wb 10th Sst

WBBSE 10th Class Social Science Solutions Geography Chapter 7 উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র

WBBSE 10th Class Social Science Solutions Geography Chapter 7 উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র

West Bengal Board 10th Class Social Science Solutions Geography Chapter 7 উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র

West Bengal Board 10th Geography Solutions

একনজরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপঞ্জি

  1. উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র: ভূপৃষ্ঠ থেকে মহাকাশে প্রেরিত উপগ্রহের সাহায্যে পৃথিবীর যে চিত্র সংগৃহীত হয়, তাকে উপগ্রহ চিত্র বা স্যাটেলাইট ইমেজ বলে। অন্যদিকে, ভূপৃষ্ঠের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে জরিপ কার্যের মাধ্যমে সংগৃহীত প্রাথমিক রাশিতথ্যের ভিত্তিতে যে মানচিত্র প্রকাশ করা হয়, তার নাম ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বা টোপোগ্রাফিক্যাল ম্যাপ।
  2. বিভিন্ন স্কেলের মানচিত্র : ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ সমগ্র দেশকে স্কেল অনুসারে তিনটি স্তরে ভাগ করেছে। এগুলি হল— (1) বৃহৎ স্কেলে বিভাগ, (2) মাঝারি স্কেলে বিভাগ, (3) ক্ষুদ্র স্কেলে বিভাগ।
  3. উপগ্রহের ধরন : পৃথিবী থেকে মহাকাশে প্রেরিত উপগ্রহগুলি দুই ধরনের হয়— (1) জিওস্টেশনারি (Geostationary) উপগ্রহ এবং (2) সান-সিনক্রোনাস (Sun-synchronous) উপগ্রহ। এরমধ্যে জিওস্টেশনারি উপগ্রহগুলির উদাহরণ হল—ইনস্যাট-1A, 1B প্রভৃতি। অন্যদিকে সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহগুলির উদাহরণ হল— IRS-1A, 1B, 1C, 1D প্রভৃতি।
  4. উপগ্রহ চিত্র তোলার বিভিন্ন পর্যায়: (1) প্রতিফলিত বা বিকিরিত সৌররশ্মি গ্রহণ করা, (2) ভূপৃষ্ঠে তথ্য প্রেরণ করা, (3) তথ্যগুলি সংশোধন করা, (4) তথ্যগুলি চিত্রায়ণ করা।
  5. উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্ব: একটি উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে একইসঙ্গে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের (30 হাজার বর্গকিমি পর্যন্ত) তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া, ভূপ্রকৃতি সংক্রান্ত তথ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত তথ্য, সমসাময়িক তথ্য, ভূমি ব্যবহার ও ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন, নগরের বিস্তার, বনভূমির অবস্থা প্রভৃতি বিভিন্ন প্রকার তথ্য উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে জানা যায়।
  6. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের গুরুত্ব : ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের গুরুত্ব ভূগোলশাস্ত্রে ও অন্যান্য বিষয়ে উল্লেখযোগ্য। যেমন—সামরিক প্রয়োজনে, একটি অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের ধারণা পাওয়ার জন্যে, গবেষণার কাজে, আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনায় প্রভৃতি।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলি

1. উপগ্রহের সেন্সরের শ্রেণিবিভাগ করো।
উত্তর – উপগ্রহের সেন্সরের শ্রেণিবিভাগ: আলোর উৎস অনুসারে সেন্সরকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়—
  1. নিষ্ক্রিয় বা নিবৃত সেন্সর (passive sensor): এই সেন্সরগুলি দিনের বেলায় বস্তুর ওপর পতিত সূর্যালোকের প্রতিফলনের সাহায্যে বস্তুর তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ গ্রহণ করে প্রতিকৃতি গঠন করে। যেমন— ফটোগ্রাফিক ক্যামেরা।
  2. সক্রিয় সেন্সর (active sensor): এই সেন্সরগুলি নিজস্ব শক্তি (যেমন— ব্যাটারি) বা আলোর সাহায্যে বস্তুর প্রতিফলন সংগ্রহ করে। এটি রাত্রিবেলায় শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। যেমন—রেডার।
2. ভারতে উপগ্রহ চিত্র কোন্ কোন্ কাজে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর – বিভিন্ন কাজে উপগ্রহ চিত্রের ব্যবহার: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (Indian Space Research Organisation) এবং জাতীয় রিমোট সেন্সিং কেন্দ্র (National Remote Sensing Centre) ভারতে উপগ্রহ চিত্র প্রস্তুত করে এবং এই সংক্রান্ত গবেষণা করে। এইসব উপগ্রহ চিত্র থেকে— (1) আবহমণ্ডলের নানা অবস্থা পর্যবেক্ষণ, (2) বন্যা ও খরার মানচিত্র অঙ্কন, (3) কৃষি ও শস্য তালিকা প্রস্তুত, (4) জলাভূমি ও ভূমি আচ্ছাদন সম্পর্কে মানচিত্র অঙ্কন, (5) উপকূলীয় ব্যবস্থাপনা, (6) পার্বত্য অঞ্চলের মানচিত্র তৈরি, (7) মাটি, বনভূমি, পতিত ভূমি, বাস্তুতান্ত্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, (৪) ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র অঙ্কন প্রভৃতি করা হয়।
3. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের বৈশিষ্ট্য: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
  1. সুনির্দিষ্ট অঞ্চল: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র কতগুলি নির্দিষ্ট স্কেল অনুযায়ী আঁকা হয়। যেমন—1:1000000, 1:250000 প্রভৃতি।
  2. সূচক সংখ্যা: প্রতিটি ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের নির্দিষ্ট একটি সূচক সংখ্যা থাকে। যেমন—72 A, 73M, 78M, 77 K/2 প্রভৃতি।
  3. প্রস্তুত ও প্রকাশনা: এই মানচিত্রগুলি ভারতে জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া তৈরি করে ও প্রকাশ করে।
  4. প্রতীক চিহ্ন: এই মানচিত্রের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলিকে নির্দিষ্ট প্রতীক চিহ্ন ও রঙের সাহায্যে আঁকা হয়।
  5. তথ্য সঞ্চয়ের প্রকৃতি: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে তথ্য অ্যানালগ আকারে সঞ্চিত থাকে। নির্দেশিকার সাহায্যে একে বিশ্লেষণ করা হয়।
  6. অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমা: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমার বিস্তৃতি উল্লেখ থাকে।
4. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের স্কেলগুলি কী?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের স্কেল: ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ সমগ্র দেশকে স্কেল অনুসারে তিনটি স্তরে ভাগ করেছে। এগুলি হল—
  1. বৃহৎ স্কেলে: ভারতীয় উপমহাদেশকে প্রথম পর্যায় 4° অক্ষরেখা এবং 4° দ্রাঘিমারেখার ভিত্তিতে 135টি গ্রিডে ভাগ করা হয়েছে। এই মানচিত্রের স্কেল হল 1 সেমিতে 10 কিমি। এই মানচিত্রগুলিকে মিলিয়ন শিট বলে।
  2. মাঝারি স্কেলে: দ্বিতীয় পর্যায়ে 4° × 4° -র প্রত্যেকটি গ্রিডকে 1°×1° হিসেবে সমান 16টি গ্রিডে ভাগ করে ইংরেজি অক্ষর A থেকে P পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। এইসব মানচিত্রের স্কেল হয় 1 সেমিতে 2.5 কিমি। এদের ডিগ্রি শিট বলে।
  3. ক্ষুদ্র স্কেলে: তৃতীয় পর্যায়ে প্রতিটি 1° × 1° শিটকে 15′ × 15’ হিসেবে সমান 16টি ভাগে ভাগ করে 1 থেকে 16 পর্যন্ত ক্রমিক সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলি ইঞ্চি শিট নামে পরিচিত। এই মানচিত্রের স্কেল হয় 2 সেমিতে 1 কিমি।
ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন স্কেলগুলিকে নীচের সারণিতে দেখানো হল—
শিটের নাম R.F. বিবৃতিমূলক স্কেল বিস্তার (অক্ষাংশ × দ্রাঘিমা) মানচিত্রের নম্বরের উদাহরণ
মিলিয়ন শিট 1 : 1000000 1 সেমিতে 10 কিমি 4° × 4° 73
সিকি ইঞ্চি বা ডিগ্রি শিট 1 : 250000 1 সেমিতে 2.5 কিমি 1° × 1° 73M
আধ ইঞ্চি বা অর্ধ ডিগ্রি শিট 1 : 100000 1 সেমিতে 1 কিমি 30′ × 30′ 73M/NE
ইঞ্জি শিট 1 : 50000 1 সেমিতে 500 মি 15′ × 15′ 73M/5
বিশেষ ধরনের ম্যাপ 1 : 25000 1 সেমিতে 250 মি 7’30” × 7’30” 73M/5/SE
5. জিওস্টেশনারি বা ভূসমলয় উপগ্রহের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর – জিওস্টেশনারি বা ভূসমলয় উপগ্রহের বৈশিষ্ট্য: ভূসমলয় উপগ্রহের বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
  1. অবস্থান: এগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 36,000 কিমি উচ্চতায় নিরক্ষরেখার ঠিক সোজাসুজি ওপরে প্রতিস্থাপন করা হয় এবং সেখানেই অবস্থান করে।
  2. আবর্তনের দিক: পৃথিবী যেদিকে ঘোরে অর্থাৎ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে; এরাও 24 ঘণ্টায় একইভাবে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।
  3. সম্পূর্ণ চিত্র সংগ্রহ: অনেক ওপরে থাকে বলে এগুলির মাধ্যমে একটি গোলার্ধের (পৃথিবীর অর্ধাংশের) সম্পূর্ণ চিত্র সংগ্রহ করা যায়।
  4. প্রচুর সংখ্যক ছবি সরবরাহ: একই জায়গায় অবস্থান করে প্রতি ঘণ্টায় এই উপগ্রহগুলি প্রচুর ছবি তুলে পাঠায়। এর ফলে আবহবিদদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সহজ হয়। ভারতে INSAT Series-এর উপগ্রহগুলি এই ধরনের।
6. সান-সিনক্রোনাস বা সূর্যসমলয় উপগ্রহের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর – সান-সিনক্রোনাস বা সূর্যসমলয় উপগ্রহের বৈশিষ্ট্য: সূর্যসমলয় উপগ্রহের বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
  1. অবস্থান: এইসব উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে 700-900 কিমি ওপরে অবস্থান করে।
  2. আবর্তনের দিক: এগুলি একটি কক্ষপথে এক মেরু থেকে অন্য মেরু পরিক্রমণ করে।
  3. ভূসম্পদ জরিপ ও সমীক্ষায় ব্যবহার: এইসব উপগ্রহগুলির দ্বারা প্রাপ্ত চিত্র ভূসম্পদ জরিপ ও সমীক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়।
  4. বিষয়ভিত্তিক মানচিত্রে ব্যবহার: বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক মানচিত্র তৈরিতে এইসব উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করা হয়। ভারতের IRS সিরিজের উপগ্রহগুলি এই ধরনের।
7. উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্ব কতখানি?
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্ব : উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্ব অসীম। এই চিত্রের বিভিন্ন গুরুত্বগুলি হল—
  1. আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য: এই চিত্র আবহাওয়ার পূর্বাভাস-সহ, ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা দেয়। এর ফলে ক্ষয়ক্ষতি এবং জীবনহানি রোধ করা যায়।
  2. পরিবেশ, ভূমি ও সম্পদ সম্পর্কে ধারণা: উপগ্রহ চিত্র ভূসম্পদের জরিপ ও বণ্টনের প্রকৃতি নির্ধারণ করে। দুর্গম ও দুর্ভেদ্য এলাকার তথ্য সংগ্রহ এবং মানচিত্র তৈরি করা ছাড়াও উপগ্রহ চিত্র অরণ্যভূমি, শস্য উৎপাদন, মাটির প্রকৃতি, ক্ষয় ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা দেয়। এর ফলে পরিবেশ এবং ভূমির ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের ধারণা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ভূমি ব্যবহার সম্পর্কে পরিকল্পনা নেওয়া সহজ হয়।
  3. উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ: আঞ্চলিক উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্ব খুব বেশি।
  4. আগামী দিনের পরিকল্পনা: পরিবেশ, আবহাওয়া ও মহাকাশ বিজ্ঞানে উপগ্রহ চিত্রের ব্যবহার আগামীদিনে যেমন আমাদের পরিকল্পনা প্রস্তুতিতে সুবিধা দেবে তেমনই সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারেও সাফল্য পাওয়া যাবে।
8. উপগ্রহ চিত্রে রঙের ব্যবহার সম্পর্কে লেখো।
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রের রঙের ব্যবহার : উপগ্রহ চিত্রে দুই ধরনের রং ব্যবহার করা হয়— (1) প্রকৃত রং এবং (2) ছদ্ম রং।
  1. প্রকৃত রঙের ব্যবহার: ভূপৃষ্ঠস্থ বস্তুগুলিকে আমরা সাধারণ চোখে যে রঙে দেখতে পাই, সেই রঙেই যদি উপগ্রহ চিত্রে ও বস্তুগুলিকে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে সেই উপগ্রহ চিত্র প্রকৃত রঙে উপস্থাপিত হয়েছে বলা যায়। এই ধরনের চিত্রে নীল, সবুজ, লাল তরঙ্গরশ্মি ও তাদের সমন্বয়কে ব্যবহার করে চিত্র প্রস্তুত করা হয়।
  2. ছদ্ম রঙের ব্যবহার: যদি প্রকৃত রঙের বদলে অন্য রং দ্বারা ভূপৃষ্ঠস্থ বস্তুগুলিকে উপগ্রহ চিত্রে দেখানো হয়, তাহলে চিত্রটিতে ছদ্ম রং ব্যবহার করা হয়েছে বলা হয়। যেমন—উদ্ভিদের রং সবুজের পরিবর্তে লাল বা লালচে রঙে প্রকাশ করা হয়।
9. উপগ্রহ চিত্র তোলার বিভিন্ন পর্যায়গুলি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – উপগ্রহ চিত্র তোলার বিভিন্ন পর্যায়: উপগ্রহ চিত্র তোলার কয়েকটি পর্যায় আছে। এগুলি হল—
  1. প্রথম পর্যায় – মহাকাশে উপগ্রহ প্রেরণ: উপগ্রহ চিত্র তোলার প্রথম পর্যায়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা বা সেন্সরযুক্ত কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাতে হয়। এজন্য উপগ্রহটিকে ভূপৃষ্ঠ থেকে রকেটের সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় প্রতিস্থাপন করা হয়।
  2. দ্বিতীয় পর্যায়— প্রতিফলিত বা বিকিরিত সৌররশ্মি গ্রহণ : এরপর কৃত্রিম উপগ্রহে যুক্ত সেন্সরগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন বস্তু বা উপাদান থেকে প্রতিফলিত সৌররশ্মির পরিমাণ বা উজ্জ্বলতার মান (Brightness Value) অনুসারে বিভিন্ন Band-এ সংখ্যার আকারে জমা করে।
  3. তৃতীয় পর্যায়— ভূপৃষ্ঠে তথ্য প্রেরণ: সংগৃহীত তথ্যগুলি এরপর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত Ground Station-এ পাঠানো হয়।
  4. চতুর্থ পর্যায় – চিত্রায়ণ: সংগৃহীত তথ্যগুলির মধ্যে যেসব ভুলত্রুটি বা অসম্পূর্ণতা থাকে সেগুলিকে সংশোধন করা হয়। নতুন Brightness Value বা উজ্জ্বলতা মান নির্ণয়-সহ আনুষঙ্গিক কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্যগুলিকে ব্যবহারের উপযোগী করে তা থেকে Image বা চিত্র তৈরি করা হয়। এই পর্যায়টির নাম Transformation । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উপগ্রহ চিত্র তৈরি করার সময় পৃথিবীর বিভিন্ন উপাদানগুলির প্রকৃত রঙের পরিবর্তে ছদ্মরঙে প্রকাশ করা হয়। একে False Colour Composite, সংক্ষেপে FCC বলা হয়।।
  5. পঞ্চম পর্যায় – GIS পদ্ধতির সাহায্যে মানচিত্রের ব্যবহার: Image তৈরি করা হলে সেটিকে ভিত্তি করে ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা বা GIS পদ্ধতির সাহায্যে প্রয়োজনমতো উদ্ভিদ মানচিত্র, জলাভূমি মানচিত্র প্রভৃতি নানা ধরনের মানচিত্র তৈরি করা হয়।
10. উপগ্রহ চিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
অথবা, উপগ্রহ চিত্রের প্রধান তিনটি বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য: উপগ্রহ চিত্রের যেসব বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়, সেগুলি হল—
  1. দূর সংবেদন ব্যবস্থা: কৃত্রিম উপগ্রহে সংস্থাপিত সংবেদকের সাহায্যে দূর থেকে বস্তুর সংস্পর্শে না এসেও সংগৃহীত তথ্য থেকে উপগ্রহ চিত্র পাওয়া যায়।
  2. উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর: এটি একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর চিত্র।
  3. সুনির্দিষ্ট স্কেল: এই চিত্র সুনির্দিষ্ট স্কেলে তৈরি করা হয়।
  4. তারিখ, সময় ইত্যাদির উল্লেখ: উপগ্রহ চিত্রে তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশনার তারিখ ও সময় আলাদা আলাদাভাবে উল্লেখ থাকে।
  5. অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমার বিস্তৃতি: উপগ্রহ চিত্রে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমার বিস্তৃতি উল্লেখ থাকে।
  6. সঠিক তথ্য: পৃথিবীপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলের নানা তথ্য সঠিকভাবে পাওয়া যায়।
  7. ছবি তোলার সময়: দিনের বেলায় সূর্যালোকের ওপর নির্ভর করে বস্তুর তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণকে কাজে লাগিয়ে ছবি তোলা যায়। রাতের বেলায় রেডারের সাহায্যে ছবি তোলা যায়।
  8. অন্যান্য: এ ছাড়া, উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে দ্রুত চিত্রগ্রহণ করা, দুর্গম অঞ্চলে জরিপ করা ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব।
11. উপগ্রহ চিত্রের ব্যবহার লেখো।
অথবা, উপগ্রহ চিত্রের তিনটি ব্যবহার আলোচনা করো। 
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রের ব্যবহার : বিভিন্ন উদ্দেশ্যে উপগ্রহ চিত্রকে ব্যবহার করা যায়। যেমন—
  1. ভূমির আবরণ ও ভূমির ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য লাভ:
    1. ভূমির শ্রেণিবিভাগ: ভূমির আবরণ সম্পর্কে জানা যায় এবং তার ভিত্তিতে ভূমির শ্রেণিবিভাগ করা যায়।
    2. মানচিত্র তৈরি : উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে ভূমি ব্যবহারের মানচিত্র তৈরি করা যায়।
    3. ভূমি ব্যবহার সংক্রান্ত পরিবর্তন: IRS Series-এর উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি থেকে ভূমির ব্যবহার সংক্রান্ত পরিবর্তন জানা যায়।
  2. আবহাওয়া, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ব্যবহার:
    1. মেঘাচ্ছন্নতার পরিমাণ: মেঘাচ্ছন্নতার পরিমাণ সম্পর্কে জানা যায়।
    2. ঝড়ের গতিপ্রকৃতি: উপগ্রহ চিত্রের থেকে ঝড়ের গঠন ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে জানা যায়।
    3. আবহাওয়ার পূর্বাভাস: আবহাওয়ার যেসব তথ্য উপগ্রহ চিত্র থেকে পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতে আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া যায়।
    4. ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ: ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
    5. আঞ্চলিক পুনর্গঠনের কাজ: বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, ভূমিধস প্রভাবিত অঞ্চলের উপগ্রহ চিত্র সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে উদ্ধার কাজ ও পুনর্গঠনের কাজে লাগে।
  3. কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার:
    1. ফসল চিহ্নিতকরণ ও মানচিত্র প্রস্তুত: বিভিন্ন ফসল চিহ্নিত করা, তাদের শ্রেণিবিভাগ করা এবং মানচিত্র প্রস্তুতে উপগ্রহ চিত্র ব্যবহৃত হয়।
    2. রোগগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত ফসল চিহ্নিতকরণ: উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে রোগগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত ফসলকে চিহ্নিত করা যায় বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
  4. অরণ্যের পরিমাপ ও সংরক্ষণ: [i] অরণ্যের অবস্থান ও আয়তন নির্ণয়, [ii] উদ্ভিদের প্রকৃতি ও প্রজাতি শনাক্তকরণ, [iii] বনভূমি ধ্বংসের পরিমাণ ও পরিবর্তন, [iv] দাবানলের কারণে উদ্ভিদের ক্ষয়ক্ষতি জানার জন্য উপগ্রহ চিত্র ব্যবহার করা হয়।
  5. অন্যান্য: [i] সমুদ্রে মাছের ঝাঁকের অবস্থান নির্ণয়, প্ল্যাংকটনের উপস্থিতি, সমুদ্রজলের উন্নতা নিরূপণ, সমুদ্রে ভাসমান হিমশৈলের অবস্থান এমনকি সমুদ্রগর্ভের ভূপ্রকৃতি নির্ণয় করার জন্যও উপগ্রহ চিত্র ব্যবহৃত হয়। [ii] উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে খনিজ সম্পদ জরিপ ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় এবং [iii] শত্রুপক্ষের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে জানা যায়।
12. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্রের পার্থক্য কী কী?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্রের পার্থক্য: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র এবং উপগ্রহ চিত্রের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল—
বিষয় ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র উপগ্রহ চিত্র
ধারণা ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি প্রচলিত প্রতীক চিহ্নের সাহায্যে মানচিত্রে প্রদর্শন করা হলে, তাকে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বলে। দূর সংবেদনের মাধ্যমে উপগ্রহ থেকে তোলা কোনো নির্দিষ্ট স্থানের চিত্র হল উপগ্রহ চিত্র।
প্রকাশের পদ্ধতি প্রচলিত প্রতীক চিহ্নের সাহায্যে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র প্রকাশ করা হয়। উপগ্রহ চিত্রে বিভিন্ন বিষয়গুলিকে প্রকৃত রং বা ছদ্ম রঙে প্রকাশ করা হয়।
তথ্য সংগ্রহের সময় কেবল দিনের বেলাতেই তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব। যে-কোনো সময় তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
স্কেল ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সব স্কেল সব সময় সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত হয় না। বিশেষ করে নদী, সড়কপথ, রেলপথ নিখুঁত স্কেলে আঁকা যায় না। নির্দিষ্ট উচ্চতায় সংস্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহগুলি অত্যাধুনিক সেন্সর ব্যবহার করে বলে এদের তৈরি মানচিত্রগুলির স্কেল ত্রুটিমুক্ত হয়।
তথ্য বিশ্লেষণ ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করা তুলনামূলকভাবে সহজ। প্রচলিত প্রতীক চিহ্ন সম্পর্কে ধারণা থাকলে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র পাঠ করা সম্ভব হয়। উপগ্রহ চিত্রের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করা বেশ জটিল। তাই এগুলির বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ মানুষের প্রয়োজন হয়।
13. জিওস্টেশনারি বা ভূসমলয় উপগ্রহ এবং সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর – জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য: জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের পার্থক্যগুলি হল—
বিষয় জিওস্টেশনারি বা ভূসমলয় উপগ্রহ সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ
উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 36000 কিমি উচ্চতায় থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 700-900 কিমি উচ্চতায় থাকে।
আবর্তন নিরক্ষরেখা বরাবর পৃথিবীর মতো সমগতিতে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘোরে। পৃথিবীর এক মেরু থেকে অন্য মেরতে অর্থাৎ উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরুতে নির্দিষ্ট বেগে পৃথিবীকে আবর্তন করে।
তথ্য সংগ্রহ পৃথিবীর গতিতে ঘোরে বলে একই দ্রাঘিমারেখায় স্থির থাকে, অর্থাৎ একই জায়গায় অবস্থান করে এবং এজন্য প্রতি ঘণ্টায় একই জায়গার বহু চিত্র সংগ্রহ করে। একই অক্ষাংশে একই স্থানীয় সময় ধরে এবং নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে তথ্য সংগ্রহ করে।
গুরুত্ব আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য ও পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই এর নাম Environmental Monitoring Satellite | বেশি উঁচুতে থাকে না বলে এর দ্বারা সংগৃহীত চিত্র থেকে ভূপৃষ্ঠের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ মেলে ফলে সহজেই ভূসম্পদ পর্যবেক্ষণ ও তার পরিবহণ বোঝা যায়। তাই এর অপর নাম Resource Monitoring Satellite |
14. টোপোগ্রাফিকাল বা ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র পাঠ ভূগোল শাস্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন?
অথবা, ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের প্রয়োজনীয়তা বা উদ্দেশ্য লেখো।
উত্তর – ভূগোলশাস্ত্রে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র পাঠ ভূগোলশাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যে- কোনো অঞ্চল সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সুস্পষ্টভাবে জানার ক্ষেত্রে এই মানচিত্রের অনস্বীকার্য ভূমিকা হল—
  1. আঞ্চলিক, সাংস্কৃতিক ও ভূপ্রাকৃতিক তথ্য: যে-কোনো অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও ভূপ্রাকৃতিক বিষয়ের সুন্দর ধারণা এই ধরনের মানচিত্র থেকে পাওয়া যায় । এতে পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, নদী উপত্যকা, হ্রদ, জলাশয়, বনাঞ্চল, রাস্তাঘাট, রেলপথ, সেতু, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, মানুষের নানা ধরনের বসতি প্রভৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে।
  2. প্রতিরক্ষার কাজে গুরুত্বপূর্ণ: প্রতিরক্ষার কাছেও এই মানচিত্রের ভূমিকা অসীম। প্রশাসনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণবা ভূপ্রকৃতিগতভাবে দুর্গম স্থানের ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র সেনাবাহিনীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য গুরুত্ব: এ ছাড়া, 3. গবেষণামূলক কাজে, 4. ভূমির ব্যবহার জানার জন্য ও 5. ভূমির ব্যবহারের পরিবর্তন জানার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
15. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের তিনটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ব্যবহার : ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের তিনটি ব্যবহার হল—
  1. সামরিক প্রয়োজনে: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় সামরিক প্রয়োজনে।
  2. ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন বা নদীর গতিপথের পরিবর্তন বোঝার জন্য: কোনো অঞ্চলের ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন বা নদীর গতিপথের পরিবর্তন বোঝার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ব্যবহার করা হয়।
  3. আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনা করার জন্য: যেহেতু ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে কোনো অঞ্চলের ভৌগোলিক, প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বোঝা যায় তাই সেই অঞ্চলের উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ব্যবহৃত হয়।
16. দূর সংবেদন ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর – দূর সংবেদন ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধাসমূহ: দূর সংবেদন ব্যবস্থার সুবিধাগুলি হল—
  1. দুর্গম অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহ: দূর সংবেদন ব্যবস্থার মাধ্যমে যে-কোনো দুর্গম অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
  2. বিস্তৃত অঞ্চলের নিঁখুত তথ্য সংগ্রহ: দূর সংবেদন ব্যবস্থার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে বিস্তীর্ণ এলাকার নিখুঁত তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
  3. আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাস প্রদান: দূর সংবেদনের মাধ্যমে আবহাওয়ার তাৎক্ষণিক পরিবর্তন সহজেই ধরা পড়ে বলে আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া যায়।
এ ছাড়াও দূর সংবেদন ব্যবস্থার মাধ্যমে জলসম্পদ, অরণ্যসম্পদ, ভূমি ব্যবহারের ধরন, ভূগর্ভস্থ সম্পদ, আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিদেশি সেনার গতিবিধি ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
অসুবিধাসমূহ: দূর সংবেদন ব্যবস্থার অসুবিধাগুলি হল—
  1. ব্যয়বহুল: দূর সংবেদন ব্যবস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও তা প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরিতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। এজন্য সব দেশ এটি ব্যবহার করতে পারে না।
  2. উন্নত প্রযুক্তি ও সুদক্ষ কর্মীর অভাব: দূর সংবেদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তি ও দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হয় বলে এর ব্যবহার খুবই সীমিত।
  3. মেঘাচ্ছন্ন আকাশ: আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে তথ্য সংগ্রহ করা অসুবিধাজনক।
এ ছাড়াও দূর সংবেদন ব্যবস্থার মাধ্যমে বস্তুর উচ্চতা নির্ণয়েও অসুবিধা হয়।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলি

1. উপগ্রহ চিত্র কাকে বলে?
অথবা, উপগ্রহ চিত্র বলতে কী বোঝ ?
অথবা, উপগ্রহ চিত্রের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর – সংজ্ঞা: পৃথিবীর চারদিকে পরিক্রমণকারী কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে ক্যামেরার সাহায্যে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের যে চিত্র সংগৃহীত হয়, তাকেই উপগ্রহ চিত্র বলে। বৈশিষ্ট্য: (1) সুনির্দিষ্ট স্কেল: এই চিত্র সুনির্দিষ্ট স্কেলে তৈরি করা হয়। (2) অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমার বিস্তৃতি: উপগ্রহ চিত্রে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমার বিস্তৃতি উল্লেখ থাকে।
2. কৃত্রিম উপগ্রহ বলতে কী বোঝ?
উত্তর – ধারণা: কৃত্রিম উপগ্রহ হল মানুষের তৈরি এক অত্যাধুনিক যন্ত্র। এই যন্ত্রটিকে ভূপৃষ্ঠ থেকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করার পর একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রতিস্থাপন করা হয়। সেখান থেকে এই উপগ্রহ একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।
3. দূর সংবেদন কী ?
উত্তর – ধারণা: দূর সংবেদন হল ভূপৃষ্ঠের কোনো বস্তু বা উপাদানকে স্পর্শ না করে দূর থেকে তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া। বৈশিষ্ট্য: সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেই বস্তু বা উপাদান সম্পর্কে ধারণা লাভ করার এটি একটি উন্নত প্রযুক্তি।
4. তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালি (Electromagnetic Spectrum) কী ?
উত্তর – ধারণা: সূর্যের আলো প্রিজমের মধ্য দিয়ে পাঠালে সাতটি রং (বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল সংক্ষেপে বেনীআসহকলা) যে চওড়া পটি সৃষ্টি করে, তাকে বলে বর্ণালি। আর যখন সৌরশক্তি বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট রশ্মিসমূহের আকারে চারিদিকে ছড়িয়ে যায়, তাকে বলে তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালি।বৈশিষ্ট্য: তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালিতে আছে দৃশ্যমান তরঙ্গ, গামা রশ্মি, X-Ray, UV-Ray প্রভৃতি।
5. নাদির বিন্দু বলতে কী বোঝ?
উত্তর – ধারণা: উপগ্রহের ঠিক নীচে, ভূপৃষ্ঠের ওপর অবস্থিত বিন্দুকে নাদির বিন্দু বলে।
6. উপগ্রহ চিত্রের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো। 
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্ব: উপগ্রহ চিত্রের দুটি গুরুত্ব হল — (1) সম্পদের বণ্টন সম্পর্কে তথ্য: উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পদের বণ্টন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। (2) আবহাওয়ার পূর্বাভাস: উপগ্রহের সাহায্যে তোলা বায়ুমণ্ডলের চিত্র আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেতে সহায়তা করে।
7. IRS উপগ্রহ সিরিজ কী?
উত্তর – ধারণা: IRS উপগ্রহ বলতে Indian Remote Sensing Satellite বোঝায়। ভারতে Remote Sensing বা দূর সংবেদনের জন্য উৎক্ষিপ্ত উপগ্রহগুলিকে প্রধানত IRS Series-এর উপগ্রহ বলে, যেমন—IRS-IA, IB, ID এবং IRS-P2, P3, P4 ইত্যাদি। বৈশিষ্ট্য: (1) IRS সিরিজের উপগ্রহ সবই সূর্যসমলয় উপগ্রহ অর্থাৎ মেরু বরাবর প্রদক্ষিণকারী উপগ্রহ। (2) এই উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে 700-900 কিমি উচ্চতায় অবস্থান করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।
৪. জিওস্টেশনারি উপগ্রহ কী ?
উত্তর – ধারণা: যেসব কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীর আবর্তন গতির সমান সময়ে (24 ঘণ্টা) পৃথিবীর চারপাশে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘোরে, তাদের জিওস্টেশনারি উপগ্রহ বলে। বৈশিষ্ট্য: এই উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে 36000 কিমি উচ্চতায় নিরক্ষীয় তল বরাবর একটি বৃত্তাকার কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। উদাহরণ: ভারতের INSAT সিরিজের উপগ্রহ।
9. সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী?
উত্তর – ধারণা: যে উপগ্রহগুলি সূর্যরশ্মির পতনকোণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণে মেরু কক্ষপথে পরিক্রমণ করে তাদের সান-সিনক্রোনাস বা সূর্যসমলয় উপগ্রহ বলে। বৈশিষ্ট্য : (1) উচ্চতা: এই উপগ্রহগুলি পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে 700-900 কিমি উচ্চতায় অবস্থান করে। (2) তথ্যের ধরন: এই ধরনের উপগ্রহগুলির মাধ্যমে সাধারণত মৎস্যসম্পদ, জলসম্পদ-সহ বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদের সন্ধান করা হয়। উদাহরণ: IRS, LANDSAT প্রভৃতি।
10. উপগ্রহ চিত্র তোলার উপযুক্ত সময় কখন?
উত্তর – উপগ্রহ চিত্র তোলার উপযুক্ত সময়: ভালো উপগ্রহ চিত্র পাওয়ার জন্য দিনের বেলা আকাশ মেঘমুক্ত ও আবহাওয়া পরিষ্কার থাকা প্রয়োজন। কারণ, সূর্যালোক যথেষ্ট থাকলে উপগ্রহ চিত্রও খুব স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে পাওয়া যায়।
11. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র কী?
অথবা, ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর – ধারণা: যে মানচিত্রে ভূপৃষ্ঠের কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক এবং সাংস্কৃতিক উপাদানগুলিকে নির্দিষ্ট রং ও প্রতীক চিহ্নের সাহায্যে, নির্দিষ্ট স্কেল, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমা ও সূচক সংখ্যা-সহ উপস্থাপন করা হয়, সেই মানচিত্রকে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বলে। বৈশিষ্ট্য: প্রধানত জরিপ কার্যের মাধ্যমে সংগৃহীত প্রাথমিক রাশিতথ্যের ভিত্তিতে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র অঙ্কন করা হয়।
12. সমোন্নতিরেখা কাকে বলে?
উত্তর – সংজ্ঞা : মানচিত্রে গড় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সমান উচ্চতাবিশিষ্ট স্থানগুলিকে যেসব কাল্পনিক রেখা দিয়ে যোগ করা হয়, তাদের সমোন্নতিরেখা বলে। বৈশিষ্ট্য: একই সমোন্নতিরেখার উচ্চতা সব জায়গায় সমান হয়।
13. ভূপৃষ্ঠে উচ্চতা কত প্রকারের হয় ও কী কী ?
উত্তর – ভূপৃষ্ঠের উচ্চতার প্রকারভেদ : ভূপৃষ্ঠ থেকে তিন রকমের উচ্চতা দেখানো যায় — (1) সমুদ্র সমতল থেকে উচ্চতা, (2) চরম বা সর্বাধিক উচ্চতা এবং (3) আপেক্ষিক উচ্চতা।
14. আপেক্ষিক উচ্চতা কাকে বলে?
উত্তর – সংজ্ঞা: কোনো একটি স্থানের উচ্চতা এবং ওই অঞ্চলের সর্বোচ্চ উচ্চতার মধ্যে যে ব্যবধান বা পার্থক্য, তাকে আপেক্ষিক উচ্চতা বলে। উদাহরণ: ‘ক’ স্থানের উচ্চতা 300 মিটার এবং সেই অঞ্চলের সর্বোচ্চ উচ্চতা 500 মিটার, সুতরাং সেখানকার আপেক্ষিক উচ্চতা (500 মিটার – 200 মিটার) = 200 মিটার।
15. R.K. 1:50000 বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – ধারণী: R.E (Representative Fraction) -এর অর্থ হল ভগ্নাংশসূচক স্কেল। R.E 1:50000 বলতে বোঝায় মানচিত্রের 1 একক দূরত্ব ভূমির 50000 একক দূরত্বের সমান বা মানচিত্রে 1 সেমি দূরত্ব ভূমিতে 50000 সেমি দূরত্বের সমান।
16. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সবুজ রং দিয়ে কী দেখানো হয়?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সবুজ রঙের অর্থ: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সবুজ রং দিয়ে বনভূমিকে দেখানো হয়। এ ছাড়াও, সবুজ রঙের নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্নের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের স্বাভাবিক উদ্ভিদ বোঝানো হয়।
17. কোন্ ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রকে সিকি মানচিত্র বলে ?
উত্তর – ধারণা: যেসব ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের স্কেল 1 ইঞ্চিতে 4 মাইল বা 1: 250000 বা 1 সেমিতে 2.5 কিমি সেইসব ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রকে সিকি মানচিত্র বলে। বৈশিষ্ট্য : সিকি মানচিত্রে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের বিস্তার 1° × 1°। একে ডিগ্রি শিটও বলে।
18. ইঞ্চি টোপোশিট বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – ধারণা: যেসব টোপো মানচিত্রের স্কেল 1 ইঞ্চিতে 1 মাইল বা 2 সেমিতে 1 কিমি বা 1:50000, সেইসব মানচিত্রকে ইঞ্চি টোপোশিট বলে। বৈশিষ্ট্য : ইঞি টোপোশিটে অক্ষাংশের বিস্তার 15’ এবং দ্রাঘিমার বিস্তার 15’ হয়।
19. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে শঙ্কু আকৃতির পাহাড়কে কীভাবে বুঝবে?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে শঙ্কু আকৃতির পাহাড় বোঝার পদ্ধতি: সমোন্নতিরেখাগুলি যদি বৃত্তাকারে প্রায় সমদূরত্বে বিন্যস্ত থাকে এবং বৃত্তের কেন্দ্রের দিকে উচ্চতা যদি ক্রমশ বাড়তে থাকে তবে তা শঙ্কু আকৃতির পাহাড়কে নির্দেশ করছে।
20. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে badland বা বদভূমিরূপ কীভাবে চেনা যায়?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে বদভূমি চেনার উপায়: গাছপালা খুব কম, এরকম জায়গায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নদী, নালী ক্ষয় ও খাত ক্ষয়ের দ্বারা অঞ্চলটিকে ক্ষয় করে সৃষ্টি হয় বদভূমিরূপ। বদভূমিরূপ অঞ্চলটিকে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে নদীর দু-পাশে ভাঙা ভাঙা রেখা দ্বারা দেখানো হয়। মূলত নালী ক্ষয় থেকেই বদভূমিরূপ তৈরি হয়।
21. স্পট হাইট কী?
উত্তর – সংজ্ঞা : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের বা বিন্দুর উচ্চতাকে স্পট হাইট বলে। বৈশিষ্ট্য : ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে স্পট হাইট বিন্দুর (●) সাহায্যে দেখানো হয়। এই বিন্দুগুলির একপাশে উচ্চতা লেখা থাকে। উচ্চতাটি ফুট অথবা মিটারে হতে পারে এবং সেটি নির্ভর করবে ওই ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের স্কেলের ওপর। উদাহরণ: যদি স্কেল মেট্রিক এককে থাকে, আর মানচিত্রে স্পট হাইট থাকে .237 তবে জায়গাটির উচ্চতা বোঝাবে 237 মিটার।
22. নিষ্ক্রিয় সেন্সর কাকে বলে?
উত্তর – সংজ্ঞা: কৃত্রিম উপগ্রহে যেসব সেন্সর ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু বা উপাদান থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রাকৃতিক উৎস অর্থাৎ সৌররশ্মির প্রতিফলনের মাধ্যমে সৃষ্ট তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ গ্রহণ করে প্রতিকৃতি তৈরি করে, তাদের নিষ্ক্রিয় সেন্সর বলে।
23. মিলিয়ন শিট মানচিত্র কী?
উত্তর – ধারণা : ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র সঠিকভাবে অঙ্কন তথা সমীক্ষার সুবিধার্থে ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ বা সার্ভে অব ইন্ডিয়া সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশকে প্রথম পর্যায়ে 4° অক্ষরেখা এবং 4° দ্রাঘিমারেখার (4° × 4°) ভিত্তিতে 135টি গ্রিডে ভাগ করেছে। এগুলি বৃহৎ পর্যায়ের মানচিত্র এবং এর স্কেল হল 1 সেমিতে 10 কিমি (R.E. = 1 : 1000000)। এই ধরনের ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রগুলিকে মিলিয়ন শিট বলে।
24. FCC কী ?
উত্তর – ধারণা : পুরো কথাটি হল False Colour Composite বা ছদ্ম রং মিশ্রণ। ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু বা উপাদানের স্বাভাবিক রং যা হয়, উপগ্রহ চিত্রে সেই রঙের পরিবর্তে বিভিন্ন ব্যান্ড (band) বা রং ব্যবহার করা হয়। একেই FCC বা False Colour Composite অর্থাৎ ছদ্ম রং মিশ্রণ বলে। অবশ্য এক্ষেত্রে সারা বিশ্বে একই রকমের রং ব্যবহৃত হয়। যেমন—লাল ব্যান্ডে সবুজ, সবুজ ব্যান্ডে লাল উপগ্রহ চিত্র তৈরি করা হয়। উদাহরণ: উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সবুজ অরণ্যকে উপগ্রহ চিত্রে লাল রঙে দেখানো হয়।
25. উপগ্রহ চিত্রের অসুবিধাগুলি কী?
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রের অসুবিধা: উপগ্রহ চিত্রের অনেক সুবিধা থাকলেও কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন— (1) মেঘাচ্ছন্নতা: আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে তথ্য সংগ্রহ করা অসুবিধাজনক। (2) উচ্চতা নির্ণায়ন: কোনো বস্তুর উচ্চতা সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় না। (3) উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর: উপগ্রহ চিত্র তৈরি করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সব দেশের পক্ষে এটি সম্ভব নাও হতে পারে।
26. এক ইঞ্চিতে এক মাইল ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – ধারণা: 1° × 1° শিট ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রকে 15’ × 15′ হিসাবে 16টি ভাগে ভাগ করা যায়। এই প্রতিটি ভাগকে 1-16 নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এগুলিকে এক ইঞ্চি শিট বলে। অনেকে একে ইঞ্চি ম্যাপ-ও বলেন। বৈশিষ্ট্য: এই মানচিত্রে 1 সেমিতে 0.5 কিমি বা 2 সেমিতে 1 কিমি হিসাবে দেখানো হয়। উদাহরণ: 72A/12 এরূপ একটি ইঞ্চি মানচিত্রের সূচক নম্বর।
27. 4° × 4°, 1° × 1°, 15′ × 15′ ব্যবধানে আঁকা টোপোশিটের সূচক উল্লেখ করো।
উত্তর – বিভিন্ন ব্যবধানে আঁকা টোপোশিটের সূচক: (1) টোপোশিট 4° × 4° ব্যবধানে আঁকা হলে সূচক নম্বর হতে পারে-54, 55, 56 ইত্যাদি। (2) টোপোশিট 1° × 1° ব্যবধানে আঁকা হলে সূচক নম্বর হতে পারে 54B, 55P, 56D ইত্যাদি। (3) টোপোশিট 15’×15’ ব্যবধানে আঁকা হলে সূচক নম্বর হতে পারে 54B/5,55P/12,56D/10 ইত্যাদি।
28. কোনো ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র দেখে কীভাবে বুঝবে সেটি সমভূমির মানচিত্র?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র দেখে সমভূমি অঞ্চল শনাক্তকরণের উপায়: (1) সমোন্নতিরেখা: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সমোন্নতিরেখার অবস্থান দেখে ভূপ্রকৃতি বোঝা যায়। যদি দেখা যায় সমোন্নতিরেখাগুলি খুব দূরে দূরে রয়েছে বা মানচিত্রে সমোন্নতিরেখার সংখ্যা খুব কম, তবে বুঝতে হবে অঞ্চলটি সমভূমি। (2) নদীর প্রবাহ: সমভূমি অঞ্চলের নদীগুলি অগভীর এবং প্রশস্ত হয়। এগুলি এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। সমভূমিতে নদীর গতিপথে প্রচুর নদীবাঁক ও অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ দেখা যায়।
29. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র দেখে কীভাবে মালভূমিকে চিহ্নিত করা যায়?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র দেখে মালভূমি অঞ্চল চিহ্নিতকরণ: (1) সমোন্নতিরেখা: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে যদি যদি মাঝে মাঝে সমোন্নতিরেখাগুলি খুব এঁকেবেঁকে যায় এবং স্থানটির উচ্চতা 400-600 মিটারের মধ্যে হয় তবে বুঝতে হবে সেটি একটি মালভূমি অঞ্চল। (2) পাহাড়ের অবস্থান: এইসব মালভূমি অঞ্চলে অনেকসময় ছোটো ছোটো গোলাকৃতি পাহাড়ের অবস্থান থাকতে পারে। (3) নদীর প্রবাহ: বেশিরভাগ মালভূমির দুটি উঁচু অংশের মধ্যে দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়।
30. উপগ্রহ চিত্রে ছদ্ম রং ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তর – উপগ্রহ চিত্রে ছদ্ম রং ব্যবহার করার কারণ: রঙের ভিত্তিতে উপগ্রহ চিত্র দুই প্রকার— (1) প্রকৃত রঙে উপস্থাপিত উপগ্রহ চিত্র ও (2) ছদ্ম রঙে উপস্থাপিত উপগ্রহ চিত্র। এর মধ্যে উপগ্রহ চিত্রে ছদ্ম রং ব্যবহার করার কারণ হল –[i] বিভিন্ন বস্তু পৃথক করা: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু বা উপাদানকে আলাদা আলাদাভাবে বোঝানো যায়। [ii] চিত্র নিখুঁত করা: উপগ্রহ চিত্র নিখুঁত করা যায় এবং [iii] তথ্য গোপন রাখা : ছদ্ম রং ব্যবহার করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান সংক্রান্ত তথ্য এবং সেনাবাহিনীর নানা কাজ সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখা যায়।
31. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র থেকে কী কী জানা যায়?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র থেকে জানা তথ্যসমূহ: ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র থেকে পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশ সম্পর্কে নানা ধরনের জ্ঞান অর্জন করা যায়। এই মানচিত্র থেকে ওই অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, নদনদী, উদ্ভিদ, শিল্প, খনিজ, জনবসতি, পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।
32. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ভারতে কারা তৈরি করে?
উত্তর – ভারতে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের প্রকাশক: ভারতে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রগুলি তৈরি করে সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ। এই সংস্থাটি 1767 সালে গঠিত হয়। এর সদর দপ্তর উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে অবস্থিত।
33. সমোন্নতিরেখাগুলির মধ্যে দূরত্ব বাড়লে বা কমলে ভূমির ঢালের কীরকম পরিবর্তন হয়?
উত্তর – সমোন্নতিরেখার দূরত্বের সাথে ভূমির ঢালের সম্পর্ক : সমোন্নতিরেখাগুলির মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বেশি হলে বুঝতে হবে যে ওই অঞ্চলের ভূমির ঢাল কম। আবার, রেখাগুলি কাছাকাছি থাকলে বুঝতে হবে ওই অঞ্চলের ভূমির ঢাল বেশি। অর্থাৎ উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক বীপরীত বা ব্যাস্তানুপাতিক।
34. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে নির্মাণ সংক্রান্ত কী কী তথ্য থাকে ?
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্য : ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ওপরে ও নীচে মানচিত্রের প্রস্তুত সংক্রান্ত যেসব তথ্য থাকে, সেগুলি হল— মানচিত্রের সূচক সংখ্যা বা টোপো মানচিত্রের নম্বর, দ্রাঘিমার বিস্তার, অক্ষাংশগত বিস্তার, জেলা, রাজ্যের নাম, জরিপের সময়, বিবৃতিমূলক স্কেল এবং ভগ্নাংশসূচক স্কেল, দুটি সমোন্নতিরেখার মধ্যে ব্যবধান, প্রশাসনিক সূচক, প্রচলিত প্রতীক চিহ্ন ও তার অর্থ প্রভৃতি।
35. ল্যান্ডস্যাট সিরিজের উপগ্রহ বলতে কী বোঝ?
উত্তর – ধারণা: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের NASA 1972 সালে ERTS (Earth Resources Technology Satellite) নামক উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে। 1975 সালে এর নাম পরিবর্তন করে LANDSAT নামকরণ করা হয়। বৈশিষ্ট্য: (1) LANDSAT সিরিজের উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠের কৃষি, জল, ভূমির ব্যবহার, অরণ্য এবং ভূখণ্ড সম্পর্কিত নানা তথ্য সংগ্রহ ও প্রেরণ করে। (2) বর্তমানে LANDSAT 7 ও 8 সক্রিয় রয়েছে এবং তথ্য সংগ্রহ করে চলেছে।
36. ভারতের কয়েকটি উৎক্ষিপ্ত উপগ্রহের নাম লেখো।
উত্তর – ভারতের উৎক্ষিপ্ত উপগ্রহ: ভারতের উৎক্ষিপ্ত প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ হল আর্যভট্ট। 1975 সালে এটি মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। এরপর ভাস্কর-1 (1979), 2 (1981) এবং আরও কয়েকটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। 1982 সালে INSAT সিরিজের উপগ্রহগুলির উৎক্ষেপণ শুরু হয়। এর মধ্যে INSAT 1A, 1B, 2A, 2B, 2C ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এরপর 1988 সাল থেকে IRS Series-এর উপগ্রহগুলি মহাকাশে পাঠানো হতে থাকে, যেমন IRS-1A, 1B ইত্যাদি।
37. ভগ্নাংশসূচক স্কেলের (R.F.) ব্যবহার উল্লেখ করো। 
উত্তর – ভগ্নাংশসূচক স্কেলের ব্যবহার: মানচিত্রে দুটি স্থানের দূরত্ব এবং ভূপৃষ্ঠে ওই দুটি স্থানের মধ্যে প্রকৃত দূরত্বের অনুপাত যখন ভগ্নাংশে প্রকাশ করা হয়, তখন তা হয় ভগ্নাংশসূচক স্কেল (R.E)।
সাধারণত ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে ভগ্নাংশসূচক স্কেলের ব্যবহার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—R.E. স্কেল = 1:10,00,000 বা 1 মিলিয়ন, এই ভিত্তিতে বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র অঙ্কন করা হয়, যাকে বলে মিলিয়ন শিট। আবার, একইভাবে R.F.=1:2,50,000 এবং R.F.=1:1,50,000, এই ভিত্তিতে যথাক্রমে মাঝারি স্কেলের মানচিত্র বা ডিগ্রি শিট এবং ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র বা ইঞি শিট আঁকা হয়।
38. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো। 
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের গুরুত্ব: (1) আঞ্চলিক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ: বিভিন্ন সম্পদ সম্পর্কে সমীক্ষা করে আঞ্চলিক উন্নয়ন সংক্রান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ ও রূপায়ণে এই মানচিত্রের গুরুত্ব রয়েছে। (2) প্রতিরক্ষা কাজে: সামরিক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কাজে এই মানচিত্রের গুরুত্ব অধিক।

বহু বিকল্পভিত্তিক উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলি

সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো

1. ‘স্যাটেলাইট’ শব্দের ফরাসি অর্থ—
(a) উপগ্রহ
(b) প্রহরী
(c) নজর
(d) দ্বাররক্ষী
উত্তর – (b) প্রহরী
2. একটি প্রাকৃতিক উপগ্রহ হল –
(a) প্লুটো
(b) পৃথিবী
(c) বৃহস্পতি
(d) চাঁদ
উত্তর – (d) চাঁদ
3. পৃথিবীর প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ হল—
(a) ইনস্যাট-1A
(b) ল্যান্ডস্যাট-1
(c) স্পুটনিক-1
(d) আর্যভট্ট
উত্তর – (c) স্পুটনিক-1
4. ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ —
(a) অ্যাপোলো-1
(b) আর্যভট্ট
(c) ইনস্যাট-1A
(d) স্পুটনিক-1
উত্তর – (b) আর্যভট্ট
5. ভারতের প্রথম মহাকাশচারী—
(a) ইউরি গ্যাগারিন
(b) ভ্যালেনন্তিনা তেরেসকোভা
(c) রাকেশ শর্মা
(d) কল্পনা চাওলা
উত্তর – (c) রাকেশ শর্মা
6. ভারত থেকে প্রেরিত কৃত্রিম উপগ্রহ হল –
(a) IRS
(b) LANDSAT
(c) SPOT
(d) Station
উত্তর – (a) IRS
7. নাসা প্রেরিত প্রথম উপগ্রহের নাম হল –
(a) IRS-1A
(b) RESOURCESAT-1
(c) NOAA
(d) Explorer – 1
উত্তর – (d) Explorer – 1
৪. ভূসমলয় উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে কত কিমি ওপরে প্রতিস্থাপন করা হয়?—
(a) 600 কিমি
(b) 6000 কিমি
(c) 12000 কিমি
(d) 36000 কিমি
উত্তর – (d) 36000 কিমি
9. মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ যেখানে প্রতিস্থাপন করা হয় তা হল—
(a) স্পট
(b) সেন্সর
(c) প্ল্যাটফর্ম
(d) ল্যান্সম্যাট
উত্তর – (c) প্ল্যাটফর্ম
10. ভারতের একটি ভূসমলয় উপগ্রহ হল—
(a) METEOSAT-1
(b) GOMS
(c) INSAT-1A
(d) GMS
উত্তর – (c) INSAT-IA
11. ভারতে উপগ্রহ চিত্র তোলার কাজ শুরু হয় —
(a) 1970 সালে
(b) 1980 সালে
(c) 1985 সালে
(d) 1990 সালে
উত্তর – (d) 1990 সালে
12. সূর্য সমলয় উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে যে উচ্চতায় থাকে—
(a) 500-700 কিমি ওপরে
(b) 700-900 কিমি ওপরে
(c) 40000 কিমি ওপরে
(d) 36000 কিমি ওপরে
উত্তর – (b) 700-900 কিমি ওপরে
13. মহাকাশে সূর্য সমলয় উপগ্রহগুলি—
(a) পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঘোরে
(b) পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘোরে
(c) উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘোরে
(d) দক্ষিণ থেকে উত্তরে ঘোরে
উত্তর – (c) উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘোরে
14. রাতে ছবি তোলার জন্য কৃত্রিম উপগ্রহে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয় —
(a) বৈদ্যুতিক ক্যামেরা
(b) বায়ব, ক্যামেরা
(c) রেডার
(d) মাল্টিস্পেকট্রাল
উত্তর – (c) রেডার
15. উপগ্রহ চিত্রে সবুজ উদ্ভিদকে যে রঙে দেখা যায় —
(a) লাল
(b) নীল
(c) সবুজ
(d) হলুদ
উত্তর – (a) লাল
16. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র আঁকা হয় —
(a) উপগ্রহ চিত্র থেকে
(b) জরিপ থেকে
(c) বিমান চিত্র থেকে
(d) এগুলির কোনোটিই নয়
উত্তর – (b) জরিপ থেকে
17. ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ বা সার্ভে অব ইন্ডিয়া স্থাপিত হয় —
(a) 1567 সালে
(b) 1767 সালে
(c) 1667 সালে
(d) 1867 সালে
উত্তর – (b) 1767 সালে
18. SPOT-1 উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হয় —
(a) 1978 সালে
(b) 1986 সালে
(c) 1990 সালে
(d) 1996 সালে
উত্তর – (b) 1986 সালে
19. ভারতীয় জরিপ বিভাগের সদর দপ্তর অবস্থিত—
(a) কলকাতায়
(b) মুম্বাই-এ
(c) দিল্লিতে
(d) দেরাদুন-এ
উত্তর – (d) দেরাদুন-এ
20. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের আন্তর্জাতিক স্কেল হল –
(a) 1 : 10,00,000
(b) 1 : 2,00,000
(c) 1 : 1,00,000
(d) 1: 50,000
উত্তর – (a) 1 : 10,00,000
21. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দক্ষিণ এশিয়া সিরিজের স্কেল হল –
(a) 1 : 10,00,000
(b) 1 : 2,00,000
(c) 1:1,00,000
(d) 1:10,000
উত্তর – (b) 1 : 2,00,000
22. ভারত এবং প্রতিবেশী দেশগুলির ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের সিরিজের স্কেল হল –
(a) 1 : 10,00,000
(b) 1 : 2,00,000
(c) 1 : 1,00,000
(d) 1 : 50,000
উত্তর – (a) 1 : 10,00,000
23. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের মিলিয়ন শিটে অক্ষাংশগত-দ্রাঘিমাগত বিস্তার থাকে—
(a) 4° × 4°
(b) 1° × 1°
(c) 30° × 30′
(d) 15′ × 15′
উত্তর – (a) 4° × 4°
24. 15′×15’ অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত বিস্তারের ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের সংখ্যাসূচক স্কেল হল—
(a) 1 : 2,50,000
(b) 1 : 1,00,000
(c) 1 : 50,000
(d) 1 : 25,000
উত্তর – (c) 1 : 50,000
25. R.F. 1 : 50,000 শিটের অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাগত বিস্তার—
(a) 4° × 4°
(b) 1° × 1°
(c) 30° × 30′
(d) 15′ × 15′
উত্তর – (d) 15′ × 15′
26. মিলিয়ন শিটে মানচিত্রের মেট্রিক স্কেল হল –
(a) 1 সেমিতে 10 কিমি
(b) 1 সেমিতে 2.5 কিমি
(c) 1 সেমিতে 1 কিমি
(d) 1 সেমিতে 500 মিটার
উত্তর – (a) 1 সেমিতে 10 কিমি
27. টোপোশিটের সূচক সংখ্যা 73 হলে স্কেল হবে—
(a) 1:50,000
(b) 1:10,00,000
(c) 1:2,50,000
(d) 1:25,000
উত্তর – (b) 1:10,00,000
28. অবলোহিত রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য থেকে পাওয়া যায় —
(a) বিমান চিত্র
(b) ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র
(c) উপগ্রহ চিত্র
(d) বিভিন্ন স্কেল
উত্তর – (c) উপগ্রহ চিত্র
29. মিলিয়ন শিট ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত বিস্তার –
(a) 15′ × 15′
(b) 30 × 30′
(c) 1° × 1°
(d) 4° × 4°
উত্তর – (d) 4° × 4°
30. একটি সান-সিনক্রোনাস বা সূর্যসমতূল্যকালীন উপগ্রহের উদাহরণ—
(a) INSAT-1A
(b) METEOSAT
(c) GEOSAT
(d) IRS-Series
উত্তর – (d) IRS-Series
31. ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)-র প্রধান কার্যালয় যেখানে অবস্থিত—
(a) দিল্লি
(b) মুম্বাই
(c) বেঙ্গালুরু
(d) হায়দ্রাবাদ
উত্তর – (c) বেঙ্গালুরু
32. উপগ্রহ চিত্রে ব্যবহৃত হয় —
(a) ফল্স কালার
(b) টু কালার
(c) বাইকালার
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (a) ফল্স কালার
33. একটি মিলিয়ন শিটের মধ্যে কতগুলি ইঞ্চি শিট থাকতে পারে?
(a) 16টি
(b) 32টি
(c) 64টি
(d) 256 টি
উত্তর – (d) 256 টি
34. কৃত্রিম উপগ্রহের কক্ষপথের অবস্থানকে বলা হয়-
(a) প্ল্যাটফর্ম
(b) সেন্সর
(c) ল্যান্ডসাট
(d) রেডার
উত্তর – (a) প্ল্যাটফর্ম
35. টোপোমানচিত্রের মিলিয়ান শিটে স্কেল থাকে—
(a) 1 : 10,00,000
(b) 1 : 25,000
(c) 1 : 50,000
(d) 1:5,00,000
উত্তর – (a) 1 : 10,00,000

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলি

শূন্যস্থান পূরণ করো

1. INSAT-1A একধরনের ………..।
উত্তর – উপগ্রহ
2. উন্নতমানের ……….. ক্যামেরা ব্যবহার করে উপগ্রহ চিত্র তোলা হয়।
উত্তর – হাই রেজোলিউশন
3. বস্তুর সংস্পর্শে না এসে দূর থেকে কোনো বস্তুর ছবি তোলাকে ………. বলে।
উত্তর – দূর সংবেদন
4. ভারতের ভূসমলয় উপগ্রহগুলি ……….. সিরিজে রয়েছে।
উত্তর – INSAT
5. আন্তর্জাতিক সিরিজে দুই গোলার্ধে মোট মানচিত্রের সংখ্যা ………..।
উত্তর – 2222টি
6. মানচিত্রে তিন ধরনের স্কেল ব্যবহৃত হয়। যথা— বিবৃতিমূলক, ভগ্নাংশসূচক ও ……….. স্কেল।
উত্তর – লৈখিক
7. শত্রুপক্ষের রেডার, মিসাইল, সেনাবাহিনীর গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে তথ্য ও চিত্র সরবরাহ করে ……….. ক্যামেরা।
উত্তর – স্পাই
৪. দূর সংবেদনে প্রতিফলিত তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ উপগ্রহের ……….. ধরা পড়ে।
উত্তর – সেন্সরে
9. উপগ্রহ চিত্রের ক্ষুদ্রতম একককে ……….. বলে।
উত্তর – পিক্সেল
10. 1° × 1° ব্যবধানে তৈরি করা ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের স্কেল হল 1: ………..।
উত্তর – 250000
11. মেরু বরাবর পর্যায়ক্রমণকারী কৃত্রিম উপগ্রহ হল ……….. উপগ্রহ।
উত্তর – সান-সিনক্রোনাস
12. ফটোগ্রাফিক ক্যামেরা একপ্রকার ……….. ক্যামেরা।
উত্তর – নিষ্ক্রিয়
13. রিমোট সেন্সিং কথাটির অর্থ হল ………..।
উত্তর – দূর সংবেদন
14. Survey of India তৈরি করে ……….. মানচিত্র।
উত্তর – ভূবৈচিত্র্যসূচক
15. INSAT-1 হল একটি ……….. উপগ্রহের উদাহরণ।
উত্তর – জিওস্টেশনারি/ভূসমলয়
16. স্পেকট্রাম বরাবর তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপের যে একক ব্যবহার করা হয় তা হল ………..।
উত্তর – মাইক্রোমিটার
17. ……….. এবং ……….. রশ্মি দূর সংবেদনে ব্যবহৃত হয় না।
উত্তর – গামা, এক্স
18. প্রধান দুর সংবেদনযোগ্য রশ্মি হল ……….. রশ্মি।
উত্তর – অবলোহিত
19. অতিবেগুনি রশ্মি ……….. স্তর দ্বারা পুরোপুরি শোষিত হয় বলে দূর সংবেদনে ব্যবহৃত হয় না।
উত্তর – ওজোন
20. ……….. সালে ভারতে IRS সিরিজের উপগ্রহগুলির উৎক্ষেপণ শুরু হয়।
উত্তর – 1988
21. RADAR একটি ……….. সেন্সর বা সংবেদকের উদাহরণ।
উত্তর – সক্রিয়
22. ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ……….. অবস্থিত।
উত্তর – বেঙ্গালুরুতে
23. উপগ্রহ চিত্রে বনভূমিকে ……….. রঙে দেখায়।
উত্তর – লাল
24. R.F. শব্দের পুরো কথা হল ………..।
উত্তর – Representative Fraction
25. ……….. স্কেল এককবিহীন স্কেল।
উত্তর – R.F.
26. দুর সংবেদন ব্যবস্থায় ……….. -এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
উত্তর – স্যাটেলাইট

The Complete Educational Website

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *