অর্থাৎ শূন্যস্থানে সমপ্রকৃতির ও সমমানের দুটি বিন্দু-আধান 1 cm ব্যবধানে থেকে যদি পরস্পরের ওপর 1 dyn বিকর্ষণ বল প্রয়োগ করে তবে প্রত্যেকটি আধানকে CGS পদ্ধতিতে একক আধান বা 1esu আধান বা 1 স্ট্যাটকুলম্ব বলা হয়।
অর্থাৎ শূন্যস্থানে সমপ্রকৃতির ও সমমানের দুটি বিন্দু-আধান 1m ব্যবধানে থেকে যদি পরস্পরের ওপর 9 × 109 N বিকর্ষণ বল প্রয়োগ করে তবে প্রত্যেক আধানকে SI-তে একক আধান বা 1C ( কুলম্ব) বলা হয়।
esu বিভব বা স্ট্যাটডোপ্ট: অসীম দূরত্ব থেকে 1 esu ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যদি 1 erg কার্য সম্পাদন করতে হয় তবে ওই বিন্দুর তড়িৎবিভবকে 1 esu বিভব বা 1 স্ট্যাটভোল্ট বলে।
ভোল্ট: অসীম দূরত্ব থেকে 1 C ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যদি 1 J কার্য সম্পাদন করতে হয় তবে ওই বিন্দুর তড়িৎবিভবকে 1 V (ভোল্ট) বলে।
1 esu ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রে অবস্থিত একটি বিন্দু থেকে অপর একটি বিন্দুতে নিয়ে যেতে যদি 1erg কার্য করতে হয় তবে ওই দুই বিন্দুর বিভবপ্রভেদকে 1 esu বিভব বা 1 স্ট্যাটভোল্ট বলা হয়।
1 volt বিভবপ্রভেদ: IC ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রে অবস্থিত একটি বিন্দু থেকে অপর একটি বিন্দুতে নিয়ে যেতে যদি 1J কার্য করতে হয় তাহলে ওই দুই বিন্দুর বিভবপ্রভেদকে 1V (ভোল্ট) বলা হয়।
স্থির তাড়িতিক শক্তি ছাড়া অন্য কোনো শক্তি (যেমন—রাসায়নিক শক্তি) তড়িৎকোশের অভ্যন্তরে ধনাত্মক আধানকে এর ঋণাত্মক মেরু থেকে ধনাত্মক মেরুতে নিয়ে যেতে কার্য করে থাকে।
সংক্ষিপ্ত। দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. ওহমের সূত্রটি বিবৃতি করো ও ব্যাখ্যা করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, যে সূত্র থেকে পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদের সঙ্গে ওর মধ্যে দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার সম্পর্ক জানা যায়, সেটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – ওহমের সূত্র: তাপমাত্রা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদের সমানুপাতিক হয়।
ব্যাখ্যা; মনে করি, কোনো পরিবাহীর দু-প্রান্ত A এবং B -এর তড়িৎবিভব যথাক্রমে VA এবং VB | VA > VB হলে A থেকে B -এর দিকে তড়িৎপ্রবাহ হবে।
তড়িৎপ্রবাহ I হলে, ওমের সূত্রানুযায়ী, I ∝ (VA – VB)
2. পরিবাহীর রোধ বলতে কী বোঝ? ওহমের সূত্র থেকে রোধের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর – যে ধর্মের জন্য কোনো পরিবাহী ওর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহকে বাধা দেয়, তাকে পরিবাহীর রোধ বলে।
কোনো পরিবাহীর দু-প্রান্তে V বিভবপার্থক্য সৃষ্টি করলে যদি এর মধ্য দিয়ে I তড়িৎপ্রবাহ হয় তবে, ওহমের সূত্র থেকে পাওয়া যায়,
V = IR বা, R = V/I
এই R ধ্রুবকটি হল পরিবাহীর রোধ। অর্থাৎ, পরিবাহীর দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ ও পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহের অনুপাতকে পরিবাহীর রোধ বলা হয়।
3. SI-তে রোধের এককের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর – SI-তে রোধের একক ও (ohm বা Ω)। 1Ω = 1 V/A । কোনো পরিবাহীর দু-প্রান্তে 1V বিভবপ্রভেদ প্রয়োগ করলে যদি পরিবাহীর মধ্য দিয়ে 1 A তড়িৎপ্রবাহ হয় তাহলে ওই পরিবাহীর রোধকে 1 Ω বলা
4. পরিবাহীর রোধের মাত্রীয় সংকেত নির্ণয় করো।
উত্তর –
5. লেখচিত্রের সাহায্যে ওহমের সূত্রকে প্রকাশ করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ওহমের সূত্রের সাহায্যে V-I লেখচিত্রটি অঙ্কন করো।
উত্তর – ওমের সূত্রানুযায়ী, V = IR। বিভবপ্রভেদ V -কে ভুজ ও পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ I -কে কোটি ধরে লেখচিত্র অঙ্কন করা হল। লেখচিত্রটি মূলবিন্দুগামী সরলরেখা।
6. ওত্মীয় পরিবাহী ও অ-ওহ্মীয় পরিবাহী কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর – ওহুমীয় পরিবাহী: যে সমস্ত পরিবাহী ওমের সূত্র মেনে চলে বা যে সমস্ত পরিবাহীর I-V লেখচিত্র মূলবিন্দুগামী সরলরেখা তাদের ওহ্হ্মীয় পরিবাহী বলা হয়। যেমন—সমস্ত ধাতব পরিবাহী।
অ-ওহুমীয় পরিবাহী: যে সমস্ত পরিবাহী ওহমের সূত্র মেনে চলে না বা যে সমস্ত পরিবাহীর I-V লেখচিত্র মূলবিন্দুগামী সরলরেখা হয় না, তাদের অ-ওহ্মীয় পরিবাহী বলা হয়। যেমন—ডায়োড, ট্রায়োড, ট্রানজিস্টার।
7. নষ্ট ভোল্ট কী? নষ্ট ভোল্টের উৎপত্তির কারণ কী?
উত্তর – সমগ্র তড়িৎবর্তনীতে বহিবর্তনীর রোধ ও অন্তর্বর্তনীর রোধের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহের সময় এই রোধগুলিকে অতিক্রম করতে প্রতিটি তড়িদাধানকে কিছু কাজ করতে হয়। অর্থাৎ প্রতিটি রোধের মধ্যে দিয়ে তড়িৎপ্রবাহের সময় কিছু তড়িৎশক্তি অন্য কোনো শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অন্তর্বর্তনীতে এই রুপান্তরিত শক্তি হল তাপশক্তি, যা আমরা কোনো ব্যাবহারিক কাজে লাগাতে পারি না। তড়িৎকোশের মধ্যে এই অপচয়ী শক্তিকেই নষ্ট ভোল্ট বলা হয়।
তড়িৎকোশের অভ্যন্তরীণ রোধের উপস্থিতিই হল নষ্ট ভোল্টের উৎপত্তির কারণ।
8. একটি সরল তড়িৎবর্তনীর অংশগুলি কী কী? সমগ্র তড়িৎবর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ কীরূপ?
উত্তর – একটি সরল তড়িৎবর্তনীর দুটি অংশ— (1) বহির্বর্তনী (কোশ বাদে বাকি অংশ) এবং (2) অন্তর্বর্তনী (কোশের অভ্যন্তরীণ অংশ)।
বর্তনীর চাবি চালু (on) করলেই বর্তনীর মধ্য দিয়ে একটি তড়িৎপ্রবাহ বহিবর্তনীতে রোধের মধ্য দিয়ে উচ্চবিভব প্রান্ত থেকে নিম্নবিভব প্রান্তের দিকে চলতে শুরু করে। অন্তর্বর্তনীতে এই প্রবাহ হয় কোশের ঋণাত্মক মেরু থেকে ধনাত্মক মেরুর দিকে।
9. একই উপাদানের তৈরি একটি সরু তার ও একটি মোটা তারের দৈর্ঘ্য সমান। তার দুটিকে একই বিভবপ্রভেদে রাখলে মোটা তারটির মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা বেশি হয় কেন?
উত্তর – একই উপাদানের তৈরি, একই দৈর্ঘ্যের সরু তারের চেয়ে মোটা তারের রোধ কম। আবার বিভবপ্রভেদ অপরিবর্তিত থাকলে তড়িৎপ্রবাহ রোধের ব্যস্তানুপাতিক। তাই মোটা তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বেশি হবে।
10. রোধাঙ্ক বলতে কী বোঝায়?
উত্তর – একক দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট কোনো ঘনকাকৃতি পরিবাহীর দুই বিপরীত পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী অংশের রোধকে ওই পরিবাহীর উপাদানের রোধাঙ্ক বলা হয়।
11. তামার রোধাঙ্ক 1.68 × 10-6Ω · cm (20°C উন্নতায়) বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – তামার রোধাঙ্ক 1.68 × 10-6Ω · cm (20°C উন্নতায়) বলতে বোঝায় 20°C উয়তায় 1cm বাহুবিশিষ্ট তামার ঘনকের দুই বিপরীত পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী অংশের রোধ 1.68 × 10-6Ω |
12. SI -তে রোধাঙ্কের একক নির্ণয় করো।
উত্তর – l দৈর্ঘ্য, A প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর উপাদানের রোষাঙ্ক ρ হলে,
13. রোধ ও রোধাঙ্কের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর – রোধ ও রোধাঙ্কের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল—
14. পরিবাহিতা কাকে বলে? পরিবাহিতার রাশিমালা লেখো। এর SI একক কী?
উত্তর – পরিবাহী যে ধর্মের জন্য ওর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ যেতে সাহায্য করে, তাকে পরিবাহীর পরিবাহিতা বলা হয়।
15. একটি রুপোর তারের প্রচ্ছেদের ক্ষেত্রফল অপরিবর্তিত রেখে দৈর্ঘ্য 1% বাড়ানো হলে রোধের কীরূপ পরিবর্তন হবে?
উত্তর – কোনো নির্দিষ্ট উপাদানের তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল অপরিবর্তিত থাকলে রোধ দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক হয়। তাই এক্ষেত্রে রুপোর তারের রোধ 1% বাড়বে।
16. তড়িতের অর্ধপরিবাহী কী? কোনো অর্ধপরিবাহীর রোধাঙ্ক-উন্নতা লেখচিত্রটি আঁকো।
উত্তর – যেসব পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা সুপরিবাহীর তুলনায় কম কিন্তু অন্তরকের তুলনায় বেশি তাদের অর্ধপরিবাহী বলা হয়।
20 নং চিত্রে তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে অর্ধপরিবাহীর রোধাঙ্কের পরিবর্তন লেখচিত্রের সাহায্যে দেখানো হয়েছে।
17. অতিপরিবাহী বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর – তাপমাত্রা হ্রাস করলে সাধারণত ধাতুর রোধাঙ্ক হ্রাস পায়। কিছু পদার্থের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে এদের তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা অপেক্ষা কম হলে রোধাঙ্ক শূন্য হয়ে যায়। এই নির্দিষ্ট উন্নতাকে পদার্থটির সংকট উন্নতা বলা হয়। এইসময় পদার্থটি অতিপরিবাহীর মতো আচরণ করে। অতিপরিবাহী তারের লুপে কোনো তড়িৎ উৎস ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল ধরে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে।
উদাহরণ: ডাচ পদার্থবিদ্ ওন্স (1911 খ্রি.) পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন, 4.2 K -এর নীচে পারদ একটি অতিপরিবাহী পদার্থ।
18. অতিপরিবাহী পদার্থের রোধাঙ্ক-উন্নতা লেখচিত্র আঁকো। অতিপরিবাহিতার একটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর – 21 নং চিত্রে অতিপরিবাহী পদার্থের উন্নতা পরিবর্তনের সঙ্গে রোধাঙ্কের পরিবর্তন লেখচিত্রের সাহায্যে দেখানো হয়েছে। লেখচিত্রে C হল সংকট উন্নতা।
অতিপরিবাহী চুম্বক হল খুব শক্তিশালী তড়িৎচুম্বক। কণা ত্বরক (particle accelerator) যন্ত্রে এই ধরনের চুম্বক ব্যবহৃত হয়।
19. তড়িতের অন্তরক কী? দৈনন্দিন জীবনে অন্তরকের ব্যবহার লেখো।
উত্তর – যেসব পদার্থের তড়িৎ পরিবহণ করার ক্ষমতা অত্যন্ত কম তাদের অন্তরক বলা হয়। যেমন—কাচ, প্লাস্টিক, রবার।
কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে পরিবাহীটিকে যদি স্পর্শ করা হয় তাহলে শক লাগে। এই শক লাগা থেকে রক্ষা করে অন্তরক পদার্থ। তাই পরিবাহী তারে সর্বদা অন্তরক পদার্থ, যেমন পলিইথিলিন-এর আবরণ দেওয়া হয়। একই কারণে ট্রেনের ওভারহেড তারে সেরামিক অন্তরক ব্যবহার করা হয়। আবার তড়িতের কাজে লাগে এমন অনেক তড়িত্যন্ত্র যেমন প্লায়ার্স, টেস্টার-এর হাতল অন্তরক পদার্থের তৈরি হয়।
20. দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত দুটি তড়িৎ অন্তরকের উল্লেখ করো।
উত্তর – দুটি তড়িৎ অন্তরক— (1) ক্রুড্রাইভারের বা টেস্টারের হাতলে প্লাস্টিক বা এবোনাইট জাতীয় অন্তরকের আচ্ছাদন, (2) সুইচ বোর্ডে লাগানো এবোনাইট বা প্লাস্টিকের সুইচ।
21. রোধের সমবায় কী? তুল্য রোধ কাকে বলে?
উত্তর – একই বর্তনীতে একাধিক রোধের সংযুক্তিকে রোধের সমবায় বলা হয়।
কোনো তড়িৎবর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্যে সংযুক্ত রোধের সমবায়ের পরিবর্তে একটিমাত্র রোধ ব্যবহার করে রোধটির দুই প্রান্তে একই বিভবপ্রভেদ প্রয়োগ করলে যদি একই তড়িৎপ্রবাহ পাওয়া যায় তবে ওই রোধকে, রোধ সমবায়ের তুল্য রোধ বলা হয়।
22. রোধের শ্রেণি সমবায় কাকে বলে?
R1 ও R2 রোধের শ্রেণি সমবায়ের তুল্য রোধ কত?
উত্তর – যদি কতকগুলি রোধ পরপর এমনভাবে যুক্ত থাকে যে, একটির শেষ প্রান্ত পরেরটির প্রথম প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং রোধ সমবায়কে কোনো তড়িত্বর্তনীতে যুক্ত করলে প্রতিটির মধ্য দিয়ে একই তড়িৎপ্রবাহ হয়, তাহলে রোধগুলির এই সমবায়কে শ্রেণি সমবায় বলা হয়।
R1 ও R2 রোধের শ্রেণি সমবায়ের তুল্য রোধ, R = R1 + R2
23. দেখাও তিনটি রোধের সমান্তরাল সমবায়ের তুল্য রোধ সমবায়ের ক্ষুদ্রতম রোধটি অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর।
উত্তর – মনে করি, R1, R2 ও R3 মানের তিনটি রোধ সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত, এদের মধ্যে R1 ক্ষুদ্রতম।
∴ রোধ তিনটির সমান্তরাল সমবায়ের তুল্য রোধ সমবায়ের ক্ষুদ্রতম রোধটি অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. অপরিবর্তিত উন্নতায় কোনো পরিবাহীর দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ V এবং পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা I হলে নীচের কোন্টি সত্য?
(a) V ∝ I
(b) V ∝ 12
(c) V ∝ 1-1
(d) V ∝ 1-2
উত্তর – (a) V ∝ I
2. একটি ওয়্মীয় পরিবাহীর I-V লেখচিত্র বিভবপ্রভেদ অক্ষের ধনাত্মক দিকের সঙ্গে θ কোণ করলে পরিবাহীর রোধ (R) হবে –
(a) R = sinθ
(b) R = costθ
(c) R = tanθ
(d) R = cotθ
উত্তর – (d) R = cotθ
3. নীচের এককগুলির মধ্যে কোন্টি রোধের SI একক?
(a) ভোল্ট
(b) অ্যাম্পিয়ার
(c) কুলম্ব
(d) ওহম
উত্তর – (d) ওহম
4. বিভবপ্রভেদ 10 V ও প্রবাহমাত্রা 5 A হলে রোধ হবে —
(a) 5 Ω
(b) 4 Ω
(c) 3 Ω
(d) 2 Ω
উত্তর – (d) 2 Ω
5. 1 V/A হল –
(a) 1 J
(b) 1 C
(c) 1 Ω
(d) 1 W
উত্তর – (c) 1 Ω
6. রোধের মাত্রীয় সংকেত হল –
(a) MLT-3I-1
(b) ML2T-3I-2
(c) ML2T-3I
(d) ML2T-2I-2
উত্তর – (b) ML2T-3I-2
7. বদ্ধ বর্তনীতে কোশের দুই প্রান্তের মধ্যে বিভবপার্থক্য কোশের অভ্যন্তরীণ রোধ বৃদ্ধির সাথে সাথে —
(a) বৃদ্ধি পায়
(b) হ্রাস পায়
(c) একই থাকে
(d) বলা সম্ভব নয়
উত্তর – (b) হ্রাস পায়
8. 25 নং চিত্রে তড়িৎকোশের EMF 5 V, অভ্যন্তরীণ রোধ 1Ω | 4Ω রোধে প্রবাহমাত্রা —
(a) 0.5 A
(b) 0.75 A
(c) 1 A
(d) 1.25 A
উত্তর – (c) 1 A
9. 26 নং চিত্রে 9 Ω রোধে প্রবাহমাত্রা 0.5 A। তড়িৎকোশের EMF 5 V হলে অভ্যন্তরীণ রোধ হল –
(a) 0.5 Ω
(b) 0.75 Ω
(c) 1 Ω
(d) 1.5
উত্তর – (c) 1 Ω
10. শর্ট সার্কিট হলে R = কত ?
(a) ∞ (অসীম)
(b) 0
(c) 106 Ω
(d) 1010 Ω
উত্তর – (b) 0
11. মুক্ত বর্তনীতে R = কত ?
(a) ∞ (অসীম)
(b) 0
(c) 10Ω
(d) 1000Ω
উত্তর – (a) ∞ (অসীম)
12. কোনো পরিবাহীর রোধ 0.1 Ω হলে পরিবাহিতা —
(a) 0.1 s
(b) 1 s
(c) 10 s
(d) 100 S
উত্তর – (c) 10 s
13. নীচের কোন্টির রোধাঙ্ক সবচেয়ে কম?
(a) সোনা
(b) রুপো
(c) তামা
(d) অ্যালুমিনিয়াম
উত্তর – (b) রুপো
14. রোধাঙ্কের মান সবচেয়ে বেশি—
(a) ধাতুর ক্ষেত্রে
(b) অন্তরকের ক্ষেত্রে
(c) অর্ধপরিবাহীর ক্ষেত্রে
(d) অতিপরিবাহীর ক্ষেত্রে
উত্তর – (b) অন্তরকের ক্ষেত্রে
15. রোধাঙ্কের মান সবচেয়ে কম—
(a) ধাতুর ক্ষেত্রে
(b) অন্তরকের ক্ষেত্রে
(c) অর্ধপরিবাহীর ক্ষেত্রে
(d) অতিপরিবাহীর ক্ষেত্রে
উত্তর – (d) অতিপরিবাহীর ক্ষেত্রে
16. তাপমাত্রা বাড়লে অর্ধপরিবাহীর রোধাঙ্ক—
(a) হ্রাস পায়
(b) বৃদ্ধি পায়
(c) প্রথমে বাড়ে ও পরে কমে
(d) প্রথমে কমে ও পরে বাড়ে।
উত্তর – (a) হ্রাস পায়
17. সবচেয়ে সুপরিবাহী ধাতু হল—
(a) সোনা
(b) রুপো
(c) অ্যালুমিনিয়াম
(d) তামা
উত্তর – (b) রুপো
18. তাপমাত্রা বাড়লে ধাতুর রোধ—
(a) প্রথমে বাড়ে, পরে কমে
(b) প্রথমে কমে, পরে বাড়ে
(c) বৃদ্ধি পায়
(d) হ্রাস পায়
উত্তর – (c) বৃদ্ধি পায়
19. উন্নতা বাড়ালে রোধ কমে যায়—
(a) অর্ধপরিবাহীর
(b) সুপরিবাহীর
(c) কুপরিবাহীর
(d) অতিপরিবাহীর
উত্তর – (a) অর্ধপরিবাহীর
20. নীচের কোন্টির রোধাঙ্ক উন্নতা বৃদ্ধির সাথে হ্রাস পায়?
(a) পরিবাহী
(b) অর্ধপরিবাহী
(c) অতিপরিবাহী
(d) অন্তরক
উত্তর – (b) অর্ধপরিবাহী
21. সংকট তাপমাত্রায় অতিপরিবাহীর রোধ হয়—
(a) অসীম
(b) শূন্য
(c) 106Ω
(d) 109Ω
উত্তর – (b) শূন্য
22. অ্যামিটার পরিমাপ করে –
(a) রোধ
(b) প্রবাহমাত্রা
(c) বিভবপার্থক্য
(d) রোধাঙ্ক
উত্তর – (b) প্রবাহমাত্রা
23. রোধের শ্রেণি সমবায়ে প্রতিটি রোধের ক্ষেত্রে অপরিবর্তিত থাকে—
(a) বিভবপ্রভেদ
(b) ব্যয়িত ক্ষমতা
(c) তড়িৎপ্রবাহ
(d) কোনোটিই নয়।
উত্তর – (c) তড়িৎপ্রবাহ
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. SI-তে রোধের একক কী?
উত্তর – SI-তে রোধের একক হল Ω (ohm)।
2. চাপ প্রয়োগে রোধ বৃদ্ধি পায় এমন দুটি ধাতুর নাম লেখো।
উত্তর – লিথিয়াম (Li), ক্যালশিয়াম (Ca) – এই ধাতু দুটির রোধ প্রয়োগে বৃদ্ধি পায়।
3. চাপ প্রয়োগে রোধ কমে যায় এমন একটি অধাতুর নাম লেখো।
উত্তর – চাপ প্রয়োগে কার্বনের রোধ কমে যায়।
4. আপতিত আলোর তীব্রতা বাড়ালে রোধ কমে যায় এমন একটি ধাতুর নাম লেখো।
উত্তর – সেলেনিয়াম ধাতুর ওপর আপতিত আলোর তীব্রতা বাড়ালে রোধ কমে।
5. চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে বিসমাথের রোধের কীরূপ পরিবর্তন হয়?
উত্তর – চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে বিসমাথের রোধ বাড়ে।
6. কার্বনের ওপর চাপ বাড়ালে রোধের কীরূপ পরিবর্তন হয়?
উত্তর – কার্বনের ওপর চাপ বাড়ালে রোধ কমে যায়।
7. ওহ্মীয় পরিবাহীর উদাহরণ দাও।
উত্তর – সমস্ত ধাতব পরিবাহী হল ওহ্মীয় পরিবাহী।
৪. তিনটি অ-ওহ্হ্মীয় পরিবাহীর উদাহরণ দাও।
উত্তর – তিনটি অ-ওহ্মীয় পরিবাহীর উদাহরণ হল—ডায়োড, ট্রায়োড ও ট্রানজিস্টার।
9. সমান দৈর্ঘ্যের দুটি মোটা ও সরু তামার তারের মধ্যে কোন্টির রোধ বেশি?
উত্তর – সমান দৈর্ঘ্যের দুটি মোটা ও সরু তামার তারের মধ্যে সরু তারের রোধ বেশি কারণ সরু তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল মোটা তারের তুলনায় কম
10. একই পরিবাহী পদার্থের একটি সরু তার ও একটি মোটা তারের দৈর্ঘ্য সমান। একই বিভবপ্রভেদে রাখলে তাদের কোন্টির মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বেশি হবে?
উত্তর – মোটা তারটির মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বেশি হবে।
11. উন্নতা ও ব্যাস স্থির রেখে একটি তারের দৈর্ঘ্য তিনগুণ করা হল। তারের রোধের কি পরিবর্তন হবে?
উত্তর – হ্যাঁ, তারের রোধের পরিবর্তন হবে। উন্নতা ও ব্যাস (বা প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল) স্থির থাকলে কোনো পরিবাহীর রোধ, দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক হয়। তাই এক্ষেত্রে তারের রোধ তিনগুণ হবে।
12. দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করলে রোধাঙ্কের কীরূপ পরিবর্তন হয়?
উত্তর – দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করলে রোধাঙ্ক অপরিবর্তিত থাকে।
13. একটি তারকে দু-ভাগে ভাগ করলে রোধাঙ্কের কী পরিবর্তন হবে?
উত্তর – একটি তারকে দু-ভাগে ভাগ করলে তারের রোধাঙ্ক অপরিবর্তিত থাকবে।
14. তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে ধাতুর রোধাঙ্কের কীরূপ পরিবর্তন হয়?
উত্তর – তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে ধাতুর রোধাঙ্ক বৃদ্ধি পায়।
15. SI-তে রোধাঙ্কের একক কী?
উত্তর – SI-তে রোধাঙ্কের একক Ω · m |
16. রোধাঙ্কের অন্যোন্যকে কী বলে?
উত্তর – রোধাঙ্কের অন্যোন্যকে পরিবাহিতাঙ্ক বলে।
17. SI-তে পরিবাহিতাঙ্কের একক কী?
উত্তর – SI-তে পরিবাহিতাঙ্কের একক S · m-1 |
18. কোনো পরিবাহীর রোধাঙ্ক 4 × 10-8 Ω · m হলে পরিবাহিতাঙ্ক কত?
উত্তর – কোনো পরিবাহীর রোধাঙ্ক 4 × 10-8 Ω · m হলে পরিবাহীর পরিবাহিতাঙ্ক
19. রোধের অন্যোন্য রাশিটির নাম কী?
উত্তর – রোধের অন্যোন্য রাশিটি হল পরিবাহিতা (conductance)।
20. SI -তে পরিবাহিতার একক কী?
উত্তর – SI -তে পরিবাহিতার একক S (siemens)।
21. কোনো পরিবাহীর রোধ 100 Ω হলে পরিবাহিতা কত?
উত্তর – কোনো পরিবাহীর রোধ 100 Ω হলে পরিবাহীর পরিবাহিতা
22. তড়িতের সুপরিবাহী কাকে বলে?
উত্তর – যেসব পদার্থ সহজে তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে তাদের তড়িতের সুপরিবাহী বলা হয়।
23. তড়িতের সুপরিবাহী এরূপ দুটি ধাতুর নাম লেখো।
উত্তর – তড়িতের সুপরিবাহী দুটি ধাতু হল–লোহা ও তামা।
24. তড়িতের সুপরিবাহী এরুপ একটি অধাতুর নাম লেখো।
উত্তর – তড়িতের সুপরিবাহী অধাতুটি হল গ্রাফাইট।
25. তড়িতের অন্তরক দুটি পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর – তড়িতের অন্তরক দুটি পদার্থ হল—কাঠ, পলিথিন।
26. একটি অর্ধপরিবাহীর উদাহরণ দাও।
উত্তর – একটি অর্ধপরিবাহীর উদাহরণ হল—জারমেনিয়াম। এছাড়া অপর একটি অর্ধপরিবাহী হল সিলিকন।
27. কোন্ তাপমাত্রায় কোনো ধাতব পরিবাহীর রোধ শূন্য হয়?
উত্তর – সংকট তাপমাত্রায় কোনো ধাতব পরিবাহীর রোধ শূন্য হয়।
28. সংকট উন্নতার কম উন্নতায় কোনো পরিবাহীর রোধাঙ্কের মান কত?
উত্তর – সংকট উন্নতার কম উন্নতায় কোনো পরিবাহীর রোধাঙ্কের মান শূন্য।
29. উয়তা বাড়লে রোধ কমে যায় এমন একটি পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর – উন্নতা বাড়লে রোধ কমে যায় এমন একটি পদার্থের নাম হল Ge (জারমেনিয়াম)।
30. উন্নতার বৃদ্ধিতে অর্ধপরিবাহীর রোধ কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
উত্তর – উন্নতার বৃদ্ধিতে অর্ধপরিবাহীর রোধ হ্রাস পায়।
31. বৈদ্যুতিক (electrical) ও বৈদ্যুতিন (electronics)—এই দুই ধরনের সরঞ্জামের মধ্যে কোন্ ক্ষেত্রে অর্ধপরিবাহী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর – বৈদ্যুতিন-এর ক্ষেত্রে অর্ধপরিবাহী ব্যবহার করা হয়।
32. একটি তড়িৎকোশ বাহ্যিক রোধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে বাহ্যিক রোধে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ কী?
উত্তর – একটি তড়িৎকোশ বাহ্যিক রোধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে বাহ্যিক রোধে তড়িৎকোশের ধনাত্মক মেরু থেকে ঋণাত্মক মেরুর দিকে তড়িৎপ্রবাহ হয়।
33. কোনো তড়িৎকোেশ যখন বাহ্যিক রোধের সঙ্গে যুক্ত থাকে তখন কোশের অভ্যন্তরে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ কী?
উত্তর – কোনো তড়িৎকোশ যখন বাহ্যিক রোধের সঙ্গে যুক্ত থাকে তখন তড়িৎকোশের অভ্যন্তরে ঋণাত্মক মেরু থেকে ধনাত্মক মেরুর দিকে তড়িৎপ্রবাহ হয়।
34. তড়িৎকোশের অভ্যন্তরে যে বিভব পতন হয় তাকে কী বলে?
উত্তর – তড়িৎকোশের অভ্যন্তরে যে বিভব পতন হয় তাকে নষ্ট ভোল্ট বলা হয়।
35. E তড়িৎচালক বলবিশিষ্ট একটি তড়িৎকোশের সঙ্গে যুক্ত R রোধের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা I হলে, নষ্ট ভোল্টের মান কত?
উত্তর – নষ্ট ভোল্টের মান = E – IR |
36. E তড়িৎচালক বলবিশিষ্ট একটি তড়িৎকোশের অভ্যন্তরীণ রোধ r | কোশযুক্ত বর্তনীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা I হলে, বহিবর্তনীর রোধের দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ কত?
উত্তর – বহিবর্তনীর রোধের দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ = E – Ir
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. কোনো পরিবাহীর দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ পরিবর্তন করলে পরিবাহীর ……… পরিবর্তন হবে।
উত্তর – প্রবাহমাত্রা
2. ধাতব পরিবাহীর I-V লেখচিত্রের প্রকৃতি হল ………..।
উত্তর – সরলরেখা
3. কোনো তড়িৎকোশের অভ্যন্তরীণ রোধ r ও প্রবাহমাত্রা I হলে rI হল ………..।
উত্তর – নষ্ট ভোল্ট
4. একটি তড়িৎকোশের তড়িদ্বার দুটির ব্যবধান কমলে অভ্যন্তরীণ রোধ ……….. পায়।
উত্তর – হ্রাস
5. কোনো পরিবাহীর দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল ও উপাদানের ওপর পরিবাহীর ………. নির্ভরশীল।
উত্তর – রোধ
6. উপযুক্ত অপদ্রব্য ব্যবহার করলে অর্ধপরিবাহীর রোধাঙ্ক ……… পায়।
উত্তর – হ্রাস
7. তাপমাত্রা হ্রাস করলে ধাতুর রোধাঙ্ক ………. পায়।
উত্তর – হ্রাস
8. ধাতুর রোধাঙ্ক অর্ধপরিবাহীর তুলনায় ………..।
উত্তর – কম
9. Ω · cm হল …………. -এর ব্যাবহারিক একক।
উত্তর – রোধাঙ্ক
10. শক লাগার হাত থেকে বাঁচার জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রের হাতল ……….. পদার্থের তৈরি হয়।
উত্তর – অন্তরক
TOPIC – C তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল ও তড়িৎক্ষমতা
সংক্ষিপ্ত / দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল-সংক্রান্ত জুলের সূত্রগুলি লেখো।
উত্তর – 1841 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ পদার্থবিদ জেমস প্রেসকট জুল তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল-সংক্রান্ত তিনটি সূত্র প্রকাশ করেন। সূত্রগুলি হল-
- প্রবাহমাত্রার সূত্র: কোনো পরিবাহীর রোধ (R) ও তড়িৎপ্রবাহের সময় (t) স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H), প্রবাহমাত্রার (I) বর্গের সমানুপাতিক।
অর্থাৎ H ∝ I2 [যখন R এবং t ধ্রুবক]।
- রোধের সূত্র: কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা (I) ও তড়িৎপ্রবাহের সময় (t) স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H), পরিবাহীর রোধের (R) সমানুপাতিক।
অর্থাৎ H ∝ R [যখন I এবং t ধ্রুবক]।
- সময়ের সূত্র: কোনো পরিবাহীর রোধ (R) ও প্রবাহমাত্রা (I) স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H), তড়িৎপ্রবাহের সময়ের (t) সমানুপাতিক।
অর্থাৎ H ∝ t [যখন R এবং I ধ্রুবক]।
2. জুলের সূত্র থেকে তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্কের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর – একক রোধের কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে একক তড়িৎপ্রবাহ একক সময় ধরে পাঠালে যে তাপ উৎপন্ন হয় তার অন্যোন্যকে তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্ক বা জুল তুল্যাঙ্ক বলা হয়।
3. তড়িৎপ্রবাহের ফলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহের ফলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ যে বিষয়গুলির ওপর নির্ভর করে সেগুলি হল— (1) পরিবাহীতে প্রবাহমাত্রা, (2) পরিবাহীর রোধ এবং (3) পরিবাহীতে প্রবাহ চলার সময়।
4. একটি ধাতব তারের মধ্যে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা তিনগুণ করা হলে একই সময়ে উৎপন্ন তাপ কতগুণ হবে?
উত্তর – ধাতব তারের রোধ এবং তড়িৎপ্রবাহের সময়কাল স্থির থাকলে তড়িৎপ্রবাহের ফলে তারে উৎপন্ন তাপ প্রবাহমাত্রার বর্গের সমানুপাতিক হয় অর্থাৎ H ∝ I2 [ যখন R এবং t স্থির]। এক্ষেত্রে তারটির কোনো পরিবর্তন হয় না, তাই এর রোধ স্থির। সেজন্য প্রবাহমাত্রা 3 গুণ করলে একই সময়ে উৎপন্ন তাপ 32 বা 9 গুণ হবে।
5. একই উপাদান ও একই প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলযুক্ত দুটির তারের প্রথমটির দৈর্ঘ্য, দ্বিতীয়টির তুলনায় বেশি। উভয় তারের মধ্য দিয়ে একই সময় ধরে একই তড়িৎপ্রবাহ পাঠানো হলে কোন্টি বেশি উত্তপ্ত হবে?
উত্তর – একই প্রস্থচ্ছেদ ও একই উপাদানের তারের রোধ তারের দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক হয়। ফলে লম্বা তারটির রোধ ছোটো তারটির রোধ অপেক্ষা বেশি হবে। আমরা জানি, প্রবাহমাত্রা ও প্রবাহকাল স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ পরিবাহীর রোধের সমানুপাতিক। সুতরাং, যেহেতু একই প্রবাহমাত্রা একই সময় ধরে দুটি তারে পাঠানো হচ্ছে, তাই লম্বা তারটির রোধ বেশি হওয়ায় এতে উৎপন্ন তাপ বেশি হবে। ফলে লম্বা তারটি বেশি গরম হবে।
6. একটি ধাতব তারের দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ দ্বিগুণ করা হলে, একই সময়ে উৎপন্ন তাপ কতগুণ হবে?
উত্তর – ধাতব তারের রোধ এবং তড়িৎপ্রবাহকাল স্থির থাকলে তড়িৎপ্রবাহের ফলে তারে উৎপন্ন তাপ তারের দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদের বর্গের সমানুপাতিক হয়। সেজন্য বিভবপ্রভেদ দ্বিগুণ করলে উৎপন্ন তাপ 22 বা 4 গুণ হবে।
7. সমান দৈর্ঘ্যের একটি মোটা ও একটি সরু তামার তারের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহমাত্রা একই সময় ধরে পাঠালে কোন্ তারটি বেশি গরম হবে তা যুক্তিসহ লেখো।
উত্তর – সমান দৈর্ঘ্যের একটি সরু এবং একটি মোটা তামার তারের মধ্যে সরু তারটির রোধ বেশি। আমরা জানি, প্রবাহমাত্রা এবং প্রবাহকাল স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ পরিবাহীর রোধের সমানুপাতিক। সুতরাং, যেহেতু একই প্রবাহমাত্রা একই সময় ধরে উভয় তারে পাঠানো হচ্ছে, তাই সরু তারটির রোধ বেশি হওয়ায় এতে উৎপন্ন তাপ বেশি হবে। ফলে সরু তার বেশি গরম হবে।
8. একই প্রকার দুটি তারের মধ্য দিয়ে একই তড়িৎপ্রবাহ যথাক্রমে 1 মিনিট এবং 5 মিনিট ধরে পাঠানো হল। দ্বিতীয় তারে উৎপন্ন তাপ প্রথম তারে উৎপন্ন তাপের কত গুণ হবে?
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহমাত্রা এবং পরিবাহীর রোধ অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ প্রবাহকালের সমানুপাতিক হয়। যেহেতু একই প্রকার দুটি তারের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহমাত্রা যথাক্রমে 1 মিনিট এবং 5 মিনিট ধরে পাঠানো হচ্ছে এবং দ্বিতীয় তারের প্রবাহকাল প্রথম তারের প্রবাহকাল অপেক্ষা 5 গুণ হওয়ায় দ্বিতীয় তারে উৎপন্ন তাপ প্রথম তারে উৎপন্ন তাপের 5 গুণ হবে।
9. তড়িৎপ্রবাহ বিপরীত অভিমুখী করা হল পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপের কী পরিবর্তন হবে?
অনুরূপ প্রশ্ন, একটি তারের মধ্য দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এবং সমান রোধের আর-একটি তারের মধ্য দিয়ে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে তড়িৎ প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে দুটি তারে উৎপন্ন তাপের পরিমাণ কি একই হবে?
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহের ফলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপের পরিমাণ তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখের ওপর নির্ভর করে না। জুলের সূত্রানুযায়ী, পরিবাহীর রোধ (R) ও সময় (t) অপরিবর্তিত থাকলে উৎপন্ন তাপ (H) প্রবাহমাত্রার (I) বর্গের সমানুপাতিক। তাই প্রবাহমাত্রা বিপরীত অভিমুখী করলেও উৎপন্ন তাপের পরিমাণ একই হবে।
10. কোনো পরিবাহীতে dc -এর পরিবর্তে ac পাঠালে তাপ উৎপন্ন হবে কি?
উত্তর – জুলের সূত্রানুযায়ী, পরিবাহীর রোধ ও প্রবাহের সময় অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H) প্রবাহমাত্রার (I) বর্গের সমানুপাতিক। কোনো পরিবাহীতে dc -এর পরিবর্তে ac পাঠালে ac প্রবাহে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অভিমুখ বিপরীতমুখী হলেও প্রবাহমাত্রার বর্গ বা I2 রাশিটি ধনাত্মক হয়। তাই কোনো পরিবাহীতে dc -এর পরিবর্তে ac পাঠালেও তাপ উৎপন্ন হবে।
11. বৈদ্যুতিক বাল্ব, হিটার, ইস্ত্রি প্রভৃতি যন্ত্র ac এবং dc উভয় প্রবাহেই কাজ করে কেন?
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহের ফলে পরিবাহীতে তাপ উৎপন্ন হয়—এই নীতির ওপর ভিত্তি করে বৈদ্যুতিক বাল্ব, হিটার, ইস্ত্রি প্রভৃতি যন্ত্র কাজ করে। তড়িৎপ্রবাহের ফলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ প্রবাহমাত্রা, রোধ ও প্রবাহের সময়ের ওপর নির্ভরশীল। ac প্রবাহে নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রবাহ বিপরীতমুখী হলেও প্রবাহমাত্রার বর্গ বা I2 রাশিটি ধনাত্মক হয়। তাই ac বা dc উভয় প্রবাহেই ওই যন্ত্রগুলি কাজ করে।
12. কার্যনীতিসহ বৈদ্যুতিক বাতির বর্ণনা দাও।
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফলের ব্যাবহারিক প্রয়োগের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল বৈদ্যুতিক বাতি। একটি সিল করা কাচের বাল্বের মধ্যে দুটি মোটা পরিবাহী তার প্রবেশ করানো থাকে। এই তার দুটির প্রান্তর সঙ্গে টাংস্টেন নির্মিত একটি লম্বা ফিলামেন্ট থাকে। তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে ফিলামেন্টটি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয় এবং ভাস্বর হয়ে আলো দেয়। টাংস্টেনের গলনাঙ্ক বেশি (3380°C) হওয়ায় উচ্চ তাপমাত্রাতেও এটি গলে যায় না। আবার এটি যাতে জারিত হতে না পারে সেইজন্য বাল্বটি কোনো নিষ্ক্রিয় গ্যাস যেমন আর্গন বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নাইট্রোজেন গ্যাস দ্বারা পূর্ণ করা হয়। বর্তমানে ফিলামেন্টটি টাংস্টেনের পরিবর্তে উলফ্রেমাইটের (টাংস্টেন, লোহা ও ম্যাঙ্গানিজের সংকর ধাতু) তৈরি হয়।
13. বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্ট টাংস্টেনের তৈরি হয় কেন?
উত্তর – টাংস্টেনের গলনাঙ্ক (3380°C) বেশি হওয়ায় উচ্চ তাপমাত্রাতেও এটি গলে না। এ ছাড়া টাংস্টেনের রোধাঙ্কও বেশি হওয়ায়, তারের রোধ বেশি হয় এবং তড়িৎপ্রবাহে অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে আলো বিকিরণ করে। আবার টাংস্টেন ধাতু দিয়ে সরু ও লম্বা তার তৈরি করা যায়। এইসব কারণে বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্ট টাংস্টেনের তৈরি হয়।
14. বৈদ্যুতিক বাল্ব বায়ুশূন্য বা বায়ুপূর্ণ না করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা নাইট্রোজেন পূর্ণ করা হয় কেন?
উত্তর – কোনো বৈদ্যুতিক বাল্ব বায়ুশূন্য করলে ফিলামেন্টটি উচ্চ তাপমাত্রায় বাষ্পীভূত হয়, তাই কিছুদিন পরে ফিলামেন্টটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ফেটে যায় এবং বাষ্পীভূত হয়ে বাল্বের ভিতরের দেয়ালে একটি আস্তরণ তৈরি করে। এর ফলে কাচের স্বচ্ছতা কমে যায় এবং বালবের উজ্জ্বলতা হ্রাস পায়। আবার বাল্বটি বায়ুপূর্ণ করা হলে উচ্চ তাপমাত্রায় বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা ফিলামেন্টটি জারিত হয়ে ধাতব অক্সাইড উৎপন্ন করে এবং বালবের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এইসব কারণে বৈদ্যুতিক বাল্বে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা নাইট্রোজেন গ্যাস পূর্ণ করা হয়। ফলে ফিলামেন্টের জারিত হবার সম্ভাবনা থাকে না এবং বাষ্পীভবন খুব কম হওয়ার জন্য বাল্ব বেশি দিন চলে।
15. বৈদ্যুতিক বাল্বে যে দুটি মোটা পরিবাহী তারের প্রান্তে ফিলামেন্টটি যুক্ত করা থাকে সেই তারে একই তড়িৎপ্রবাহ যাওয়া সত্ত্বেও আলো বিকিরণ করে না কেন?
উত্তর – বৈদ্যুতিক বাল্বে যে দুটি মোটা পরিবাহী তারের প্রান্তে ফিলামেন্টটি যুক্ত থাকে সেই তার দুটির দৈর্ঘ্য কম এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বেশি হওয়ায় রোধ কম হয়। রোধ কম হওয়ার জন্য একই তড়িৎপ্রবাহ যাওয়া সত্ত্বেও তার দুটি কম উত্তপ্ত হয়, তাই আলো বিকিরণ করে না।
16. কার্যনীতিসহ বৈদ্যুতিক হিটারের বর্ণনা দাও।
উত্তর – বৈদ্যুতিক হিটারে একটি ধাতব পাত্রের মধ্যে তড়িতের কুপরিবাহী পদার্থ, যেমন অভ্র বা ফায়ার ক্লে নির্মিত একটি খাঁজকাটা গোল চাকতি থাকে। ওই খাঁজের মধ্যে নাইক্রোম (Ni, Cr ও Fe এর সংকর ধাতু) নির্মিত একটি লম্বা তারকে স্প্রিং-এর মতো পেঁচিয়ে বসানো হয়। নাইক্লোম তারের দুই প্রান্ত প্লাগের সাহায্যে বৈদ্যুতিক লাইনে যুক্ত করলে নাইক্রাম তারের কুণ্ডলীটি উত্তপ্ত হয়ে লাল হয়ে যায়। নাইক্রোমের রোধাঙ্ক বেশি, তাই বেশি উত্তপ্ত হয় এবং এটি সহজে জারিত হয় ন্য এ ছাড়া নাইক্রোমের গলনাঙ্ক বেশি, তাই এইসব কারণে হিটারে নাইক্রোম তার ব্যবহৃত হয়। ফায়ার ক্লে বা অভ্রের চাকতির ওপর তাপ সহনশীল পদার্থ যেমন পোর্সেলিনের পাটাতন থাকে যার ওপর রান্নার সামগ্রী রাখা হয়, ফলে রান্নার সামগ্রীর সঙ্গে তড়িৎ সংযোগ ঘটার সম্ভাবনা থাকে না।
17. একটি বৈদ্যুতিক হিটারে যদিও অনবরত তাপ উৎপন্ন হয়, কিন্তু হিটারটি জ্বালানোর কিছুক্ষণ পরেই তার উন্নতা স্থির হয়ে যায়। এর কারণ কী?
উত্তর – একটি বৈদ্যুতিক হিটারে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে হিটারের কুণ্ডলীতে জুলের সূত্রানুযায়ী তাপ উৎপন্ন হয় এবং কুণ্ডলীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, ফলে পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে হিটারের কুণ্ডলীর তাপমাত্রার পার্থক্য বাড়তে থাকে। এই উন্নতার পার্থক্য যত বেশি হয় কুণ্ডলীর তাপ বিকিরণের হারও তত বেশি হয়। এইভাবে তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে কুণ্ডলীর তাপমাত্রা এমন হয় যে, কুণ্ডলীতে যে হারে তাপ উৎপন্ন হয়, কুণ্ডলী সেই হারে তাপ বিকিরণ করে। এই অবস্থায় কুণ্ডলীর তাপমাত্রা আর বাড়ে না, একটি নির্দিষ্ট মানে স্থির হয়ে যায়।
18. বৈদ্যুতিক হিটারে নাইক্রোম তার ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তর – নাইক্রোম হল নিকেল, ক্রোমিয়াম ও লোহার সংকর ধাতু। নাইক্রোমের রোধাঙ্ক বেশি তাই বেশি উত্তপ্ত হয় ও গলনাঙ্ক (প্রায় 1400°C) বেশি তাই উত্তপ্ত অবস্থাতে এটি গলে যায় না। তা ছাড়া উচ্চ তাপমাত্রাতেও এটি সহজে জারিত হয় না। এইসব কারণে হিটারে নাইক্লোম তার ব্যবহার করা হয়।
19. বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্ট আলো বিকিরণ করে কিন্তু হিটারের কুণ্ডলী আলো বিকিরণ করে না কেন?
উত্তর – বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্ট খুব সরু টাংস্টেনের তৈরি। আবার হিটারের কুণ্ডলী নাইক্রোমের তৈরি, এটির প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বেশি অর্থাৎ ফিলামেন্টের তুলনায় মোটা। ফলে বাতির ফিলামেন্টের রোধ তুলনামূলকভাবে বেশি। রোধ বেশি হওয়ার জন্য ফিলামেন্ট বেশি উত্তপ্ত হয় ও শ্বেততপ্ত হয়ে আলো বিকিরণ করে। কিন্তু হিটারের কুণ্ডলীর রোধ কম হওয়ায় তত বেশি উত্তপ্ত হয় না, তাই শ্বেততপ্ত হয়ে আলো বিকিরণ করে না।
20. কাৰ্যনীতিসহ বৈদ্যুতিক ইস্ত্রির বর্ণনা দাও।
উত্তর – বৈদ্যুতিক ইস্ত্রিতে একটি নাইক্লোম তারের কুণ্ডলীকে ত্রিভুজাকৃতি দুটি অভ্রের পাতের মধ্যে লাগানো থাকে। এটিকে লোহার আবরণের মধ্যে ভালোভাবে রাখা হয়। কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে সেটি উত্তপ্ত হয় তাই লোহার আবরণটিও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং এর সাহায্যে জামাকাপড় ইস্ত্রি করা যায়। লোহার আবরণের তলদেশ মসৃণ করা হয়। নাইক্লোম তারের কুণ্ডলীটি অভ্রের পাত দ্বারা ঢাকা থাকে বলে শক লাগার সম্ভাবনা থাকে না। তবে অভ্রের পাত ছিদ্রযুক্ত হলে সেই ইস্ত্রি থেকে শক লাগতে পারে। জামাকাপড় ইস্ত্রি করার সময় যাতে হাতে তাপ না লাগে সেইজন্য ইস্ত্রির হাতল কুপরিবাহী পদার্থের তৈরি হয়।
21. তড়িৎপ্রবাহের ফলে তাপ উৎপন্ন হয় এমন দুটি যন্ত্রের নাম লেখো যাদের আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা হয়।
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহের ফলে তাপ উৎপন্ন হয় এমন দুটি যন্ত্র যাদের আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা হয় সেগুলি হল বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, বৈদ্যুতিক হিটার।
22. ফিউজ কী?
ইলেকট্রিক ফিউজের কার্যনীতি লেখো।
উত্তর – ইলেকট্রিক ফিউজ হল টিন ও সিসার সংকর ধাতুর (টিন 25%, সিসা 75%) তৈরি এক ধরনের কম গলনাঙ্কবিশিষ্ট তার। একটি চিনামাটি বা প্লাস্টিকের হোল্ডারে তারটিকে যুক্ত করে বৈদ্যুতিক লাইনের সঙ্গে লাগানো হয়।
ইলেকট্রিক ফিউজকে বৈদ্যুতিক লাইনের লাইভ তারের সঙ্গে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করা হয়। ফিউজ তার একটি নির্দিষ্ট মানের বেশি তড়িৎপ্রবাহ বহন করতে পারে না। কোনো কারণে বৈদ্যুতিক লাইনে তড়িৎপ্রবাহ এই নির্দিষ্ট মানের থেকে হঠাৎ বেড়ে গেলে তারটি গলে গিয়ে বর্তনীকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
23. বর্তনীতে ফিউজ তার কীভাবে সংযুক্ত করা থাকে? বর্তনীতে এই তার ব্যবহারের কারণ কী?
উত্তর – মূল বর্তনীতে ফিউজ তার শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করা থাকে। গৃহস্থালির বর্তনীতে এটি বৈদ্যুতিক লাইনের লাইভ তারের সঙ্গে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত হয়।
লাইনে ফিউজ তারের সংযোগ ব্যবস্থা অতিরিক্ত তড়িৎপ্রবাহের ফলে বাড়ির মূল্যবান বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি (যেমন, ফ্রিজ, বাল্ব, ওয়াশিং মেশিন, টিভি ইত্যাদি) খারাপ হয়ে যাওয়ার থেকে রক্ষা করে। সর্বোপরি, শর্ট-সার্কিট হয়ে লাইন পুড়ে গিয়ে বাড়িতে আগুন লাগার সম্ভাবনা কমে যায়।
24. ফিউজ তারের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর – ফিউজ তারের বৈশিষ্ট্য – (1) ফিউজ তার টিন ও সিসার (টিন 25%, সিসা 75%) সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি। (2) ফিউজ তারের রোধ উচ্চ হয় এবং উপাদানের গলনাঙ্ক কম হয়, যাতে বর্তনীতে অতিরিক্ত প্রবাহ হলে তারটি গলে গিয়ে বর্তনীকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
25. 10 A ফিউজ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর – 10 A ফিউজ বলতে বোঝায় ওই ফিউজ তারে তড়িৎপ্রবাহ 10 A অপেক্ষা বেশি হলে তারটি উত্তপ্ত হয়ে গলে যাবে এবং বর্তনীকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এর ফলে বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ, ফিউজ তারটির মধ্যে দিয়ে লাইনে সর্বাধিক 10A তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে।
26. SI -তে তড়িৎক্ষমতার এককের সংজ্ঞা লেখো।
উত্তর – SI -তে তড়িৎক্ষমতার একক হল W (বা watt)।
1W ক্ষমতা: কোনো তড়িৎচালিত যন্ত্রে 1 A তড়িৎপ্রবাহ 1 V বিভব-প্রভেদের মধ্যে দিয়ে গেলে যন্ত্রটিতে যে হারে তড়িৎশক্তি ব্যয়িত হয় তাকে 1 W বলা হয়।
27. kW · h বা BOT একক (board of trade unit) কাকে বলে? এটি কোন্ ভৌত রাশির একক?
উত্তর – 1 kW ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তড়িৎচালিত যন্ত্র 1 h ( hour) চললে যে বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যয় করে তাকে 1 kW · h বা BOT একক বলা হয়।
W · h ও kW · h বা BOT একক হল তড়িৎশক্তির একক।
28. একটি বৈদ্যুতিক বাতির ভোল্টেজ রেটিং বলতে কী বোঝ?
উত্তর – যে-কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রই এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে একটি নির্দিষ্ট বিভবপ্রভেদে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়। যন্ত্রের গায়ে এই নির্দিষ্ট বিভবপ্রভেদের মান লেখা থাকে। একে ভোল্টেজ রেটিং বলা হয়।
29. বৈদ্যুতিক বাতির ওয়াট রেটিং বলতে কী বোঝ?
উত্তর – ভোল্টেজ রেটিং ছাড়া বাতির গায়ে আরও একটি রেটিং থাকে, সেটি হল ক্ষমতা রেটিং। এটিকে ওয়াট রেটিংও বলা হয়।
কোনো বৈদ্যুতিক বাতিকে যে ভোল্টেজ রেটিং-এ তৈরি করা হয়েছে সেই বিভবপ্রভেদ প্রয়োগ করলে বৈদ্যুতিক বাতিটি একক সময়ে যে তড়িৎশক্তি ব্যয় করে তাই হল বাতিটির ক্ষমতা রেটিং বা ওয়াট রেটিং।
30. কোনো বৈদ্যুতিক বাতির রেটিং 220 V – 100 W বলতে কী বোঝ?
অনুরূপ প্রশ্ন, একটি বাল্বের গায়ে লেখা আছে ‘220 V – 60 W’-এর অর্থ কী ?
উত্তর – কোনো বৈদ্যুতিক বাতির রেটিং 220 V – 100 W বলতে বোঝায় বাতিটির দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ 220 V হলে বাতিটি সবচেয়ে উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে এবং বাতিটি প্রতি সেকেন্ডে 100 J তড়িৎশক্তি ব্যয় করবে। বিভবপ্রভেদ 220 V -এর কম হলে এটি কম উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে এবং বিভবপ্রভেদ 220 V -এর বেশি হলে বাতিটি ক্ষতিগ্রস্ত বা পুড়ে যেতে পারে।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. পরিবাহীর রোধ (R) ও সময় (t) অপরিবর্তিত থাকলে উৎপন্ন তাপ (H) ও প্রবাহমাত্রার (I) সম্পর্ক হল –
(a) H ∝ I
(b) H ∝ 1/I
(c) H ∝ I2
(d) H ∝ 1/I2
উত্তর – (c) H ∝ I2
2. একটি পরিবাহীর প্রবাহমাত্রা দ্বিগুণ করলে উৎপন্ন তাপ—
(a) দ্বিগুণ হবে
(b) বৃদ্ধি পাবে না
(c) চারগুণ হবে
(d) একই থাকবে
উত্তর – (c) চারগুণ হবে
3. প্রবাহমাত্রা (I) ও সময় (t) অপরিবর্তিত থাকলে উৎপন্ন তাপ (H) ও রোধের (R) সম্পর্ক হল —
(a) H ∝ R
(b) H ∝ R2
(c) H ∝ 1/R
(d) H ∝ 1/R2
উত্তর – (a) H ∝ R
4. দুটি রোধ সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত। বিভবপ্রভেদ দ্বিগুণ করলে কোনো রোধে তাপ উৎপন্নের হার হবে-
(a) দ্বিগুণ
(b) চারগুণ
(c) অর্ধেক
(d) আটগুণ
উত্তর – (b) চারগুণ
5. 10 Ω রোধের ভিতর দিয়ে 4.2 min ধরে 1 A তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে উৎপন্ন তাপ—
(a) 500 cal
(b) 600 cal
(c) 700 cal
(d) 800 cal
উত্তর – (b) 600 cal
6. একটি সুষম তারের দুই প্রান্তের মধ্যে একটি স্থির মানের বিভবপ্রভেদ প্রয়োগ করা হল। উৎপন্ন তাপ দ্বিগুণ হবে যদি—
(a) তারের ব্যাসার্ধ দ্বিগুণ হয়
(b) দৈর্ঘ্য ও ব্যাসার্ধ উভয়ই দ্বিগুণ হয়
(c) দৈর্ঘ্য ও ব্যাসার্ধ উভয়ই অর্ধেক হয়
(d) দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ, ব্যাসার্ধ অর্ধেক হয়
উত্তর – (b) দৈর্ঘ্য ও ব্যাসার্ধ উভয়ই দ্বিগুণ হয়
7. ইলেকট্রিক ইস্ত্রির কার্য যে নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত সেটি হল—
(a) তড়িৎপ্রবাহের ওপর চুম্বকের ক্রিয়া
(b) চুম্বকের ওপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া
(c) তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ ক্রিয়া
(d) তড়িৎপ্রবাহের ফলে তাপের উদ্ভব
উত্তর – (d) তড়িৎপ্রবাহের ফলে তাপের উদ্ভব
8. নাইক্লোম হল-
(a) Ni. Cr, Al -এর সংকর ধাতু
(b) Ni, Cr, Fe -এর সংকর ধাতু
(c) Al, Cr, Fe -এর সংকর ধাতু
(d) Ni. Cu, Fe -এর সংকর ধাতু
উত্তর – (b) Ni, Cr, Fe -এর সংকর ধাতু
9. ফিউজ তার কোন্ ধাতুর তৈরি?
(a) টিন
(b) সিসা
(c) টিন ও সিসার সংকর ধাতু
(d) তামা ও অ্যালুমিনিয়ামের সংকর ধাতু
উত্তর – (c) টিন ও সিসার সংকর ধাতু
10. ফিউজ তারের-
(a) গলনাঙ্ক কম
(b) গলনাঙ্ক বেশি
(c) নমনীয়তা কম
(d) নমনীয়তা বেশি
উত্তর – (a) গলনাঙ্ক কম
11. তড়িৎক্ষমতার SI একক হল —
(a) ওয়াট
(b) জুল
(c) আর্গ
(d) টেসলা
উত্তর – (a) ওয়াট
12. জুল/কুলম্ব কী নামে পরিচিত?
(a) ওয়াট
(b) BOT
(c) অ্যাম্পিয়ার
(d) ভোল্ট
উত্তর – (d) ভোল্ট
13. 1 KW = কত W?
(a) 100 W
(b) 1000 W
(c) 500 W
(d) 5000 W
উত্তর – (b) 1000 W
14. 1 hp ক্ষমতাসম্পন্ন একটি মোটর প্রতিদিন 30 min করে চললে এক মাসে বিদ্যুৎশক্তি খরচ হবে—
(a) 11.19 BOT
(b) 30 BOT
(c) 15 BOT
(d) 6.8 BOT
উত্তর – (a) 11.19 BOT
15. দুটি রোধ সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত। রোধ দুটির অনুপাত 1:2। রোধ দুটিতে ব্যয়িত ক্ষমতার অনুপাত —
(a) 1:2
(b) 2:1
(c) 4:1
(dd) 1:4
উত্তর – (b) 2:1
16. 5 V বিভবপ্রভেদের মধ্য দিয়ে 2 A তড়িৎপ্রবাহ পাঠাতে ব্যয়িত ক্ষমতা —
(a) 20 W
(b) 5 W
(c) 10 W
(d) 15 W
উত্তর – (c) 10 W
17. 2 Ω রোধের মধ্য দিয়ে 4 A তড়িৎপ্রবাহ পাঠাতে ব্যয়িত ক্ষমতা—
(a) 64 W
(b) 16 W
(c) 24 W
(d) 32 W
উত্তর – (d) 32 W
18. 10 Ω রোধের দু-প্রান্তে 10 V বিভবপ্রভেদ বজায় রাখতে ব্যয়িত ক্ষমতা —
(a) 10 W
(b) 100 W
(c) 1 W
(d) 1000 W
উত্তর – (a) 10 W
19. সমান ওয়াটের আলো নিঃসারকগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি শক্তি সাশ্রয়কারী হল—
(a) CFL বাল্ব
(b) LED বাল্ব
(c) ভাস্বর বাল্ব
(d) টিউব লাইট
উত্তর – (b) LED বাল্ব
20. পারদজনিত দূষণ ঘটে—
(a) ভাস্বর বাল্বে
(b) CFL বাল্বে
(c) LED বাল্বে
(d) সবগুলিতে
উত্তর – (b) CFL বাল্বে
21. 220 V – 100 W বাতির রোধ—
(a) 968 Ω
(b) 1936 Ω
(c) 484 Ω
(d) 242 Ω
উত্তর – (c) 484 Ω
22. কতকগুলি বাল্ব শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত থাকলে প্রতিটি বাল্বের ক্ষেত্রে কোন্টি সমান হয়?
(a) উৎপন্ন তাপ
(b) উজ্জ্বলতা
(c) প্রবাহমাত্রা
(d) বিভবপ্রভেদ
উত্তর – (c) প্রবাহমাত্রা
34. 60 W, 80 W ও 100 W ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি বাল্বকে শ্রেণি সমবায়ে ব্যাটারির সাথে যুক্ত করা হলে যে বাল্বটির উজ্জ্বলতা সর্বাধিক হবে তার ক্ষমতা-
(a) 60 W
(b) 80 W
(c) 100 W
(d) তিনটির উজ্জ্বলতা সমান হবে
উত্তর – (a) 60 W
35. নীচের চারটি বাতিকে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করলে কোন্টি সবচেয়ে উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে?
(a) 220V-25 W
(b) 220V-60 W
(c) 220V-100 W
(d) 220V-40 W
উত্তর – (a) 220V-25 W
36. বৈদ্যুতিক যন্ত্রের গায়ে তারা (star) চিহ্ন নির্দেশ করে—
(a) ভোল্টেজ রেটিং
(b) ওয়াট রেটিং
(c) এনার্জি রেটিং
(d) অ্যাম্পিয়ার রেটিং
উত্তর – (c) এনার্জি রেটিং
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. R Ω রোধের মধ্য দিয়ে I A তড়িৎপ্রবাহ t s ধরে পাঠালে যদি H cal তাপ উৎপন্ন হয় তাহলে H -এর রাশিমালাটি লেখো।
উত্তর – R Ω রোধের মধ্য দিয়ে I A তড়িৎপ্রবাহ t s ধরে পাঠালে যদি H cal তাপ উৎপন্ন হয় তাহলে H -এর রাশিমালাটি হল, H = I2Rt/4.2
2. R Ω রোধের মধ্য দিয়ে I A তড়িৎপ্রবাহ t s ধরে পাঠালে যদি H J তাপ উৎপন্ন হয় তাহলে H -এর রাশিমালাটি লেখো।
উত্তর – R Ω রোধের মধ্য দিয়ে I A তড়িৎপ্রবাহ t s ধরে পাঠালে যদি H J তাপ উৎপন্ন হয় তাহলে H -এর রাশিমালাটি হল, H = I2Rt |
3. একই উপাদানের ও একই দৈর্ঘ্যের একটি সরু ও একটি মোটা তারের মধ্য দিয়ে একই তড়িৎপ্রবাহ একই সময় ধরে পাঠানো হলে কোন্টি বেশি উত্তপ্ত হবে?
উত্তর – একই উপাদান ও একই দৈর্ঘ্যের মোটা তারের তুলনায় সরু তারের রোধ বেশি হওয়ায় একই তড়িৎপ্রবাহ একই সময় ধরে পাঠানো হলে সরু তারটি বেশি উত্তপ্ত হবে।
4. ইলেকট্রিক বাল্ব বায়ুশূন্য করা হয় কেন?
উত্তর – ইলেকট্রিক বাল্বের ফিলামেন্টটি যাতে জারিত হতে না পারে সেইজন্য ইলেকট্রিক বাল্ব বায়ুশূন্য করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ইলেকট্রিক বাল্ব বায়ুশূন্য না করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস দ্বারা পূর্ণ করা হয়।
5. গ্যাসপূর্ণ বাল্ব কী?
উত্তর – কোনো নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা নাইট্রোজেন গ্যাসপূর্ণ বাল্বকে গ্যাসপূর্ণ বাল্ব বলে।
6. বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্ট ও ফিউজ তারের মধ্যে কোন্টির প্রস্থচ্ছেদ বেশি?
উত্তর – ফিউজ তারের প্রস্থচ্ছেদ বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্টের তুলনায় বেশি।
7. ইলেকট্রিক হিটারের তাপীয় কুণ্ডলীটি কীসের তৈরি?
উত্তর – ইলেকট্রিক হিটারের তাপীয় কুণ্ডলীটি Ni, Cr ও Fe-এর সংকর ধাতু বা নাইক্রোম দ্বারা নির্মিত হয়।
৪. ইলেকট্রিক ইস্ত্রিতে অভ্রের পাত ছিদ্রযুক্ত হলে কী হবে?
উত্তর – ইলেকট্রিক ইস্ত্রিতে অভ্রের পাত ছিদ্রযুক্ত হলে শক লাগার সম্ভাবনা থাকে।
9. বৈদ্যুতিক ফিউজ তার কীসের তৈরি?
উত্তর – বৈদ্যুতিক ফিউজ তার টিন ও সিসার (টিন 25% ও সিসা 75%) এক ধরনের সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি।
10. ফিউজ তারের রোধাঙ্ক ও গলনাঙ্ক কেমন হয়?
উত্তর – ফিউজ তারের রোধাঙ্ক ও গলনাঙ্ক কম হয়।
11. কোনো তড়িৎবর্তনীতে 1V বিভবপ্রভেদের মধ্য দিয়ে 1A তড়িৎপ্রবাহ হলে তড়িৎক্ষমতা কত হবে?
উত্তর – কোনো তড়িৎবর্তনীতে 1V বিভবপ্রভেদের মধ্য দিয়ে 1A তড়িৎপ্রবাহ হলে তড়িৎক্ষমতা হবে 1W।
12. তড়িৎক্ষমতার SI একক কী?
উত্তর – SI-তে তড়িৎক্ষমতার একক হল W (watt)।
13. BOT এককটি কোন্ ভৌত রাশির একক?
উত্তর – BOT এককটি বৈদ্যুতিক শক্তির বাণিজ্যিক একক।
14. 220V-100 W ও 220V-50W বাল্ব দুটির মধ্যে কোন্টির রোধ বেশি?
উত্তর – 220V-50 W বাতিটির রোধ 220V-100 W বাতিটির রোধ অপেক্ষা বেশি।
15. একটি 220 V-100 W-এর বাতি কত ভোল্টেজে সবচেয়ে উজ্জ্বলভাবে আলো ছড়াবে?
উত্তর – 220V-100W -এর বাতি 220V বিভবপার্থক্যে সবচেয়ে উজ্জ্বলভাবে আলো ছড়াবে।
16. কোনো তড়িত্যন্ত্র ক্রয় করার সময় তুমি সর্বপ্রথমে কোন্ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেবে—এর ভোল্টেজ রেটিং, ওয়াট রেটিং না কি এনার্জি রেটিং?
উত্তর – কোনো তড়িৎযন্ত্র ক্রয় করার সময় সর্বপ্রথম এর এনার্জি রেটিং-এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
17. কোন্ বাল্বে অত্যধিক পারদজনিত দূষণ ঘটে?
উত্তর – CFL-এ অত্যধিক পারদজনিত দূষণ ঘটে।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. SI-তে তড়িৎশক্তির একক ………..।
উত্তর – জুল
2. CGS পদ্ধতিতে তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্কের মান ………..।
উত্তর – 4.2 J/cal
3. বৈদ্যুতিক ফিউজ অতিরিক্ত প্রবাহে ………. গিয়ে বিপদ থেকে রক্ষা করে।
উত্তর – গলে
4. বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্ট ………. নির্মিত।
উত্তর – টাংস্টেন
5. ইলেকট্রিক ইস্ত্রিতে নাইক্রোম তারের কুণ্ডলীটি ……….. পাত দ্বারা ঢাকা থাকে।
উত্তর – অভ্রের
6. নাইক্রোম হল নিকেল, ………… ও লোহার সংকর ধাতু।
উত্তর – ক্রোমিয়াম
7. ফিউজ তারের রোধাঙ্ক ……….. ও গলনাঙ্ক ………. হয়।
উত্তর – কম, কম
৪. ওয়াট · ঘণ্টা হল ………. -এর একক।
উত্তর – তড়িৎশক্তি
9. তড়িৎক্ষমতার একককে ………. -এর একক দিয়ে গুণ করলে তড়িৎশক্তির একক পাওয়া যায়।
উত্তর – সময়
10. 1 W/A = 1 ………..।
উত্তর – V (volt)
11. 1 MW = ……….. kW ।
উত্তর – 1000
12. 1 BOT = ………. W · h ।
উত্তর – 1000
TOPIC – D তড়িৎচুম্বক
সংক্ষিপ্ত/ দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া দেখানোর জন্য ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো।
অথবা, একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া দেখাও।
উত্তর – বিজ্ঞানী ওরস্টেড 1820 খ্রিস্টাব্দে তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া দেখানোর জন্য একটি পরীক্ষা করেন। সেই পরীক্ষা অনুযায়ী নিম্নলিখিত পরীক্ষাটি করা হল।
উপকরণ: 1.5 V-এর দুটি ব্যাটারি, একটি মোটা তামার তার, সংযোগকারী তার, টোস্টার, সুইচ, চুম্বক শলাকা, রোধক তার।
পরীক্ষা: ব্যাটারি দুটিকে টোস্টারে লাগিয়ে, মোটা তামার তার রোধক তার (R) ও সুইচকে সংযোগকারী তার দিয়ে 44 নং চিত্রের মতো সংযোগ স্থাপন করে একটি টেবিলের ধার ঘেঁষে রাখা হল, যেখানে AB হল মোটা তামার তার। এবার AB তারটিকে টেবিলের বাইরে স্থাপন করা হল যাতে AB তার পড়ে না যায় বা হেলে না যায়। AB তারকে এমনভাবে রাখা হল যাতে A দক্ষিণ দিকে ও B উত্তর দিকে থাকে। সুইচ অফ করে চুম্বক শলাকাকে AB তারের নীচে রাখা হল। এই অবস্থায় চুম্বক শলাকা উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর মুখ করে থাকে। এবার সুইচ অন করলে দেখা যাবে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরু পশ্চিম দিকে বিক্ষিপ্ত হল। সুইচ অফ করে চুম্বক শলাকাকে AB তারের ওপরে ধরে, সুইচ অন করে দেখা গেল চুম্বক শলাকার উত্তর মেরু পূর্ব দিকে বিক্ষিপ্ত হল।
এবার ব্যাটারির মেরু দুটি উলটে দেওয়া হল, ফলে AB তারে তড়িৎপ্রবাহ B থেকে A-এর দিকে বা উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে হয়। পূর্বের মতো চুম্বক শলাকাকে AB তারের নীচে ও ওপরে রাখা হলে দেখা যায় চুম্বক শলাকার উত্তর মেরু যথাক্রমে পূর্ব দিকে ও পশ্চিম দিকে বিক্ষিপ্ত হয়। সিদ্ধান্ত: এই পরীক্ষা থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, কোনো তড়িদ্বাহী তারের চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন হয় এবং তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ বিপরীত করলে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখও বিপরীত দিকে হয়।
2. ওরস্টেডের পরীক্ষায় ব্যবহৃত তারের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরে তড়িৎ প্রবাহিত হলে তাঁরটির নীচে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর বিক্ষেপ কোন দিকে হবে?
উত্তর – চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুটি পশ্চিম দিকে বিক্ষিপ্ত হবে।
3. ওরস্টেডের পরীক্ষায় ব্যবহৃত তারের মধ্য দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে তড়িৎ প্রবাহিত হলে তারটির নীচে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর বিক্ষেপ কোন্ দিকে হবে?
উত্তর – চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুটি পূর্ব দিকে বিক্ষিপ্ত হবে।
4. একটি পরিবাহী তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করলে তারটি চুম্বকিত হয় কি হয় না, তা কীভাবে বুঝবে?
উত্তর – না, এক্ষেত্রে তারটি চুম্বকিত হবে না। একটি কাগজে কিছু লৌহচূর্ণ রেখে তড়িদ্বাহী তারের কাছে নিয়ে গেলে দেখা যাবে লৌহচূর্ণগুলি তার দ্বারা আকর্ষিত হচ্ছে না।
5. অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়মটি লেখো।
উত্তর – তড়িদ্বাহী তার বরাবর কোনো ব্যক্তি চুম্বক শলাকার দিকে মুখ করে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখে সাঁতার কাটতে থাকলে, ব্যক্তিটির প্রসারিত বাম হাতটি যেদিকে থাকবে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরু সেইদিকে বিক্ষিপ্ত হবে। অর্থাৎ চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক নির্দেশ করবে।
6. চৌম্বক বলরেখা বলতে কী বোঝ?
উত্তর – চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি ক্ষুদ্র, সর্ববাধামুক্ত উত্তর মেরু যে পথ বরাবর গমন করে তাকে চৌম্বক বলরেখা বলে। চৌম্বক বলরেখার যে-কোনো বিন্দুতে অঙ্কিত স্পর্শক ওই বিন্দুতে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ নির্দেশ করে।
7. তড়িবাহী তারের চারদিকে উৎপন্ন চৌম্বক ক্ষেত্র সম্পর্কিত দক্ষিণ মুষ্ঠি নিয়মটি লেখো।
উত্তর – কোনো তড়িদ্বাহী তারকে ডান হাতের মুষ্ঠিতে ধরে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ বরাবর তড়িৎপ্রবাহ দেখানো হলে বাকি আঙুলগুলি চৌম্বক বলরেখার অভিমুখ নির্দেশ করবে।
8. একটি ব্যাটারির কোন্টি ধনাত্মক মেরু ও কোন্টি ঋণাত্মক মেরু তা লেখা নেই। একটি পরিবাহী তার ও একটি চুম্বক শলাকার সাহায্যে কীভাবে ব্যাটারির মেরু শনাক্ত করবে?
উত্তর – স্বাভাবিক অবস্থায় চুম্বক শলাকা উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর মুখ করে থাকে। পরিবাহী তারটিকে ব্যাটারির সঙ্গে যুক্ত করে উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর রাখা হল। এবার চুম্বক শলাকাটিকে তারের নীচে রাখলে যদি উত্তর মেরুর পশ্চিম দিকে বিক্ষেপ হয় তাহলে দক্ষিণ প্রান্তের তারটি ব্যাটারির যে মেরুর সঙ্গে যুক্ত সেটি ধনাত্মক মেরু [চিত্রে A প্রান্ত] এবং যদি উত্তর মেরুর পূর্ব দিকে বিক্ষেপ হয় তাহলে উত্তর প্রান্তের তারটি ব্যাটারির যে মেরুর সঙ্গে যুক্ত সেটি ধনাত্মক মেরু [চিত্রে B প্রান্ত]।
9. একটি তড়িদ্বাহী বৃত্তাকার কুণ্ডলীকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে দিলে সেটি কোন্ দিক বরাবর মুখ করে থাকবে ও কেন?
উত্তর – একটি তড়িদ্বাহী বৃত্তাকার কুণ্ডলীকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে দিলে সেটি এমনভাবে থাকবে যাতে এর অক্ষ উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর থাকে। দক্ষিণ দিক থেকে কুণ্ডলীর দিকে তাকালে তড়িৎপ্রবাহ দক্ষিণাবর্তী এবং উত্তর দিক থেকে কুণ্ডলীর দিকে তাকালে তড়িৎপ্রবাহ রামাবর্তী হবে। এর কারণ হল বৃত্তাকার তড়িদ্বাহী কুণ্ডলী একটি দণ্ডচুম্বকের মতো আচরণ করে। কুণ্ডলীর যেদিক থেকে দেখলে তড়িৎপ্রবাহ দক্ষিণাবর্তী সেদিকে দক্ষিণ মেরু ও যেদিক থেকে দেখলে তড়িৎপ্রবাহ বামাবর্তী সেদিকে উত্তর মেরুর সৃষ্টি হয়। ভূ-চুম্বকত্বের জন্য এই কুণ্ডলীকে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখলে এটির অক্ষ উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর থাকে এবং উত্তর মেরু উত্তর দিকে ও দক্ষিণ মেরু দক্ষিণ দিকে থাকে।
10. একটি বৃত্তাকার পরিবাহী কুন্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে কোন্ দিকে কোন্ চৌম্বক মেরুর সৃষ্টি হয়?
উত্তর – কুন্ডলীর যে তলের দিক থেকে অক্ষ বরাবর তাকালে কুন্ডলীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে বা দক্ষিণাবর্তী হয় সেই তলে দক্ষিণ মেরু ও যে তলের দিক থেকে অক্ষ বরাবর তাকালে কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ঘড়ির কাঁটার বিপরীত অভিমুখে বা বামাবর্তী হয় সেই তলে উত্তর মেরুর সৃষ্টি হয়।
11. একটি চুম্বক শলাকার কোন্টি উত্তর মেরু ও কোন্টি দক্ষিণ মেরু তা লেখা নেই। একটি পরিবাহী তার ও একটি ব্যাটারির সাহায্যে কীভাবে চুম্বকের মেরু শনাক্ত করবে?
উত্তর – পরিবাহী তারটিকে ব্যাটারির সঙ্গে যুক্ত করা হল। এবার তারটিকে এমনভাবে রাখা হল যাতে তারে তড়িৎপ্রবাহ দক্ষিণ থেকে উত্তরে হয়। এবার চুম্বক শলাকাটিকে তারের নীচে রাখলে যে মেরুটি পশ্চিমদিকে বিক্ষিপ্ত হবে সেটি হল উত্তর মেরু [চিত্রে A প্রান্ড], অন্যটি হল দক্ষিণ মেরু [চিত্রে B প্রান্ত]।
12. তড়িৎ পরিবাহীর ওপর চুম্বকের ক্রিয়া-সংক্রান্ত ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মটি লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মটি বিবৃত করো।
উত্তর – বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ, তর্জনী ও মধ্যমাকে পরস্পরের সমকোণে রেখে প্রসারিত করলে যদি তর্জনী চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ এবং মধ্যমা তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দেশ করে, তবে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ পরিবাহীর গতির অভিমুখ বা পরিবাহীর ওপর ক্রিয়াশীল বলের অভিমুখ নির্দেশ করবে।
13. বার্লোর চক্রের কার্যনীতি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – চিত্রে বার্লোর চক্রের গঠন দেখানো হয়েছে। সুইচ অন করলে চিত্রের ন্যায় তড়িৎপ্রবাহ তিরচিহ্নিত পথে চলতে থাকে। এক্ষেত্রে চক্রের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ওপর থেকে নীচের দিকে হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমূখ কাঠের পাটাতন বরাবর উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরুর দিকে। ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়ম প্রয়োগ করলে দেখা যায়, পারদ স্পর্শ করা চক্রের দাঁতটির ওপর চৌম্বক ক্ষেত্র বামদিক থেকে ডানদিকে বল প্রয়োগ করে। এর ফলে দাঁতটি ডানদিকে গতিশীল হয়। কিন্তু চক্রের দাঁত গতিশীল হলেই পারদের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় অর্থাৎ বর্তনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কিন্তু গতিজাড্যের জন্য পরের দাঁতটি আবার পারদ স্পর্শ করে। এইভাবে পরপর দাঁতগুলির ওপর বল প্রযুক্ত হয় ও দাঁতগুলি গতিশীল হয় এবং চক্রটি ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে। এখানে তড়িৎশক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
14. বার্লোর চক্র পরিবর্তী প্রবাহে কাজ করে না কেন?
উত্তর – প্রবাহমাত্রার অভিমুখ বিপরীতমুখী হলে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন বিপরীতমুখী হয়। পরিবর্তী প্রবাহে প্রবাহমাত্রার অভিমুখ খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়, যেমন পরিবর্তী প্রবাহের কম্পাঙ্ক 50 Hz হলে 1 সেকেন্ডে 100 বার প্রবাহমাত্রার অভিমুখ পরিবর্তন হয়। এই কারণে বার্লোর চক্রের ওপর ক্রিয়াশীল বলের অভিমুখও দ্রুত পরিবর্তিত হয়, ফলে চক্রের ঘূর্ণন সম্ভব হয় না।
15. বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন বেগ বৃদ্ধির দুটি উপায় লেখো।
উত্তর – (1) চুম্বকের মেরুশক্তি বাড়ানো হলে কিংবা (2) তড়িৎপ্রবাহ বৃদ্ধি করা হলে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন বেগ বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ আরও জোরে ঘোরে।
16. একটি বার্লো চক্রের ঘূর্ণনে কী প্রভাব দেখা যাবে যদি (1) চুম্বকের মেরুর অবস্থান উলটে দেওয়া হয়, (2) তড়িৎপ্রবাহমাত্রা বৃদ্ধি করা হয়?
উত্তর – (1) চুম্বকের মেরুর অবস্থান উলটে দেওয়া হলে বার্লোর চক্র বিপরীত দিকে ঘুরবে এবং (2)তড়িৎপ্রবাহমাত্রা বৃদ্ধি করা হলে চক্রের ঘূর্ণন বেগ বৃদ্ধি পাবে।
17. বৈদ্যুতিক মোটর কাকে বলে? মোটর কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর – বৈদ্যুতিক মোটর হল এমন একটি তড়িযন্ত্র যেখানে স্থির চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি তড়িদ্বাহী কুণ্ডলী একটি নির্দিষ্ট অক্ষ সাপেক্ষে আবর্তন করে এবং তড়িৎশক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
মোটর দুই প্রকার যথা— dc মোটর ও ac মোটর।
18. একটি বৈদ্যুতিক মোটরের গঠন বর্ণনা করো।
উত্তর – একটি বৈদ্যুতিক মোটরের মূল অংশগুলি হল—
(1) ক্ষেত্রচুম্বক, (2) আর্মেচার, (3) কম্যুটেটর, (4) ব্রাশ।
- ক্ষেত্রচুম্বক: এটি একটি শক্তিশালী অশ্বক্ষুরাকৃতি তড়িৎচুম্বক। একক দৈর্ঘ্যে তারের পাকসংখ্যা বাড়িয়ে বা তড়িৎপ্রবাহ বাড়িয়ে চুম্বকের শক্তি প্রয়োজনমতো বৃদ্ধি করা যায়।
- আর্মেচার: ক্ষেত্রচুম্বকের মেরু দুটির মাঝে এটি একটি অন্তরিত তামার তারের আয়তাকার কুণ্ডলী ABCD। কুণ্ডলীটি নরম লোহার চোঙের ওপর জড়ানো থাকে। কুণ্ডলীটি এমনভাবে রাখা থাকে যাতে কুণ্ডলীর AB ও CD বাহু চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে সমকোণে থাকে।
- কম্যুটেটর: আর্মেচারের দুটি প্রান্ত পিতলের তৈরি দুটি অর্ধবলয় E ও F-এর সঙ্গে যুক্ত। একে কম্যুটেটর বলা হয়। আর্মেচার ঘুরলে অর্ধবলয় দুটিও একই সঙ্গে ঘোরে।
- ব্রাশ: অর্ধবলয় দুটির বাইরের অংশ দুটি কার্বন ব্রাশ B1 ও B2 -এর সঙ্গে স্পর্শ করে থাকে। ব্রাশ দুটির সঙ্গে পরিবাহী তার দিয়ে একটি ব্যাটারি ও সুইচ যুক্ত করা হয়।
19. বৈদ্যুতিক মোটরের কার্যপ্রণালী বর্ণনা করো।
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহ পাঠানো হলে কুণ্ডলীর AB বাহুতে A থেকে B-এর দিকে এবং CD বাহুতে C থেকে D-এর দিকে তড়িৎপ্রবাহ হয় [চিত্র 6.43]। তাই ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়ম অনুযায়ী, AB বাহুর ওপর, নীচের দিকে ও CD বাহুর ওপর, ওপরের দিকে বল ক্রিয়া করে। ফলে AB বাহু নীচের দিকে ও CD বাহু ওপরের দিকে গতিশীল হয়। যখন ABCD কুণ্ডলীটি খাড়া হয় তখন E ও F অর্ধবলয় দুটির ফাঁকে B1 ও B2 ব্রাশ দুটি আসে এবং তড়িৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। তবে গতিজাড্যের জন্য F অর্ধবলয় B1 ব্রাশকে ও E অর্ধবলয় B2 ব্রাশকে স্পর্শ করে। ফলে AB বাহুতে প্রবাহমাত্রা B থেকে A -এর দিকে এবং CD বাহুতে প্রবাহমাত্রা D থেকে C-এর দিকে হয়। এই অবস্থায় ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়ম অনুযায়ী AB বাহু ওপরের দিকে ও CD বাহু নীচের দিকে গতিশীল হয়। এইভাবে বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ চলতে থাকলে আর্মেচার একই অভিমুখে ঘুরতে থাকে।
20. বৈদ্যুতিক মোটরের ব্যবহার লেখো। বৈদ্যুতিক মোটরে আর্মেচারের ঘূর্ণন বেগ কীভাবে বাড়ানো যায় ?
উত্তর – পাম্প, ব্লোয়ার, রোলিং মিল প্রভৃতিতে বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহৃত হয়।
আর্মেচার কুণ্ডলীর পাকসংখ্যা বাড়িয়ে অথবা প্রবাহমাত্রা বাড়িয়ে কিংবা ক্ষেত্রচুম্বকের শক্তি বাড়িয়ে আর্মেচারের ঘূর্ণন বেগ বাড়ানো যায়।
21. বার্লোর চক্রকে বৈদ্যুতিক মোটর বলা হয় কেন?
উত্তর – বৈদ্যুতিক মোটরে তড়িৎশক্তি গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। বার্লোর চক্রেও তড়িৎশক্তি, ঘূর্ণন গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। তাই বার্লোর চক্র হল বৈদ্যুতিক মোটর।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. একটি ঋজু তার দিয়ে নীচ থেকে ওপরদিকে তড়িৎপ্রবাহ হচ্ছে। এর জন্য পূর্ব দিকে অবস্থিত কোনো বিন্দুতে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ কোন্ দিক বরাবর হবে?
(a) উত্তর দিক
(b) দক্ষিণ দিক
(c) পূর্ব দিক
(d) পশ্চিম দিক
উত্তর – (a) উত্তর দিক
2. একটি ঋজু তার দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে তড়িৎপ্রবাহ হচ্ছে। এর জন্য উত্তর দিকে অবস্থিত কোনো বিন্দুতে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ কোন্ দিক বরাবর হবে?
(a) পূর্ব দিক
(b) পশ্চিম দিক
(c) উল্লম্বভাবে ওপর দিক
(d) উল্লম্বভাবে নীচের দিক
উত্তর – (d) উল্লম্বভাবে নীচের দিক
3. একটি সুদীর্ঘ ঋজু তড়িদ্বাহী পরিবাহীর জন্য বলরেখাগুলি —
(a) বৃত্তাকার
(b) আয়তাকার
(c) বর্গকার
(d) ত্রিভুজাকার
উত্তর – (a) বৃত্তাকার
4. সুদীর্ঘ তড়িদ্বাহী স্প্রিং আকৃতির পরিবাহীর অভ্যন্তরে চৌম্বক বলরেখাগুলি কেমন হয়?
(a) সমান্তরাল সরলরেখা
(b) বৃত্তাকার
(c) আয়তাকার
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (a) সমান্তরাল সরলরেখা
5. ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মে মধ্যমা—
(a) তড়িৎপ্রবাহের দিক নির্দেশ করে
(b) চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক নির্দেশ করে
(c) পরিবাহীর গতির অভিমুখ নির্দেশ করে
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (a) তড়িৎপ্রবাহের দিক নির্দেশ করে
6. বালোর চক্র কাজ করে—
(a) শুধুমাত্র ac-তে
(b) শুধুমাত্র dc-তে
(c) dc ও ac উভয়েই
(d) dc ও ac কোনোটিই নয়
উত্তর – (b) শুধুমাত্র dc-তে
7. বালোর চক্রে ব্যবহৃত তরল হল—
(a) গ্লিসারিন
(b) তার্পিন তেল
(c) পারদ
(d) কেরোসিন
উত্তর – (c) পারদ
৪. নিম্নের কোন্টি তড়িৎশক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে?
(a) ডায়নামো
(b) ট্রান্সফরমার বৈদ্যুতিক
(c) বৈদ্যুতিক মোটর
(d) আবেশক
উত্তর – (c) বৈদ্যুতিক মোটর
9. বৈদ্যুতিক মোটরে আর্মেচারের ঘূর্ণন বেগ বাড়ানো যায় —
(a) প্রবাহমাত্রা বাড়িয়ে
(b) কুন্ডলীর পাকসংখ্যা বাড়িয়ে
(c) শক্তিশালী চুম্বক ব্যবহার করে
(d) a,b,c সবকটি
উত্তর – (d) a,b,c সবকটি
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়মের সাহায্যে কী নির্ণয় করা যায় ?
উত্তর – কোনো তড়িদ্বাহী তারের চারিদিকে যে চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় তার অভিমুখ অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়মের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়।
2. অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তি পশ্চিম থেকে পূর্বে সাঁতার কাটলে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর বিক্ষেপ কোন্ দিকে হবে?
উত্তর – অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তি পশ্চিম থেকে পূর্বে সাঁতার কাটলে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর বিক্ষেপ উত্তর দিকে হবে।
3. অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তি কোন্ দিকে সাঁতার কাটলে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর বিক্ষেপ দক্ষিণ দিকে হবে?
উত্তর – অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তি পূর্ব থেকে পশ্চিম দিক বরাবর সাঁতার কাটলে চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর বিক্ষেপ দক্ষিণ দিকে হবে।
4. কোনো চৌম্বক ক্ষেত্রে কোনো চুম্বকের দক্ষিণ মেরুর ওপর পূর্ব দিক বরাবর বল ক্রিয়া করলে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ কোন্ দিক বরাবর?
উত্তর – কোনো চৌম্বক ক্ষেত্রে কোনো চুম্বকের দক্ষিণ মেরুর ওপর পূর্ব দিক বরাবর বল ক্রিয়া করলে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ পশ্চিম দিক বরাবর।
5. দুটি চৌম্বক বলরেখা কি পরস্পরকে ছেদ করে?
উত্তর – না, দুটি চৌম্বক বলরেখা কখনও পরস্পরকে ছেদ করে না।
6. ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মে চৌম্বক ক্ষেত্র ও তড়িৎক্ষেত্রের মধ্যবর্তী কোণ কত?
উত্তর – ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মে চৌম্বক ক্ষেত্র ও তড়িৎক্ষেত্রের মধ্যবর্তী কোণ 90° ।
7. ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মে তর্জনী দিয়ে কীসের অভিমুখ বোঝানো হয়?
উত্তর – ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মে তর্জনী দিয়ে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ বোঝানো হয়।
8. কোন্ ধরনের তড়িৎপ্রবাহে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন হয়?
উত্তর – সমপ্রবাহ বা dc-তে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন হয়।
9. বার্লোর চক্রের ঘূর্ণনের অভিমুখ কীভাবে নির্ণয় করা যায়?
উত্তর – বার্লোর চক্রের ঘূর্ণনের অভিমুখ ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়মের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়।
10. যদি তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ বিপরীত করা হয় তাহলে বার্লো চক্রের গতিতে কী পরিবর্তন ঘটবে?
উত্তর – বার্লোর চক্রে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ একই রেখে তড়িৎপ্রবাহ বিপরীতমুখী করলে চক্রটি বিপরীত দিকে ঘুরবে।
11. বার্লোর চক্রে চুম্বকের মেরু দুটিকে উলটে দিলে চক্রের ঘূর্ণনের কী হবে?
উত্তর – বার্লোর চক্রে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ একই রেখে চুম্বকের মেরু দুটিকে উলটে দিলে বার্লোর চক্র বিপরীত দিকে ঘুরবে।
12. বার্লোর চক্রে তড়িৎপ্রবাহ বিপরীতমুখী করলে এবং একই সঙ্গে চুম্বকের মেরু দুটিকে উলটে দিলে চক্রের ঘূর্ণনের কী হবে?
উত্তর – বার্লোর চক্রে তড়িৎপ্রবাহ বিপরীতমুখী করলে ও একই সঙ্গে চুম্বকের মেরু দুটিকে উলটে দিলে বার্লোর চক্র একই দিকে ঘুরবে।
13. dc-র পরিবর্তে ac পাঠালে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণনের কী হবে?
উত্তর – dc-এর পরিবর্তে ac পাঠালে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন বন্ধ হয়ে যাবে।
14. মোটরের আর্মেচারের ঘূর্ণনের অভিমুখ কোন্ নিয়ম দ্বারা নির্ণয় করা যায়?
উত্তর – মোটরের আর্মেচারের ঘূর্ণনের অভিমুখ ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়ম দ্বারা নির্ণয় করা যায়।
15. বার্লোর চক্রে কিংবা বৈদ্যুতিক মোটরে কোন্ শক্তি কোন্ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়?
উত্তর – বৈদ্যুতিক মোটরে তড়িৎশক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি বিচ্ছিন্ন সর্ববাধামুক্ত উত্তর মেরুকে স্থাপন করলে সেটি দক্ষিণ দিক বরাবর গতিশীল হলে ওই বিন্দুতে দক্ষিণ চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ …….. দিক বরাবর।
উত্তর – দক্ষিণ
2. কোনো তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তারটি চুম্বকিত ………..।
উত্তর – হয় না
3. তড়িদ্বাহী বৃত্তাকার কুণ্ডলীর যেদিক থেকে দেখলে তড়িৎপ্রবাহ দক্ষিণাবর্তী সেই প্রান্তে ………. মেরু সৃষ্টি হয়।
উত্তর – S বা দক্ষিণ
4. তড়িদ্বাহী বৃত্তাকার কুণ্ডলীর যেদিক থেকে দেখলে তড়িৎপ্রবাহ ……….. সেই প্রান্তে N-মেরুর সৃষ্টি হয়।
উত্তর – বামাবর্তী
5. দক্ষিণ মুষ্ঠি নিয়মে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ বাদে অন্য আঙুলগুলো ……….. অভিমুখ নির্দেশ করে।
উত্তর – চৌম্বক বলরেখার
6. চৌম্বক বলরেখা বদ্ধবক্র হতে ………..।
উত্তর – পারে
TOPIC – E তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ ও গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক বর্তনী
সংক্ষিপ্ত/ দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
1. চৌম্বক প্রবাহ কাকে বলে? তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ কাকে বলে?
উত্তর – চৌম্বক ক্ষেত্রে অবস্থিত কোনো তলের মধ্য দিয়ে লম্বভাবে অতিক্রান্ত চৌম্বক বলরেখার সংখ্যাকে চৌম্বক প্রবাহ বলা হয়।
কোনো বন্ধ কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হলে কুণ্ডলীতে একটি তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় এবং একটি তড়িৎপ্রবাহের উদ্ভব হয়। এই ঘটনাকে তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ বলা হয়।
2. আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ কাকে বলে? আবিষ্ট তড়িৎচালক বল কাকে বলে?
উত্তর – কোনো বন্ধ কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হলে কুণ্ডলীতে যে তড়িৎপ্রবাহ চলে তাকে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ বলা হয়।
একটি চৌম্বক ক্ষেত্র ও একটি পরিবাহীর মধ্যে আপেক্ষিক গতি থাকলে ওই পরিবাহীতে যে তড়িৎচালক বলের উদ্ভব হয়, তাকে আবিষ্ট তড়িৎচালক বল বলা হয়।
3. তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ-সংক্রান্ত ফ্যারাডের সূত্রগুলি লেখো।
উত্তর – তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ-সংক্রান্ত ফ্যারাডের সূত্রাবলি:
প্রথম সূত্র: কোনো বন্ধ কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হলে কুণ্ডলীতে একটি তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় এবং কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ চলে।
দ্বিতীয় সূত্র: তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের ক্ষেত্রে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তনের হারের সঙ্গে সমানুপাতিক।
4. তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ-সংক্রান্ত লেঞ্জের সূত্রটি লেখো।
উত্তর – তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের ক্ষেত্রে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ এমন একটি অভিমুখে হবে যাতে, যে কারণে প্রবাহের সৃষ্টি হয় প্রবাহ সর্বদা সেই কারণকে বাধা দেয়।
5. শক্তির সংরক্ষণ নীতির সাহায্যে লেঞ্জের সূত্রটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – মনে করি, দণ্ডচুম্বকের N মেরুকে কোনো বদ্ধ কুণ্ডলীর দিকে অক্ষ বরাবর আনার জন্য কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হয় দক্ষিণাবর্তী (clockwise) অর্থাৎ কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে S মেরু উৎপন্ন হয়। এই সৃষ্ট S মেরু দণ্ডচুম্বকের N মেরুকে আকর্ষণ করে। ফলে দণ্ডচুম্বকটি কুণ্ডলীর দিকে ত্বরণসহ অগ্রসর হয়। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বাহ্যিক কোনো শক্তির সরবরাহ ছাড়াই চুম্বকের গতিশক্তি ও তড়িৎশক্তি পাওয়া যাচ্ছে যা শক্তির সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী অসম্ভব। সুতরাং, দণ্ডচুম্বকের N মেরু যখন কুণ্ডলীর দিকে অক্ষ বরাবর অগ্রসর হবে তখন কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ হবে বামাবর্তী (anticlockwise)। ফলে কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে N মেরুর সৃষ্টি হবে যা দণ্ডচুম্বকের N মেরুকে বিকর্ষণ করবে। এই বিকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে দণ্ডচুম্বককে কুণ্ডলীর দিকে অক্ষ বরাবর নিয়ে যেতে গেলে যান্ত্রিক কার্য করতে হবে। এই যান্ত্রিক কার্যই তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ এমন অভিমুখে হবে যাতে, যে কারণে প্রবাহের সৃষ্টি হয় প্রবাহ সর্বদা সেই কারণকে বাধা দেয়—এটিই হল লেঞ্জের সূত্র।
6. দেখাও যে, লেঞ্জের সূত্রটি শক্তির সংরক্ষণ নীতির সমর্থক।
অথবা, লেঞ্জের সূত্রের সাহায্যে শক্তির সংরক্ষণ নীতি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের ঘটনা থেকে জানা যায় যে, কোনো চুম্বক ও কুণ্ডলীর মধ্যে আপেক্ষিক গতি থাকলে কুণ্ডলীতে একটি তড়িৎপ্রবাহ আবিষ্ট হয়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে কুণ্ডলীর কাছে কিংবা এর থেকে দূরে ম্বককে নিয়ে যেতে হলে সর্বদাই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে চুম্বক ও কুণ্ডলীর মধ্যে আপেক্ষিক গতি বজায় রাখতে হলে এই বাধার বিরুদ্ধে কার্য (ধনাত্মক কার্য) করতে হয়। এই কার্যই কুণ্ডলীতে তড়িৎশক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করে। অর্থাৎ, শক্তির সংরক্ষণ নীতিটি বজায় থাকে। লেঞ্জের সূত্রতেও বলা হয়েছে যে, আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের অভিমুখ এমনই হয় যেন তা বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টির কারণকেই বাধা দেয়। লেঞ্জের সূত্রটি এইজন্যই শক্তির সংরক্ষণ নীতির সমর্থক।
7. একটি বৃত্তাকার পরিবাহী কুণ্ডলীর অক্ষ বরাবর একটি দণ্ডচুম্বক রাখা আছে। এবার কুণ্ডলী ও দণ্ডচুম্বক উভয়কেই একইদিকে একই বেগে গতিশীল করা হলে কুণ্ডলীতে কোনো তড়িৎপ্রবাহ আবিষ্ট হবে কি?
উত্তর – কুণ্ডলী ও দণ্ডচুম্বক উভয়কেই একইদিকে একই বেগে গতিশীল করা হলে কুণ্ডলী ও দণ্ডচুম্বকের মধ্যে কোনো আপেক্ষিক বেগ থাকে না, ফলে কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের কোনো পরিবর্তন হয় না। তাই কুণ্ডলীতে কোনো তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় না। ফলে ওই কুণ্ডলীতে কোনো তড়িৎপ্রবাহ আবিষ্ট হবে না।
8. দুটি অভিন্ন দণ্ডচুম্বকের উত্তর মেরুকে দুটি অভিন্ন বদ্ধ বৃত্তাকার পরিবাহী কুণ্ডলীর তলের সমকোণে কেন্দ্র থেকে একই উচ্চতায় রাখা আছে। এবার দুটি দণ্ডচুম্বককেই কুণ্ডলীর কাছে একই উচ্চতায় আনা হল, প্রথমটিকে দ্রুত ও দ্বিতীয়টিকে আস্তে। কোন্ ক্ষেত্রে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ বেশি হবে?
উত্তর – প্রথম কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ বেশি হবে কারণ প্রথম দণ্ডচুম্বককে দ্রুততার সঙ্গে আনার জন্য প্রথম কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তনের হার দ্বিতীয়টি অপেক্ষা বেশি হয় ফলে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মানও বেশি হয়। ফলে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ দ্বিতীয়টি অপেক্ষা বেশি হয়।
9. একমুখী তড়িৎপ্রবাহ বা de কাকে বলে? পরিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর – তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ সর্বদা একইদিকে হলে তাকে একমুখী তড়িৎপ্রবাহ বা dc বলা হয়।
যে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর্যায়ক্রমে বিপরীত হয় তাকে পরিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ বা ac বলা হয়।
10. dc অপেক্ষা ac-এর তিনটি সুবিধা লেখো।
উত্তর – dc অপেক্ষা ac-এর সুবিধাগুলি হল—
- ট্রান্সফরমারের সাহায্যে ac-এর বিভব প্রয়োজনমতো কমানো বা বাড়ানো যায়, dc-তে এই সুবিধা নেই।
- ac সরবরাহ ও বণ্টনে শক্তিক্ষয় তুলনামূলকভাবে কম হয়।
- জেনারেটরের সাহায্যে dc অপেক্ষা ac উৎপাদনের খরচ কম।
11. বৈদ্যুতিক জেনারেটর বা ডায়নামো কাকে বলে?
উত্তর – যে যন্ত্রে তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের নীতিকে কাজে লাগিয়ে চৌম্বক ক্ষেত্রে পরিবাহী কুণ্ডলীকে ঘুরিয়ে যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় তাকে ডায়নামো বলা হয়।
12. একটি ac ডায়নামোর গঠন সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর – 57 নং চিত্রে একটি ac ডায়নামোর মূল অংশ দেখানো হয়েছে। এর মূল অংশগুলি হল – (1) ক্ষেত্রচুম্বক, (2) আর্মেচার, (3) স্লিপ রিং, (4) ব্রাশ।
- ক্ষেত্ৰচুম্বক: N ও S হল চুম্বকের দুটি মেরু, এটিকে ক্ষেত্রচুম্বক বলা হয়।
- আর্মেচার: ক্ষেত্রচুম্বকের মেরু দুটির মাঝে ABCD হল একটি আয়তাকার তার কুণ্ডলী। একটি নরম লোহার চোঙের ওপর অন্তরিত তামার তার জড়িয়ে এটি ঠন করা হয়ে থাকে। একে আর্মেচার বলা হয়।
- স্লিপ রিং: ABCD কুণ্ডলীর খোলা প্রান্ত দুটি যথাক্রমে দুটি পিতলের মসৃণ গোলাকার স্লিপ রিং R1 ও R2 -এর সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই রিং দুটি কুণ্ডলীর ঘূর্ণনের সঙ্গে ঘোরে।
- ব্রাশ: B1 ও B2 হল দুটি কার্বন নির্মিত ব্রাশ। যখন ABCD কুণ্ডলী রিং-সহ ঘোরে তখন ব্রাশগুলি আলগাভাবে রিং দুটিকে স্পর্শ করে থাকে। B1 ও B2 ব্রাশের সঙ্গে বহিবর্তনীতে R রোধ যুক্ত করা হয়।
13. ac ডায়নামোর কার্যপ্রণালী সংক্ষেপে বিবৃত করো।
উত্তর – 57 নং চিত্রে প্রদর্শিত ABCD কুণ্ডলীকে ঘোরালে কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হয়। ফলে কুণ্ডলীতে তড়িৎচালক বলের আবেশ ঘটে এবং বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ চলে। ABCD কুণ্ডলীর AB বাহু যখন নীচের দিকে নামে তখন R রোধে তড়িৎপ্রবাহ যে অভিমুখে হয়, AB বাহু যখন ওপর দিকে ওঠে তখন R রোধে তড়িৎপ্রবাহ বিপরীত দিকে হয়। অর্থাৎ ABCD কুণ্ডলীর একবার পূর্ণ আবর্তনে R রোধে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখের দু-বার পরিবর্তন ঘটে। এইভাবে ABCD কুণ্ডলী সমকৌণিক বেগে ঘুরতে থাকলে R রোধে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর্যায়ক্রমে বিপরীত হয় এবং উৎপন্ন তড়িৎপ্রবাহ ac হয়।
বিকল্প পদ্ধতি
কার্যপ্রণালী: ac ডায়নামোতে আর্মেচার (ABCD) টি যখন চৌম্বক মেরু দুটির মধ্যে ঘুরতে থাকে, তখন কুণ্ডলীর বিভিন্ন অবস্থানে তার মধ্যে দিয়ে চৌম্বক বলরেখার সংখ্যা পরিবর্তিত হতে থাকে। 58 নং চিত্রে কোনো চৌম্বক ক্ষেত্রে অবস্থিত একটি ঘূর্ণায়মান কুণ্ডলীর বিভিন্ন অবস্থান দেখানো হল এবং θ হল কুণ্ডলীর তলের অভিলম্বের সঙ্গে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখের মধ্যে কোণ। (1) নং অবস্থানে কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান শূন্য হয়। কুণ্ডলীটি 90° ঘুরে (2) নং অবস্থানে এলে কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান সর্বোচ্চ হয়। একইভাবে কুণ্ডলীর (3) ও (4) নং অবস্থান দুটিতে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান যথাক্রমে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ হয়। তবে (4) নং অবস্থানে B বিন্দুর গতির অভিমুখ (2) নং অবস্থানের বিপরীত দিকে হওয়ায় তড়িৎচালক বলও বিপরীত অভিমুখে আবিষ্ট হবে। কুণ্ডলীটি যখন (5) নং অবস্থানে আসে, তখন কুন্ডলীর গতির একটি পর্যায়কাল (T) শেষ হয় অর্থাৎ কুন্ডলীটির একটি পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন হয়। কুন্ডলীর এই আবর্তনের ফলে কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎচালক বল অনুযায়ী বাইরের বর্তনীতে রোধের মধ্যে দিয়ে একটি পরিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি হবে।

14. একটি dc ডায়নামোর গঠন সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর – 59 নং চিত্রে একটি dc ডায়নামোর মূল অংশ দেখানো হয়েছে। এর মূল অংশগুলি হল – (1) ক্ষেত্রচুম্বক, (2) আর্মেচার (3) কম্যুটেটর, (4) ব্রাশ।
- ক্ষেত্রচুম্বক: N ও S হল চুম্বকের দুটি মেরু, এটিকে ক্ষেত্রচুম্বক বলা হয়।
- আর্মেচার: ক্ষেত্রচুম্বকের মেরু দুটির মাঝে ABCD হল একটি আয়তাকার কুণ্ডলী। একটি নরম লোহার চোঙের ওপর অন্তরিত তামার তার জড়িয়ে এটি গঠন করা হয়ে থাকে। একে আর্মেচার বলা হয়।
- কম্যুটেটর: ABCD কুণ্ডলীর খোলা প্রান্ত দুটি যথাক্রমে পিতলের তৈরি দুটি অর্ধচোঙাকৃতি পাত R1 ও R2 -এর সঙ্গে যুক্ত থাকে। R1 ও R2 কে একত্রে কম্যুটেটর বলা হয়। কুণ্ডলী ঘুরলে তার সঙ্গে কম্যুটেটরও ঘোরে।
- ব্রাশ: B1 ও B2 হল দুটি কার্বন নির্মিত ব্রাশ। যখন ABCD কুণ্ডলী কম্যুটেটরসহ ঘোরে তখন ব্রাশগুলি কম্যুটেটরের দুটি পাতের সঙ্গে আলগাভাবে স্পর্শ করে থাকে। B1 ও B2 ব্রাশের সঙ্গে বহিবর্তনীতে R রোধ যুক্ত করা হয়।
15. dc ডায়নামোর কার্যপ্রণালী সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – আর্মেচারের আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ওর সঙ্গে যুক্ত কম্যুটেটর এবং ব্রাশ দুটির পর্যায়ক্রমে সংযোগ ঘটতে থাকে। B1 ও B2 ব্রাশের সঙ্গে বহিবর্তনীতে R রোধ যুক্ত করা হয়। এবার কুণ্ডলীটি ঘুরতে থাকলে কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হয়। ফলে কুণ্ডলীতে তড়িৎচালক বলের আবেশ ঘটে এবং বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ চলে। কুণ্ডলীটি ঘুরতে ঘুরতে যখন খাড়া হয় তখন AB বাহু নীচে ও CD বাহু ওপরে থাকে। এখন গতিজাড্যের জন্য AB বাহু ওপরের দিকে ও CD বাহু নীচের দিকে নামতে চায়। তখন R1 পাত B2 ব্রাশের সঙ্গে ও R2 পাত B1 ব্রাশের সংস্পর্শে আসে। ফলে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ যে মুহূর্তে পরিবর্তিত হতে যাবে, ঠিক তখনই ব্রাশ দুটির সঙ্গে কম্যুটেটরের পরিবর্তন হবে। সুতরাং, প্রতিটি পূর্ণ আবর্তনের জন্য বহিবর্তনীতে প্রবাহের অভিমুখ একই দিকে হবে। তবে এই প্রবাহ একমুখী হলেও সময়ের সঙ্গে তড়িৎচালক বলের মানের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। এই বিষয়টি 60 নং চিত্রে দেখানো হয়েছে।
16. ডায়নামো ও বৈদ্যুতিক মোটরের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর – ডায়নামো ও বৈদ্যুতিক মোটরের মধ্যে পার্থক্য—
ডায়নামো |
বৈদ্যুতিক মোটর |
1. ডায়নামোতে যান্ত্রিক শক্তি, তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। |
1. বৈদ্যুতিক মোটরে তড়িৎশক্তি,যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। |
2. ডায়নামো তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের নীতির ভিত্তিতে গঠিত। |
2. বৈদ্যুতিক মোটর তড়িৎপ্রবাহের ওপর চৌম্বক ক্রিয়ার ভিত্তিতে গঠিত। |
17. তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর – তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে কয়লার গুঁড়ো ব্যবহার করে জল ফুটিয়ে উৎপন্ন বাষ্পের সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে জেনারেটর চালনা করা হয়। পদ্ধতিগুলি হল—
- স্টিম বয়লারে উচ্চচাপযুক্ত বাষ্প উৎপন্ন করা হয়।
- প্রচণ্ড উত্তপ্ত, উচ্চচাপযুক্ত বাষ্প উচ্চবেগে টারবাইন কক্ষে প্রবেশ করে।
- টারবাইন ব্লেডে এই বাষ্পের ধাক্কায় টারবাইন ঘুরতে শুরু করে। টারবাইনের যান্ত্রিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জেনারেটর চালানো হয়, ফলে যান্ত্রিক শক্তি তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
- এরপর শক্তি হারিয়ে বাষ্পের চাপ হ্রাস পায় এবং তা টারবাইন ব্লেডের ফাঁক দিয়ে কনডেনসারে এসে জমা হয়।
- পাম্প (1) -এর সাহায্যে কনডেনসারের মধ্যে ঠান্ডা জলের ঘূর্ণি তৈরি করা হয়। এর সংস্পর্শে বাষ্প এখানে ঘনীভূত হয়ে জলে পরিণত হয়।
- এই জলকে আবার হিটার কক্ষে পাঠানো হয়। এখানে নিম্নচাপযুক্ত বাষ্প পুনরায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ওই বাষ্পের চাপ বাড়িয়ে পাম্প (2) – র সাহায্যে তাকে আবার বয়লারের মধ্যে দিয়ে একইভাবে টারবাইন কক্ষে পাঠানো হয় [চিত্র 61]। এইভাবে প্রক্রিয়াটি ক্রমাগত চলতে থাকে।
18. জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিত্তিগত কৌশলটি সংক্ষেপে লেখো। এখানে শক্তির রূপান্তরটি কীরূপ ?
উত্তর – জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সাধারণত পাহাড়ের মাথায় বা খরস্রোতা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে জলাধারে জল সঞ্চয় করে রাখা হয়। এবার অনেক উঁচুতে থাকা জলাধারের জলকে ফ্লুইস গেট খুলে নীচে ফেলা হয়। নীচে পড়ার জন্য জলের স্থিতিশক্তি হ্রাস পায় এবং গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। এই গতিশীল জলের ধাক্কায় টারবাইন ঘুরতে শুরু করে। এই টারবাইন একটি অক্ষদণ্ডের মাধ্যমে একটি জেনারেটরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। টারবাইনের গতিশক্তি থেকে ডায়নামোর সাহায্যে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন হয়।
অনেক উঁচু স্থানে জলাধারে সঞ্চিত জলের স্থিতিশক্তি প্রথমে গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এরপর এই শক্তি তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
জেনে রাখো
19. বাড়িতে বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবস্থা বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর – বাড়িতে বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবস্থা-
- বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থার ওভারহেড বা আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল থেকে বাড়িতে দুটি তার টানা হয়। একটি হল লাইভ তার, অন্যটি নিউট্রাল তার।
- লাইভ তার ও নিউট্রাল তারকে প্রথমে মিটারের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
- মিটার থেকে মেইন ফিউজের মধ্য দিয়ে লাইভ তারকে এবং সরাসরি নিউট্রাল তারকে মেইন সুইচের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
- আর্থ তারকে মেইন সুইচের মধ্য দিয়ে সুইচ বোর্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
- মেইন সুইচ থেকে লাইভ তার কতকগুলি শাখা লাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন সুইচ বোর্ডে যায়।
- সুইচ বোর্ডে বৈদ্যুতিক পাখা, টিভি, বাতি ইত্যাদি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনমতো পয়েন্ট করা হয়।
- প্রতিটি সুইচ বোর্ডে লাইভ তারটি একটি ফিউজের মধ্য দিয়ে যায়।
- সুইচ বোর্ড থেকে লাইভ তার ও নিউট্রাল তারের মাধ্যমে বাড়ির ওয়্যারিং করা হয়। বাড়িতে বাতি, রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিক পাখা ইত্যাদি সব সমান্তরাল সমবায়ে থাকে।
20. গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত তড়িৎ সরঞ্জামগুলি সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত থাকে কেন ব্যাখ্যা করো।
উত্তর – গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত তড়িৎ সরঞ্জামগুলি সব সমান্তরাল সমবায়ে থাকে, কারণ প্রয়োজনমতো যে-কোনো একটি অন বা অফ করা যায় এবং প্রত্যেকটি তড়িত্যন্ত্রের দু-প্রান্তের বিভবপ্রভেদ স্থির থাকে।
21. বৈদ্যুতিক বোর্ডে যে সুইচ ব্যবহার করা হয় সেটি লাইনের সঙ্গে কীভাবে সংযুক্ত থাকে?
উত্তর – বৈদ্যুতিক বোর্ডে যে সুইচ ব্যবহার করা হয় তাতে তার সংযোগের জন্য দুটি ক্রু থাকে। একটি স্ক্রু লাইভ তারের সঙ্গে ও অন্য স্কু-টি যে তড়িত্যন্ত্র (যেমন—বাল্ব, ফ্যান, হিটার কিংবা সকেট) ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। ওই তড়িত্যন্ত্রটি অবশ্যই নিউট্রাল তারের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়।
22. গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক বর্তনীর একটি সরল রেখাচিত্র অঙ্কন করো। ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।
উত্তর – গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক বর্তনীর সরল রেখাচিত্র—
23. গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক বর্তনীতে মেইন সুইচ কীভাবে সংযোগ করা হয় ?
উত্তর – বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থা থেকে বাড়িতে টানা লাইভ তারটি যথাক্রমে মিটার ও মেইন ফিউজের মধ্য দিয়ে মেইন সুইচের সঙ্গে যোগ করা হয়ে থাকে [চিত্র ]। আবার অন্যদিকে নিউট্রাল তারটি মিটারের মধ্য দিয়ে সরাসরি মেইন সুইচের সঙ্গে যোগ করা হয়ে থাকে। আর্থ তারটিকেও মেইন সুইচের সঙ্গে যুক্ত করা থাকে। মেইন সুইচের আউটপুটে তিনটি লাইন থাকে। এগুলি হল—লাইভ লাইন, নিউট্রাল লাইন ও আর্থ লাইন থাকে।
24. সকেটের গঠন সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – টিভি, রেফ্রিজারেটর, হিটার, মিক্সার প্রভৃতি তড়িৎযন্ত্রকে প্লাগের সাহায্যে সকেটে আটকে তড়িৎ সংযোগ করা হয়। সকেটে তিনটি ছিদ্র থাকে এবং ছিদ্রের প্রায় অর্ধেক অংশে ধাতব আবরণ থাকে। এই তিনটি ছিদ্রের নীচের ছিদ্র দুটির সঙ্গে লাইভ তার এবং নিউট্রাল তার এবং ওপরের অপেক্ষাকৃত বড়ো ছিদ্রটির সঙ্গে আর্থ তার যুক্ত করা থাকে। এই সকেট আবার সংশ্লিষ্ট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
25. থ্রি-পিন প্লাগের গঠন সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর – থ্রি-পিন প্লাগে তিনটি পিন থাকে। এই তিনটি পিনের ওপরের একটি পিন বাকি দুটি সমান পিনের চেয়ে একটু মোটা ও লম্বা হয়। পিনের একটি লাইভ তারের সঙ্গে ও অন্যটি নিউট্রাল তারের সঙ্গে যুক্ত। মোটা পিনের সঙ্গে আর্থের সংযোগ করা হয়।
26. থ্রি-পিন প্লাগের আর্থ পিনটি কিছুটা বেশি মোটা ও লম্বা করা হয় কেন?
অনুরূপ প্রশ্ন, থ্রি-পিন প্লাগের একটি পিন অপেক্ষাকৃত মোটা রাখা হয় কেন?
উত্তর – থ্রি-পিন প্লাগের আর্থ পিনটি মোটা করা হয় [চিত্র ] যাতে ভুলবশত এই পিনটিকে অন্য দুটি ছিদ্রে প্রবেশ করানো না যায়। আবার আর্থ পিনটি লম্বা করা হয়, যাতে লাইভ পিন বা নিউট্রাল পিন অপেক্ষা এই পিনটির প্রান্ত, সকেটের সঙ্গে আগে যুক্ত হয় এবং ব্যবহারকারীর শক খাওয়ার সম্ভাবনা কম হয়।
27. থ্রি-পিন প্লাগে প্রতিটি পিনের সম্মুখভাগ চেরা থাকে কেন?
উত্তর – থ্রি-পিন প্লাগে প্রতিটি পিনের সম্মুখভাগ লম্বালম্বিভাবে চেরা থাকে [চিত্র ], যাতে সকেটে সংযোগ আলগা হয়ে গেলে একটু টেনে ভালোভাবে সংযোগ স্থাপন করা যায়। সকেটের সঙ্গে পিনের সংযোগ ঠিকভাবে না হলে সংযোগ আলগা হয়ে স্ফুলিঙ্গ হতে পারে যা বিপজ্জনক।
28. আর্থিং করার কারণ কী?
অথবা, আর্থিং-এর প্রয়োজনীয়তা কী?
অনুরূপ প্রশ্ন, গৃহস্থালি ‘ওয়্যারিং’-এ আর্থিং-এর গুরুত্ব কী?
উত্তর – তড়িৎসংযোগ ব্যবস্থায় ত্রুটিজনিত কোনো কারণে ব্যবহৃত যন্ত্রের ধাতব আচ্ছাদন তড়িগ্রস্ত হয়ে পড়লে বিপদের আশঙ্কা থাকে। ভূমিতে দাঁড়ানো কোনো ব্যক্তি ওই যন্ত্র স্পর্শ করলে তার শক লাগার সম্ভাবনা থাকে। তড়িৎযন্ত্র আর্থিং করা থাকলে ধাতব আচ্ছাদন তড়িগ্রস্ত হয়ে পড়লে ওই তড়িৎ আর্থিং-এর মধ্য দিয়ে ভূমিতে চলে যায় ফলে শক লাগার সম্ভাবনা এড়ানো যায়।
29. কীভাবে আর্থিং করা হয় ?
উত্তর – আর্থিং-এর উদ্দেশ্যে একটি ধাতব পরিবাহী দণ্ড ভূমিতে পুঁতে দেওয়া হয়। গৃহস্থালির বর্তনীতে এই দণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত একটি অতিরিক্ত তার (আর্থিং তার) থাকে। ও পিন সকেটের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত মোটা ছিদ্রটি এই তারের সঙ্গে সংযোগসাধন করে। তারটির রোধ অত্যন্ত কম। তড়িত্যন্ত্রের ধাতব আচ্ছাদনের সঙ্গে আর্থিং তারের সংযোগ থাকে। ভূমির বিভব হল শূন্য। তাই কোনো কারণে যন্ত্রের আচ্ছাদন তড়িগ্রস্ত হয়ে পড়লে ওই তড়িৎ সরাসরি ভূমিতে চলে যায়। ফলে শক লাগার সম্ভাবনা কমে যায়।
30. প্লাগ ব্যবহারের দুটি সতর্কতা লেখো।
উত্তর – (1) জলে ভেজা হাত দিয়ে প্লাগ স্পর্শ করা উচিত নয়, এতে শক লাগার সম্ভাবনা থাকে। (2) প্লাগ টাইট করে আটকাতে হবে, না হলে আলগা কানেকশনের জন্য স্ফুলিঙ্গ তৈরি হতে পারে।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. কোনো বন্ধ কুণ্ডলীতে তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় যখন কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহ –
(a) শুধুমাত্র বৃদ্ধি পায়
(b) শুধুমাত্র হ্রাস পায়
(c) স্থির থাকে
(d) বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়।
উত্তর – (d) বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়।
2. কোনো কুণ্ডলীতে তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় না যখন কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহ —
(a) হ্রাস পায়
(b) অপরিবর্তিত থাকে
(c) বৃদ্ধি পায়
(d) পরিবর্তিত হয়।
উত্তর – (b) অপরিবর্তিত থাকে
3. একটি বৃত্তাকার কুণ্ডলীর অক্ষ বরাবর একটি বেলনাকার দণ্ডচুম্বক রাখা হল [চিত্র 67]। দণ্ডচুম্বকটিকে নিজের অক্ষ সাপেক্ষে আবর্তিত করা হলে, ওপর থেকে দেখলে আবিষ্ট প্রবাহমাত্রা কোন্ দিকে হবে?
(a) বামাবর্তী
(b) দক্ষিণাবর্তী
(c) প্রথমে বামাবর্তী পরে দক্ষিণাবর্তী
(d) তড়িৎপ্রবাহ আবিষ্ট হবে না।
উত্তর – (d) তড়িৎপ্রবাহ আবিষ্ট হবে না।
4. লেঞ্জের সূত্র থেকে জানতে পারি—
(a) আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান
(b) আবিষ্ট প্রবাহের মান
(c) আবিষ্ট প্রবাহের অভিমুখ
(d) আবিষ্ট প্রবাহের মান ও অভিমুখ
উত্তর – (c) আবিষ্ট প্রবাহের অভিমুখ
5. বর্তনীতে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের অভিমুখ নির্ণয় করা যায় যে সূত্রের সাহায্যে সেটি হল —
(a) লেঞ্জের সূত্র
(b) ফ্যারাডের প্রথম সূত্র
(c) ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্র
(d) অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ সূত্র
উত্তর – (a) লেঞ্জের সূত্র
6. একটি দণ্ডচুম্বকের S মেরুর দিকে একটি বদ্ধ কুণ্ডলীকে নিয়ে গেলে কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হবে —
(a) বামাবর্তী
(b) দক্ষিণাবর্তী
(c) প্রথমে বামাবর্তী পরে দক্ষিণাবর্তী
(d) প্রথমে দক্ষিণাবর্তী পরে বামাবর্তী
উত্তর – (b) দক্ষিণাবর্তী
7. চিত্রানুযায়ী A কুণ্ডলীকে B-এর দিকে নিয়ে গেলে B কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে সৃষ্টি হবে—
(a) N মেরু
(b) S মেরু
(c) প্রথমে N মেরু পরে S মেরু
(d) প্রথমে S মেরু পরে N মেরু
উত্তর – (a) N মেরু
৪. কোন্ ধরনের প্রবাহে অভিমুখ নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিপরীত হয়?
(a) dc
(b) dc ও ac
(c) dc ও ac কোনোটিই নয়
(d) ac
উত্তর – (d) ac
9. নিম্নবিভবের ac-কে উচ্চবিভবের ac করা যায় কীসের সাহায্যে?
(a) কনভার্টার
(b) একমুখীকারক
(c) স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার
(d) স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফরমার
উত্তর – (c) স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার
10. উচ্চবিভবের ac-কে নিম্নবিভবের ac করা যায় কীসের সাহায্যে?
(a) কনভার্টার
(b) একমুখীকারক
(c) স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার
(d) স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফরমার
উত্তর – (d) স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফরমার
11. যান্ত্রিক শক্তি থেকে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন করা যায় —
(a) বার্লোর চক্রে
(b) বৈদ্যুতিক মোটরে
(c) বৈদ্যুতিক জেনারেটরে
(d) ট্রান্সফরমারে
উত্তর – (c) বৈদ্যুতিক জেনারেটরে
12. dc জেনারেটর যে মূলনীতির ভিত্তিতে কাজ করে সেটি হল —
(a) তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ
(b) তড়িৎ-রাসায়নিক ক্রিয়া
(c) তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল
(d) তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বকীয় ফল
উত্তর – (a) তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ
13. জেনারেটরে ব্যবহৃত ব্রাশ কীসের তৈরি?
(a) লোহা
(b) তামা
(b) অ্যালুমিনিয়াম
(c) কার্বন
উত্তর – (c) কার্বন
14. বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম গৃহস্থালির বর্তনীতে কীভাবে যুক্ত করা হয়?
(a) শ্রেণি সমবায়
(b) সমান্তরাল সমবায়
(c) শ্রেণি ও সমান্তরাল সমবায়
(d) শ্রেণি বা সমান্তরাল সমবায়
উত্তর – (b) সমান্তরাল সমবায়
15. নীচের কোন্টি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র (ভারতে)?
(a) বোকারো
(b) বক্রেশ্বর
(c) শিবসমুদ্রম
(d) ফারাক্কা
উত্তর – (c) শিবসমুদ্রম
16. কোন্টি সুইচের কাজ নয়?
(a) বর্তনী সংযুক্ত করা
(b) বর্তনী বিচ্ছিন্ন করা
(c) তড়িৎপ্রবাহ চালু করা
(d) পরিবাহীর উন্নতা কমানো
উত্তর – (d) পরিবাহীর উন্নতা কমানো
17. লাইভ তারের রং—
(a) লাল
(b) কালো
(c) সবুজ
(d) আকাশি
উত্তর – (a) লাল
18. আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী লাইভ তারের রং—
(a) লাল
(b) বাদামি
(c) সবুজ
(d) নীল
উত্তর – (b) বাদামি
19. নিউট্রাল তারের রং—
(a) লাল
(b) কালো
(c) সবুজ
(d) আকাশি
উত্তর – (b) কালো
20. আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী কোন্ তারের রং সবুজ বা হলুদ হয়?
(a) লাইভ তার
(b) নিউট্রাল তার
(c) আর্থিং তার
(d) কোনোটিই নয়
উত্তর – (c) আর্থিং তার
21. লাইভ, নিউট্রাল ও আর্থ তারের মধ্যে কোন্টি উচ্চ বিভবে থাকে?
(a) আর্থ তার
(b) নিউট্রাল তার
(c) লাইভ তার
(d) তিনটিই একই বিভবে থাকে
উত্তর – (c) লাইভ তার
22. গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ফিউজ তার নীচের কোন্টির সঙ্গে যুক্ত থাকে?
(a) আর্থ লাইন
(b) লাইভ লাইন
(c) নিউট্রাল লাইন
(d) লাইভ ও নিউট্রাল উভয় লাইন
উত্তর – (b) লাইভ লাইন
23. বাড়িতে মিটারের সঙ্গে যুক্ত লাইভ তার কীসের মাধ্যমে মেইন সুইচের সঙ্গে যুক্ত থাকে?
(a) মেইন ফিউজ
(b) সকেট
(c) রেগুলেটর
(d) দ্বিমুখী সুইচ
উত্তর – (a) মেইন ফিউজ
24. গৃহবর্তনীতে কীসের পরিবর্তে MCB (Miniature Circuit Breaker) ব্যবহার করা হয়? —
(a) ফিউজ
(b) সুইচ
(c) থ্রি-পিন প্লাগ
(d) সকেট
উত্তর – (a) ফিউজ
একটি বা দুটি শব্দে অথবা একটি বাক্যে উত্তর দাও
1. একটি দণ্ডচুম্বকের মেরুকে কোনো বদ্ধ কুণ্ডলীর অক্ষ বরাবর কাছে নিয়ে গেলে কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে প্রবাহের অভিমুখ কী হবে?
উত্তর – কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হবে বামাবর্তী বা ঘড়ির কাঁটার বিপরীত অভিমুখে।
2. একটি দণ্ডচুম্বকের উত্তর মেরুকে কোনো বদ্ধ কুণ্ডলীর অক্ষ বরাবর দূরে সরালে কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ কী হবে?
উত্তর – কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হবে দক্ষিণাবর্তী বা ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে।
3. একটি দণ্ডচুম্বকের দক্ষিণ মেরুকে কোনো বন্ধ কুণ্ডলীর দিকে অক্ষ বরাবর কাছে নিয়ে গেলে কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ কী হবে?
উত্তর – কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হবে দক্ষিণাবর্তী বা ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে।
4. একটি দণ্ডচুম্বকের দক্ষিণ মেরুকে কোনো বদ্ধ কুণ্ডলীর অক্ষ বরাবর দূরে সরালে কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ কী হবে?
উত্তর – কুণ্ডলীর সম্মুখ প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ হবে বামাবর্তী বা ঘড়ির কাঁটার বিপরীত অভিমুখে।
5. ফ্লেমিং-এর ডান হাতের নিয়মানুসারে মধ্যমা কীসের দিক নির্দেশ করে?
উত্তর – ফ্লেমিং-এর ডান হাতের নিয়মানুসারে মধ্যমা আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহের দিক নির্দেশ করে।
6. লেঞ্জের সূত্র কোন্ নীতিকে সমর্থন করে?
উত্তর – লেঞ্জের সূত্র শক্তির সংরক্ষণ নীতিকে সমর্থন করে।
7. কোন্ ধরনের তড়িৎপ্রবাহে অভিমুখ পরিবর্তন হয় না?
উত্তর – dc বা সমপ্রবাহে অভিমুখ পরিবর্তন হয় না।
৪. কোন ধরনের তড়িৎপ্রবাহে অভিমুখ পরিবর্তন হয়?
উত্তর – ac বা পরিবর্তী প্রবাহে অভিমুখ পরিবর্তন হয়।
9. কীসের সাহায্যে উচ্চবিভব বা নিম্নবিভবের ac-কে যথাক্রমে নিম্নবিভব বা উচ্চবিভবের ac করা যায়?
উত্তর – ট্রান্সফরমারের সাহায্যে উচ্চবিভব বা নিম্নবিভবের ac-কে যথাক্রমে নিম্নবিভব বা উচ্চবিভবের ac করা যায়।
10. আমাদের দেশে ac মেইনসের কম্পাঙ্ক কত?
উত্তর – আমাদের দেশে ac মেইনসের কম্পাঙ্ক 50 Hz |
11. ডায়নামোতে কোন্ ধরনের শক্তি তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়?
উত্তর – ডায়নামোতে যান্ত্রিক শক্তি থেকে তড়িৎশক্তির রূপান্তর হয়।
12. ac ডায়নামোতে কোন্ শক্তি, কোন্ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়?
উত্তর – ac ডায়নামোতে যান্ত্রিক শক্তি, তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
13. তাপবিদ্যুৎ শক্তি ও জলবিদ্যুৎ শক্তির মধ্যে কোন্টি পুনর্নবীকরণযোগ্য (renewable) ?
উত্তর – তাপবিদ্যুৎ শক্তি ও জলবিদ্যুৎ শক্তির মধ্যে জলবিদ্যুৎ শক্তি হল পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি।
14. সুইচ কী?
উত্তর – সুইচ হল তড়িৎবর্তনীতে এমন একটি ব্যবস্থা যার দ্বারা তড়িৎবর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ অন বা অফ করা যায়।
15. কীসের সাহায্যে বাড়ির লাইনকে প্রয়োজনমতো অন বা অফ করা যায় ?
উত্তর – মেইন সুইচের সাহায্যে বাড়ির লাইনকে প্রয়োজনে অন বা অফ করা যায়।
16. থ্রি-পিন প্লাগের ওপরের বড়ো ছিদ্রের সঙ্গে কোন্ তার যুক্ত থাকে- লাইভ তার, নিউট্রাল তার না আর্থ তার ?
উত্তর – থ্রি-পিন প্লাগের ওপরের বড়ো ছিদ্রের সঙ্গে আর্থ তার যুক্ত থাকে।
17. থ্রি-পিন প্লাগের আর্থ পিন কোন্টি?
উত্তর – থ্রি-পিন প্লাগের তিনটি পিনের মধ্যে যে পিনটি বেশি মোটা এবং লম্বা সেটি হল আর্থ পিন।
18. লাইভ তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ কোন্ দিক থেকে কোন্ দিকে প্রবাহিত হয়?
উত্তর – লাইভ তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ সরবরাহ কেন্দ্র থেকে তড়িৎযন্ত্রাদির দিকে প্রবাহিত হয়।
19. নিউট্রাল তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ কোন্ দিক থেকে কোন্ দিকে প্রবাহিত হয়?
উত্তর – নিউট্রাল তারের মধ্য দিয়ে তড়িত্যন্ত্রাদি থেকে তড়িৎ সরবরাহ কেন্দ্রের দিকে ফিরে যায়।
20. বাড়িতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ লাইনে লাইভ তারের রং কী?
উত্তর – বাড়িতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ লাইনে লাইভ তারের রং লাল।
21. বাড়িতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ লাইনে নিউট্রাল তারের রং কী?
উত্তর – বাড়িতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ লাইনে নিউট্রাল তারের রং কালো।
22. আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে নিউট্রাল তারের বর্ণ লেখো।
উত্তর – আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে নিউট্রাল তারের বর্ণ হালকা নীল (বা আকাশি)।
23. আর্থ তার কী রঙের হয়?
উত্তর – আর্থ তার সবুজ বা হলুদ রঙের হয়।
24. আর্থিং কী?
উত্তর – যে-কোনো তড়িৎসংযোগ ব্যবস্থায় তড়িৎবর্তনী বা তড়িৎ যন্ত্রাদিকে ভূমির সঙ্গে পরিবাহী তারের মাধ্যমে সংযুক্ত করাই হল আর্থিং (earthing)।
25. বাড়ির ওয়্যারিং-এর কাজে সাধারণত কোন্ ধাতুর তার ব্যবহার করা হয়?
উত্তর – বাড়ির ওয়্যারিং-এর কাজে সাধারণত তামার তার ব্যবহার করা হয়।
26. দূরবর্তী স্থানে তড়িৎ পরিবহণের কাজে সাধারণত কোন্ ধাতুর তার ব্যবহার করা হয়?
উত্তর – দূরবর্তী স্থানে তড়িৎ পরিবহণের কাজে সাধারণত অ্যালুমিনিয়ামের তার ব্যবহার করা হয়।
27. গৃহবর্তনীতে সব যন্ত্র কোন্ সমবায়ে যুক্ত থাকে?
উত্তর – গৃহবর্তনীতে সব যন্ত্র সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত থাকে।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1, বদ্ধ কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত ……… -এর পরিবর্তন হলে কুণ্ডলীতে তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয়।
উত্তর – চৌম্বক প্রবাহ
2. বন্ধ কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক প্রবাহ ……… থাকলে তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় না।
উত্তর – স্থির বা অপরিবর্তিত
3. আবিষ্ট তড়িৎচালক বল কতক্ষণ স্থায়ী হবে তা জানা যায় ফ্যারাডের …….. – সূত্র থেকে।
উত্তর – প্রথম
4. কোনো বন্ধ কুণ্ডলীর দিকে একটি দণ্ডচুম্বককে নিয়ে এলে ও দূরে সরিয়ে নিয়ে গেলে দুই ক্ষেত্রে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ পরস্পর ………. দিকে হয়।
উত্তর – বিপরীত
5. ……… যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে।
উত্তর – ডায়নামো
6. ডায়নামোতে একটি বদ্ধ কুণ্ডলীকে …….. ক্ষেত্রে ঘোরানো হয়।
উত্তর – চৌম্বক
7. dc ডায়নামোতে স্লিপ রিং-এর পরিবর্তে ………. ব্যবহার করা হয়।
উত্তর – কম্যুটেটর
8. জেনারেটরের সাহায্যে ac অপেক্ষা dc উৎপাদন ……… ব্যয়বহুল।
উত্তর – বেশি
9. পাওয়ার স্টেশন থেকে উচ্চবিভবে ac পাঠালে তড়িৎ পরিবহণে শক্তিক্ষয় ……. হয়।
উত্তর – কম
10. dc -এর কম্পাঙ্ক ……….।
উত্তর – শূন্য
11. ac-কে dc করা যায় ………. যন্ত্রের দ্বারা।
উত্তর – একমুখীকারক (বা রেকটিফায়ার)
12. আমরা যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তার বেশিরভাগই ………. বিদ্যুৎ।
উত্তর – তাপ
13. তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে প্রচুর ………. গ্যাস উৎপন্ন হয় যা পরিবেশদূষণ ঘটায়।
উত্তর – CO2
14. থ্রি-পিন প্লাগে ………… পিন একই মাপের হয়।
উত্তর – দুটি
15. আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী লাইভ তারের রং ……….।
উত্তর – বাদামি
16. নিউট্রাল তারের বিভব ………. V ।
উত্তর – 0