে কী ধরনের শারীরবৃত্তীয় প্রভাব দেখা দিতে পারে?
উত্তর – পানীয়রূপে ইথাইল অ্যালকোহল ব্যবহারে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রভাব লক্ষ করা যায়। যেমন—
- অল্পমাত্রায় ইথাইল অ্যালকোহলের সেবন স্নায়বিক উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও বেশিমাত্রায় এটি গ্রহণ করলে বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ, যেমন—মাথা ধরা, ঝিমুনি, কাজে অনীহা, কথা জড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি দেখা যায়।
- বেশিমাত্রায় নিয়মিত ইথানল সেবনের ফলে মাদকাসক্তি দেখা দেয় এবং লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
- নিয়মিত ইথাইল অ্যালকোহল সেবনে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায় এবং তা থেকে হার্ট-এর সমস্যা দেখা দেয়।
26. মিথানলের বিষক্রিয়ার প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর – অত্যন্ত সামান্য পরিমাণ মিথানল সেবনও খুবই বিপজ্জনক কারণ মিথানল অত্যন্ত বিষাক্ত পদার্থ। এটি লিভারে জারিত হয়ে ফর্মালডিহাইডে পরিণত হয় যা কোশ গঠনকারী উপাদানসমূহের সাথে দ্রুত বিক্রিয়া করে প্রোটোপ্লাজমকে তঞ্চিত করে। তাছাড়া মিথানল অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অন্ধত্ব ঘটায়। দেহে বেশিমাত্রায় মিথানল প্রবেশ করলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
27. মেথিলেটেড স্পিরিট বা ডিনেচার্ড স্পিরিট কাকে বলে? এর ব্যবহার লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ডিনেচার্ড স্পিরিট কী?
ডিনেচার্ড স্পিরিটের ব্যবহার লেখো।
উত্তর – রেক্টিফায়েড স্পিরিট তথা ইথাইল অ্যালকোহলের মধ্যে বিষাক্ত মিথাইল অ্যালকোহল (প্রায় 10%) এবং সামান্য পরিমাণে উৎকট স্বাদযুক্ত পদার্থ, যেমন—পিরিডিন, কপার সালফেট, ন্যাপথা প্রভৃতি মিশিয়ে পানের অযোগ্য যে মিশ্রণ তৈরি করা হয়, তাকে মেথিলেটেড স্পিরিট বা ডিনেচার্ড স্পিরিট বলে।
শিল্পে ব্যবহারের জন্য যাতে সহজলভ্য হয় ও সস্তায় পাওয়া যায় সেই উদ্দেশ্যে ইথাইল অ্যালকোহলকে এরূপ বিষাক্ত এবং পানের অযোগ্য করে তোলা হয়।
পেন্ট ও বার্নিশের দ্রাবকরূপে এবং স্টোভ ও স্পিরিট ল্যাম্পের জ্বালানি হিসেবে মেথিলেটেড স্পিরিট ব্যবহৃত হয়।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. জৈবভঙ্গুর পলিমার হল —
(a) টেফলন
(b) পলিথিন
(c) স্টার্চ
(d) PVC
উত্তর – (c) স্টার্চ
2. নীচের কোন্ পলিমারটি জৈবভঙ্গুর নয়?
(a) স্টার্চ
(b) টেফলন
(c) সেলুলোজ
(d) প্রোটিন
উত্তর – (b) টেফলন
3. নীচের কোন্টি বায়োপলিমার নয়?
(a) স্টার্চ
(b) সেলুলোজ
(c) প্রোটিন
(d) PVC
উত্তর – (d) PVC
4. রেটিফায়েড স্পিরিটের মূল উপাদান হল –
(a) মিথাইল অ্যালকোহল
(b) ইথাইল অ্যালকোহল
(c) ফর্মালডিহাইড
(d) ইথান্যাল
উত্তর – (b) ইথাইল অ্যালকোহল
5. মদজাতীয় পানীয় প্রস্তুতিতে প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় –
(a) ইথান্যাল
(b) ইথানল
(c) প্রোপানোন
(d) প্রোপান্যাল
উত্তর – (b) ইথানল
6. ভিনিগার যেটির জলীয় দ্রবণ সেটি হল –
(a) ফর্মিক অ্যাসিড
(b) ফর্মালডিহাইড
(c) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
(d) অ্যাসিট্যালডিহাইড
উত্তর – (c) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
7. হোয়াইট লেড নামক রং প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়—
(a) ইথাইল অ্যালকোহল
(b) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
(c) মিথাইল অ্যালকোহল
(d) ফর্মালডিহাইড
উত্তর – (b) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
8. সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় বুদ্বুদ আকারে যে গ্যাসটি নির্গত হয় সেটি হল—
(a) O2
(b) H2
(c) CO
(d) CO2
উত্তর – (d) CO2
9. নীচের কোন্ জৈব যৌগটি বিষাক্ত?
(a) গ্লুকোজ
(b) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
(c) মিথানল
(d) ইথানল
উত্তর – (c) মিথানল
10. ইথিলিনের পলিমার হল —
(a) টেফলন
(b) পলিথিন
(c) পলিস্টাইরিন
(d) PVC
উত্তর – (b) পলিথিন
11. পিভিসি-এর মনোমার হল —
(a) ইথিলিন
(b) অ্যাসিটিলিন
(c) ভিনাইল ক্লোরাইড
(d) H2O
উত্তর – (c) ভিনাইল ক্লোরাইড
12. অ্যাসিটিক অ্যাসিড ও ইথাইল অ্যালকোহলের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয় —
(a) অ্যাসিটোন
(b) অ্যালডিহাইড
(c) প্রোপানল
(d) এস্টার
উত্তর – (d) এস্টার
13. ডিনেচার্ড স্পিরিটের আর-এক নাম—
(a) ইথানল
(b) রেটিফায়েড স্পিরিট
(c) মেথিলেটেড স্পিরিট
(d) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
উত্তর – (c) মেথিলেটেড স্পিরিট
14. ডিনেচার্ড স্পিরিটের মূল উপাদান—
(a) মিথানল
(b) ইথানল
(c) পিরিডিন
(d) ন্যাপথা
উত্তর – (b) ইথানল
15. সুগন্ধি দ্রব্য প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়—
(a) মিথাইল অ্যালকোহল
(b) ইথাইল অ্যালকোহল
(c) ডাইমিথাইল ইথার
(d) অ্যাসিটিক অ্যাসিড
উত্তর – (b) ইথাইল অ্যালকোহল
16. রেটিফায়েড স্পিরিটে ইথানলের পরিমাণ—
(a) ৪০%
(b) 60%
(c) 95.6%
(d) 20%
উত্তর – (c) 95.6%
17. ইথানলের সঙ্গে ধাতব সোডিয়ামের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয় —
(a) সোডিয়াম ইথানোয়েট
(b) সোডিয়াম ইথক্সাইড
(c) সোডিয়াম মিথানোয়েট
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (b) সোডিয়াম ইথক্সাইড
18. C2H6O আণবিক সংকেতযুক্ত একটি জৈব যৌগে ধাতব Na যোগ করলে H2 গ্যাস উৎপন্ন হয়। যৌগটি হবে—
(a) ভিনিগার
(b) ইথার
(c) অ্যাসিটোন
(d) ইথানল
উত্তর – (d) ইথানল
19. ডিনেচার্ড স্পিরিট-এ ইথানলের সঙ্গে কোন্টি মেশানো হয় না?
(a) CH3OH
(b) পিরিডিন
(c) CuSO4
(d) প্রোপানল
উত্তর – (d) প্রোপানল
20. NaHCO3 দ্বারা শনাক্ত করা যায় —
(a) CH3CH2OH
(b) CH3–O—CH3
(c) CH3COCH3
(d) CH3COOH
উত্তর – (d) CH3COOH
21. পাওয়ার অ্যালকোহল প্রস্তুতিতে পেট্রোলের সঙ্গে মেশানো হয় —
(a) CH3OH
(b) CH3CH2OH
(c) CH3CH2CH2OH
(d) CH3CHO
উত্তর – (b) CH3CH2OH
22, পেন্ট ও বার্নিশের দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয়—
(a) মেথিলেটেড স্পিরিট
(b) রেটিফায়েড স্পিরিট
(c) পাওয়ার অ্যালকোহল
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (a) মেথিলেটেড স্পিরিট
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. পলিথিনের মনোমারের নাম কী?
উত্তর – পলিথিনের মনোমারের নাম ইথিন বা ইথিলিন।
2. পিভিসি (PVC) কী?
উত্তর – PVC হল পলিভিনাইল ক্লোরাইড যা ভিনাইল ক্লোরাইড (CH2=CH—Cl)-এর পলিমার যৌগ।
3. পলিভিনাইল ক্লোরাইডের একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – পলিভিনাইল ক্লোরাইড ছাদের ছাউনির জন্য ব্যবহৃত ঢেউ খেলানো চাদর (corrugated roofing material) তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
4. বর্ষাতি, চপ্পল ও গামবুট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় এমন একটি পলিমারের নাম লেখো।
উত্তর – এক্ষেত্রে ব্যবহৃত পলিমারটি হল PVC (পলিভিনাইল ক্লোরাইড)।
5. টেফলনের মনোমারের নাম কী?
উত্তর –টেফলনের মনোমার হল টেট্রাফ্লুরোইথিলিন (F2C=CF2)।
6. PTFE -এর সম্পূর্ণ নাম কী?
উত্তর – পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন
7. পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিনের একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – নন্-স্টিক রান্নার বাসন প্রস্তুতিতে পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন ব্যবহার করা হয়।
৪. দুটি প্রাকৃতিক পলিমারের উদাহরণ দাও।
উত্তর – সেলুলোজ ও প্রোটিন।
9. সেলুলোজ অ্যাসিটেট কী?
উত্তর – সেলুলোজ অ্যাসিটেট হল রসায়নাগারে সেলুলোজ ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন একটি সংশ্লেষিত বায়োপলিমার।
10. প্রোটিন কী জাতীয় পলিমার?
উত্তর – প্রোটিন একটি জৈববিশ্লেষ্য পলিমার।
11. পাট, তুলো ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ তন্তু কোন্ পলিমার দ্বারা গঠিত?
উত্তর – পাট, তুলো ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ তন্তু সেলুলোজ পলিমার দ্বারা গঠিত।
12. প্রকৃতিতে জৈব পলিমার প্রোটিনের বায়োডিগ্রেডেশন হয় কীভাবে?
উত্তর – প্রকৃতিতে বিভিন্ন অণুজীব যেমন, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি দ্বারা পলিমার প্রোটিনের বায়োডিগ্রেডেশন ঘটে।
13. প্রোটিনের মনোমার কী?
উত্তর – প্রোটিনের মনোমার হল অ্যামাইনো অ্যাসিড।
14. একটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিমারের নাম লেখো।
উত্তর – একটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিমার হল পলিইথিলিন।
15. বায়োপল কী?
উত্তর – কৃত্রিম জৈবভঙ্গুর পলিমার PHB (পলিহাইড্রক্সিবিউটাইরেট)-এর বাণিজ্যিক নাম বায়োপল।
16. একটি কৃত্রিম জৈবভঙ্গুর পলিমারের উদাহরণ দাও।
উত্তর – পলিহাইড্রক্সিবিউটাইরেট (PHB)
17. ইথাইল অ্যালকোহলের একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – 95.6% ইথাইল অ্যালকোহল ও 4.4% জলের মিশ্রণ (রেটিফায়েড স্পিরিট) জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
18. রেকটিফায়েড স্পিরিট কী?
উত্তর – 95.6% ইথানল ও 4.4% জলের মিশ্রণ
19. H2SO4 দ্বারা ইথাইল অ্যালকোহলের নিরুদনে কী উৎপন্ন হয়?
উত্তর – ইথিলিন (C2H4) উৎপন্ন হয়।
20. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের একটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিডের 5-8% জলীয় দ্রবণ (ভিনিগার) মাছ, মাংস সংরক্ষণে ও আচার চাটনি প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।
21. নীল লিটমাসকে লাল করে এমন একটি জৈব যৌগের নাম লেখো।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিড নীল লিটমাসকে লাল করে।
22. ভিনিগার কী?
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিডের 5-8% জলীয় দ্রবণকে ভিনিগার বলে।
23. আচার, চাটনি ইত্যাদি প্রস্তুতিতে কোন্ জৈব যৌগ ব্যবহৃত হয়?
উত্তর – ভিনিগার (অ্যাসিটিক অ্যাসিডের জলীয় দ্রবণ) ব্যবহৃত হয়।
24. ইথানলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় এস্টার উৎপন্ন করে এমন একটি যৌগের সংকেত লেখো।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH)
25. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের মধ্যে NaHCO3 যোগ করলে কোন্ গ্যাস নির্গত হয়?
উত্তর – কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) গ্যাস নির্গত হয়।
26. NaOH -এর সঙ্গে CH3COOH -এর বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয়?
উত্তর – সোডিয়াম অ্যাসিটেট (CH3COONa) ও জল উৎপন্ন হয়।
27. গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড কাকে বলে?
উত্তর – অনার্দ্র অ্যাসিটিক অ্যাসিড 16.7°C উন্নতায় বরফের মতো সাদা কেলাসাকার কঠিনে পরিণত হয়। একে গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড বলে।
28. ডিনেচার্ড স্পিরিটের মূল উপাদান কী?
উত্তর – ডিনেচার্ড স্পিরিটের মূল উপাদান ইথাইল অ্যালকোহল।
29. ডিনেচার্ড স্পিরিটের ব্যবহার লেখো।
উত্তর – ডিনেচার্ড স্পিরিট পেন্ট ও বার্নিশের দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয়।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. পলিথিন একটি ……….. পলিমার।
উত্তর – জৈব অবিশ্লেষ্য
2. তড়িৎ পরিবাহী তারের আচ্ছাদন তৈরিতে ব্যবহৃত পলিমারটি হল ……….।
উত্তর – পলিথিন
3. PVC-র মনোমারটি হল ……….।
উত্তর – ভিনাইল ক্লোরাইড
4. গ্রামোফোন রেকর্ড তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ……….।
উত্তর – PVC
5. টেফলনে উপস্থিত হ্যালোজেনটি হল ……….।
উত্তর – ফ্লুরিন
6. পাট ও কাগজ হল ……… পলিমার।
উত্তর – জৈববিশ্লেষ্য
7. ফেনল ও ফর্মালডিহাইডের পলিমার হল ……….।
উত্তর – ব্যাকেলাইট
8. ………. পলিমারকে পোড়ালে CO, SO2, NO2 ইত্যাদি বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
উত্তর – জৈব অবিশ্লেষ্য
9. ব্যবহৃত পলিমার সামগ্রী থেকে পুনরায় পলিমার তৈরির পদ্ধতিকে বলে ……….।
উত্তর – রিসাইক্লিং
10. ইথাইল অ্যালকোহল ধাতব সোডিয়ামের সাথে ………. উয়তায় বিক্রিয়া করে ………. গ্যাস নির্গত করে।
উত্তর – সাধারণ, হাইড্রোজেন
11. পেট্রোলের সাথে …….. মিশিয়ে মোটরগাড়ির জ্বালানি পাওয়ার অ্যালকোহল প্রস্তুত করা হয়।
উত্তর – ইথানল
12. রেকটিফায়েড স্পিরিটে প্রায় ………. % ইথাইল অ্যালকোহল থাকে।
উত্তর – 95.6
13. মোটরগাড়ির রেডিয়েটরে হিমায়ন রোধকরূপে জল ও ……….. -এর মিশ্রণ ব্যবহৃত হয়।
উত্তর – ইথানল
14. টিংচার অব্ আয়োডিন প্রস্তুতিতে ……….. ব্যবহৃত হয়।
উত্তর – ইথাইল অ্যালকোহল
15. গাঢ় H2SO4 এর উপস্থিতিতে ইথানল ও ……….. এর বিক্রিয়ায় ইথাইল অ্যাসিটেট উৎপন্ন হয়।
উত্তর – অ্যাসিটিক অ্যাসিড
16. ………. অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অন্ধত্ব ঘটায়।
উত্তর – মিথানল
